৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:৫৭ পিএম

রিয়াল মাদ্রিদে নয় মৌসুম কাটিয়ে ভূরিভূরি রেকর্ড করেছেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। পর্তুগিজ মহাতারকাকে প্রায়ই বলতে শোনা যায়, ‘আমি রেকর্ড তাড়া করি না, রেকর্ডই আমার পেছনে ঘুরে।’ ইউরোপের সবচেয়ে সফল ক্লাব রিয়ালের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলারও ‘সিআর সেভেন’। স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটি থেকে রোনালদো বিদায় নেওয়ার পর অনেকেই সন্দিহান ছিল, আদৌ কি কোনো ফরোয়ার্ড ক্লাবটিতে নাম লেখাবেন, যিনি এতসব রেকর্ড নতুন করে লিখবেন?
গত মৌসুমেই রিয়াল রোনালদোর উত্তরসূরি পেয়েছে। বর্তমান ফুটবল বিশ্বের অন্যতম সেরা তারকা কিলিয়ান এমবাপে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ক্লাবটিতে নাম যোগ দেওয়ার পর একটা কাজ নিয়মিতই করে যাচ্ছেন। গোল, গোল আর গোল। চলতি মৌসুমে তো বলতে গেলে ক্যারিয়ারের সেরা ছন্দেই আছেন ফরাসি তারকা ফরোয়ার্ড। গোলের বন্যা বইয়ে দেয়া ২৬ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড এতটাই উড়ন্ত ছন্দে আছেন যে, ইতিহাসের অন্যতম সেরা রোনালদোর কয়েকটি রেকর্ড হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছেন।
এক বর্ষ পঞ্জিকায় রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সর্বাধিক গোল
রোনালদোর ক্লাব ক্যারিয়ারে সেরা একটি বছর ছিল ২০১৩। ওই বছর রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৫৯ গোল করেন আল নাসরের ফরোয়ার্ড। গত ১২ বছর ধরে সেই রেকর্ড অক্ষত ছিল। কিন্তু এবার সেটি ভাঙার খুব কাছে চলে এসেছেন এমবাপে।
সবশেষ গত ৪ ডিসেম্বর লা লিগায় অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে জোড়া গোল করেন এমবাপে। তাতে এ বছর ফরাসি তারকার রিয়ালের হয়ে মোট গোলসংখ্যা দাড়াল ৫৬। ২০২৫ সালে এখনো চারটি ম্যাচ বাকি আছে এমবাপের ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের। সম্প্রতি মাঠে নেমে যে ধারায় গোল করে যাচ্ছেন তিনি, তাতে রোনালদোর রেকর্ড যে আর অক্ষত থাকছে না সেটা অনেকটাই নিশ্চিত।
এক বর্ষ পঞ্জিকায় ক্লাব–দেশ মিলিয়ে গোলসংখ্যা
২০১৩ সালেই ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে মোট ৬৯ গোল করেছিলেন রোনালদো। যা এখনো তাঁর ক্যারিয়ারের রেকর্ড সর্বোচ্চ। ২০২৫ সালের এমবাপে রোনালদোর এই রেকর্ডটিও ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে আছেন। তাঁর গোলসংখ্যা এখন ৬২। সেজন্য নিজের পরের চার ম্যাচে তাকে করতে হবে আট গোল।
এক মৌসুমে লা লিগায় সর্বাধিক গোল
এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত লা লিগায় ১৫ ম্যাচে ১৬ গোল করেছেন এমবাপে। গড়ে প্রতি ৮১.৭ মিনিটে একটি করে গোল তাঁর। রোনালদো লা লিগায় এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ছুঁতে হলে বাকি ২৩ ম্যাচে তাকে আরও ৩৩ গোল করতে হবে। বর্তমান ছন্দ বিবেচনায় তা মোটেও অসম্ভব নয়।
