বাবা হিমশিম খেতেন চার সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে। একবেলা পৌরসভায় মালির চাকরি, অন্যবেলায় এলাকার ক্লাবে কিট ম্যান। এতসবের মধ্যেও রোনালদোকে ফুটবলার বানাতে ছিল আপ্রাণ প্রয়াস। সেই বাবা আজকের রোনালদোকে দেখে যেতে পারেননি। যা নিয়ে দ্য গ্রেটের আক্ষেপের অন্ত নেই।
সালটা ১৯৮৫। মাদেইরাতে রোনালদো যখন মায়ের গর্ভে। ডাক্তার বলেছিলেন বাচ্চাটা রাখা মায়ের আর সন্তানের দুজনের জন্যেই ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে মায়ের মন মানেনি কোন ভাবেই। হাজারো অনিশ্চয়তার ভীড়ে নিজের সন্তানকে জন্ম দেন ঠিকই। আর বিশ্ব পায় ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো দস সান্তোস অ্যাভেইরোকে।
সেই দিনের একে একে কত বসন্ত পার হলো। আজকের ৫ ফেব্রুয়ারিতে সংখ্যাটা নাকি ৪০ হলো, রোনালদো? সত্যিই, এসব অবিশাস্য কিছুও বিশ্বাস করতে হয়? আমরা তো আজও সেই তরুণ রোনালদোকেই দেখি। যে গোল করে, গোল করায়। নিত্যনতুন উদযাপন করে দেখায়। আচ্ছা, সংখ্যাটাই স্রেফ বেড়েছে। নাহ বয়স কিন্তু আপনার বাড়ছে না রোনালদো। ওই বয়স নামক বস্তুটা আপনাকে ছুঁতেই পারেনা। তাইতো ওসব চল্লিশ টল্লিশ কেউ গোনে না, আপনার ১০০০ গোলের স্বপ্নে দিবারাত্রি বিভোর ভক্তরা।
মাদেইরায় সেদিন আপনার পরিবার আপনাকে পেয়ে কতটা খুশি হয়েছিল? পরিবারের সবচেয়ে ছোট্ট মেহমান হিসেবে তারা পেয়েছিল আপনাকে। ঘরে তো আরো সন্তান ছিল আপনি কি আলাদা ছিলেন তাদের থেকে? ছিলেন। আপনি তো আলাদাই, সেটা সেদিন কেউ না বুঝলেও আজ গোটা দুনিয়া জানে।
আমরা রোনালদোকে দেখি। রোনালদোর প্রাপ্তি দেখি। দেখি গোল, দেখি রেকর্ড। অথচ রোনালদোর অন্য একটা পাশ রয়েছে। যেখানে থাকে অপ্রাপ্তি নামক শব্দটাও। যেখানে থাকে বাবার সাথে মন খুলে কথা না বলতে পারার আফসোস।
বাবা মাঝে মাঝে স্কুল পরিষ্কারেরও কাজ করতেন। তার জন্য দিনের পর দিন বন্ধুদের থেকে শুনতে হতো খোঁটাও। রোনালদো সবই মনে রেখেছেন। পড়াশোনাটা যে তাকে দিয়ে হচ্ছে না তা বুঝে গিয়েছিলেন আগেই। তার ধ্যান জ্ঞ্যান ছিল ফুটবল, ঘুমোতেও জেতেন ফুটবল কোলে নিয়ে। তারপর একদিন সেই ফুটবলই তো দূর করল তার সব অভাব, দারিদ্র, দুঃখ, কষ্ট।
একদিন কি নিদারুণ অভাব-অনটন কাঁদিয়েছে আপনাকে। কষ্ট দিয়েছে, শিখিয়েছে শক্ত হতে। চার ভাই বোন মিলে বেড়ে উঠেছেন একটা কামরার মধ্যে। গাদাগাদি করে থাকা সেই রাতগুলো? আহ, কেউই দেখেনি সেই অন্ধকারে আপনার আলোয় ঝলমল করা চোখ জোড়াকে। মাদেইরার একটা ছোট্ট ঘর থেকে যে চোখ জোড়া স্বপ্ন দেখেছিল দুনিয়া শাসনের।
রোনালদো প্রায় অনেক ইন্টারভিউতেই আফসোস করে বলেন, নিজের পরিবারে তিনি হীরের টুকরো ছিলেন। বাবা অনেক প্রাউড ফিলও করতেন তাকে নিয়ে। তবে বাবার সাথে কখনও মন খুলে কথা বলা হয়নি। ২০০৫ এ চলে যাওয়া লোকটা এর পরের গল্পটা দেখেননি। তবে রোনালদোর বিশ্বাস, ওপার থেকে ঠিক দেখেন। দুনিয়া জয় করা রোনালদোর এ এক না শেষ হওয়া আক্ষেপের গল্প।
জন্মদিনে আমরা রোনালদোর রেকর্ড দেখি, গোল দেখি, সংখ্যার খেলায় মাতি। আজ নাহয় একটা ছোট্ট শহরের ছোট্ট ছেলের দুনিয়া জয়ের পর তার ভেতের থাকা আফসোসের উপাখ্যান জানলাম। রোনালদো আপনার সে আফসোস এ জগতের কেউই মেটাতে পারবে না। তবে জন্মদিনে একটা শুভেচ্ছাবার্তা রেখে বলতে চাই, আপনি আপনার পরিবারেরই না গোটা দুনিয়ার জলজল করা এক হীরের টুকরো। বয়সের ঘর কেউ মনে রাখবে না। আপনি রোনালদো। বয়স উপাখ্যানটা আপনার জন্য না।
