বাবা হিমশিম খেতেন চার সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে। একবেলা পৌরসভায় মালির চাকরি, অন্যবেলায় এলাকার ক্লাবে কিট ম্যান। এতসবের মধ্যেও রোনালদোকে ফুটবলার বানাতে ছিল আপ্রাণ প্রয়াস। সেই বাবা আজকের রোনালদোকে দেখে যেতে পারেননি। যা নিয়ে দ্য গ্রেটের আক্ষেপের অন্ত নেই।
সালটা ১৯৮৫। মাদেইরাতে রোনালদো যখন মায়ের গর্ভে। ডাক্তার বলেছিলেন বাচ্চাটা রাখা মায়ের আর সন্তানের দুজনের জন্যেই ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে মায়ের মন মানেনি কোন ভাবেই। হাজারো অনিশ্চয়তার ভীড়ে নিজের সন্তানকে জন্ম দেন ঠিকই। আর বিশ্ব পায় ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো দস সান্তোস অ্যাভেইরোকে।
সেই দিনের একে একে কত বসন্ত পার হলো। আজকের ৫ ফেব্রুয়ারিতে সংখ্যাটা নাকি ৪০ হলো, রোনালদো? সত্যিই, এসব অবিশাস্য কিছুও বিশ্বাস করতে হয়? আমরা তো আজও সেই তরুণ রোনালদোকেই দেখি। যে গোল করে, গোল করায়। নিত্যনতুন উদযাপন করে দেখায়। আচ্ছা, সংখ্যাটাই স্রেফ বেড়েছে। নাহ বয়স কিন্তু আপনার বাড়ছে না রোনালদো। ওই বয়স নামক বস্তুটা আপনাকে ছুঁতেই পারেনা। তাইতো ওসব চল্লিশ টল্লিশ কেউ গোনে না, আপনার ১০০০ গোলের স্বপ্নে দিবারাত্রি বিভোর ভক্তরা।
মাদেইরায় সেদিন আপনার পরিবার আপনাকে পেয়ে কতটা খুশি হয়েছিল? পরিবারের সবচেয়ে ছোট্ট মেহমান হিসেবে তারা পেয়েছিল আপনাকে। ঘরে তো আরো সন্তান ছিল আপনি কি আলাদা ছিলেন তাদের থেকে? ছিলেন। আপনি তো আলাদাই, সেটা সেদিন কেউ না বুঝলেও আজ গোটা দুনিয়া জানে।
আমরা রোনালদোকে দেখি। রোনালদোর প্রাপ্তি দেখি। দেখি গোল, দেখি রেকর্ড। অথচ রোনালদোর অন্য একটা পাশ রয়েছে। যেখানে থাকে অপ্রাপ্তি নামক শব্দটাও। যেখানে থাকে বাবার সাথে মন খুলে কথা না বলতে পারার আফসোস।
বাবা মাঝে মাঝে স্কুল পরিষ্কারেরও কাজ করতেন। তার জন্য দিনের পর দিন বন্ধুদের থেকে শুনতে হতো খোঁটাও। রোনালদো সবই মনে রেখেছেন। পড়াশোনাটা যে তাকে দিয়ে হচ্ছে না তা বুঝে গিয়েছিলেন আগেই। তার ধ্যান জ্ঞ্যান ছিল ফুটবল, ঘুমোতেও জেতেন ফুটবল কোলে নিয়ে। তারপর একদিন সেই ফুটবলই তো দূর করল তার সব অভাব, দারিদ্র, দুঃখ, কষ্ট।
একদিন কি নিদারুণ অভাব-অনটন কাঁদিয়েছে আপনাকে। কষ্ট দিয়েছে, শিখিয়েছে শক্ত হতে। চার ভাই বোন মিলে বেড়ে উঠেছেন একটা কামরার মধ্যে। গাদাগাদি করে থাকা সেই রাতগুলো? আহ, কেউই দেখেনি সেই অন্ধকারে আপনার আলোয় ঝলমল করা চোখ জোড়াকে। মাদেইরার একটা ছোট্ট ঘর থেকে যে চোখ জোড়া স্বপ্ন দেখেছিল দুনিয়া শাসনের।
রোনালদো প্রায় অনেক ইন্টারভিউতেই আফসোস করে বলেন, নিজের পরিবারে তিনি হীরের টুকরো ছিলেন। বাবা অনেক প্রাউড ফিলও করতেন তাকে নিয়ে। তবে বাবার সাথে কখনও মন খুলে কথা বলা হয়নি। ২০০৫ এ চলে যাওয়া লোকটা এর পরের গল্পটা দেখেননি। তবে রোনালদোর বিশ্বাস, ওপার থেকে ঠিক দেখেন। দুনিয়া জয় করা রোনালদোর এ এক না শেষ হওয়া আক্ষেপের গল্প।
জন্মদিনে আমরা রোনালদোর রেকর্ড দেখি, গোল দেখি, সংখ্যার খেলায় মাতি। আজ নাহয় একটা ছোট্ট শহরের ছোট্ট ছেলের দুনিয়া জয়ের পর তার ভেতের থাকা আফসোসের উপাখ্যান জানলাম। রোনালদো আপনার সে আফসোস এ জগতের কেউই মেটাতে পারবে না। তবে জন্মদিনে একটা শুভেচ্ছাবার্তা রেখে বলতে চাই, আপনি আপনার পরিবারেরই না গোটা দুনিয়ার জলজল করা এক হীরের টুকরো। বয়সের ঘর কেউ মনে রাখবে না। আপনি রোনালদো। বয়স উপাখ্যানটা আপনার জন্য না।
ওই যে আপনি বলেন না, আপনার ভালোবাসা আমাকে শক্তিশালী করে, আপনার ঘৃণা আমাকে অপ্রতিরোধ্য করে।" এই কথার মতোই আপনি যেমন ওদের ঘৃণার কাছে অপ্রতিরোধ্য। তেমনি বয়সের কাছেও।
No posts available.