মৌসুমের বাকি প্রতিটি মিনিটে যদি ফরাসি তারকা মাঠে থাকতে পারেন, তাহলে রোনালদোর ২০১৪–১৫ মৌসুমে করা ৪৮ গোলের রেকর্ড টপকাতে হলে এমবাপেকে প্রতি ৬২.৭ মিনিটে একটি করে গোল করতে হবে।
এক মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বাধিক গোল
রোনালদোকে তাঁর অনেক ভক্তই মিস্টার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বলে থাকেন। ইউরোপ সেরার এই প্রতিযোগিতায় নিয়মিতই রুদ্ররূপ দেখা যেত পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর। ২০১৩–১৪ মৌসুমে রোনালদো চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৭ গোল করেছিলেন রোনালদো—এক মৌসুমে যা এখনো সর্বোচ্চ।
এরপর অনেকেই রোনালদোর এই রেকর্ডের আশেপাশে পৌঁছেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে টপকাতে পারেননি কেউই। আর্লিং হলান্ড ও রবার্ট লেভানডফস্কির মতো তারকারা এই রেকর্ডের কাছাকাছি গিয়েও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন।
চলতি মৌসুমের দুর্দান্ত শুরু পাওয়া এমবাপের সামনে ইতিহাস গড়ার দারুণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। ২০২৫-২৬ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এরইমধ্যে পাঁচ ম্যাচে রিয়াল ফরোয়ার্ডের গোল ৯টি। রোনালদোর রেকর্ড স্পর্শ করতে আরও ৮, আর ছাড়িয়ে যেতে ৯ গোল লাগবে। অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নতুন ফরম্যাটে রোনালদোর চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছেন এমবাপে।
এ মৌসুমে এমবাপে ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্যের টুর্নামেন্টে যেভাবে গোল করে চলছেন এমবাপে, সেই হার ২০১৩–১৪ সালের রোনালদোর চেয়েও দ্রুত। এখন পর্যন্ত ইউরোপে তিনি প্রতি ৪৮.৮ মিনিটে একটি গোল করছেন, যেখানে রোনালদো ওই মৌসুমে করতেন প্রতি ৫৮.৪ মিনিটে একটি।
সবশেষ মৌসুমেও দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন এমবাপে। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে সর্বোচ্চ গোল করে জিতেছিলেন ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট। তবে তাঁর দারুণ ছন্দ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় রিয়াল মাদ্রিদ। ২০২৪-২৫ মৌসুমে লস ব্লাঙ্কোসরা কোনো শিরোপা জেতা ছাড়াই মৌসুম শেষ করে।
No posts available.
৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:২০ পিএম
৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:০৫ পিএম
৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২:৪৭ পিএম

বাংলাদেশ ফুটবল লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। তবে দল বদলের মৌসুমে সেভাবে ঘর গোছাতে পারেনি তারা। মৌসুম শুরুর পর মাঠের বাইরের বহুমুখী সমস্যায় সাদা-কালোরা। তার প্রভাব পড়ে মাঠেও। চার রাউন্ডের মধ্যেই হার, জিত, ড্র- সব অভিজ্ঞতার স্বাদ নিতে হয়েছে মতিঝিল পাড়ার ক্লাবটিকে। তাতে জায়গা হয়েছে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে। তবে পঞ্চম রাউন্ডে এসে দারুণ এক জয় তুলে নিয়ে লিগ টেবিলের সেরা চারে ঢুকলো আলফাজ আহমেদের দল। পিডব্লিউডি স্পোর্টস ক্লাবের বিপক্ষে বড় জয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন স্যামুয়েল বোয়াটেং। মৌসুমেও এটি প্রথম হ্যাটট্রিক।
