
বাবা হিমশিম খেতেন চার সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে। একবেলা পৌরসভায় মালির চাকরি, অন্যবেলায় এলাকার ক্লাবে কিট ম্যান। এতসবের মধ্যেও রোনালদোকে ফুটবলার বানাতে ছিল আপ্রাণ প্রয়াস। সেই বাবা আজকের রোনালদোকে দেখে যেতে পারেননি। যা নিয়ে দ্য গ্রেটের আক্ষেপের অন্ত নেই।
সালটা ১৯৮৫। মাদেইরাতে রোনালদো যখন মায়ের গর্ভে। ডাক্তার বলেছিলেন বাচ্চাটা রাখা মায়ের আর সন্তানের দুজনের জন্যেই ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে মায়ের মন মানেনি কোন ভাবেই। হাজারো অনিশ্চয়তার ভীড়ে নিজের সন্তানকে জন্ম দেন ঠিকই। আর বিশ্ব পায় ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো দস সান্তোস অ্যাভেইরোকে।
সেই দিনের একে একে কত বসন্ত পার হলো। আজকের ৫ ফেব্রুয়ারিতে সংখ্যাটা নাকি ৪০ হলো, রোনালদো? সত্যিই, এসব অবিশাস্য কিছুও বিশ্বাস করতে হয়? আমরা তো আজও সেই তরুণ রোনালদোকেই দেখি। যে গোল করে, গোল করায়। নিত্যনতুন উদযাপন করে দেখায়। আচ্ছা, সংখ্যাটাই স্রেফ বেড়েছে। নাহ বয়স কিন্তু আপনার বাড়ছে না রোনালদো। ওই বয়স নামক বস্তুটা আপনাকে ছুঁতেই পারেনা। তাইতো ওসব চল্লিশ টল্লিশ কেউ গোনে না, আপনার ১০০০ গোলের স্বপ্নে দিবারাত্রি বিভোর ভক্তরা।
মাদেইরায় সেদিন আপনার পরিবার আপনাকে পেয়ে কতটা খুশি হয়েছিল? পরিবারের সবচেয়ে ছোট্ট মেহমান হিসেবে তারা পেয়েছিল আপনাকে। ঘরে তো আরো সন্তান ছিল আপনি কি আলাদা ছিলেন তাদের থেকে? ছিলেন। আপনি তো আলাদাই, সেটা সেদিন কেউ না বুঝলেও আজ গোটা দুনিয়া জানে।
আমরা রোনালদোকে দেখি। রোনালদোর প্রাপ্তি দেখি। দেখি গোল, দেখি রেকর্ড। অথচ রোনালদোর অন্য একটা পাশ রয়েছে। যেখানে থাকে অপ্রাপ্তি নামক শব্দটাও। যেখানে থাকে বাবার সাথে মন খুলে কথা না বলতে পারার আফসোস।
বাবা মাঝে মাঝে স্কুল পরিষ্কারেরও কাজ করতেন। তার জন্য দিনের পর দিন বন্ধুদের থেকে শুনতে হতো খোঁটাও। রোনালদো সবই মনে রেখেছেন। পড়াশোনাটা যে তাকে দিয়ে হচ্ছে না তা বুঝে গিয়েছিলেন আগেই। তার ধ্যান জ্ঞ্যান ছিল ফুটবল, ঘুমোতেও জেতেন ফুটবল কোলে নিয়ে। তারপর একদিন সেই ফুটবলই তো দূর করল তার সব অভাব, দারিদ্র, দুঃখ, কষ্ট।
একদিন কি নিদারুণ অভাব-অনটন কাঁদিয়েছে আপনাকে। কষ্ট দিয়েছে, শিখিয়েছে শক্ত হতে। চার ভাই বোন মিলে বেড়ে উঠেছেন একটা কামরার মধ্যে। গাদাগাদি করে থাকা সেই রাতগুলো? আহ, কেউই দেখেনি সেই অন্ধকারে আপনার আলোয় ঝলমল করা চোখ জোড়াকে। মাদেইরার একটা ছোট্ট ঘর থেকে যে চোখ জোড়া স্বপ্ন দেখেছিল দুনিয়া শাসনের।
রোনালদো প্রায় অনেক ইন্টারভিউতেই আফসোস করে বলেন, নিজের পরিবারে তিনি হীরের টুকরো ছিলেন। বাবা অনেক প্রাউড ফিলও করতেন তাকে নিয়ে। তবে বাবার সাথে কখনও মন খুলে কথা বলা হয়নি। ২০০৫ এ চলে যাওয়া লোকটা এর পরের গল্পটা দেখেননি। তবে রোনালদোর বিশ্বাস, ওপার থেকে ঠিক দেখেন। দুনিয়া জয় করা রোনালদোর এ এক না শেষ হওয়া আক্ষেপের গল্প।
জন্মদিনে আমরা রোনালদোর রেকর্ড দেখি, গোল দেখি, সংখ্যার খেলায় মাতি। আজ নাহয় একটা ছোট্ট শহরের ছোট্ট ছেলের দুনিয়া জয়ের পর তার ভেতের থাকা আফসোসের উপাখ্যান জানলাম। রোনালদো আপনার সে আফসোস এ জগতের কেউই মেটাতে পারবে না। তবে জন্মদিনে একটা শুভেচ্ছাবার্তা রেখে বলতে চাই, আপনি আপনার পরিবারেরই না গোটা দুনিয়ার জলজল করা এক হীরের টুকরো। বয়সের ঘর কেউ মনে রাখবে না। আপনি রোনালদো। বয়স উপাখ্যানটা আপনার জন্য না।