১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫২ এম
১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৪ এম
২০১০ বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার পর আবার বিশ্বকাপে ফিরল দক্ষিণ আফ্রিকা। আর বিশ্বসেরার টুর্নামেন্টের গত আসরের আয়োজক কাতার এবার বাছাই পর্ব উতরে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করল।
আফ্রিকা অঞ্চল থেকে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে মোট নয়টি দেশ। ৯ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে শেষ করা দলগুলোর সঙ্গে সেরা চার রানার্সআপ দলগুলোর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন দল খেলতে পারে ২০২৬ বিশ্বকাপ।
আরও পড়ুন
ইসরায়েলকে বিদায় করে বিশ্বকাপের আশা বাঁচিয়ে রাখলো ইতালি |
![]() |
গতকাল রুয়ান্ডাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ১৬ বছর পর বিশ্বকাপে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকা। একইসঙ্গে মাউরিতানিয়ার বিপক্ষে সাদিও মানের জোড়া গোলে ৩-০ গোলের জয়ে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করল সেনেগাল। আর আইভেরি কোস্টও একই পথের পথিক হয়ে কেনিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে।
এই তিন দল যুক্ত হলো আগেই বিশ্বকাপের টিকিট কাটা আলজেরিয়া, কেপ ভার্দে, মিশর,ঘানা, মরক্কো, তিউনিশিয়ার সঙ্গে। ক্যামেরুন, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, গ্যাবন এবং নাইজেরিয়া চার সেরা রানার-আপ হিসেবে আফ্রিকান প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর দৌড়ে আছে। মরক্কোতে নভেম্বরে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল জয়ী দল মার্চে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফে খেলে বিশ্বকাপে পৌঁছাতে পারবে।
আরও পড়ুন
রোনালদোর জোড়া গোলে রেকর্ড গড়া ম্যাচে পর্তুগালের হোঁচট |
![]() |
এশিয়া অঞ্চলে বাছাইপর্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ২-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করে কাতার। আগের আসরে আয়োজক দেশ হিসেবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলেও এবার বাছাইপর্বের বাধা পেরিয়েই টুর্নামেন্টে যোগ দিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
ইরাকের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে বিশ্বকাপের পৌঁছে গেল সৌদি আরবও। দুই ম্যাচে এক জয় ও এক ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে শেষ করল সৌদি। সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে দুইয়ে থেকে শেষ হলো ইরাকের।
আরও একবার বিশ্বকাপে দর্শক হয়ে পড়ার শঙ্কায় থাকা ইতালি স্বস্ত্বির এক জয় পেল। এবার ইসরায়েলকে উড়িয়ে অন্তত প্লে-অফের জায়গা নিশ্চিত হলো আজ্জুরিদের। আর ১৯৭০ সালের পর বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের আসরে টিকিট না পাওয়া ইসরায়েলের স্বপ্ন এবারও শেষ হলো।
নিজেদের মাঠে গতকাল রাতে ইসরায়েলকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ইতালি। ম্যাচে জোড়া গোল করেন মাতেও রেতেগুই। যোগ করা সময়ে ইসরায়েলের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন জিয়ানলুকা মানচিনি।
এই জয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে গ্রুপ ‘আই’ এ ৬ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার দুই নম্বরে আছে ইতালি। সমান ম্যাচ খেলে ৩ পয়েন্ট বেশি নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে আর্লিং হলান্ডের নরওয়ে। আর এক ম্যাচ বেশি খেলে ৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ইসরায়েল। তাতে বাকি থাকা একটি ম্যাচে জয় পেলেও কাজ হবে না তাদের।