বাংলাদেশ ফুটবল লিগের (বিএফএল) খেলায় আজ শনিবার কুমিল্লার ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় মোহামেডান ও পিডব্লিউডি। সেখানে ৪-০ গোলে জয় পেয়েছে সাদা-কালোরা। বোয়েটেংয়ের হ্যাটট্রিক বাদে অন্য গোলটি করেছেন মুজাফ্ফর মুজাফ্ফরভ।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে সুমন দাসের সঙ্গে সংঘর্ষে স্যামুয়েল বোয়াটেং বক্সের ভেতর পড়ে গেলে মোহামেডানের পক্ষে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পটকিক থেকে গোলের খাতা খুলতে তাই কোনো ভুল করেননি উজবেক মিডফিল্ডার মুজাফ্ফর মুজাফ্ফরভ।
পরের গল্পটা কেবল বোয়াটেংয়ের। গত মৌসুমে রহমতগঞ্জে খেলে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়া এই ফরোয়ার্ড এবার নাম লিখিয়েছেন সাদা-কালো জার্সিতে। বিরতির পর আলো ছড়ান তিনি। ৬৭ মিনিটে মোহাম্মদ রাতুল ও পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা গোলওকিপার অনিক আহমেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হলে ফায়দা লুটেন বোয়াটেং। বক্সের বাইরে থেকে ফাঁকা পোস্টে বল জালে পাঠাতে অসুবিধা হয়নি তাঁর।
৭৭ মিনিটে আবারও পিডব্লিউডির ভুলের সূত্র ধরে আবারও ব্যবধান বাড়ান বোয়াটেং। সাফিউল হোসেনের চিপে দুই ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে কোনাকুনি শটে জাল কাঁপান তিনি। ৮২ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ঘানার এই ফরোয়ার্ড। এবারও পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে দলকে বিপাকে ফেলেন অনিক। বক্সের ভেতর তাই দ্রুতই বোয়াটেংকে পাস দেন জুয়েল মিয়া। নিখুঁত প্লেসমেন্টের পর উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন বোয়াটেং।
পাঁচ খেলায় দুই পরাজয়, এক ড্র এবং দুটিটিতে জয়ের সুবাদে ৭ পয়েন্ট এখন মোহামেডানের। তাতে টেবিলের চারে উঠে আসলো মতিঝিল পাড়ার দলটি। সমান খেলায় ১৩ পয়েন্ট পেয়ে শীর্ষে আছে বাংলাদেশ ফুটবল লিগের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। দুই ও তিনে থাক রহমতগঞ্জ ও ফর্টিসের পয়েন্ট ১০ ও ৮।

লিগের প্রথম তিন ম্যাচে জয়হীন থাকার পর আগের ম্যাচে বাংলাদেশ পুলিশ এফসিকে ২-০ গোলে হারায় ঢাকা আবাহনী। কিন্তু প্রথম জয় তুলে নেওয়ার পর সেই ধারা অব্যাহত রাখতে পারেনি আকাশি-নীলরা। এবার তারা পয়েন্ট হারিয়েছে ফর্টিস এফসির কাছে।
বাংলাদেশ ফুটবল লিগের (বিএফএল) খেলায় আজ শনিবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় আবাহনীকে মোকাবিলা করে ফর্টিস। পঞ্চম রাউন্ডের এই ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। এই ম্যাচে একাধিক আক্রমণ করেও কোনো দল পায়নি গোলের দেখা। অবশ্য দুই দিকের গোলপোস্টের নিচে একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় যেন মগ্ন ছিলেন আবাহনীর গোলকিপার মিতুল মারমা ও ফর্টিসের গোলকিপার সুজন পেরেইরা।
