১১ মে ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
ম্যাচের শুরুটা দেখে মনে হচ্ছিল, মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে ভিন্ন ছন্দেই হাজির রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম দিকে এলেমেলো ফুটবল খেলা বার্সেলোনা খুব দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নিল। বিরতির আগেই চার গোল খেয়ে বসা রিয়ালের হয়ে একাই লড়ে গেলেন কিলিয়ান এমবাপে, করলেন দারুণ এক হ্যাটট্রিক। তবে কার্লো আনচেলত্তির দলের রক্ষণভাগের ভুলে যাওয়ার মত এক ম্যাচে শেষ হাসি হাসল ইয়ামাল-রাফিনিয়ারাই। আর তাতে চলে গেল লা লিগা জয়ের আরও কাছে।
লা লিগায় রোববারের এল ক্লাসিকোর মহারণে আরও একবার বার্সেলোনার কাছে হেরেছে রিয়াল। ৪-৩ গোলে দুর্দান্ত জয়ে মৌসুমে রিয়ালকে টানা চার ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ উপহার দিল ফ্লিকের দল।
আরও পড়ুন
‘ইয়ামাল বাচ্চা না, এমন পারফরম্যান্সই চায় বার্সা’ |
![]() |
এই জয়ে বার্সেলোনার লিগ জয়ও প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। তিন ম্যাচ হাতে রেখে ৮২ পয়েন্ট কাতালান ক্লাবটির। আর দুইয়ে থাকা রিয়ালের অর্জন ৭৫ পয়েন্ট।
লা লিগায় বড় ধরণের নাটকীয়তা না দেখা দিলে এই হারে নিশ্চিত হয়ে গেছে রিয়ালের শিরোপাহীন মৌসুম। দুই দফায় রিয়ালকে অসাধারণ সব সাফল্য এনে দেওয়া আনচেলত্তির জন্য শেষটা হতে যাচ্ছে ভুলে যাওয়ার মতোই।
ম্যাচে রিয়ালের শুরুটা অবশ্য হয় স্বপ্নময়। পাউ কুবার্সির দুর্বল ব্যাকপাস থেকে বল পেয়ে গতিতে বক্সের ভেতর প্রবেশ করেন এমবাপে। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তাকে ফাউল করে বসেন গোলকিপার ওয়েজেচ সেজনি। পেনাল্টির বাঁশি সাথে সাথেই বাজিয়ে দেন রেফারি। ফরাসি তারকার বাঁদিকে নেওয়া নিচু শটে হাত লাগালেও আটকাতে পারেননি সেজনি।
এটি ছিল চলতি মৌসুমে লিগে এমবাপের ২৫তম গোল। লিড নিয়ে রিয়াল অব্যাহত রাখে ইতিবাচক ফুটবল। একের পর পর আক্রমণ শানায় দলটি। বিপরীতে ফ্লিকের দল গুছিয়ে নিতেই নষ্ট করে কিছুটা সময়।
নবম মিনিটে বলার মত প্রথম আক্রমণে বক্সের ভেতর কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নিয়েছিলেন এরিক গার্সিয়া, তবে রিয়ালের জন্য তা বিপদের কারণ হয়নি।
১৪তম মিনিটে ফের বার্সেলোনার জালে বল, আর এবারও স্কোরার সেই এমবাপেই। তবে বল বানিয়ে দেওয়ার একটা বড় কৃতিত্ব পাবেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। প্রায় মাঝমাঠ থেকে দারুণ এক ডিফেন্সচেড়া পাসে খুঁজে নেন ফ্রানের বিশ্বকাপ জয়ী তারকাকে। বল রিসিভ করে জায়গা বানিয়ে সেজনিকে পরাস্ত করে রিয়ালের লিড বড় করেন এমবাপে।
গোলের লক্ষ্যে প্রথম দুই শট থেকেই জালের দেখা পাওয়া রিয়ালের আক্রমণের সামনে সেই সময়ে বেকায়দায় ছিল বার্সেলোনা। ১৮তম মিনিটে বক্সের একটু বাইরে থেকে লামিন ইয়ামালের কার্লিং শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ব্লক করেন থিবো কোর্তোয়া।
পরের মিনিটে আরেকটি ভালো সেভ দিলেও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় কোর্তোয়াকে। ফেররান তরেসের কর্নার কিক থেকে হেডারে জাল খুঁজে নেন এরিক গার্সিয়া, যিনি কোপা দেল রের ফাইনালেও রিয়ালের বিপক্ষে গোল করেছিলেন।
আরও পড়ুন
আবেগে ভেসে, চোখের জলে বায়ার্নকে বিদায় জানালেন কিংবদন্তি মুলার |
![]() |
এক গোল শোধ দিয়ে ক্রমেই রিয়ালকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। খেই হারিয়ে ফেলা রিয়ালের খর্বশক্তির রক্ষণের জন্য গতিময় ইয়ামালকে সামলানো শুরু থেকেই ছিল কঠিন। ৩২তম মিনিটে তরেসের পাস থেকে কাট করে বক্সের ভেতর বাঁদিক থেকে বা পায়ের কোনাকুনি এক শটে গোল করেন স্প্যানিশ এই উইঙ্গার, লা লিগায় এটি এই মৌসুমে ইয়ামালের সপ্তম গোল।
