দুই গোলের লিড নিয়ে নির্ভার লিভারপুলের রক্ষণভাগে হঠাৎ হানা দিলেন এন্টোইন সেমেনিও। খুব কম সময়ের মধ্যে দুই গোল শোধ দিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুললেন বোর্নমাউথে খেলা ঘানার ফরোয়ার্ড। তবে শেষ দিকে আবার দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ল লিভারপুল।
লিভারপুলের ঘরের মাঠে এনফিল্ডে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাতে শুরু হয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুম। আসরের প্রথম ম্যাচে বোর্নমাউথকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে প্রিমিয়ার লিগের গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবটি।
পুরো ম্যাচে দাপট দেখিয়েই খেলে লিভারপুল। বোর্নমাউথের হয়ে একা গোল দুইটি করেন সেমেনিও। লিভারপুলের হয়ে স্কোর শিটে নাম তোলেন হুগো একিটিকে, কোডি হাকপো, ফেদরিক চিয়েসা ও মোহামেদ সালাহ।
এনফিল্ডে ম্যাচটি শুরুর আগে গত মাসে গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত দিয়োগো জতার স্মরণে রাখা হয় নানান আয়োজন। সেদিন ২৮ বছর বয়সী জতার সঙ্গে মারা যান তার দুই বছরের ছোট ভাই আন্দ্রে সিলভাও, যিনি নিজেও ছিলেন পেশাদার ফুটবলার।
ম্যাচের ত্রিশ মিনিট হওয়ার কিছুক্ষণ আগে গ্যালারি থেকে কোনো এক দর্শকের থেকে বর্ণবাদী মন্তব্যের অভিযোগ করেন সেমেনিও। তাই দুই অধিনায়ককে নিয়ে সাইডলাইনের কাছে চলে যান রেফারি। বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে খেলা।
পুনরায় খেলা শুরু হলে ৩৭ মিনিটের সময় লিভারপুলকে এগিয়ে দেন একিটিকে। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৪৯ মিনিটে স্কোরলাইন দ্বিগুণ করেন হাকপো।
এরপরই সেমেনিওর ঝড়। ৬৪ মিনিটের মাথায় একটি গোল শোধ করেন ঘানার ফরোয়ার্ড। ১২ মিনিট পর একক নৈপুণ্যে চমৎকার এক গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান সেমেনিও। মুহূর্তের জন্য নিস্তব্ধতা নেমে আসে এনফিল্ডের ভরা গ্যালারিতে।
নির্ধারিত সময়ের ২ মিনিট বাকি থাকতে আবার স্বাগতিকদের উল্লাস। ডি-বক্সের ভেতর বোর্নমাউথের খেলোয়াড়রা হেডে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ভলিতে জালে পাঠান ৮২ মিনিটের সময় বদলি নামা চিয়েসা।
পরে অতিরিক্ত যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে বোর্নমাউথের জালে হালি পূরণ করেন সালাহ। প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের হয়ে এ নিয়ে ১০ মৌসুমের ৯টিতেই প্রথম ম্যাচে জালের দেখা পেলেন মিশরের তারকা ফুটবলার।
প্রিমিয়ার লিগে মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই বর্ণবাদের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রাতে আনফিল্ডে লিভারপুলের বিপক্ষে খেলা চলাকালীন গ্যালারি থেকে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন বোর্নমাউথের ঘানাইয়ান ফরোয়ার্ড অঁতোয়ান সেমেনিও, এমন অভিযোগ তোলেন তিনি নিজেই।
২-০ গোলে পিছিয়ে ছিল বোর্নমাউথ। ২৫ বছর বয়সী সেমেনিও দ্বিতীয়ার্ধে ১২ মিনিটের মধ্যে দুটি গোল করেন, যার সৌজন্যে বোর্নমাউথ অল্প সময়ের জন্য সমতায় ফেরে। যদিও শেষ দিকে লিভারপুল দুই গোল করে ৪-২ ব্যবধানে জয় তুলে নেয়।
মার্সিসাইড পুলিশ জানায়, ৪৭ বছর বয়সী এক দর্শককে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে সেমেনিওকে উদ্দেশ করে বর্ণবাদী মন্তব্য করার অভিযোগে তদন্ত চলছে।
পুলিশ কর্মকর্তা কেভ চ্যাটারটন বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখি। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ক্লাবের সঙ্গে সমন্বয় করে ফুটবল ব্যানিং অর্ডার জারির চেষ্টা করা হবে।’
ম্যাচের পর ইনস্টাগ্রামে সেমেনিও বর্ণবাদ বিরোধী বার্তায় লিখেছেন, ‘এটা বন্ধ হবে কবে?’