ওই যে আপনি বলেন না, আপনার ভালোবাসা আমাকে শক্তিশালী করে, আপনার ঘৃণা আমাকে অপ্রতিরোধ্য করে।" এই কথার মতোই আপনি যেমন ওদের ঘৃণার কাছে অপ্রতিরোধ্য। তেমনি বয়সের কাছেও।
No posts available.
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৯:৩৮ পিএম
নতুন মৌসুমে বার্সেলোনার খেলায় আগের মৌসুমের ঝাঁজটা ঠিক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রতিপক্ষকে দুমড়েমুচড়ে দেওয়া সেই বার্সার খোঁজে কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়ে কোচ হ্যান্সি ফ্লিকেরও। অবশেষে সব সন্দেহ আর সংশয় উড়িয়ে বার্সা যেন ফিরল তার আসল রূপে।
চোটের কারণে দলের সবচেয়ে বড় তারকা লামিনে ইয়ামালকে ছাড়াই ৬-০ গোলের বিশাল জয় পেয়েছে বার্সা। লা লিগায় গতকাল ৬ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ইয়হান ক্রইফ স্টেডিয়ামে ভ্যালেন্সিয়ার জালে গুনে গুনে হাফ ডজন বল পাঠিয়েছে কাতালান ক্লাবটি। সফরকারীদের গুড়িয়ে দেওয়া ম্যাচে জোড়া গোল করেন ফার্মিন লোপেজ, বদলি নামা রাফিনিয়া ও রবার্ট লেভানোদোভস্কি।
এই জয়ের পর পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। চার ম্যাচে ৩ জয় ও ১ ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে আছে তারা। আর সমান ম্যাচে শতভাগ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ। ৪ পয়েন্ট নিয়ে ১৫ নম্বরে ভ্যালেন্সিয়া।
আরও পড়ুন
কড়া ট্যাকেলে ম্যাক অ্যালিস্টারকে নিয়ে চিন্তা |
![]() |
ঘরের মাঠে বার্সার আধিপত্য ছিল দেখার মতো। ৭৩ শতাংশ বল দখলে রেখে ২৪টি শট নিয়েছে তারা, যার মধ্যে ১০টি ছিল লক্ষ্যে। যেখানে মাত্র দুটি শট নিয়ে একটি লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে ভ্যালেন্সিয়া।
পেশির চোটে আক্রান্ত ইয়ামালের জায়গায় বাঁ প্রান্তে মার্কাস রাশফোর্ডকে নামান ফ্লিক। আর ডানদিকে শুরুর একাদশে রাফিনহার বদলে অভিষেক হয় রুনি বার্দগজির। ২৯ মিনিটে প্রথম গোলের দেখা মেলে। ফেরান তরেসের ফ্লিক থেকে নিখুঁত শটে বার্সাকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন লোপেজ। প্রথামার্ধে আরো ১১টি শট নিলেও আর গোলের দেখা পায়নি বার্সা।
দ্বিতীয়ার্ধে বার্সার রুদ্র রূপ দেখে ভ্যালেন্সিয়া। বিরতির পর মাত্র ১১ মিনিটের মধ্যে দুইবার বল জালে পাঠিয়ে ব্যবধান ৩-০ করে লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ৫৩ মিনিটে বাঁ-দিক থেকে পাঠানো র্যাশফোর্ডের ক্রস দারুণ স্লাইডে লক্ষ্যভেদ করেন বদলি নামা রাফিনিয়া। তিন মিনিট পরই ২৫ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত শটে জোড়া গোল পূর্ণ করেন লোপেজ।
এবার জোড়া গোল করেন রাফিনিয়া। ৬৬ মিনিটে লোপেজের ক্রস ভ্যালেন্সিয়ার ডিফেন্ডার ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয়। তাতে জোরোলো এক ভলিতে জাল কাঁপান ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। ৪-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর রাশফোর্ড ও তরেসকে তুলে দানি ওলমো ও লেভানদোভস্কিকে নামান বার্সা কোচ।
আরও পড়ুন
ইয়ামালকে নিয়ে দে লা ফুয়েন্তের ওপর চটলেন ফ্লিক |