আরও পড়ুন
রোনালদোর জোড়া গোলে রেকর্ড গড়া ম্যাচে পর্তুগালের হোঁচট |
![]() |
ইতালির উদিনের ব্লুয়েনার্জি স্টেডিয়াম নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়। ম্যাচের আগে শহরের সড়কে প্রো-প্যালেস্টাইনরা সভা করে। তবে বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
শুরুতেই অবশ্য গোলের দারুণ সুযোগ তৈরি করে ইসরায়েল। তবে তাদের উইঙ্গার ম্যানর সোলোমনের শট রুখে দেন ইতালির গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোনারুম্মা। বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। রেতেগুইকে বক্সে ফাউল করেন ইসারায়েলের ডিফেন্ডার মাতান বালতাক্সা। তার ট্যাকল চোখ এড়ায়নি রেফারির, বাজান পেনাল্টির বাঁশি। স্পট কিক থেকে ব্যবধান ১-০ করতে কোনো ভুল করেননি সৌদি ক্লাব আল-কাদাইসার ফরোয়ার্ড রেতেগুই।
বিরতির পর ৭৪ মিনিটে ব্যবধান ২-০ করা গোলটি পেয়ে যায় ইতালি। বাঁ দিক থেকে বল দখলে নিয়ে ভিতরে কাট করে ডান পায়ে নিখুঁত শটে জালের ডান কোণায় বল পাঠিয়ে জোড়া গোল পূর্ণ করেন রেতেগুই।
আরও পড়ুন
পুয়ের্তো রিকোর জালে হাফ-ডজন গোল আর্জেন্টিনার |
![]() |
ম্যাচের শেষ গোলটি আসে নির্ধারিত সময়ের পর যোগ করা সময়ের তিন মিনিটে। ডিমারকোর নেওয়া কর্ণার কাজে না লাগলেও, পরে ইন্টার মিলানের এই মিডফিল্ডারের ক্রস পৌঁছ যায় ঠিক মানচিনির মাথায়। সহজ হেডে জালের বাঁ কোণায় বল পাঠিয়ে দেন রোমার ডিফেন্ডার।
সরাসরি বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে হলে বাকি দুটি ম্যাচে জিততেই হবে ইতালিকে। আগামী ১৪ নভেম্বর মলদোভার বিপক্ষে ম্যাচের পর তাদের পরের ম্যাচ নরওয়ের বিপক্ষে। এই দুই ম্যাচের জয়ে সঙ্গে নরওয়ের পয়েন্ট হারানোর দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের আরেক ম্যাচে বুলগেরিয়াকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে স্পেন। নিজেদের মাঠে মিকেল মেরিনোর জোড়া গোলের সঙ্গে মিকেল ওইয়ারজাবালের এক গোল ও আত্মঘাতি গোলে হালি গোল পূর্ণ করে লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল।
দলকে জেতানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করলেন। ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন। গড়েছেন নতুন রেকর্ডও। দলও এগিয়ে যায় ২-১ ব্যবধানে। তবে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে এক পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালকে।
ঘরের মাঠে ইউরোপিয় বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে হাঙ্গেরির বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছে পর্তুগাল। শুরুতেই গোলে খেয়ে পিছিয়ে পড়ার পর রোনালদোর দুই গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। জোড়া গোল করে রেকর্ড গড়েন আল নাসর ফরোয়ার্ড। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন ৪০ বছর বয়সী মহাতারকা। রোনালদোর গোলসংখ্যা এখন ৪১। তিনি পেছনে ফেলেছেন ৩৯ গোল নিয়ে এতদিন শীর্ষে থাকা গুয়াতেমালার কিংবদন্তি স্ট্রাইকার কার্লোস রুইজকে।
আরও পড়ুন
পুয়ের্তো রিকোর জালে হাফ-ডজন গোল আর্জেন্টিনার |
![]() |
রোনালদোর রেকর্ডের ম্যাচে পর্তুগালের কপাল পোড়ে ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে। নির্ধারিত সময়ের পর যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে হাঙ্গেরির লিভারপুলের মিডফিল্ডার দমিনিক সোবোস্লাইয়ের গোলে নিশ্চিত হয় পয়েন্ট ভাগাভাগি।