প্রথমার্ধের ২৯তম মিনিটে লিভারপুল কর্নার নেওয়ার আগে সেমেনিও বিষয়টি রেফারি অ্যান্থনি টেইলরকে জানান। খেলা থেমে যায় চার মিনিটের জন্য। এরপর দুই দলের কোচ ও অধিনায়ক ভার্জিল ভ্যান ডাইক ও অ্যাডাম স্মিথকে ডেকে জানান রেফারিকে।
বোর্নমাউথ অধিনায়ক স্মিথ ঘটনাটিকে ‘চমকে দেওয়ার মতো’ বলে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি স্কাই স্পোর্টসকে বলেন, ‘পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এমন ঘটনা ঘটে-বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। আমি জানি না অঁতোয়ান কীভাবে খেলা চালিয়ে গেছে এবং এর পরও গোল করেছে। ওর মন খারাপ, কিন্তু কিছু একটা অবশ্যই করতে হবে। হাঁটু গেড়ে প্রতিবাদে কোনো কাজ হয়নি। আমরা ওর পাশে আছি।’
সতীর্থের প্রশংসা করে স্মিথ আরও বলেন, ‘আমি হলে গোল করার পর সরাসরি ওই জায়গায় প্রতিক্রিয়া জানাতাম। কিন্তু ও রেফারিকে জানিয়েছে, তারপর খেলায় মন দিয়েছে। সত্যিই প্রশংসনীয়। আমার ভেতরে এখন কেবল রাগ।’
স্মিথ দাবি করেন, দোষী দর্শককে দ্রুত সরানোর অনুরোধ করেন রেফারিকে। পুলিশ পরে তা করেছে। তিনি বলেন, ‘লিভারপুলের খেলোয়াড়েরা আমাদের সমর্থন দিয়েছে। প্রিমিয়ার লিগও এ নিয়ে সিরিয়াস আলোচনা করেছে। কিন্তু এরপরও বারবার হচ্ছে। পুরো দেশ দেখছে—লজ্জাজনক।’
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আনফিল্ডে দর্শকদের উদ্দেশে বর্ণবাদবিরোধী বার্তা পাঠ করা হয়। ম্যাচ শেষে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে জানায়, লিভারপুল ও বোর্নমাউথের ম্যাচ চলাকালে দর্শক গ্যালারির দিক থেকে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ ধরনের ঘটনার কোনো স্থান নেই ফুটবলে। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লিভারপুল ক্লাবও বিবৃতিতে জানায়, আমাদের খেলায় বর্ণবাদ বা বৈষম্যের কোনো স্থান নেই। চলমান পুলিশের তদন্তে আমরা পূর্ণ সমর্থন দেব।
লিভারপুল কোচ আরনে স্লট বলেন, ‘এটা আমরা একেবারেই চাই না। বিশেষ করে আনফিল্ডে যেন এমন কিছু না ঘটে। সমর্থকেরা দারুণ পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল, বিশেষ করে দিয়োগোকে ঘিরে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে। কিন্তু এ ঘটনা ম্যাচের আনন্দ কিছুটা নষ্ট করেছে।’
প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচ সেন্টার সামাজিক মাধ্যমে জানায়, অঁতোয়ান সেমেনিওর উদ্দেশে দর্শক গ্যালারি থেকে বৈষম্যমূলক মন্তব্য আসার কারণে খেলা কিছু সময়ের জন্য থেমে যায়। ঘটনাটি লিগের মাঠের ভেতরে বৈষম্যবিরোধী প্রটোকল অনুযায়ী হয়েছে। বিষয়টি এখন তদন্তাধীন।
বর্ণবাদবিরোধী দাতব্য সংস্থা ‘কিক ইট আউট’ বিবৃতিতে জানায়, মৌসুমের প্রথম প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচেই বোর্নমাউথের অঁতোয়ান সেমেনিও বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হয়েছেন। মাত্র দুই দিন আগে টটেনহামের মাথিস টেল অনলাইনে বর্ণবাদী হামলার শিকার হয়েছিলেন। প্রতি সপ্তাহেই কালো বর্ণের খেলোয়াড়দের এভাবে আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে। আমরা অঁতোয়ানের পাশে আছি এবং এ অবস্থায় খেলে গোল করায় তাঁর সাহসের প্রশংসা করছি।