![]() |
ম্যাচের ১৪ মিনিট বাকি থাকতে দারুণ এক শটে ক্রসবারের নিচ ঘেঁষে গোল করে ব্যবধান ৫-০ করেন লেভানদোভস্কি । শেষ দিকে ১৮ বছর বয়সী বদলি মার্ক বার্নালের পাস থেকে জোড়া গোল পূর্ণ হয় পোলিশ ফরোয়ার্ডেরও।
আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর বার্সালোনার পরের ম্যাচ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে। ইউরোপ সেরার মঞ্চে মাঠে নামার আগে দারুণ এক মহড়াই দিয়ে রাখল ফ্লিক বাহিনী।
ম্যাচের তখন ১৫ মিনিট। লিভারপুর-বার্নলি একে অন্যের জাল খুঁজাতে ব্যস্ত। তখনই ঘটে অঘটন। বার্নলির ঘরের মাঠ টার্ফ মুরে কড়া ট্যাকেলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ম্যাক অ্যালিস্টার। ফরাসি সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার লেসলি উগোচুকু ফাউল করে বসেন তাকে। রেফারির কাছ থেকে হলুদ কার্ড দেখলেও ততক্ষণে যা ঘটার ঘটে যায়।
ম্যাক অ্যালেস্টার মাঠ ছাড়লেও জয় পেতে অসুবিধা হয়নি অল রেডসদের। মিশরীয় ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহ’র গোলে প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে জয় ছিনিয়ে এনেছে তারা। প্রিমিয়ার লিগের রবিবার রাতের ম্যাচে পূর্ণ তিন পয়েন্ট জিতে টেবিলে শীর্ষস্থান অক্ষুণ্ন রেখেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।
আরও পড়ুন
হালান্ড জাদুতে ম্যানচেস্টার ডার্বি সিটির |
![]() |
ম্যাক অ্যালিস্টারের মাঠ ছাড়া নিয়ে ম্যাচ শেষে লিভারপুল কোচ আর্নে স্লট বলেছেন,
‘‘সে (অ্যালেস্টার) প্রাক-মৌসুমের একটা বড় অংশ মিস করেছে। তাই সে সপ্তাহে একটা খেলার জন্য প্রস্তুত। সে আর্জেন্টিনার হয়ে ৯০ মিনিট খেলেছে এবং খুব ক্লান্ত ছিল। সুতরাং আজ আমি স্পষ্টভাবে বলেছিলাম যে, ৬০ মিনিটের পর তাকে বদলি করাব, যাতে সে বুধবার এবং শনিবার আবার মাঠে ফিরতে পারে।”
স্লট নিশ্চিত করেন অ্যালিস্টার শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতে চেয়েছিলেন, তবে বড় কোনো সমস্যা এড়াতে তাকে বদলি করার সিদ্ধান্ত নেন কোচ।
কিছু কথা হচ্ছিল বাস্তবতার নিরিখে, কিছু ইতিহাস ঘেঁটে। ইতিহাদে ম্যাচ হলেও অতীত ভেবে ‘ম্যানচেস্টার ডার্বি’তে ম্যানইউকে এগিয়ে রেখেছিলেন কেউ কেউ। তবে নতুন মৌসুমে দুই নগরপ্রতিদ্বন্দ্বীর প্রথম দেখায় শেষ হাসি হেসেছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। নিজেদের মাঠে রেড ডেভিলদের ৩-০ গোলে হারিয়েছে সিটিজেনরা। দলের হয়ে জোড়া গোল করেন আর্লিং হালান্ড। অপর গোলটি করেন ফিল ফোডেন।
আন্তর্জাতিক বিরতির আগে প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের সবশেষ দুই ম্যাচে টটেনহ্যাম ও ব্রাইটনের কাছে হেরেছিল ম্যানসিটি। তবে বিরতি থেকে ফিরেই আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে নয়টার ম্যাচে চমক দেখাল সিটিজেনরা। ২০২৫-২৬ মৌসুমে ৪ ম্যাচে দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট তাদের।
আরও পড়ুন
সালাহর শেষ মূহূর্তের পেনাল্টিতে লিভারপুলের কষ্টার্জিত জয় |
![]() |
