১১ মে ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
ম্যাচের শুরুটা দেখে মনে হচ্ছিল, মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে ভিন্ন ছন্দেই হাজির রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম দিকে এলেমেলো ফুটবল খেলা বার্সেলোনা খুব দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নিল। বিরতির আগেই চার গোল খেয়ে বসা রিয়ালের হয়ে একাই লড়ে গেলেন কিলিয়ান এমবাপে, করলেন দারুণ এক হ্যাটট্রিক। তবে কার্লো আনচেলত্তির দলের রক্ষণভাগের ভুলে যাওয়ার মত এক ম্যাচে শেষ হাসি হাসল ইয়ামাল-রাফিনিয়ারাই। আর তাতে চলে গেল লা লিগা জয়ের আরও কাছে।
লা লিগায় রোববারের এল ক্লাসিকোর মহারণে আরও একবার বার্সেলোনার কাছে হেরেছে রিয়াল। ৪-৩ গোলে দুর্দান্ত জয়ে মৌসুমে রিয়ালকে টানা চার ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ উপহার দিল ফ্লিকের দল।
আরও পড়ুন
| ‘ইয়ামাল বাচ্চা না, এমন পারফরম্যান্সই চায় বার্সা’ |
|
এই জয়ে বার্সেলোনার লিগ জয়ও প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। তিন ম্যাচ হাতে রেখে ৮২ পয়েন্ট কাতালান ক্লাবটির। আর দুইয়ে থাকা রিয়ালের অর্জন ৭৫ পয়েন্ট।
লা লিগায় বড় ধরণের নাটকীয়তা না দেখা দিলে এই হারে নিশ্চিত হয়ে গেছে রিয়ালের শিরোপাহীন মৌসুম। দুই দফায় রিয়ালকে অসাধারণ সব সাফল্য এনে দেওয়া আনচেলত্তির জন্য শেষটা হতে যাচ্ছে ভুলে যাওয়ার মতোই।
ম্যাচে রিয়ালের শুরুটা অবশ্য হয় স্বপ্নময়। পাউ কুবার্সির দুর্বল ব্যাকপাস থেকে বল পেয়ে গতিতে বক্সের ভেতর প্রবেশ করেন এমবাপে। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তাকে ফাউল করে বসেন গোলকিপার ওয়েজেচ সেজনি। পেনাল্টির বাঁশি সাথে সাথেই বাজিয়ে দেন রেফারি। ফরাসি তারকার বাঁদিকে নেওয়া নিচু শটে হাত লাগালেও আটকাতে পারেননি সেজনি।
এটি ছিল চলতি মৌসুমে লিগে এমবাপের ২৫তম গোল। লিড নিয়ে রিয়াল অব্যাহত রাখে ইতিবাচক ফুটবল। একের পর পর আক্রমণ শানায় দলটি। বিপরীতে ফ্লিকের দল গুছিয়ে নিতেই নষ্ট করে কিছুটা সময়।
নবম মিনিটে বলার মত প্রথম আক্রমণে বক্সের ভেতর কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নিয়েছিলেন এরিক গার্সিয়া, তবে রিয়ালের জন্য তা বিপদের কারণ হয়নি।
১৪তম মিনিটে ফের বার্সেলোনার জালে বল, আর এবারও স্কোরার সেই এমবাপেই। তবে বল বানিয়ে দেওয়ার একটা বড় কৃতিত্ব পাবেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। প্রায় মাঝমাঠ থেকে দারুণ এক ডিফেন্সচেড়া পাসে খুঁজে নেন ফ্রানের বিশ্বকাপ জয়ী তারকাকে। বল রিসিভ করে জায়গা বানিয়ে সেজনিকে পরাস্ত করে রিয়ালের লিড বড় করেন এমবাপে।
গোলের লক্ষ্যে প্রথম দুই শট থেকেই জালের দেখা পাওয়া রিয়ালের আক্রমণের সামনে সেই সময়ে বেকায়দায় ছিল বার্সেলোনা। ১৮তম মিনিটে বক্সের একটু বাইরে থেকে লামিন ইয়ামালের কার্লিং শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ব্লক করেন থিবো কোর্তোয়া।
পরের মিনিটে আরেকটি ভালো সেভ দিলেও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় কোর্তোয়াকে। ফেররান তরেসের কর্নার কিক থেকে হেডারে জাল খুঁজে নেন এরিক গার্সিয়া, যিনি কোপা দেল রের ফাইনালেও রিয়ালের বিপক্ষে গোল করেছিলেন।
আরও পড়ুন
| আবেগে ভেসে, চোখের জলে বায়ার্নকে বিদায় জানালেন কিংবদন্তি মুলার |
|