পরপর দুই গোলের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে ফের গোল হজম করে বসে রিয়াল, যেখানে ফুটে ওঠে তাদের ছন্দপতন। বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন এমবাপে, তবে ঠিক তার সামনে দাঁড়িয়ে যান সতীর্থ লুকাস ভাজকেস। দুজনের ভুল বোঝাবুঝি থেকে পাল্টা আক্রমণে বল পেয়ে যান রাফিনিয়া। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে প্রথমবারের মত বার্সেলোনাকে লিড এনে দেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড।
শুরুতে ঝলক দেখানো রিয়াল এরপর আশা জাগিয়েছিল সমতা টানার। পেনাল্টি আদায় করেছিলেন এমবাপে। তবে তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা আর মেলেনি।
উল্টো ৪৫তম মিনিটে আরেক গোল খেয়ে বসে রিয়াল। এবারও কেন্দ্রবিন্দু সেই ভাজকেসই। রিয়াল অধিনায়কের কাছ থেকে বক্সের বাইরে বল কেড়ে রাফিনিয়াকে পাস বাড়ান তরেস, ফাঁকায় থাকা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই উইঙ্গারের সমস্যা হয়নি জালের দেখা পেতে। লা লিগায় এটি মৌসুমে রাফিনিয়ার ১৮তম গোল ছিল।
অবিশ্বাস্য এক প্রথমার্ধে রিয়াল শুরুর দুই গোলের পর লক্ষ্যেই আর শটই রাখতে পারেনি। বিপরীতে ১১টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখে বার্সেলোনা।
বিরতির পরও একই ছন্দ ধরে রাখে বার্সেলোনা। রিয়ালের জোড়াতালি দেওয়া রক্ষণভাগকে আরও একবার বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাফিনিয়া। ৫৩তম মিনিটে বাঁদিক থেকে তার পাস থেকে ফাঁকায় দাঁড়ানো ইয়ামাল টোকা দিয়ে বল জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে আর মেলেনি গোল।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে এর তিন মিনিট পর একটা সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপে, তবে শট উঁচিয়ে মেরে হতাশ করেন রিয়ালকে। পাল্টা আক্রমণ থেকে এরপর দুরন্ত গতিতে এগিয়ে ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ানোর চেষ্টা করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, তবে সেটা বাধাপ্রাপ্ত হয় আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনের ক্লিয়ারিংয়ে।
শেষ পর্যন্ত এই জুটির হাত ধরেই গোল পায় রিয়াল। আরও একটি কাউন্টার এটাক থেকে বল পেয়ে দুজন এগিয়ে যান বার্সেলোনার বক্সে। নিজের সামনে সুযোগ থাকলেও গোলের সামনে এমবাপেকে দিয়ে হ্যাটট্রিক করান ভিনিসিয়ুস। ২৭তম গোলের মাধ্যমে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলস্কোরারের তালিকায় রবার্ট লেভানদভস্কির চেয়ে দুই গোলে এগিয়ে যান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
৭৪তম মিনিটে স্কোরলাইন ৫-৩ করার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া। তার সামনেও ছিল হ্যাটট্রিকের আশা। ইয়ামালের ক্রসে ছিলেনও ভালো পজিশনে, তবে ছয় গজের ভেতর থেকে বল পোস্টের ওপর দিয়ে মেরে টিকিয়ে রাখেন রিয়ালের ম্যাচে ফেরার আশা।
আরও পড়ুন
ড্র করে সুযোগ মিসের হতাশায় গার্দিওলা |
![]() |
জমে ওঠা ম্যাচের ৮২তম মিনিটে বার্সেলোনা শিবিরে জোর দাবি ওঠে পেনাল্টির। বক্সের ভেতর অহেলিয়া চুয়ামেনির সম্ভাব্য হ্যান্ডবল সময় নিয়ে স্ক্রিনে দেখে রেফারি নাকচ করেন পেনাল্টির আবেদন। হাফ ছেঁড়ে বাচে রিয়াল।
৮৮তম মিনিটে ভিনিসিয়ুসের বদলি হিসেবে নামা তরুণ ফরোয়ার্ড ভিক্টর মুনজ প্রথম টাচেই পেয়েছিলেন হিরো হওয়ার সুযোগ। তবে লক্ষ্যে শট রাখলেই গোল, এমন পজিশন থেকে তিনি বল মেরে দেন পোস্টের বাইরে।
গোলের জন্য মরিয়া রিয়ালকে আরও একবার পাল্টা আক্রমণে চমকে দেয় বার্সেলোনা। ৯৫তম মিনিটে কাট করে বক্সে ঢুকে কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান ফেরমিন লোপেজ। তবে হ্যান্ডবল হওয়ায় বাতিল হয় সেই গোল। বাকি সময়ে কোনো দলই পারেনি বলার মত আর সুযোগ তৈরি করতে।
৪ জুলাই ২০২৫, ৮:৫৩ পিএম