সর্বশেষ মৌসুমে সেরা লিগের সেরা গোলকিপার হয়েছিলেন মিতুল মারমা। চলতি মৌসুমে অবশ্য ৫ ম্যাচে ৫ গোল হজম করেছে তার দল আবাহনী। এদিকে ফর্টিসের সুজন পেরেইরা ৫ ম্যাচে মাত্র দুটি গোল হজম করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে গোলকিপিংয়ে দুজনের দ্বৈরথটা দেখার মতো হতে পারে।
আরও পড়ুন
| ২০২৬ বিশ্বকাপে অনিশ্চিত নেইমার, বদলে গেল আনচেলত্তির সুর |
|
এদিন শেখ মোরছালিনকে ছাড়া মাঠে নামে আবাহনী। ফর্টিসও পায়নি তাদের সেরা অস্ত্র পা ওমর বাবুকে। তবে আক্রমণের কমতি ছিল না দুই দলের থেকে। যদিও গোলের সুযোগ বেশি তৈরি করেছিল ফর্টিসই। কখনও নিজেদের ভুলে সুযোগকে গোলে রূপান্তর করা যায়নি, আবার কখনও সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রতিপক্ষের গোলকিপার।
নবম মিনিটে গোলের সুযোগ আসে ফর্টিসের সামনে। সাজেদ হোসেনের নেওয়া কর্ণার কিক ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন আবাহনীর গোলকিপার মিতুল। ফিরতি বলে দলকে হতাশ করেন ফরহাদ।
৩১ মিনিটে বক্সের সামনে থেকে ফর্টিসের ওকাফরের জোড়ালো শট যায় পোস্টের উপর দিয়ে। তিন মিনিট পর বা দিক থেকে উড়ে আসা বল অন টার্গেটে রাখতে পারেননি মিরাজুল।
বিরতির পর আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে ফর্টিস। ৪৮ মিনিটে অবশ্য একটা ভালো সুযোগ তৈরি করে দলটি। এ সময় ছোট কর্নার থেকে সাগরের ক্রসে গোলে হেড নেন ওকাফর। বল জালে প্রবেশের আগে কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করেন মিতুল।
৫৮ মিনিটে জোড়া পরিবর্তন আনেন আবাহনী কোচ মারুফুল হক। আল আমিনের সঙ্গে মাঠে নামান মোহাম্মদ ইবরাহীমকে। উঠিয়ে নেওয়া হয় এনামুল গাজী ও মিরাজুলকে। খানিক পর ওকাফরের দারুণ আক্রমণ, কিন্তু গোলে শট নিতে একটু বেশিই দেরি করে ফেলেন, পরে বল হারান পাপন সিংয়ের কাছে।
৬৫ মিনিটে ভালো সুযোগ মিস করেন ফর্টিসের সাজেদ জুম্মান নিঝুম। ওকাফরের কাছ থেকে বল পান বক্সের একদম সামনে। কিন্তু নিঝুম মেরে বসেন আকাশে। ৭৬ মিনিটে পিয়াস নোভার বদলি হিসেবে শাখাওয়াত রনিকে মাঠে নামান ফর্টিস কোচ।
৮১ মিনিটে ওকাফরকে আবারও গোলবঞ্চিত করেন মিতুল। বা প্রান্ত দিয়ে নিজে বক্সে ঢুকে বল বাড়িয়ে দেন সাজেদ নিঝুমকে। তাঁর ক্রসে গোলমুখের সামনে রনি হেড নিলে ফিরতি বলে ওকাফরের দারুণ শট ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন আবাহনী গোলকিপার।
আরও পড়ুন
| ব্রাজিলের জন্য ‘ম্যাজিক’ নিয়ে অপেক্ষায় স্কটল্যান্ড |
|
৮৬ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সেরা সুযোগটি পায় আবাহনী। প্রতি আক্রমণে বল নিয়ে উপরে ওঠেন দিয়াবাতে। বক্সে ঢুকে ডান পায়ের আড়াআড়ি নিচু শট নেন মালির এই ফরোয়ার্ড। তবে ফর্টিসের নেপালি গোলকিপার সুজান পেরেইরা ডান দিকে ঝাপিয়ে ঠেকান। ইনজুরি সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ওকাফরের শট কাঁপায় বাইরের জাল। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র মেনে মাঠ ছাড়ে দুই দল।