এক গোল শোধ দিয়ে ক্রমেই রিয়ালকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। খেই হারিয়ে ফেলা রিয়ালের খর্বশক্তির রক্ষণের জন্য গতিময় ইয়ামালকে সামলানো শুরু থেকেই ছিল কঠিন। ৩২তম মিনিটে তরেসের পাস থেকে কাট করে বক্সের ভেতর বাঁদিক থেকে বা পায়ের কোনাকুনি এক শটে গোল করেন স্প্যানিশ এই উইঙ্গার, লা লিগায় এটি এই মৌসুমে ইয়ামালের সপ্তম গোল।
পরপর দুই গোলের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে ফের গোল হজম করে বসে রিয়াল, যেখানে ফুটে ওঠে তাদের ছন্দপতন। বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন এমবাপে, তবে ঠিক তার সামনে দাঁড়িয়ে যান সতীর্থ লুকাস ভাজকেস। দুজনের ভুল বোঝাবুঝি থেকে পাল্টা আক্রমণে বল পেয়ে যান রাফিনিয়া। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে প্রথমবারের মত বার্সেলোনাকে লিড এনে দেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড।
শুরুতে ঝলক দেখানো রিয়াল এরপর আশা জাগিয়েছিল সমতা টানার। পেনাল্টি আদায় করেছিলেন এমবাপে। তবে তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা আর মেলেনি।
উল্টো ৪৫তম মিনিটে আরেক গোল খেয়ে বসে রিয়াল। এবারও কেন্দ্রবিন্দু সেই ভাজকেসই। রিয়াল অধিনায়কের কাছ থেকে বক্সের বাইরে বল কেড়ে রাফিনিয়াকে পাস বাড়ান তরেস, ফাঁকায় থাকা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই উইঙ্গারের সমস্যা হয়নি জালের দেখা পেতে। লা লিগায় এটি মৌসুমে রাফিনিয়ার ১৮তম গোল ছিল।
অবিশ্বাস্য এক প্রথমার্ধে রিয়াল শুরুর দুই গোলের পর লক্ষ্যেই আর শটই রাখতে পারেনি। বিপরীতে ১১টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখে বার্সেলোনা।
বিরতির পরও একই ছন্দ ধরে রাখে বার্সেলোনা। রিয়ালের জোড়াতালি দেওয়া রক্ষণভাগকে আরও একবার বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাফিনিয়া। ৫৩তম মিনিটে বাঁদিক থেকে তার পাস থেকে ফাঁকায় দাঁড়ানো ইয়ামাল টোকা দিয়ে বল জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে আর মেলেনি গোল।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে এর তিন মিনিট পর একটা সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপে, তবে শট উঁচিয়ে মেরে হতাশ করেন রিয়ালকে। পাল্টা আক্রমণ থেকে এরপর দুরন্ত গতিতে এগিয়ে ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ানোর চেষ্টা করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, তবে সেটা বাধাপ্রাপ্ত হয় আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনের ক্লিয়ারিংয়ে।
শেষ পর্যন্ত এই জুটির হাত ধরেই গোল পায় রিয়াল। আরও একটি কাউন্টার এটাক থেকে বল পেয়ে দুজন এগিয়ে যান বার্সেলোনার বক্সে। নিজের সামনে সুযোগ থাকলেও গোলের সামনে এমবাপেকে দিয়ে হ্যাটট্রিক করান ভিনিসিয়ুস। ২৭তম গোলের মাধ্যমে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলস্কোরারের তালিকায় রবার্ট লেভানদভস্কির চেয়ে দুই গোলে এগিয়ে যান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
৭৪তম মিনিটে স্কোরলাইন ৫-৩ করার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া। তার সামনেও ছিল হ্যাটট্রিকের আশা। ইয়ামালের ক্রসে ছিলেনও ভালো পজিশনে, তবে ছয় গজের ভেতর থেকে বল পোস্টের ওপর দিয়ে মেরে টিকিয়ে রাখেন রিয়ালের ম্যাচে ফেরার আশা।
আরও পড়ুন
| ড্র করে সুযোগ মিসের হতাশায় গার্দিওলা |
|