এদিন ম্যাচ ঘড়ির ১৮ মিনিটে ম্যানসিটিকে এগিয়ে নেন ইংল্যান্ড ফরোয়ার্ড ফিল ফোডেন। জার্মেই ডোকুর বাড়ানো বলের সূত্র ধরে দলকে লিড এনে দেন তিনি। ম্যানইউর বিপক্ষে এটি তার ষষ্ঠ গোল। এই গোলে সিটিজেনদের শুরুর একাদশে নিজের অবস্থান নিয়ে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা কিছুটা হলেও উড়িয়ে দিয়েছেন তরুণ এই সেন্টার ফরোয়ার্ড।
হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচের ২৯ মিনিটে শোধের সুযোগ পায় ম্যানইউ। এমবেওমো তেড়েফুঁড়ে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন, কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি বেনফোর্ট থেকে ম্যানইউতে যোগ দেওয়া ক্যামেরুনের ফরোয়ার্ড। তার ভুলভাবে মারা শট উড়ে গিয়ে দোনারুমার গোলপোস্টের পেছনের গ্যালারিতে। মুহূর্তটি স্বাগতিক সমর্থকদের হাসি-ঠাট্টা আর উল্লাসের খোরাকে পরিণত হয়। প্রথমার্ধ ম্যানসিটির ১-০ লিডে শেষ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধে ৫৩ মিনিটে লিড দ্বিগুণ করে ম্যানসিটি। এবারের নায়ক আর্লিং হালান্ড। আর অ্যাসিস্টের ছিল প্রথম গোলের সহায়তাকারী ডোকু। এই গোলের মাধ্যমে সিটির হয়ে ১৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন হালান্ড। ৫৫ মিনিটে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। ম্যানইউর রক্ষণভাগকে ফাঁকি দিয়ে বক্সে ডুকে পড়েন হালান্ড। শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি।
আরও পড়ুন
ইয়ামালকে নিয়ে দে লা ফুয়েন্তের ওপর চটলেন ফ্লিক |
![]() |
৬১ মিনিটে আরও একবার সুযোগ এমবেওমো। তার বলি শটটি ডান দিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন জিয়ানলুইজি দোনারুমা। তার ঠিক ৭ মিনিট পর আরেকবার প্রতিপক্ষের জাল কাঁপান হালান্ড। নিজেদের অর্ধ থেকে সিলভার লং পাস ধরে সোজা ম্যানউইর বারে ডুকে পড়েন এবং বাঁ-দিকে শট নেন। আলতাই বায়িন্দির ঝাঁপিয়ে পড়েন। ততক্ষণে বল স্পর্শ করে ম্যানইউর জাল। এটাই ম্যাচের শেষ গোল। বায়িন্দির তিন গোল কনসিভির বিপরীতে ক্লিন সিট রেখেছেন দোনারুমা
এদিন ৫৫ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রাখে ম্যানইউ। গোলের জন্য তারা মোট ১৩টি শট নেয়। যেখানে সিটির ছিল একটি কম। তবে অন টার্গেটে তাদের শট ছিল একেবারেই কম-দুটি। এদিকে ম্যানসিটির অন টার্গেটে শট ছিল ৫টি। মূলত এখানেই হেরে বসে সিটি।
পুরো ম্যাচেই আধিপত্য ধরে রেখে খেলল লিভারপুল। ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময়ই বল দখলে রেখে একের পর এক শটও নিল অল রেডরা। তবে গোলের খেলায় আসল কাজটাই করতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছিল লিভারপুল।
নির্ধারিত সময়ের পর যোগ করা সময়ের পাঁচ মিনিটেই হঠাৎ পেনাল্টি বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর স্পট কিক থেকে নিখুঁত শটে বল জালে পাঠান লিভারপুলের ফরোয়ার্ড মোহাম্মাদ সালাহ। আর তাতেই প্রায় ড্র হতে যাওয়া ম্যাচটি শেষ মূহূর্তের নাটকীয়তায় ১-০ গোলে জিতে মাঠ ছাড়ল আর্নে স্লটের দল।
আরও পড়ুন
ইয়ামালকে নিয়ে দে লা ফুয়েন্তের ওপর চটলেন ফ্লিক |
![]() |
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বার্নলির বিপক্ষে ১-০ গোলের এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে আরো পোক্ত হলো লিভারপুল। ৪ ম্যাচে ৪ পুরো ১২ পয়েন্ট নিয়ে নতুন মৌসুমে শতভাগ জয়ের ধারা ধরে রাখল তারা। অন্যদিকে ঘরের মাঠে ২০২৪ সাল থেকে টানা ২৪ ম্যাচে অপরাজিত থাকার যাত্রায় ছেদ ঘটল বার্নলির।