দিনের অপর খেলায় গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্স ক্লাবের সঙ্গে পিছিয়ে পড়ে ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশ পুলিশ এফসি। আর মুন্সীগঞ্জের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আরামবাগকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি। কুমিল্লার ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মোহামেডান ৪-০ গোলে হারিয়েছে পিডব্লিউডি স্পোর্টস ক্লাবকে।
পঞ্চম রাউন্ড শেষেও পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে বসুন্ধরা কিংস। তাদের পয়েন্ট ১৩। দারুণ জয়ে ৭ পয়েন্ট পেয়ে তালিকার চারে জায়গা পেয়েছে মোহামেডান। দুইয়ে থাকা রহমতগঞ্জের পয়েন্ট ১০। ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে ফর্টিস।

১৭ বছর বয়সেই আলোচনায় মিসরীয় তরুণ ফরোয়ার্ড হামজা আবদেলকারিম। আফ্রিকার শক্তিশালী ক্লাব আল আহলির হয়ে সদ্যই সিনিয়র দলে অভিষেক হয়েছে তাঁর। অনূর্ধ্ব-১৭ মিশর দলের হয়ে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টেও দারুণ ছাপ রাখছেন তিনি। এই পারফরম্যান্সেই নজরে পড়েছেন ইউরোপের বেশ কয়েকটি বড় ক্লাবের। তবে দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে এখন বার্সেলোনা।
স্প্যানিশ দৈনিক স্পোর্টের প্রতিবেদন, চলতি বছরের শেষের মধ্যেই হামজার সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত করতে চাইছে বার্সেলোনা। ইতিমধ্যে আলোচনাও অনেকটাই এগিয়েছে। প্রথম ধাপে তাঁকে ধারে নিয়ে পরবর্তীতে কেনার অপশন রাখার পরিকল্পনা করেছে কাতালান ক্লাবটি। জানুয়ারির শুরুতেই বার্সা অ্যাতলেটিকে যোগ দিতে পারেন তিনি, যেখানে যুবদল কোচ জুলিয়ানো বেলেত্তির অধীনে খেলবেন।
বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার ব্যাপারে হামজা নিজেই অত্যন্ত আগ্রহী বলে জানা গেছে। ইউরোপে সফল হওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী এই তরুণ ফরোয়ার্ড বার্সা আগ্রহ দেখানোর পরই অন্য সব ক্লাবের সঙ্গে আলোচনা বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁর প্রতি বায়ার্ন মিউনিখ ও এসি মিলানও আগ্রহ দেখালেও মাঠের লড়াইয়ে এগিয়ে আছে বার্সা।
কাতালান ক্লাবটি কাতারে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে হামজাকে স্কাউট করে। গোল করার সামর্থ্য, শারীরিক সক্ষমতা ও পজিশনিং দেখে তাঁকে নিয়ে ইতিবাচক রিপোর্ট দেয় স্কাউটরা। এরপরই আলোচনা শুরু হয় আল আহলির সঙ্গে।
আরও পড়ুন
| কঠিন গ্রুপ, কঠিন প্রতিপক্ষ: টুখেল |
|
আল আহলি নীতিগতভাবে হামজাকে ছাড়তে রাজি হলেও চাইছে ভালো আর্থিক কাঠামো। বার্সার প্রস্তাবে স্থায়ী ফি, পারফরম্যান্সভিত্তিক বোনাস এবং ভবিষ্যতে প্রথম দলে উন্নীত হলে অতিরিক্ত সুবিধা রাখার চেষ্টা করছে মিসরীয় ক্লাবটি। ক্লাব চাইছে ভবিষ্যতে বিক্রির ক্ষেত্রে একটি শতাংশও নিজেরা ধরে রাখতে।