এই ড্রয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট কাটা বিলম্বিত হলো পর্তুগালের। হাঙ্গেরির বিপক্ষে জয় পেলেই সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করত রোনালদোরা। অবশ্য আয়ারল্যন্ডের বিপক্ষে পরের ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট পেলেই চলবে তাদের।
বাছাইপর্বে গ্রুপ ‘এফ’ থেকে ৪ ম্যাচে তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে পর্তুগাল। দুইয়ে থাকা হাঙ্গেরির সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট। এক পয়েন্ট কম নিয়ে তিনে আয়ারল্যান্ড।
লিসবনে স্তাদিও হোসে আলভালাদেতে ৮ মিনিটে সোবোস্লাইয়ের দারুণ অ্যাসিস্টে হাঙ্গেরিকে এগিয়ে দেন আতিলা সালাই। ম্যাচে হাঙ্গেরির প্রথম কর্ণার থেকে নিখুঁত ক্রস করেন লিভারপুল মিডফিল্ডার। সেখান থেকে হেডে বল জালে পাঠান সফরকারী দলের ডিফেন্ডার।
আরও পড়ুন
লেভানদোভস্কির চোটে বড় ধাক্কায় বার্সেলোনা |
![]() |
২২ মিনিটে সমতায় ফিরে পর্তুগাল। নেলসন সেমেদোর ডান দিক থেকে নিচু ক্রসে ছয় গজ দূর থেকে লক্ষ্যভেদ করে পর্তুগালকে সমতায় ফেরান রোনালদো।
বিরতির ঠিক আগে নুনো মেন্ডেসের ক্রস থেকে ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে দলকে লিড এনে দেন রোনালদো। পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর ক্যারিয়ারের ৯৪৮তম ও আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১৪৩তম গোল এটি।
পর্তুগালকে হতাশ করে যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেই গোল করে এক পয়েন্ট ছিনিয়ে নেয় হাঙ্গেরি। দানিয়েল লুকাচসের ক্রস থেকে বল জাল কাঁপান সোবোস্লাই। এর আগে দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা সময় দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালায়। তবে দুই দলের গোলকিপারই দারুণ কিছু সেভে সেসব শট রুখে দেন।
ফিফা র্যাংকিংয়ে পুয়ের্তো রিকোর অবস্থান ১৫৫। আর আর্জেন্টিনা আছে তিনে। দুই দল মুখোমুখি হলে একপেশে ফলাফলই প্রত্যাশিত ছিল। হয়েছেও তাই। উত্তর আমেরিকার দেশটি ল্যাটিন আমেরিকার জায়ান্টদের বিপক্ষে পাত্তাই পায়নি।
প্রীতি ম্যাচে আজ পুয়ের্তো রিকোকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আর্জেন্টিনা। প্রথমবারের মতো দলটির মুখোমুখি হয়ে লিওনেল স্কালোনির দল গোল উৎসব মাতে। ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন ম্যাক অ্যালিস্টার ও বদলি নামা লাউতারো মার্টিনেজ। বাকি দুটি গোলের একটি এসেছে গঞ্জালে মন্টিয়েল ও আত্মঘাতির সৌজন্যে। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে আগের ম্যাচে দর্শক হয়ে থাকা লিওনেল মেসি গোল না পেলেও দুটি সহায়তা করেছেন।
মায়ামির চেইজ স্টেডিয়ামে এই ম্যাচে অভিষেক হয় ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাসের ফরোয়ার্ড হোসে লোপেজের। ম্যাচে একটি অ্যাসিস্ট করেন ২৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। ম্যাচজুড়ে আর্জেন্টিনার দাপটের কাছে অসহায়ই ছিল প্রতিপক্ষ। ৬৯ শতাংশ বল দখলে রেখে ২৫টি শট নিয়ে ১১টি লক্ষ্যে রাখে আর্জেন্টিনা। আর ৫টি শট নেওয়া পুয়ের্তোর গোলমুখে রাখতে পেরেছে তিনটি শট।
আরও পড়ুন
লেভানদোভস্কির চোটে বড় ধাক্কায় বার্সেলোনা |
![]() |
ম্যাচরে দুই অর্ধে তিনটি করে গোল করা আর্জেন্টিনা ১৪ মিনিটে ম্যাক অ্যালিস্টার হেড থেকে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। মেসির নেওয়া জোরালো শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে বল পেয়ে যান গঞ্জালেজ। আতলেতিকো মাদ্রিদের লেফট ব্যাকের নেওয়া শট আবার পেয়ে যান অ্যালিস্টার। পাঁচ গজ দূরে থেকে প্রতিপক্ষের গোলকিপারকে পরাস্ত করে দারুণ হেডে বল জালে পাঠিয়ে দেন এই মিডফিল্ডার ।
