১১ মে ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
ম্যাচের শুরুটা দেখে মনে হচ্ছিল, মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে ভিন্ন ছন্দেই হাজির রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম দিকে এলেমেলো ফুটবল খেলা বার্সেলোনা খুব দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নিল। বিরতির আগেই চার গোল খেয়ে বসা রিয়ালের হয়ে একাই লড়ে গেলেন কিলিয়ান এমবাপে, করলেন দারুণ এক হ্যাটট্রিক। তবে কার্লো আনচেলত্তির দলের রক্ষণভাগের ভুলে যাওয়ার মত এক ম্যাচে শেষ হাসি হাসল ইয়ামাল-রাফিনিয়ারাই। আর তাতে চলে গেল লা লিগা জয়ের আরও কাছে।
লা লিগায় রোববারের এল ক্লাসিকোর মহারণে আরও একবার বার্সেলোনার কাছে হেরেছে রিয়াল। ৪-৩ গোলে দুর্দান্ত জয়ে মৌসুমে রিয়ালকে টানা চার ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ উপহার দিল ফ্লিকের দল।
আরও পড়ুন
‘ইয়ামাল বাচ্চা না, এমন পারফরম্যান্সই চায় বার্সা’ |
![]() |
এই জয়ে বার্সেলোনার লিগ জয়ও প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। তিন ম্যাচ হাতে রেখে ৮২ পয়েন্ট কাতালান ক্লাবটির। আর দুইয়ে থাকা রিয়ালের অর্জন ৭৫ পয়েন্ট।
লা লিগায় বড় ধরণের নাটকীয়তা না দেখা দিলে এই হারে নিশ্চিত হয়ে গেছে রিয়ালের শিরোপাহীন মৌসুম। দুই দফায় রিয়ালকে অসাধারণ সব সাফল্য এনে দেওয়া আনচেলত্তির জন্য শেষটা হতে যাচ্ছে ভুলে যাওয়ার মতোই।
ম্যাচে রিয়ালের শুরুটা অবশ্য হয় স্বপ্নময়। পাউ কুবার্সির দুর্বল ব্যাকপাস থেকে বল পেয়ে গতিতে বক্সের ভেতর প্রবেশ করেন এমবাপে। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তাকে ফাউল করে বসেন গোলকিপার ওয়েজেচ সেজনি। পেনাল্টির বাঁশি সাথে সাথেই বাজিয়ে দেন রেফারি। ফরাসি তারকার বাঁদিকে নেওয়া নিচু শটে হাত লাগালেও আটকাতে পারেননি সেজনি।
এটি ছিল চলতি মৌসুমে লিগে এমবাপের ২৫তম গোল। লিড নিয়ে রিয়াল অব্যাহত রাখে ইতিবাচক ফুটবল। একের পর পর আক্রমণ শানায় দলটি। বিপরীতে ফ্লিকের দল গুছিয়ে নিতেই নষ্ট করে কিছুটা সময়।
নবম মিনিটে বলার মত প্রথম আক্রমণে বক্সের ভেতর কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নিয়েছিলেন এরিক গার্সিয়া, তবে রিয়ালের জন্য তা বিপদের কারণ হয়নি।
১৪তম মিনিটে ফের বার্সেলোনার জালে বল, আর এবারও স্কোরার সেই এমবাপেই। তবে বল বানিয়ে দেওয়ার একটা বড় কৃতিত্ব পাবেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। প্রায় মাঝমাঠ থেকে দারুণ এক ডিফেন্সচেড়া পাসে খুঁজে নেন ফ্রানের বিশ্বকাপ জয়ী তারকাকে। বল রিসিভ করে জায়গা বানিয়ে সেজনিকে পরাস্ত করে রিয়ালের লিড বড় করেন এমবাপে।
গোলের লক্ষ্যে প্রথম দুই শট থেকেই জালের দেখা পাওয়া রিয়ালের আক্রমণের সামনে সেই সময়ে বেকায়দায় ছিল বার্সেলোনা। ১৮তম মিনিটে বক্সের একটু বাইরে থেকে লামিন ইয়ামালের কার্লিং শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ব্লক করেন থিবো কোর্তোয়া।
পরের মিনিটে আরেকটি ভালো সেভ দিলেও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় কোর্তোয়াকে। ফেররান তরেসের কর্নার কিক থেকে হেডারে জাল খুঁজে নেন এরিক গার্সিয়া, যিনি কোপা দেল রের ফাইনালেও রিয়ালের বিপক্ষে গোল করেছিলেন।
আরও পড়ুন
আবেগে ভেসে, চোখের জলে বায়ার্নকে বিদায় জানালেন কিংবদন্তি মুলার |
![]() |