জমে ওঠা ম্যাচের ৮২তম মিনিটে বার্সেলোনা শিবিরে জোর দাবি ওঠে পেনাল্টির। বক্সের ভেতর অহেলিয়া চুয়ামেনির সম্ভাব্য হ্যান্ডবল সময় নিয়ে স্ক্রিনে দেখে রেফারি নাকচ করেন পেনাল্টির আবেদন। হাফ ছেঁড়ে বাচে রিয়াল।
৮৮তম মিনিটে ভিনিসিয়ুসের বদলি হিসেবে নামা তরুণ ফরোয়ার্ড ভিক্টর মুনজ প্রথম টাচেই পেয়েছিলেন হিরো হওয়ার সুযোগ। তবে লক্ষ্যে শট রাখলেই গোল, এমন পজিশন থেকে তিনি বল মেরে দেন পোস্টের বাইরে।
গোলের জন্য মরিয়া রিয়ালকে আরও একবার পাল্টা আক্রমণে চমকে দেয় বার্সেলোনা। ৯৫তম মিনিটে কাট করে বক্সে ঢুকে কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান ফেরমিন লোপেজ। তবে হ্যান্ডবল হওয়ায় বাতিল হয় সেই গোল। বাকি সময়ে কোনো দলই পারেনি বলার মত আর সুযোগ তৈরি করতে।
No posts available.
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৩ এম

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ফিফা প্রীতি ম্যাচে বিকেল ৫টায় মাঠে নামছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। এই ম্যাচে শুরুর একাদশে সুযোগ পেয়েছেন নবিরন খাতুন। আগের ম্যাচের একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন মিডফিল্ডার মুনকি আক্তার।
গত শুক্রবার থাই মেয়েদের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে যে কারণে রক্ষণে একজন বেশি নিয়েছেন কোচ পিটার বাটলার। কেননা নবিরন রক্ষণে খেলেন। যেখানে নেতৃত্ব অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারের কাছে। তার সঙ্গে রক্ষণে আছেন শামসুন্নাহার সিনিয়র, কোহাতি কিসকু ও শিউলি আজিমরা।
মিডফিল্ডে অভিজ্ঞ মারিয়া মান্ডার সঙ্গে থাকবেন মনিকা চাকমা। ফরোয়ার্ডে ঋতুপর্ণা চাকমা, তহুরা খাতুন ও শামসুন্নার জুনিয়র খেলছেন। ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে ইউটিউব লাইভে।
তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে সাত পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামছে থাইল্যান্ড। আগের ম্যাচের পরই বাংলাদেশ কোচ আভাস দিয়েছিলেন তাদের বেঞ্চের শক্তি নিয়ে। তাদের আরেকটি দল যে বেঞ্চে বসে আছে তাও জানিয়েছিলেন। সতর্ক বাটলার যে কারণে ফাইভ ব্যাকলাইন নিয়ে একাদশ সাজিয়েছেন।
বাংলাদেশ একাদশ:
রূপনা চাকমা (গোলকিপার), শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার (সিনিয়র), আফঈদা খন্দকার (অধিনায়ক), কোহাতি কিসকু, মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্ডা, তহুরা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা, শামসুন্নাহার (জুনিয়র), নবিরন খাতুন।

মাঠে প্রতিপক্ষকে একচুলও ছাড় দিতে রাজি নন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। শুধু কি মাঠের পারফরম্যান্স? রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারকে উষকে দিলে পরিণতিটাও যে ভালো হয়না সেটা প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের ভালো করেই জানা। মেজাজ হারিয়ে বিপদেও পড়েছেন মাঝেমধ্যে।
সবশেষ গতকাল রাতে এল ক্লাসিকোয় ভিনির রুদ্ররূপ দেখেন বার্সেলোনার তারকা ফুটবলার লামিনে ইয়ামাল। রিয়ালকে নিয়ে ম্যাচের আগে ১৮ বছর বয়সী উইঙ্গারের মন্তব্যে এমনিতেই তেঁতে ছিল ক্লাবটির ফুটবলাররা। ২-১ ব্যবধানে জয়ের পর ইয়ামালের ওপর ক্ষোভ উগরে দেওয়ার অপেক্ষাতেই যেন ছিলেন ভিনি।
ম্যাচ শেষে ইয়ামাল মাঠ ছাড়ার সময় তেড়ে যান ভিনিসিয়ুস। তাকে আটকাতে রীতিমতো হিমশিম খায় সতীর্থ আর দলের স্টাফরা। ইয়ামালকে উদ্দেশ্য করে রিয়াল তারকা নাকি বলেছিলেন, ‘কী ব্যাপার! ব্যাক পাস দেওয়া ছাড়া আর কিছুই তো করলে না।! শুধুই ডিফেন্ডারদের কাছে বল দিলে।’