বার্নলির মাঠ টার্ফ মুরে প্রথম থেকেই লিভারপুলের আক্রমণ দারুণভাবেই সামলে নেয় স্বাগতিকদের রক্ষণভাগ। পুরো ম্যাচে ৮১ শতাংশ বল দখলে রেখে ২৭টি শট নেয় সফরকারীরা। তবে লক্ষ্যে ছিল মাত্র ৪টি। বার্নলির রক্ষণের দৃঢ়তায় ডি-বক্সের সামনে এসে থেমে যায় লিভারপুলের আক্রমণ।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তির ভাস্কর্য উন্মোচন বায়ার্নের |
![]() |
দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুলকে এগিয়ে দেওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ পান ফেদেরিকো কিয়েসা। তবে ৭৩ মিনিটে তার হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৮৪ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বার্নলি। ক্লাবটির মিডফিল্ডার লেসলি উগোচুকু দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠে ছাড়েন।
লিভারপুলকে রুখে দিয়ে এক পয়েন্ট অর্জনের দিকেই এগোচ্ছিল বার্নলি। তবে স্বাগতিকদের দর্শকদের হতাশ হতে হয় ক্লাবটির মিডফিল্ডার হ্যানিবাল মেজব্রির এক হ্যান্ডবলে। বদলি নামা লিভারপুলের ডাচ ডিফেন্ডার জেরেমি ফ্রিমপংয়ের ক্রস ডি-বক্সে হ্যানিবালের কনুইয়ে লাগে। আর তাতেই পেনাল্টি পেয়ে যায় লিভারপুল। স্পট কিক থেকে লক্ষ্যভেদ করতে কোনো ভুল করেননি সালাহ।
আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা। এক বিবৃতিতে বার্সা জানিয়েছে ,চোটের কারণে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে অনিশ্চিত ইয়ামাল। পাশাপাশি সোমবার লা লিগায় ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে থাকছেন না ১৮ বর্ষী স্পেনিয়ার্ড।
দলের গুরুত্বপূর্ণ উইঙ্গারের ইনজুরিতে বেজায় চটেছেন বার্সা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক। রীতিমত স্পেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তের ওপর ক্ষোভ জেড়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, পরবর্তী ম্যাচের জন্য ইয়ামাল ফিট নয়। সে ইনজুরি নিয়েই স্পেনের হয়ে খেলতে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তির ভাস্কর্য উন্মোচন বায়ার্নের |
![]() |
হ্যান্সি ফ্লিকের অভিযোগ, পেইন কিলার খেয়েই স্পেনের হয়ে খেলেছেন ইয়ামান। তিনি বলেন,
'তারা (স্পেন) প্রতিটি ম্যাচে তারা কমপক্ষে তিন গোলে এগিয়ে ছিল। কিন্তু ইয়ামাল দুটি ম্যাচেই ৭৩ ও ৭৯ মিনিট পর্যন্ত খেলেছেন। ম্যাচগুলোর মাঝেই সে ট্রেনিংও করতে পারেননি। এটা কি আসলেই খেলোয়াড়ের যত্ন নেওয়া? এ নিয়ে আমি খুবই হতাশ।’
জাতীয় দলের দায়িত্ব পালনের সময় তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে আরো সতর্ক হওয়া উচিত বলেন ফ্লিক। তিনি বলেন,
‘আমি জাতীয় দলের হয়ে কাজ করেছি, জানি কাজটা কত কঠিন। আমি কখনো তার (দে লা ফুয়েন্তে) সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। বার্তা ছিল একটা, কিন্তু সরাসরি কথা হয়নি। আমার স্প্যানিশ ভালো না, আর তাঁর ইংরেজি ভালো না, হয়তো এটাই একটা সমস্যা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, যোগাযোগটা ভালো হওয়া উচিত। শুধু ইয়ামালই নয়, আমাদের আরও অনেক খেলোয়াড় রয়েছে যারা একই অবস্থা ভোগ করছে।’