এক গোল শোধ দিয়ে ক্রমেই রিয়ালকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। খেই হারিয়ে ফেলা রিয়ালের খর্বশক্তির রক্ষণের জন্য গতিময় ইয়ামালকে সামলানো শুরু থেকেই ছিল কঠিন। ৩২তম মিনিটে তরেসের পাস থেকে কাট করে বক্সের ভেতর বাঁদিক থেকে বা পায়ের কোনাকুনি এক শটে গোল করেন স্প্যানিশ এই উইঙ্গার, লা লিগায় এটি এই মৌসুমে ইয়ামালের সপ্তম গোল।
পরপর দুই গোলের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে ফের গোল হজম করে বসে রিয়াল, যেখানে ফুটে ওঠে তাদের ছন্দপতন। বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন এমবাপে, তবে ঠিক তার সামনে দাঁড়িয়ে যান সতীর্থ লুকাস ভাজকেস। দুজনের ভুল বোঝাবুঝি থেকে পাল্টা আক্রমণে বল পেয়ে যান রাফিনিয়া। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে প্রথমবারের মত বার্সেলোনাকে লিড এনে দেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড।
শুরুতে ঝলক দেখানো রিয়াল এরপর আশা জাগিয়েছিল সমতা টানার। পেনাল্টি আদায় করেছিলেন এমবাপে। তবে তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা আর মেলেনি।
উল্টো ৪৫তম মিনিটে আরেক গোল খেয়ে বসে রিয়াল। এবারও কেন্দ্রবিন্দু সেই ভাজকেসই। রিয়াল অধিনায়কের কাছ থেকে বক্সের বাইরে বল কেড়ে রাফিনিয়াকে পাস বাড়ান তরেস, ফাঁকায় থাকা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই উইঙ্গারের সমস্যা হয়নি জালের দেখা পেতে। লা লিগায় এটি মৌসুমে রাফিনিয়ার ১৮তম গোল ছিল।
অবিশ্বাস্য এক প্রথমার্ধে রিয়াল শুরুর দুই গোলের পর লক্ষ্যেই আর শটই রাখতে পারেনি। বিপরীতে ১১টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখে বার্সেলোনা।
বিরতির পরও একই ছন্দ ধরে রাখে বার্সেলোনা। রিয়ালের জোড়াতালি দেওয়া রক্ষণভাগকে আরও একবার বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাফিনিয়া। ৫৩তম মিনিটে বাঁদিক থেকে তার পাস থেকে ফাঁকায় দাঁড়ানো ইয়ামাল টোকা দিয়ে বল জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে আর মেলেনি গোল।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে এর তিন মিনিট পর একটা সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপে, তবে শট উঁচিয়ে মেরে হতাশ করেন রিয়ালকে। পাল্টা আক্রমণ থেকে এরপর দুরন্ত গতিতে এগিয়ে ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ানোর চেষ্টা করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, তবে সেটা বাধাপ্রাপ্ত হয় আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনের ক্লিয়ারিংয়ে।
শেষ পর্যন্ত এই জুটির হাত ধরেই গোল পায় রিয়াল। আরও একটি কাউন্টার এটাক থেকে বল পেয়ে দুজন এগিয়ে যান বার্সেলোনার বক্সে। নিজের সামনে সুযোগ থাকলেও গোলের সামনে এমবাপেকে দিয়ে হ্যাটট্রিক করান ভিনিসিয়ুস। ২৭তম গোলের মাধ্যমে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলস্কোরারের তালিকায় রবার্ট লেভানদভস্কির চেয়ে দুই গোলে এগিয়ে যান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
৭৪তম মিনিটে স্কোরলাইন ৫-৩ করার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া। তার সামনেও ছিল হ্যাটট্রিকের আশা। ইয়ামালের ক্রসে ছিলেনও ভালো পজিশনে, তবে ছয় গজের ভেতর থেকে বল পোস্টের ওপর দিয়ে মেরে টিকিয়ে রাখেন রিয়ালের ম্যাচে ফেরার আশা।
আরও পড়ুন
ড্র করে সুযোগ মিসের হতাশায় গার্দিওলা |
![]() |