তাদের মতে, রেফারি অ্যান্থনি টেইলর ও তাঁর সহকারীরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। কিন্তু ফুটবল থেকে এই জঘন্য আচরণ পুরোপুরি তাড়াতে এখনো অনেক পথ বাকি।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর চূড়ান্ত হয়েছে লিওনেল মেসির ভারত সফরের দিনক্ষণ। দেশটির চার শহরে ঘুরতে ১২ ডিসেম্বর ভারতে আসবেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা।
‘গোট (গ্রেটেস্ট অব অল টাইম) ট্যুর অব ইন্ডিয়া ২০২৫’ নামের এই সফরের শুরু হবে ১২ ডিসেম্বর। প্রথমে কলকাতায় যাবেন মেসি। এরপর আহমেদাবাদ, মুম্বাই ও দিল্লিতে যাওয়ার কথা রয়েছে তার।
ভারতের সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) এই খবর নিশ্চিত করেছেন ইভেন্ট প্রমোটার শতাদ্রু দত্ত। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ২৮ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মেসি নিজেই এই সফরের ঘোষণা দেবেন।
আরও পড়ুন
মাঠে ফিরছেন মেসি |
![]() |
২০১১ সালের পর এবারই প্রথম ভারতে যাবেন মেসি। সফরের শুরুতে কলকাতায় ২ দিন ও ১ রাত অবস্থান করবেন তিনি। যেখানে ভক্তদের সঙ্গে ‘মিট এন্ড গ্রিট’ সেশন থাকবে। রাখা হবে বিশেষ খাবার ও চায়ের পর্ব।
শতাদ্রু জানিয়েছেন, কলকাতায় মেসির সবসময়ের সবচেয়ে বড় মূর্তি উন্মোচন করা হবে। যা উচ্চতায় হবে ২৫ ফুট ও প্রস্থে থাকবে ২০ ফুট। এর সঙ্গে ইডেন গার্ডেন্স বা সল্ট লেক স্টেডিয়ামে গোট কনসার্ট ও গোট কাপের আয়োজন করা হবে।
ডিসেম্বরের ১৩ তারিখে আদানি ফাউন্ডেশনের আয়োজিত একটি প্রাইভেট অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে আহমেদাবাদে যাবেন মেসি।
পরের দিন মুম্বাইয়ে গিয়ে ব্রাবোর্নের সিসিআই স্টেডিয়ামে হবে ‘মিট এন্ড গ্রিট’ সেশন। আর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে হবে গোট কনসার্ট ও গোট কাপ। এর সঙ্গে অনন্য আয়োজন হবে মুম্বাই প্যাডেল গোট কাপ। যেখানে বিভিন্ন সেলিব্রিটির সঙ্গে ৫-১০ মিনিটের জন্য খেলবেন মেসি।
আরও পড়ুন
রোমাঞ্চকর জয়ে আসর শুরু চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের |
![]() |
মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ‘গোট ক্যাপ্টেন’স মিটে’র কথা ভাবা হচ্ছে। যেখানে ভারতীয় ক্রিকেট দলের তিন অধিনায়ক শচিন টেন্ডুলকার, মহেন্দ্র সিং ধোনি ও রোহিত শর্মার সঙ্গে দেখা হতে পারে মেসির। বলিউড তারকা আমির খান, রানভির সিং ও টাইগার শ্রফরাও থাকতে পারেন সেখানে।
মেসির ভারত সফর শেষ হবে ১৫ ডিসেম্বর। সেদিন নয়া দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করবেন মেসি। ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে এই আয়োজনে বিরাট কোহলি ও শুবমান গিলকে আমন্ত্রণের কথাও ভাবা হচ্ছে।