আরও পড়ুন
| ‘ফিফা আসিয়ান কাপ’ শুরুর ঘোষণা ফিফা সভাপতির |
|
অবশ্য গোলমাল শেষে ‘শান্তির বার্তা’ দিলেন ভিনিসিয়ুস। সমর্থকদের ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান দেখানোর কথা বলেন তিনি, ‘সব মাদ্রিদিস্তাদের জন্য, বিশেষ করে যারা বার্নাব্যুয়ে এসে প্রাণভরে আমাদের সমর্থন করেছেন। এটাই এল ক্লাসিকো, যেখানে মাঠে ও মাঠের বাইরে অনেক কিছুই ঘটে। আমরা সব সময় ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করি, কিন্তু অনেক সময় সম্ভব হয় না।’
ভিনিসিয়ুস আরও যোগ করেন, ‘আমাদের কারও প্রতি অসম্মান দেখানোর কোনো ইচ্ছা নেই—না তরুণ খেলোয়াড়দের, না সমর্থকদের প্রতি। আমরা জানি, যখন মাঠে নামি, তখন নিজের ভূমিকা ঠিকভাবে পালন করতে হয়, আর আজ সেটাই করেছি।’
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে দারুণ পারফরম্যান্স ছিল ভিনিসিয়ুসের। গোল বা অ্যাসিস্ট পেলেও আক্রমণভাগের বাঁ প্রান্তে থেকে বার্সার রক্ষণভাগের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন ২৫ বছর বয়সী উইঙ্গার। কাতালান ক্লাবের রাইট ব্যাক জুলেস কুন্দেকে নাচিয়ে ছাড়েন তিনি। কোচ জাবি আলোনসো তাকে তুলে নিয়ে রদ্রিগোকে নামানোর সময় অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় ভিনিকে।

গ্রীষ্মকালীয় দল বদলে সবচেয়ে বেশি খরুচে ক্লাব ছিল লিভারপুল। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে তারকা ফুটবলারদের দলে ভেড়ানোয় অল রেডদের ধারে-কাছে ছিল কম ক্লাবই। তবে এতো এতো তারকার ছাপ পড়ছে না মাঠের খেলায়। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সবশেষ আসরের চ্যাম্পিয়নদের অবস্থা এখন এককথায় শোচনীয়।
সবশেষ ব্রেন্টফোর্ডের কাছে ২-৩ গোলে হারে লিভারপুল। ২০২১ সালের পর আরেকবার প্রিমিয়ার লিগ টানা চার ম্যাচ হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয় অ্যান ফিল্ডের ক্লাবটির। একের পর এক হারে পয়েন্ট টেবিলেও নিম্নমুখী যাত্রা অব্যহত রেখেছে আর্নে স্লটের দল। শীর্ষে থাকা আর্সেনাল থেকে ৭ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকা লিভারপুল সাত নম্বরে অবস্থান করছে।
লিগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের এমন দুর্দশার কারণ কি হতে পারে ? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজছে অনেকেই। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড ওয়েইন রুনির মতে লিভারপুলের অনেক সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা নেতৃত্ব। স্লটের দলে নেতার ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না কাউকে।
আরও পড়ুন
| রিয়াল খেলোয়াড়দের কথার আক্রমণে জর্জরিত ইয়ামাল, বার্নাব্যুতে 'ভিনিসিয়ুস আগ্নেয়গিরি’ |
|
সম্প্রতি ‘দ্য ওয়েইন রুনি শো’ এর একটি এপিসোডে রুনি বলেন, “নেতৃত্বের অভাব সবচেয়ে বড় সমস্যা। বিশেষ করে অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক এবং দলের প্রধান ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহর শরীরী ভাষা এই সময়ে উদ্বেগের কারণ।’
তিনি আরও যোগ করেন,‘কেউই এই পরিস্থিতি আশা করেনি। এটি খুব দ্রুত এসেছে এবং খুব শক্তভাবে আঘাত করেছে। এখন তারা সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হিমশিম খাচ্ছে।’