জমে ওঠা ম্যাচের ৮২তম মিনিটে বার্সেলোনা শিবিরে জোর দাবি ওঠে পেনাল্টির। বক্সের ভেতর অহেলিয়া চুয়ামেনির সম্ভাব্য হ্যান্ডবল সময় নিয়ে স্ক্রিনে দেখে রেফারি নাকচ করেন পেনাল্টির আবেদন। হাফ ছেঁড়ে বাচে রিয়াল।
৮৮তম মিনিটে ভিনিসিয়ুসের বদলি হিসেবে নামা তরুণ ফরোয়ার্ড ভিক্টর মুনজ প্রথম টাচেই পেয়েছিলেন হিরো হওয়ার সুযোগ। তবে লক্ষ্যে শট রাখলেই গোল, এমন পজিশন থেকে তিনি বল মেরে দেন পোস্টের বাইরে।
গোলের জন্য মরিয়া রিয়ালকে আরও একবার পাল্টা আক্রমণে চমকে দেয় বার্সেলোনা। ৯৫তম মিনিটে কাট করে বক্সে ঢুকে কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান ফেরমিন লোপেজ। তবে হ্যান্ডবল হওয়ায় বাতিল হয় সেই গোল। বাকি সময়ে কোনো দলই পারেনি বলার মত আর সুযোগ তৈরি করতে।
No posts available.
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮:৫৩ পিএম
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬:৫০ পিএম
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচটা একদমই ভালো যায়নি নিকোলাস ওতামেন্ডির। একুয়েডরের বিপক্ষে বুধবার ১-০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে আর্জেন্টাইন এই ডিফেন্ডারকে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। আর এই লাল কার্ডের জন্য আগামী বছর বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটিতে দর্শক হয়েই থাকতে হবে ওতামেন্ডিকে।
আকাশী-সাদা জার্সিতে ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলেই জাতীয় দলকে বিদায় বলার ঘোষণা দিয়েছেন ওতামেন্ডি। একুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘তেলেফ’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অবসর বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানান ৩৭ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার।
আরও পড়ুন
এমবাপের উদ্দেশ্যে ‘বানরের আওয়াজ করায়’ দর্শক গ্রেপ্তার |
![]() |
“সামনের এই বিশ্বকাপই হবে আমার জাতীয় দলের হয়ে শেষ প্রতিযোগিতা। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি এই জার্সি পরে নিজের সেরাটা দিতে।”
অবসরের ঘোষণা ছাড়াও ফুটবলে ক্যারিয়ারে নিজের উত্থান-পতন নিয়ে কথার ঝাপি খুলে বসেন ওতামেন্ডি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে সংগ্রাম আর লড়াই করে যোদ্ধার মতো এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।
“প্রথম ডিভিশনে খেলাই আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল, তারপর সেখান থেকে জাতীয় দলে পৌঁছানো তো আরও কঠিন। আমার পরিবার আমাকে শিখিয়েছে, জীবনে সবকিছুর দাম আছে। যোদ্ধার মতো লড়তে হবে, নিজের সেরাটা দিতে হবে। আর যেদিন কিছু হবে না, পরের দিন আবার চেষ্টা করতে হবে। সেটাই জীবন।”
আরও পড়ুন
ম্যানচেস্টার ডার্বির আগে সিটির বড় ধাক্কা |
![]() |
২০০৯ সালে পানামার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেক হয় ওতামেন্ডির। এরপর আলবিসেস্তাদের হয়ে ১২৮ ম্যাচ খেলে ৭টি গোলও করেছেন তিনি।
জাতীয় দলে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডারের জীবনের সেরা মূহূর্ত কোনটি এমন প্রশ্নে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপকেই বেছে নেন তিনি।
“কাতারের সেই দিনগুলো এখনও চোখের সামনে ভাসে। কুটি (ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো) তখন শ্যাম্পেন খাচ্ছে, সিগার টানছে, এক কথায় সবকিছু যেন পাগলাটে। এই স্মৃতিগুলো সারাজীবন মাথায় গেঁথে থাকবে। সেই শিরোপার কোনও তুলনা হয় না।”