ওই যে আপনি বলেন না, আপনার ভালোবাসা আমাকে শক্তিশালী করে, আপনার ঘৃণা আমাকে অপ্রতিরোধ্য করে।" এই কথার মতোই আপনি যেমন ওদের ঘৃণার কাছে অপ্রতিরোধ্য। তেমনি বয়সের কাছেও।
No posts available.
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:১৩ এম

জয়ের খুব কাছে গিয়েও শেষ মুহূর্তে ধাক্কা খেতে বসেছিল আর্সেনাল। তবে যোগ করা সময়ে প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী গোল আবার ফিরিয়ে দেয় স্বস্তি। গত ম্যাচে অ্যাস্টন ভিলার কাছে হারের পর জয়ের ধারায় ফিরেছে মিকেল আর্তেতার দল।
প্রিমিয়ার লিগে শনিবার রাতে শেষ স্থানে থাকা উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সকে (ওলভস) ২-১ গোলে হারিয়েছে আর্সেনাল। দুই গোলই আসে ওলভসের আত্মঘাতী ভুলে।
এই জয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে ব্যবধান পাঁচ পয়েন্টে বাড়িয়েছে আর্সেনাল। ১৬ ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে, এক ম্যাচ কম খেলা ম্যান সিটির পয়েন্ট ৩১। ১৬ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে ওলভস।
এমিরেটস স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথময়ার্ধে গোল করতে পারেনি কেউই। মাঝমাঠ থেকে বল এগিয়ে নিয়ে গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন হোয়াং হি-চ্যান। তবে ডেভিড রায়ার কাছে সুযোগ নষ্ট করেন। একাধিক সুযোগ নষ্ট করেন আর্সেনালের গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি।
আরও পড়ুন
| রাফিনিয়ার জোড়া গোলে রিয়ালের চেয়ে আরও এগিয়ে বার্সেলোনা |
|
৭০তম মিনিটে ওলভস গোলকিপার স্যাম জনস্টোনের গায়ে লেগে বল জালে জড়ায়। বুকায়ো সাকার কর্নার শট সোজা পোস্টে লেগে ফেরত আসে, ফিরতি বল জনস্টানের গায়ে লেগে গোল হলে এগিয়ে যায় আর্সেনাল।
৯০ মিনিটে টোলু আরোকোদারে গোল করলে সমতায় ফেরে ওলভস। ম্যাচ যখন ড্রয়ের দিকে, তখন যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে সাকার ক্রসে হেড করতে গিয়ে নিজের জালেই বল পাঠান ইয়ারসন মোসকুয়েরা।
বদলি নামা গ্যাব্রিয়েল জেসুসের চাপেই এই ভুল করেন ওলভস ডিফেন্ডার। ঘরের মাঠে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্সেনাল।
রোববার রাত ৮টায় ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে খেলবে ম্যানচেস্টার সিটি। তারা জিতলে আর্সেনালের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমে হবে দুই পয়েন্ট।

টানা দুই ম্যাচে হারের ধাক্কা সামলে জয়ের পথে ফিরেছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। লা লিগায় ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে কঠিন লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন আঁতোয়া গ্রিজমান।
ঘরের মাঠে শনিবার রাতে ভ্যালেন্সিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছে দিয়েগো সিমিওনের দল। আতলেতিকোর হয়ে প্রথম গোলটি করেন কোকে। আর দ্বিতীয়ার্ধে জয়সূচক গোলটি আসে গ্রিজমানের পা থেকে। ভ্যালেন্সিয়ার একমাত্র গোলটি করেন লুকাস বেলত্রান।
ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ার শঙ্কায় পড়ে আতলেতিকো। প্রথম মিনিটেই হুগো দুরোর শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। এরপর ধীরে ধীরে ছন্দে ফেরে স্বাগতিকরা।
১৭ মিনিটে কর্নার থেকে আসা বল গোলকিপার ঠিকমতো সামলাতে না পারায় সুযোগ পেয়ে যান কোকে, তার নিচু শটে এগিয়ে যায় আতলেতিকো।
আরও পড়ুন
| রাফিনিয়ার জোড়া গোলে রিয়ালের চেয়ে আরও এগিয়ে বার্সেলোনা |
|
৩৪ মিনিটে গোল করে ভ্যালেন্সিয়া, তবে পেপেলুর গোলটি ভিএআরের সিদ্ধান্তে অফসাইডে বাতিল হয়।
বিরতির পর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে ভ্যালেন্সিয়া। ৬৩ মিনিটে দলীয় আক্রমণ থেকে দুর্দান্ত শটে লুকাস বেলত্রান গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান।
আতলেতিকোর ওপর চাপ বাড়লেও অভিজ্ঞ গ্রিজমান ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ফেরান। ৭৪ মিনিটে মার্ক পুবিলের লম্বা পাস থেকে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে গোল করেন ফরাসি তারকা। শেষ পর্যন্ত পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে আতলেতিকো।
এই জয়ে আবারও শিরোপা দৌড়ে ফিরল আতলেতিকো। ১৭ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে আতলেতিকো। এক ম্যাচ কম খেলে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ১৭ নম্বরে ভ্যালেন্সিয়া।

প্রথমার্ধে বেশ কিছু সুযোগ নষ্টের পরও শেষ পর্যন্ত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছেই রেখেছিল বার্সেলোনা। আর দ্বিতীয়ার্ধে রাফিনিয়ার জোড়া গোলে সহজ জয়ই পেয়েছে হানসি ফ্লিকের দল।
ক্যাম্প ন্যুতে শনিবার রাতে ওসাসুনাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। ম্যাচের দুই গোলই আসে দ্বিতীয়ার্ধে। ৭০ মিনিটে প্রথম গোল করেন রাফিনিয়া। আর ৮৬ মিনিটে তার দ্বিতীয় গোলে জয় নিশ্চিত হয় কাতালানদের।
প্রথমার্ধে একের পর এক আক্রমণ করেও গোলের দেখা পায়নি বার্সেলোনা। ২৩ মিনিটে ফেরান তোরেসের একটি গোল ভিএআরের সিদ্ধান্তে বাতিল হয়।
আরও পড়ুন
| প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে রেকর্ড সালাহর |
|
৪০ মিনিটে লামিন ইয়ামালের ক্রস থেকে পাওয়া সুযোগেও গোল করতে ব্যর্থ হন তোরেস। দূরপাল্লার শটে গোলের চেষ্টা করেছিলেন এরিক গার্সিয়াও, সেটিও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গোল করতে ব্যার্থ হন ইয়ামাল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মার্কাস রাশফোর্ডের নেওয়া ফ্রি-কিক ওসাসুনার গোলকিপার সার্জিও হেরেরা ঠেকিয়ে দেন।
অবশেষে ৭০ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে পেদ্রির দুর্দান্ত দৌড় ও নিখুঁত পাসে সুযোগ পেয়ে নিচু করে নেওয়া শটে গোল করেন রাফিনিয়া। গোল হজমের পর কিছুটা সামনে উঠে আসে ওসাসুনা। তাতে আরও সুযোগ পায় বার্সেলোনা।
৮৬ মিনিটে জুল কুন্দের ক্রস প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে রাফিনিয়ার সামনে এলে সহজ সুযোগ কাজে লাগান তিনি।
দুই গোলে এগিয়ে গিয়ে জয় নিশ্চিত করে বার্সেলোনা। এই জয়ের ফলে লিগে টানা সাত ম্যাচ অপরাজিত থাকল কাতালানরা।