দলের দুই সিনিয়র ফুটবলারের মধ্যে নেতার আচারণ দেখছেন না রুনি, ‘শরীরী ভাষা অনেক কিছুই বলে। আমরা দুজনের শরীরী ভাষায় মধ্যেই পার্থক্য লক্ষ্য করেছি। তারা দলের শীর্ষ দুই খেলোয়াড়। তাদের শরীরী ভাষা যদি ঠিক না থাকে, তা বাকি সবার ওপর প্রভাব ফেলে।’
লিভারপুলের পরের ম্যাচ ক্রিস্টল প্যালেসের বিপক্ষে। কারাবাও কাপের চতুর্থ রাউন্ডে ক্লাবটির মুখোমুখি হবে তারা। ক্রিস্টল প্যালেসের বিপক্ষে সবশেষ দেখায় ১-২ গোলে হেরেছে সালাহরা।

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে শুরু হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক জোটের (আসিয়ান) ৪৭তম শীর্ষ সম্মেলন। গতকাল থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশের জন্য নতুন একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের ঘোষণা দিয়েছেন ফিফা সভাপতি জিয়ানি ইনফান্তিনো। এই প্রতিযোগিতার নাম হবে ‘ফিফা আসিয়ান কাপ’।
নতুন টুর্নামেন্টের ঘোষণা দিয়ে ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো বলেন, ‘ফিফা আসিয়ান কাপের মাধ্যমে আমরা দেশগুলোকে একত্রিত করছি। এই প্রতিযোগিতা বিশাল সাফল্য বয়ে আনবে। এটি আসিয়ান অঞ্চলের জাতীয় দলের ফুটবলকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আমাদের খেলাধুলার বিকাশে সহায়ক হবে।’
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইতোমধ্যেই আয়োজিত হচ্ছে আসিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। দুই বছর পরপর অনুষ্ঠিত হওয়া এই টুর্নামেন্টের সবশেষ আসরের চ্যাম্পিয়ন ভিয়েতনাম। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে থাইল্যান্ডকে হারিয়ে এই প্রতিযোগিতার তৃতীয় শিরোপা জেতে ভিয়েতনাম।
ইনফান্তিনো জানান, নতুন এই টুর্নামেন্টটি ফিফার আন্তর্জাতিক ম্যাচ উইন্ডোর সময় অনুষ্ঠিত হবে, যাতে বিশ্বের বিভিন্ন লিগের খেলোয়াড়রা তাদের জাতীয় দলের সঙ্গে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
সবশেষ পূর্ব তিমোর আনুষ্ঠানিকভাবে আসিয়ানের ১১তম সদস্য হিসেবে যোগদান করেছে। ইনফান্তিনো বলেন, ‘ফুটবলবিশ্বে ১১ একটি প্রতীকী সংখ্যা, কারণ প্রতিটি দলের ১১ জন খেলোয়াড় থাকে।’
২০২৬ সালের বিশ্বকাপের মহাদেশীয় বাছাইপর্বে তৃতীয় রাউন্ডের পর একমাত্র আসিয়ান দেশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া এগিয়ে ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে পারেনি দেশটি।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নতুন এই টুর্নামেন্টটি আরব কাপের ফরম্যাটে আয়োজিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফিফা জানিয়েছে, এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সবকিছু চূড়ান্ত করবে তারা।

ম্যাচের আগেই আভাস ছিল এমন কিছুর। শেষ পর্যন্ত সেটাই হলো। দুই দলের ফুটবলারদের তেড়েফুঁড়ে আসা, বিবাদে জড়ানোর মতো ঘটনা এল-ক্লাসিকোর পুরোনো দিনের আমেজই যেন ফিরিয়ে এনেছে।
বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ দ্বৈরথে এবার আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছড়ানোর কাজটা করেন লামিনে ইয়ামাল। ‘রিয়াল মাদ্রিদ চুরি করে এরপর অভিযোগও করে’ তাঁর এমন মন্তব্যে তেতে ওঠে মাদ্রিদ শিবির। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বার্সা উইঙ্গার ইয়ামালের দিকে তেড়ে গিয়ে সেই ক্ষোভই বুঝি উগরে দিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র-দানি কার্ভাহালরা।
বিবাদে জড়িয়ে পড়েন রিয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার কোর্তোয়াও