সিরিয়ান ক্লাব আল কারামাহকে ১-০ গোলে হারিয়ে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের মূলপর্বে এখন বসুন্ধরা কিংস। সেদিন বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে অভিষেক হয় ইংল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশি ফুটবলার কিউবা মিচেলের।
কিউবাকে এখন বাংলাদেশ জাতীয় দলে দেখার অপেক্ষায় সমর্থকরা। তার মধ্যে দারুণ সম্ভাবনা দেখেন তারই সতীর্থ বসুন্ধরা কিংসের জাতীয় দলের রাইট উইঙ্গার রাকিব হোসেন।
আগামী ২৫ অক্টোবর শুরু হবে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের গ্রুপ পর্বের লড়াই। বসুন্ধরা কিংসের তারকা ফুটবলার রাকিব হোসেন শনিবার টি-স্পোর্টসের সঙ্গে আলাপে বলেন, তারা এগিয়ে যেতে চান আরও অনেক দূর।
আরও পড়ুন
ভারতে খেলতে আসবেন রোনালদো! |
![]() |
আল কারামাহ’র বিপক্ষে জয়টা বিদেশের মাটিতে বলেই আরও বেশি উপভোগ করেছেন বলে জানান রাকিব, ‘আসলে খুব ভালো লাগছে। একটা দল হয়ে খেলতে পেরেছি। বিপক্ষ দলও অনেক শক্তিশালী ছিল। সেই সঙ্গে বিদেশের মাটিতে খেলা; তো ম্যাচটা জিতে পুরো দল অনেক উজ্জীবিত।’
বসুন্ধরা কিংস উজ্জীবিত হয় মূলত কাতারে যাওয়ার আগেই। রাকিবের মতে, আগেই তারা টের পেয়ে যান মাঠে অনেক দর্শক আসবে। হয়েছেও তা-ই। দোহার সুহেইম বিন হামাদ স্টেডিয়ামে সিরিয়ান ক্লাবটির চেয়ে বসুন্ধরা কিংসের দর্শকই বেশি ছিল।
“আসলে আমরা যখন বিদেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে খেলতে যাই, তখন অনেক বাংলাদেশি দর্শক, বসুন্ধরা কিংসের দর্শক পাই। এমন হয় যাওয়ার আগেই অনেকে আমাদের নক করে টিকিটের জন্য।”
“তখন থেকেই আমরা বুঝতে পারি মাঠে অনেক দর্শক থাকবে। ওরা মাঠে আমাদের অনেক সাপোর্ট করে। ম্যাচে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ওরা গলা ফাটিয়েছে আমাদের জন্য।”
দর্শকরা উল্লাস করার সুযোগ পেয়ে যায় ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই। এমানুয়েল সানডের গোলে লিড নেয় কিংস। এরপর ওই গোলের লিড ধরে রেখেই মাঠ ছাড়ে দল। তবে খেলোয়াড়দের মধ্যে লিড বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা ছিল বলেই জানালেন ২৬ বছর বয়সী রাকিব।
“আমরা একটা দল হয়ে খেলতে চেয়েছি, শুধু ডিফেন্সিভ খেলার চেষ্টা করিনি। চেষ্টা করেছি লিড বাড়িয়ে নেওয়ার। সুযোগের অপেক্ষায় থেকেছি।”
দেশের ঘরোয়া মৌসুমে কিংসসহ দলগুলো মাঠে নামবে আগামী মাসে। সবশেষ মৌসুমে দুটি ট্রফি জিতলেও হাতছাড়া হয় লিগ শিরোপা। এবার দল নিয়ে আশাবাদী রাকিব, এই দল নিয়ে জিততে চান সম্ভাব্য সব শিরোপা।
“আমাদের দল অনেক ভালো হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবারের দল আরও শক্তিশালী হয়েছে মনে করি। ইনশাআল্লাহ নতুন মৌসুমে ঘরোয়া সব ট্রফি জিতব।”
নতুন মৌসুমে কিংস দলে ভিড়িয়েছে এমানুয়েল সানডে, টনি, ইমন শাহরিয়ার, নাবীব নেওয়াজ জীবন এবং কিউবা মিচেলদের মতো ফুটবলারদের। কিউবার তো কিংসের জার্সিতে অভিষেক হয়েছে দোহার ওই ম্যাচেই। এখন তিনি দলের সঙ্গে রয়েছেন। অপেক্ষায় আছেন কিংসের হয়ে বাংলাদেশের মাটিতে অভিষেকের।