আরও পড়ুন
যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা: এমবাপে |
![]() |
বর্তমানে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকার হয়ে খেলছেন ওতামেন্ডি। আর্জেন্টিনার ভেলাসে জন্ম নেওয়া এই ফুটবলার ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে আর্জেন্টিনায় ফিরবেন কিনা জানতে চাইলে ভবিষ্যতের হাতেই ছেড়ে দেন তিনি।
“সত্যি বলতে, এখনও কিছু জানি না। ২০২৬ বিশ্বকাপের পর সেটা ভেবে দেখব, দেখা যাক। ফিদেও (ডি মারিয়া) ফিরে এসেছে, চমৎকার খেলছে। লেয়াও (পারেদেস)। তারা আমার বন্ধু, আর ওদের খুশি দেখে আমারও খুব আনন্দ হয়।”
গ্যালারিতে বসে বর্ণবাদী আচরণের মাশুল দিলেন স্পেনের এক দর্শক। কিলিয়ান এমবাপেকে উদ্দেশ্য করে বর্ণবাদী অঙ্গভঙ্গি ও আওয়াজ করায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই দর্শকের। ইএসপিএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পেনের ন্যাশনাল পুলিশ জানিয়েছে এই খবর।
স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে গত ২৪ আগস্ট রিয়েল ওভেইদোর মাঠে খেলতে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। নবাগত দলটির বিপক্ষে এমবাপের জোড়া গোলে ৩-০ ব্যবধানের সহজ জয় পায় স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটি।
বুধবার স্পেনের পুলিশ জানিয়েছে, ওই ম্যাচের এক পর্যায়ে এমবাপেকে উদ্দেশ্য করে বানরের আওয়াজ ও অঙ্গভঙ্গি করেন এক দর্শক। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে এমবাপের প্রথম গোলের পর এই কাজটি করেই অভিযুক্ত সেই দর্শক।
আরও পড়ুন
যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা: এমবাপে |
![]() |
গ্যালারিতে থাকা দর্শকদের প্রতিক্রিয়ার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ওই দর্শককে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ম্যাচের পরপরই এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল লা লিগা কর্তৃপক্ষ। প্রায় দুই সপ্তাহ পর সেই দর্শককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
পরে এই মামলাটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বিদ্বেষমূলক অপরাধের আদালতে। এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ৬০ হাজার থেকে ৬ লাখ ৫০ হাজার ইউরো পর্যন্ত আর্থিক জরিমানা।
সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে বর্ণবাদী আচরণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে লা লিগা কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সালে ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। পরে ওই ঘটনায় তিন দর্শককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সবশেষ মৌসুমে চোটের কারণে বড় মূল্য চুকাতে হয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটিকে। গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের চোটে শিরোপার দৌড় থেকে ছিটকে পড়তে হয় ইংলিশ ক্লাবটিকে। এবার নতুন মৌসুম শুরু হতে না হতেই ফের ইনজুরি হানা দিল পেপ গার্দিওলার শিবিরে।
জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বুরকিনো ফাসোর বিপক্ষে ম্যাচে হাঁটুর চোটে পড়েছেন ম্যান সিটির মিশরিয়ান ফরোয়ার্ড ওমর মারমুশ। এরই মধ্যে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ম্যানচেস্টারে ফিরছেন ২৬ বছর বয়সী ফুটবলার।