১০ মিনিটেরও কম সময় পর দুর্দান্ত এক ভলিতে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মন্টিয়েল। গোলের যোগানদাতা মেসি। বিরতির আগেই লিভারপুলের তারকা মিডফিল্ডার ম্যাক অ্যালিস্টার নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করে ব্যবধান ৩-০ করেন।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই বেশ কিছু পরিবর্তন আনে। তবে ম্যাচের চিত্র অপরিবর্তিতই থাকে। প্রথমার্ধের মতোই তিনটি গোল পায় আর্জেন্টিনা। যার একটি প্রতিপক্ষের ভুলে। আর বাকি দু’টি বদলি নামা মার্টিনেজের নৈপুণ্যে। মাঠে নেমে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই জোড়া গোল করেন ইন্টার মিলানের তারকা ফরোয়ার্ড।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশই জয়ের দাবিদার, অভিমত কাবরেরার |
![]() |
৬৪ মিনিটে নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দেন পুয়ের্তোর লেফট-ব্যাক স্টিভেন এচেভেরিয়া। মোলিনার ক্রস ডি-বক্সের দূর প্রান্তে গিয়ে পৌঁছায় ফাঁকা জায়গায় থাকা গঞ্জালেজের আতলেতিকোর এই ফুলব্যাক সময় নিয়ে নিচু শট নেন ছয় গজ বক্সের সামনে থাকা ডিফেন্ডারদের ভিড়ের দিকে। বলটি ক্লিয়ার করতে গিয়ে পুয়ের্তো রিকোর ডিফেন্ডার শরীর ঘুরিয়ে পায়ের পাশে বল ছোঁয়াতে চান। কিন্তু ভুলভাবে লেগে সেটি উল্টো দিকেই উঠে যায়। পুয়ের্তোর গোলকিপার কাটলারের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে বল জালে জড়ায়। ব্যবধান হয়ে যায় ৪-০।
৬৪ মিনিটে হোস লোপেজকে তুলে মার্টিনেজকে নামা স্কালোনি। গঞ্জলেজের অ্যাসিস্ট থেকে ৭৯ মিনিটে মাত্র ছয় গজ দূর থেকে দারুণ কায়দায় চিপ করে গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়ান মার্টিনেজ। পাঁচ মিনিট পরই হাফ-ডজন পূর্ণ করা গোলটি করেন মার্টিনেজ। গঞ্জালেজের বাড়ানো বলে দ্রুত আক্রমণে ওঠেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। মায়ামি তারকা পুয়ের্তোর দু’জন ডিফেন্ডারকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে মুহূর্তে বল বাড়িয়ে দেন মার্টনেজের কাছে। এরপর নিখুঁতভাবে নিচের কোনায় বল পাঠিয়ে দেন মার্টিনেজ।
বার্সেলোনার তারকা স্ট্রাইকার
রবার্ট লেভানদোভস্কি হ্যামস্ট্রিং চোটে ভুগছেন। চলতি মাসের শেষদিকে রিয়াল মাদ্রিদের
বিপক্ষে এল ক্লাসিকোতে এই পোলিশ তারকার খেলা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
আজ এক বিবৃতিতে বার্সেলোনা জানিয়েছে,
‘রবার্ট লেভানদোভস্কি বাঁ ঊরুর হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে আক্রান্ত। তিনি কিছুদিন মাঠের বাইরে থাকবেন। তার ফেরার সময় নির্ভর করবে চোটের অগ্রগতির ওপর।’
স্প্যানিশ গণমাধ্যমের খবরে
বলা হয়েছে, লেভানদোভস্কি অন্তত চার সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে পারেন। ফলে ২৬ অক্টোবর
বার্নাব্যুতে অনুষ্ঠাতব্য এল ক্লাসিকোতে তার খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এর আগে বার্সেলোনা জিরোনার
বিপক্ষে মাঠে নামবে। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৯ ম্যাচে ৪ গোল করেছেন লেভানদোভস্কি।
লেভানদোভস্কিই নন শুধু,
দলের বাইরে রয়েছেন রাফিনিয়া, গাভি, দানি ওলমো, মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন এবং গোলরক্ষক
জোয়ান গার্সিয়াও। এদের মধ্যে ওলমো প্রায় তিন সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকবেন বলে ধারণা করা
হচ্ছে।
স্বস্তির খবরও আছে বার্সেলোনার
জন্য। তরুণ ফরোয়ার্ড লামিন ইয়ামাল ও ফারমিন লোপেজ চোট কাটিয়ে অনুশীলনে ফিরেছেন।