লা লিগায় গতকালের ম্যাচটি কিলিয়ান এমবাপে ও জুড বেলিংহামের গোলে ২-১ ব্যবধানে জয় পায় রিয়াল। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে অরেলিয়েঁ চুয়ামেনিকে ট্যাকল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন পেদ্রি। আর তাতেই ডাগ-আউটে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।
রেফারির ম্যাচ শেষ হওয়ার বাঁশি বাজতেই সেই উত্তেজনা রূপ নেয় বাক-বিতণ্ডা, হাতাহাতি, আর ধাক্কাধাক্কিতে। রিয়ালের ফুটবলারদের ক্ষোভটা ছিল মূলত ইয়ামালের ওপর। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় ইয়ামাল যখন হেঁটে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন তখন তাঁকে হাত দিয়ে ইশারা করে কিছু বলছেন কার্ভাহাল। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা জানিয়েছে, রিয়ালের রাইট ব্যাক কার্ভাহাল ইয়ামালকে বলেন, ‘তুমি অনেক কথা বলো। এখন বলো দেখি!’ তখন ইয়ামাল কার্ভাহালের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে থামিয়ে দেন রিয়াল মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা।
আক্রমণাত্মক আর মারমুখি ভঙ্গিতে দেখা যায় ভিনিসিয়ুসকে। সতীর্থ সহ অনেকেও আটকাতে পারছিলেন না ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারকে। নিজের জাতীয় দলের সতীর্থ রাফিনিয়ার দিকেও তেড়ে যান ভিনি। ওই সময় ভিনিসিয়ুস নাকি ইয়ামালকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কী ব্যাপার! ব্যাক পাস দেওয়া ছাড়া আর কিছুই তো করলে না।! শুধুই ডিফেন্ডারদের কাছে বল দিলে।’
ম্যাচ শেষে এমন উত্তেজনা নিয়ে বার্সার মিডফিল্ডার ফ্রেংকি ডি ইয়ং বলেন, ‘আমি মাঠে ছিলাম, হঠাৎ দেখলাম অনেক খেলোয়াড় এবং স্টাফ জড়ো হয়েছে। ম্যাচ যখন শেষ হলো তখন মাদ্রিদের খেলোয়াড়রা লামিনের দিকে দৌড়ে গেল। আমার কাছে এটা কিছুটা অতিরঞ্জিত মনে হয়েছে।’
ব্রাজিলের জাতীয় দলের সতীর্থকে থামাতে নেমে পড়েন রাফিনিয়াও
ডাচ মিডফিল্ডার কারভাহাল ও ইয়ামালের মধ্যে কথার লড়াই নিয়ে বলেন, ‘যেহেতু তুমি (কারভাহাল) লামিনের সতীর্থ (স্পেন দলের), তুমি তো তাকে চেন এবং যদি মনে করো তাঁর এমন মন্তব্য করা উচিত হয়নি, তাহলে তুমি তাকে কল করতে পারতে, মাঠে এমনটা করার বদলে।’
অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদের কোচ জাবি আলোনসোর কাছে এসব স্বাভাবিকই মনে হয়েছে, ‘যা ঘটেছে তা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। আমার মনে হয় না আমাদের এখান থেকে বেশি অর্থ খুঁজে বের করা উচিত। এটা ফুটবল। আর এল-ক্লাসিকোর মতো ম্যাচে এসব হবেই।’
বিপরীতে বার্সেলোনার সহকারী কোচ মার্কাস সর্গ মাঠের খেলাতেই মনোযোগ দিতে বলছেন, ‘সত্যি বলতে, আমি বুঝতে পারিনি কি ঘটেছে। শেষ পর্যন্ত বেঞ্চের মধ্যে অনেক লোক চিৎকার করছিল, তবে আমার মনে হয় আমাদের খেলার দিকে মনোযোগ দেওয়াই উচিত।’
ম্যাচ পরবর্তী দুই দলের বাক-বিতণ্ডায় জড়ানোর ঘটনায় ৬ জনকে হলুদ কার্ড এবং একজনকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে। রিয়ালের ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো এবং এদার মিলিতাও আর বার্সেলোনার ফেরান তোরেস, আলেহান্দ্রো বালদে, ফারমিন লোপেজকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়েছে । সরাসরি লাল কার্ড দেখেছেন রিয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার আন্দ্রে লুনিন।