১৭ ম্যাচে ৪৩ নিয়ে শীর্ষস্থান মজবুত করল বার্সেলোনা। ১৬ ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে রিয়াল মাদ্রিদ। ১৬ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ১৬ নম্বরে ওসাসুনা।

শুরুর একাদশে জায়গা হারিয়েছে আগেই। ছন্দহীনতার সঙ্গে মুখ ফসকে বিতর্কিত কথা বলে আলোচনায় ছিলেন। সবকিছু মিলিয়ে তীব্র হতাশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন মোহাম্মদ সালাহ।
আজও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে তাকে বেঞ্চে রেখে মাঠে নামে আর্নে স্লটের দল। তবে ব্রাইটনের বিপক্ষে ম্যাচের ২৬ মিনিটে চোট পেয়ে জোসেফ গোমেজ মাঠ ছাড়লে বদলি নামেন সালাহ। এরপর দলের দ্বিতীয় গোলে করেছেন অ্যাসিস্ট। আর তাতেই দারুণ এক রেকর্ডের মালিক বনে গেলেন মিশরীয় ফরোয়ার্ড।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এখন নির্দিষ্ট কোনো ক্লাবের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলে অবদান রাখা ফুটবলার সালাহ। সর্বাধিক গোল-ইনভলভমেন্টের রেকর্ড নিজের নামে লেখেন। অ্যান ফিল্ডের ক্লাবটির হয়ে ২৭৭টি গোলে অবদান রেখেছেন সালাহ। ১৮৮ গোল এবং ৮৯ অ্যাসিস্ট করে এই তারকা ফরোয়ার্ড ছাড়িয়ে গেলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি ওয়েইন রুনিকে। সাবেক এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড ম্যান ইউনাইটেডের জার্সিতে ১৮৩ গোল ও ৯৩টি অ্যাসিস্ট করেছেন।
ব্রাইটনের বিপক্ষে আজ বদলি নেমে গোলের সহায়তা ছাড়াও ম্যাচের বাকি সময় দারুণ খেলেছেন সালাহ। গোলের লক্ষ্যে তিনটি শট নিয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। এছাড়া পাঁচটি সুযোগ তৈরি করেছেন।
শেষ দিকে গোলও পেতে পারতেন সালাহ। কিন্তু ফেদেরিকো চিয়েসার পাস ছয় গজ বক্সের বাইরে ফাঁকায় পেয়ে উড়িয়ে মারেন গত মৌসুমের গোল্ডেন বুট জয়ী।
গোল না পেলেও ম্যাচ শেষে সালাহর মুখে দেখা যায় স্বস্তির হাসি। দর্শকসারি থেকেও দারুণ সমর্থন পান তিনি। গ্যালারিতে অনেকের হাতে ছিল তার নামের জার্সি, কারো হাতে ব্যানার। গ্যালারির কাছে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ধরে সমর্থকদের ভালোবাসার জবাবে হাততালি দেন সালাহ।
সবশেষ লিভারপুলের হয়ে পুরো ৯০ মিনিট খেলেছেন গত ২৭ নভেম্বর পিএসভি আইন্দোভেনের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে তাঁর দল হারে ৪-১ গোলে। সালাহ নিজেও ছিলেন নিষ্প্রভ। এরপর ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে ম্যাচে ছিলেন না স্কোয়াডেই। সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করা ম্যাচে বদলি নামেন।
লিগে লিডসের মুখোমুখি হওয়া লিভারপুল দল থেকে আবার জায়গা হারান। পরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও সালাহকে ছাড়া ইতালি সফর করে স্লটের দল। অবশেষে আজ বদলি নেমে অন্তত গোলে অবদান রাখার স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়লেন তিনি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঘরের মাঠে বার্সেলোনার বিপক্ষে বড় জয়ের পর হঠাৎ খেই হারায় চেলসি। কাতালান ক্লাবটির বিপক্ষে ৩-০ গোলে সেই জয়ের পর টানা চার ম্যাচে জয় পায়নি ব্লুজরা। অবশেষে ঘুরে দাড়াল চেলসি।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আজ এভার্টনের বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতেছে চেলসি। নিজেদের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে কোল পালমারের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুন করেন মালো গুস্তো।