এই চুক্তির কাঠামো অনেকটাই মিলে যায় লাস পালমাস থেকে পেদ্রিকে আনার সময় বার্সেলোনা যে মডেল ব্যবহার করেছিল তার সঙ্গে। দুই পক্ষই এখন এমন সম্ভাব্য কাঠামো নিয়েই আলোচনা চালাচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই চুক্তি সম্পন্ন হলে আগামী গ্রীষ্মে সিনিয়র দলের প্রাক–মৌসুম প্রস্তুতিতে হামজাকে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বার্সেলোনা। এটি খেলোয়াড় ও তাঁর পরিবারকে আরও বেশি রাজি করিয়েছে কাতালোনিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে।
হামজার জন্মদিনের সুবাদে আগামী জানুয়ারিতেই ১৮ পূর্ণ করবেন। ফলে বয়সজনিত বিধিনিষেধ না থাকায় চুক্তি কার্যকর করতে কোনো বাধাও থাকছে না। তিনি মূলত গোলমুখে তীক্ষ্ণ এবং আক্রমণভাগে স্বাভাবিক স্ট্রাইকারের ভূমিকা পালন করেন।
বার্সেলোনার ফরোয়ার্ড ঘাটতি বিবেচনায় এই তরুণকে নিয়েই নতুন পরিকল্পনা সাজাচ্ছে ক্লাবটি। সব কিছু ঠিক থাকলে বছরের শেষেই তাঁর বার্সায় যোগ দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।

বিশ্বকাপের ড্র হয়ে সম্পন্ন। ব্রাজিলও পেয়েছে গ্রুপপর্বে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে এর মধ্যেও আছে ব্রাজিল সমর্থকদের জন্য বড় অস্বস্তির খবর।
কোচ কার্লো আনচেলত্তি সংশয প্রকাশ করেছেন ২০২৬ বিশ্বকাপে নেইমার জুনিয়রকে দলে পাওয়া যাবে কি না—তা নিয়ে।
আনেচেলত্তি গত মে মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর এখনো পর্যন্ত কোনো স্কোয়াডেই জায়গা পাননি নেইমার। গতকাল ওয়াশিংটনে বিশ্বকাপের ড্র শেষে সংবাদমাধ্যমকে আনচেলত্তি বলেন, 'নেইমার যদি অন্যদের চেয়ে ভালো হয়, যদি সে স্কোয়াডে থাকার যোগ্যতা দেখায়, তাহলে খেলবে। কিন্তু আমার কারও কাছে কোনো ঋণ নেই। নামের কারণে কাউকে দলে নেওয়া হবে না।'
৩৩ বছর বয়সী নেইমার ২০২৩ সালের অক্টোবরে উরুগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে গুরুতর চোটে পড়েন। তারপর থেকে জাতীয় দলে আর ফেরা হয়নি। তবে ব্রাজিলিয়ান লিগে সান্তোসের হয়ে দল বাঁচানোর লড়াইয়ে এখনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন তিনি। বুধবার মাংসপেশির চোট থাকা অবস্থায়ও হ্যাটট্রিক করেছেন। কাল ক্রুজেইরোর বিপক্ষেও তাঁর খেলার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন
| ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচ কার বিপক্ষে |
|
তারপরও আনচেলত্তির স্পষ্ট বার্তা, ব্রাজিল দলকে নেইমারকে নিয়েই ভাবতে হবে— এ রকম বাধ্যবাধকতা নেই। 'নেইমারকে নিয়ে কথা বললে অন্যদের নিয়েও বলতে হবে। ব্রাজিলকে ভাবতে হবে নেইমার থাকলেও, না থাকলেও। আমাদের চূড়ান্ত তালিকা হবে মার্চের আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোর পর,' বলেন ব্রাজিল কোচ।