আরও পড়ুন
যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা: এমবাপে |
![]() |
প্রাথমিক স্ক্যানে চোট গুরুতর বলে নিশ্চিত করেছে ম্যান সিটি। তাতে আগামী রোববার ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচে তাকে ছাড়াই মাঠে নামতে হবে সিটির।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে মারমুশের সবশেষ অবস্থা জানিয়েছে সিটি।
“ওমর মারমুশ মিশরের হয়ে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনকালে হাঁটুর চোট পেয়েছেন। প্রাথমিকভাবে মিশরে করা স্ক্যান অনুযায়ী, তিনি রোববারের ম্যানচেস্টার ডার্বিতে খেলতে পারবেন না। তিনি এখন ম্যানচেস্টারে ফিরছেন, যেখানে আরও পরীক্ষা হবে এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
আরও পড়ুন
একটি নয়, অনেক ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি: ইয়ামাল |
![]() |
সিটি কোচ গার্দিওলার জন্য মারমুশের এই চোট বড় ধাক্কা হয়েই এলো। এর আগে ইনজুরিতে দল থেকে ছিটকে পড়েছেন মাতেও কোভাচিচ, যোস্কো গাভার্দিওল, সাভিনহো, রায়ান চেরকি, আব্দুকাদির খুসানোভ, রিকো লুইস ও নিকো ও’রেইলি।
এর আগে সিটি ডিফেন্ডার জন স্টোন্স ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ক্যাম্পে যোগ দিলেও পেশির চোটের কারণে কোনো ম্যাচ না খেলেই ফেরত আসেন।
তারকা ফুটবলারদের চাকচিক্যময় জীবন নিয়ে সমর্থকদের আগ্রহ থাকে সবসময়ই। ইউরোপীয় ফুটবল কিংবা বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের ক্লাবগুলোয় ফুটবলারদের পেছনে কাড়িকাড়ি অর্থ ঢালছে। তাতে দ্রুতই জীবন বদলে যাচ্ছে তরুণ অনেক ফুটবলারদের। বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত হতে শুরু করেন তারা।
তবে সবকিছুরই তো নেতিবাচকতা আছে। দূর থেকে ফুটবলারদের জীবন আর্কষণীয় মনে হলেও মুদ্রার উল্টো পিঠও নাকি আছে। রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে তেমনটাই বলছেন।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে’কিপকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যাক্তিগত জীবনের পর্দার আড়ালের কথা বলেন তিনি। নিজের সন্তানদেরও নাকি কখনও ফুটবলকে বেছে নেওয়ার উপদেশ দেবেন না এমবাপে।
আরও পড়ুন
একটি নয়, অনেক ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি: ইয়ামাল |
![]() |
ফুটবলকে মনে প্রাণে ধারণ করেন বলেই সব নেতিবাচকতা ভুলে থাকছেন এমবাপে।
“খেলাটার প্রতি এই টানটা যদি না থাকত, তাহলে ফুটবলের দুনিয়ার অন্ধকার দিকগুলো আমাকে বহু আগেই দূরে সরিয়ে দিত।”
মাঠের খেলার বাইরেও অনেক দিক থাকে যা সমর্থকদের ধারণার মধ্যে থাকে না। দর্শকদের এসব বিষয় দেখতে হয় না বলে তাদের সৌভাগ্যবান বলে মনে করেন এমবাপে।
“আমি সবসময় বলি, যারা স্টেডিয়ামে এসে শুধু খেলা দেখতে পারে, তারা খুব সৌভাগ্যবান কারণ তারা জানে না এর পেছনে কী চলে, কোন গোপন জগৎ আছে।”
আরও পড়ুন
দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা, জিমে সময় কাটালেন ফুটবলাররা |
![]() |
যে অঢেল অর্থের হাতছানি ফুটবলারদের জীবনে বড় প্রভার রাখে, সেই টাকাই যত নষ্টের গোড়া বলে মনে করেন ফরাসি তারকা।
“যত বেশি টাকা, তত বেশি সমস্যা। আমি আমার সন্তানদের কখনও ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে বলব না।”