একই সময়ে ব্রাইটনকে হারিয়েছে লিভারপুল। চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া অল রেডরা ঘরের মাঠ অ্যান ফিল্ডে জয় পেয়েছে ২-০ গোলে। জোড়া গোল করে লিভারপুলের জয়ের নায়ক হুগো একিতিকে।
এই জয়ের পর পয়েন্ট টেবিলের ছয়ে উঠে এল লিভারপুল। ১৬ ম্যাচে আট জয়, দুই ড্র ও ছয় হারে আর্নে স্লটের দলের পয়েন্ট ২৬। আর লিগে তিন ম্যাচ পর তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়া এঞ্জো মারেস্কার চেলসির পয়েন্ট টেবিলের অবস্থান চার নম্বরে, পয়েন্ট ২৮।
ঘরের মাঠের চেলসি ২১ মিনিটে প্রথম গোল করে। দারুণ এক দলগত প্রচেষ্টায় এগিয়ে যায় চেলসি। গুস্তোর অসাধারণ এক পাস থেকে চমৎকার ফিনিশিংয়ে লিগ মৌসুমের নিজের দ্বিতীয় গোল করেন পালমার।
পিছিয়ে পড়ে কিছুটা আক্রমণাত্বক দেখা যায় এভারটনকে। তবে প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগ না দিয়ে শুরুর অর্ধেই ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় চেলসি। আগের গোলে সহায়তা করা গুস্তো এবার গোলদাতার ভূমিকায়। দ্রুত এক পাল্ট আক্রমণে পেদ্রো নেতোর পাস থেকে ব্যবধান ২-০ করেন ফরাসি রাইট-ব্যাক।
এদিকে অ্যানফিল্ডে মোহাম্মদ সালাহকে বেঞ্চে রেখেই মাঠে নামে লিভারপুল। দলের সবশেষ ম্যাচে তো স্কোয়াডেই ছিলেন না আলোচনায় থাকা মিশরীয় ফরোয়ার্ড। অবশ্য সতীর্থের চোটে সৌভাগ্যবশত ২৬ মিনিটে মাঠে নামেন সালাহ। এরপর লিভারপুলের দ্বিতীয় গোলে অ্যাসিস্টও করেন ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
বল দখলে লিভারপুলের সঙ্গে সমানে সমানে টেক্কা দিয়েছে ব্রাইটন। ৫০ শতাংশ বল নিজেদের কাছে রাখা স্বাগতিকরা গোলের লক্ষ্যে শট নেয় ১৮টি, যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল চারটি। আর ১৩টি শট নেওয়া সফরকারীরা মাত্র একটি লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে।
অ্যান ফিল্ডে বল মাঠে গড়াতে না গড়াতেই লিড নেয় লিভারপুল। ৪৬ সেকেন্ডেই ব্যবধান ১-০ করেন একিতিকে। জোসেফ গোমেজের হেডে বাড়ানো বল থেকে দলকে এগিয়ে দেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের দ্রুততম গোল এটি।
এরপর প্রথামার্ধে পাল্টা আক্রমণে লিভারপুল বেশ কয়েকবার ব্রাইটনের রক্ষণে ভয় ধরিয়ে দেয়। তবে সমতায় ফেরার বড় দুটি সুযোগ হাতছাড়া করে ব্রাইটনই। মিনতেহ ও দিয়েগো গোমেজ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন।
২৬ মিনিটে চোটের কারণে মাঠ ছাড়েন লিভারপুলের ডিফেন্ডার গোমেজ। বদলি নামেন বহুল আলোচিত সালাহ। মিশরের তারকা ফরোয়ার্ডকে মাঠে দেখে অ্যানফিল্ডের দর্শকরা বেশ উচ্ছাস দেখা যায়।
বিরতির পর ৬০ মিনিটে জোড়া গোল পূর্ণ করে লিভারপুলের লিড আরেক দফা বাড়ান একিতিকে। ডান দিক থেকে সালাহর নেওয়া কর্নার লাফিয়ে হেডে জালে জড়ান একিতিকে। এরপর ম্যাচের বাকি সময় রক্ষণভাগে কোনো ভুল না করে তিন পয়েন্ট নিয়েই হাসিমুখে মাঠ ছাড়ে লিভারপুল। লিগে তাদের পরের ম্যাচ টটেনহ্যামের বিপক্ষে। আগামী ২০ ডিসেম্বর টটেনহ্যামের মাঠে আতিথেয়তা নেবে স্লটের দল।