আরও পড়ুন
অবশেষে অনূর্ধ্ব-২৩ দল ঘোষণা |
![]() |
তাকে নিয়ে বাড়তি প্রত্যাশা রাকিবের।
“আসলে ও (কিউবা মিচেল) অনেক ভালো মানের খেলোয়াড়, একইসঙ্গে ভালো মনের মানুষ। ওর সঙ্গে কয়েকদিনের মধ্যে আমাদের ভালো একটা বোঝাপড়া হয়েছে। দুই দিন ধরে এখানে আছি, তো সম্পর্কটা বন্ধুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে।”
বাংলাদেশের আবহাওয়ায় খেলতে মানিয়ে নিতে কিছুটা কষ্ট হলেও সেটি কিউবা পারবেন বলেই বিশ্বাস রাকিবের”
“ওর (কিউবা) একটু থাকতে কষ্ট হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশে অনেক গরম। কাতারে যখন খেলেছি সেখানে বাংলাদেশের চেয়েও বেশি গরম ছিল। তবে ও (কিউবা) যদি এসবে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে তবে মনে করি বাংলাদেশে অনেক ভালো করবে।”
ভারতের জন্য ঐতিহাসিক এক উপলক্ষ্যের জন্ম দেওয়ার সামনে দাঁড়িয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের (এসিএল) ম্যাচ খেলতে ভারত সফর করতে পারেন পর্তুগিজ সুপারস্টার।
এসিএলের নতুন মৌসুমের গ্রুপ পর্বের ড্র অনুষ্ঠিত হয় শুক্রবার। যেখানে 'ডি' গ্রুপে রোনালদোর ক্লাব আল নাসরের সঙ্গে পড়ে ভারতের এফসি গোয়া, তাজিকিস্তানের ইস্তিকলল ও ইরাকের আল জাওরা। তাই গ্রুপ পর্বের অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে ভারতে যেতে হবে আল নাসরের।
আরও পড়ুন
রোনালদোর জোড়া গোল, তবু জিততে পারল না আল নাসর |
![]() |
ভারতের এফসি গোয়ার কাছে তাদের দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ফুটবল ম্যাচ। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্লাবটির প্রধান নির্বাহী রবি পুস্কুর বলেছেন এই কথা।
“এফসি গোয়ার জন্য এটি সত্যিই জীবনে একবারই আসার মতো এক অনন্য মুহূর্ত। আল নাসর ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে স্বাগত নিঃসন্দেহে ভারতীয় ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ম্যাচগুলোর একটি।”
“ভারতীয় ফুটবলের জন্যও এটি ঐতিহাসিক। আমরা আমাদের যোগ্যতায় এখানে পৌঁছেছি। এই ধরনের ম্যাচগুলো আমাদের সুযোগ করে দেয়, আমাদের প্রমাণ করার জন্য যে আমরা মহাদেশীয় পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি।”
রোনালদো ছাড়াও আল নাসরে আছেন সাদিও মানে, হোয়াও ফেলিক্স, অ্যামেরিক লাপোর্তে, ইনিগো মার্তিনেজের মতো তারকা ফুটবলাররা। তারা ভারতে খেলতে এলে নিঃসন্দেহে দেশটির জন্য বড় একটি উপলক্ষ্য হবে সেটি।
আরও পড়ুন
জাতীয় দলের পর ক্লাবেও রোনালদোর সতীর্থ হচ্ছেন ফেলিক্স |
![]() |
তবে রোনালদোর এই ম্যাচ খেলতে আসা নিয়ে কিছুটা সংশয় থাকছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, আল নাসরের সঙ্গে রোনালদোর চুক্তিতে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অ্যাওয়ে ম্যাচগুলো খেলার বাধ্যবাধকতা নেই।
অর্থাৎ রোনালদো চাইলে এসিএলে শুধু আল নাসরের হোম ম্যাচগুলোই খেলতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিনি কী সিদ্ধান্ত নেন, সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা।