নেইমারকে দীর্ঘদিন ধরে ব্রাজিলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। আনচেলত্তির ভাষায়, 'আমাদের দলে বিশ্বের সেরা গোলকিপারদের একজন আছে, ভালো ডিফেন্ডার আছে, দারুণ কিছু মিডফিল্ডার আছে, সামনে প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে। আমি এমন খেলোয়াড় চাই না যে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে চায়, আমি চাই বিশ্বকাপ জিততে চায় এমন খেলোয়াড়।'
ড্রয়ে ব্রাজিল পড়েছে গ্রুপ ‘সি’-তে। প্রতিপক্ষ ২০২২ বিশ্বতাপে চমক দেখানো মরক্কো, স্কটল্যান্ড ও হাইতি। মরক্কোকে 'খুব শক্তিশালী' বলে মন্তব্য করেছেন আনচেলত্তি। স্কটল্যান্ডকে বলেছেন 'খুবই দৃঢ়' দল। হাইতিও ১৯৭৪ সালের পর প্রথমবার বিশ্বকাপে।
ব্রাজিল তাদের অভিযান শুরু করবে ১৩ জুন মরক্কোর বিপক্ষে। এরপর ১৯ জুন হাইতির বিপক্ষে আে ২৪ জুন স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপ পর্ব শেষ করবে। আনচেলত্তি বলেন, 'সব ম্যাচ জেতা সম্ভব। আমাদের লক্ষ্য গ্রুপের শীর্ষে থাকা। পুরো বিশ্বকাপজুড়ে প্রতিযোগিতামূলক থাকতে হবে।'
২০০২ সালে শেষবার বিশ্বকাপ জিতেছিল ব্রাজিল। তারপর থেকে জাতীয় দল খুব একটা স্থিতিশীল নয়। গত বিশ্বকাপের পর ইতিমধ্যে চার কোচ বদলেছে সেলেসাওরা।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নিখুঁত অভিযান ছিল ইংল্যান্ডের। 'কে' গ্রুপ থেকে ৮ ম্যাচ খেলে শতভাগ জয়ের পাশাপাশি সবগুলো ম্যাচে ক্লিনশিট নিয়ে মাঠে ছাড়ে টমাস টুখেলের দল। ২০২৬ বিশ্বকাপে ইংলিশরা পড়েছে 'এল' গ্রুপে। সেখানে তাদের তিন প্রতিপক্ষ- ক্রোয়েশিয়া, ঘানা ও পানামা। শুক্রবার রাতে ড্র অনুষ্ঠানের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইংল্যান্ডের কোচ বলেছেন- ’কঠিন গ্রুপ, কঠিন প্রতিপক্ষ।’
বিবিসি স্পোর্টসকে টুখেল বলেন, ‘বিশ্বকাপে নিয়মিত খেলে ক্রোয়েশিয়া এবং ঘানা। ফুটবলে দুটি দলেরই গর্ব করার মতো ইতিহাস আছে এবং শক্তিশালী দেশ। পানামা সম্পর্কে আমি এই মুহূর্তে খুব বেশি কিছু বলতে পারব না, তবে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তাদের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।’
টুখেলের কপালে চিন্তার ভাজ পড়ার আরেকটি কারণ থাকতে পারে। ২০১৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পিছিয়ে পড়েও ইংল্যান্ডকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল ক্রোয়েশিয়া। ওই আসরেই আবার পানামাকে গ্রুপ পর্বের খেলায় ৬-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল ইংল্যান্ড।
সেই পানামাকে নিয়ে এবার টুখেল বলেন, ‘আন্ডারডগ হলেও তারা তাদের সর্বোচ্চটা দেবে। কাউকে ছোট করে দেখা যাবে না, প্রত্যেকেই পূর্ণ সম্মান পাওয়ার যোগ্য।’ গ্রুপের বাকি দুই দল নিয়ে ইংলিশদের জার্মান কোচ বলেন, ‘অবশ্যই জাতি হিসেবে ক্রোয়েশিয়া অসাধারণ। ঘানা সবসময় প্রতিভায় পরিপূর্ণ একটি দল। যারা সবসময় অবাক করে দেয় এবং এবারও দিতে চাইবে। বিশ্বকাপ ফুটবলে তাদের বিশাল এবং দারুণ ইতিহাস রয়েছে।’