মূলত গত মৌসুমে পিএসজি ছেড়ে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পরই যত ঝামেলায় পড়েন এমবাপে। গত জুলাইয়ে পিএসজির বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি ফৌজদারি অভিযোগ (যেখানে তিনি হয়রানি ও ব্ল্যাক মেইলের অভিযোগ এনেছিলেন) প্রত্যাহার করে নেন।
তবে এমবাপে এখনও দাবি করছেন তার ৫৫ মিলিয়ন ইউরো বেতন ও বোনাস ফরাসি ক্লাবটি বকেয়া রেকেছে। সেই অর্থ আদায়ের জন্য তিনি আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন
রেফারির সিদ্ধান্তে খুশি নন মার্তিনেজ |
![]() |
অবশ্য সাবেক ক্লাবের সঙ্গে কোনো বিদ্বেষ নয়, শুধু প্রাপ্য অর্থটাই ফেরত চান এমবাপে।
“পিএসজির প্রতি আমার কোনো বিদ্বেষ নেই। আমি ক্লাবটিকে ভালোবাসি, এখনও সেখানে আমার বন্ধুরা আছে। কিন্তু এই পথটাই একমাত্র উপায়, আমার প্রাপ্যটা ফেরত পাওয়ার জন্য।”
২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে পরশু ২-১ গোলের জয়ে দারুণ এক মাইলফলক স্পর্শ করেন এমবাপে।
ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করে জাতীয় দলের হয়ে এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলের মালিক রিয়াল তারকা। থিয়েরি হেনরিকে ছাপিয়ে ফ্রান্সের হয়ে তার গোল এখন ৫২, শীর্ষে থাকা অলিভার জিরুর গোল ৫৭।
কথায় বলে, স্বপ্ন সবসময় বড় দেখতে হয়। সেই দলে আছেন লামিন ইয়ামাল। ফুটবল ক্যারিয়ারে দারুণ শুরু করা স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ডের স্বপ্ন তাই অনেকগুলো ব্যালন ডি'অর জেতা।
ফ্রান্সের প্যারিসে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঘোষণা করা হবে এবারের ব্যালন ডিঅর পুরস্কার। পিএসজির ফরাসি তারকা ওসমান দেম্বেলের পাশাপাশি ইয়ামালও এবারের ব্যালন জয়ের অন্যতম দাবীদার।
সেই আলোচনা চলার মাঝেই এক পডকাস্টে ইয়ামাল জানিয়েছেন নিজের স্বপ্নের কথা।
আরও পড়ুন
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে দুই ‘জুজু’ |
![]() |
“আমি আমার বন্ধুদের বলেছি, আমি একটি ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি না। আমি অনেকগুলো ব্যালন ডি অর জেতার স্বপ্ন দেখি।”
এখন পর্যন্ত বার্সেলোনা ও স্পেনের হয়ে ইয়ামালের যেমন পারফরম্যান্সে, তাতে এই স্বপ্ন দেখা অবশ্যই যৌক্তিক। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই বার্সেলোনার হয়ে একশর বেশি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন ইয়ামাল। গত মৌসুমে ১৮ গোলের সঙ্গে করেছেন ২৫টি অ্যাসিস্ট।
গোল-অ্যাসিস্টের বাইরেও স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটির লা লিগা, কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কোপা জয়ে বড় অবদান রাখেন ইয়ামাল।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশকে নিয়ে কথা বলার কিছু নেই: অশ্বিন |
![]() |
সেই একই ছন্দ ধরে রেখে নতুন মৌসুমের শুরুটাও করেছেন উড়ন্ত। লা লিগায় প্রথম তিন ম্যাচে দুই গোল করে ফেলেছেন ইয়ামাল। তার মতে, শেষ পর্যন্ত ব্যালন জিততে না পারলে, দায়টা থাকবে তার ওপরেই।
“আমার মতে, আমি এটি (ব্যালন ডি অর) জেতার মতো একজন ফুটবল। আর এটি যদি না হয়, তার মানে দাঁড়াবে আমি সব কিছু ঠিকভাবে করিনি অথবা আমি সব কিছু করতে চাইনি।”
“আমি অনেকগুলো ব্যালন ডি অর জিততে চাই এবং যখন এই দিন আসবে, আমি অনেক খুশি হবো।”
তবে ব্যক্তিগত সাফল্যের আগে দলকে অনেক কিছু জেতাতে চান ইয়ামাল।
“আমি শুধু জিততে থাকতে চাই। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে অনেক কিছু জিততে চাই।”