চলতি মাসের প্রথম দিন রাজধানীর একটি হোটেলে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ক্যাম্প শুরু করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের জন্য ১৯ জনের প্রাথমিক দল নির্বাচনও করা হয়।
তবে সেই আংশিক দলের তালিকা সংবাদ মাধ্যমকে জানায়নি ফেডারেশন। বিভিন্ন ক্লাবে পাঠানো ১৯ জনের তালিকা অবশ্য গোপনও থাকেনি।
গত ১২ আগস্ট এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচ খেলে আবাহনী। ম্যাচ শেষে আবাহনীর আল-আমিন, মোরছালিন, মিরাজুল ইসলামরা যোগ দেন অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ক্যাম্পে। একই দিন দোহায় মাঠে নামে বসুন্ধরা কিংস। এরপর কিংসের তিন ফুটবলার- রিমন, মজিবর রহমান জনি, মেহেদি হাসান শ্রাবণরা সরাসরি বাহরাইনে যোগ দেন দলের সঙ্গে।
দেশ ছাড়ার আগে বুধবার সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হেড কোচ সাইফুল বারী টিটু, ডিফেন্ডার শাকিল আহাদ তপু এবং টিম ম্যানেজার শাহীন হাসান। পরের দিন বৃহস্পতিবার দেশ ছাড়ে দল। ওই দিনও সংবাদমাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দল নিয়ে কিছুই খোলাসা করেনি বাফুফে।
এ নিয়ে তুমুল আলোচনা হয় ফুটবল অঙ্গনে। কারণ এর আগে ক্যাম্পে কতজন রিপোর্ট করলেন কিংবা পূর্ণাঙ্গ দলে কারা সুযোগ পেলেন, সেসব জানিয়ে দেওয়া হতো। কিন্তু অনূর্ধ্ব-২৩ দলের বেলায় দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।
তবে দেরিতে হলেও অবশেষে শুক্রবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দল প্রকাশ করেছে বাফুফে।
এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের গ্রুপে আছে স্বাগতিক ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর ও ইয়েমেন। বাছাইয়ে ১১ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও সেরা চার রানার্সআপ দল পাবে মূলপর্বের টিকিট।
আগামী বছর সৌদি আরবে হবে অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপ। এই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে ১৪ থেকে ২৬ আগস্ট বাহরাইনে থাকবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল। সেখানে বাহরাইন অনূর্ধ্ব-২৩ দলের সঙ্গে ১৮ ও ২২ আগস্ট দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে তারা।
বাহরাইন থেকে দেশে ফিরে ২৯ আগস্ট ভিয়েতনামের উদ্দেশে রওনা হবে বাংলাদেশ দল।
২৪ সদস্যের অনূর্ধ্ব-২৩ দল
মেহেদি হাসান শ্রাবণ, সাকিব আল হাসান, মো. ইউসূফ, মো. আসিফ, জাহিদ হাসান শান্ত, শাকিল আহাদ তপু, কামাচাই মারমা, মো. সাব্বির হোসেন, রিমন হোসেন, রাজন হাওলাদার, জায়ান আহমেদ, মিঠু চৌধুরী, মজিবর রহমান জনি, শেখ মোরছালিন, আশরাফুল হক আসিফ, ফাহমিদ সালিক, সাজেদ হাসান জুম্মন নিজুম, মহসীন আহমেদ, আরমান ফয়সাল আকাশ, রাজু আহমেদ জিসান, রফিকুল ইসলাম, মিরাজুল ইসলাম, রাব্বি হোসেন রাহুল, পিয়াস আহমেদ নোভা ও আল আমিন।