মূল লক্ষ্য অর্জন হয়ে গেছে আগেই। তবুও তুর্কমেনিস্তানের সাথে নিয়মরক্ষার ম্যাচ হলেও একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেননি কোচ পিটার বাটলার। আগের ম্যাচে শক্তিশালী মায়ানমারকে হারিয়ে দেওয়া বাংলাদেশের মেয়েরা উজ্জীবিত পারফরম্যান্সে প্রথম মিনিট থেকেই দাপট দেখালেন শামসুন্নাহার-ঋতুপর্ণারা। একপেশে ম্যাচে বিশাল জয় তুলে অপরাজিত থেকেই ম্যাচে গ্রুপ পর্ব শেষ করল বাংলাদেশ।
নারীদের এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে মায়ানমারের ইয়াংগুনে 'সি' গ্রুপের শেষ ম্যাচে শনিবার তুর্কমেনিস্তানকে ৭-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
শুরু থেকেই আধিপত্য দেখায় বাংলাদেশে। চতুর্থ মিনিটেই জালের দেখা পান স্বপ্না রানী। তহুরা খাতুনের কাটব্যাকে বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন। এরপর প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। দুই মিনিট পর শামসুন্নাহার জুনিয়রের নিখুঁত ফিনিশিংয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
বক্সের ভেতর জটলার মধ্যে বল পেয়ে সহজেই টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ১৩ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের তৃতীয় গোল করেন শামসুন্নাহার। শামসুন্নাহার সিনিয়রের ক্রস গোলরক্ষক মিস করলে ফাঁকা পোস্টে বল পাঠাতে কোনো ভুল করেননি তিনি।
এরপর স্কোরলাইন বাড়াতে নামেন । ১৬তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে এক চমৎকার শটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন মনিকা চাকমা। এক মিনিট পর দুর্দান্ত এক একক প্রচেষ্টায় গোল করেন আগের ম্যাচের জয়ের নায়িকা ঋতুপর্ণা চাকমা। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তার নেওয়া শট গোলরক্ষকের হাত ফসকে আশ্রয় নেয় জালে।
ক্লাব বিশ্বকাপে শুরুটা আশানুরূপ না হলেও সময়ের সাথে সাথে ছন্দ ফিরে পাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ৷ সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে তাদের সামনে এবার বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, যারা শেষ আটে পেয়েছে কষ্টার্জিত জয়। তবে রিয়াল কোচ জাবি আলোনসো মনে করেন, জার্মান ক্লাবটির সাথে অপেক্ষা করছে কঠিন পরীক্ষাই।
নতুন কোচ আলোনসোর অধীনে গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে আলা হিলালের সাথে ড্র করেছিল রিয়াল। তবে এরপর থেকে চেনা ছন্দে হাজির হয় দলটি। শেষ ১৬-তে ১-০ গোলে হারায় সেরি আ ক্লাব য়্যুভেন্তাসকে। অন্যদিকে আগের রাউন্ডে মন্টেরেকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে। শক্তির বিচারেও রিয়ালের চেয়ে পিছিয়ে থেকেই মাঠে নামতে যাচ্ছে ডর্টমুন্ড।
ম্যাচটিকে সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলনে আলোনসো অবশ্য প্রতিপক্ষকে দিয়েছেন যথেষ্ট সম্মানই।
“ভুলে গেলে চলবে না, ডর্টমুন্ড খুব ভালো একটা দল। (কোচ) নিকো কোভাচ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তারা ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। তাদের খেলায় একটা গতি এসেছে। তাদের বিপক্ষে তাই লড়াইটা সহজ হবে না। আমি মনে করি, খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা ম্যাচ হতে যাচ্ছে।”
তবে এই ম্যাচেও হয়ত রিয়ালের শুরুর একাদশে জায়গা মিলবে না এমবাপের। টুর্নামেন্টের শুরুতে গ্যাস্ট্রোএনটেরাইটিসে আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাকে। তাতে মিস করেন গ্রুপের তিন ম্যাচ। এরপর য়্যুভেন্তাসের বিপক্ষে মাঠে বদলি হিসেবে। মাঠে নেমেই দর্শকদের কাছ থেকে ফরাসি তারকা পান উষ্ণ অভ্যর্থনা, যা জানান দেয় যুক্তরাষ্ট্রে তার জনপ্রিয়তা।
তবে ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও হয়ত তাকে দেখা যাবে না শুরুর একাদশে, আলোনসো দিলেন সেই আভাস।
“কিলিয়ান এখন অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠছে। গত তিনদিন থেকে তার অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এই কারনেই আগের ম্যাচে সে কিছু মিনিট খেলেছিল। সে শুরুর একাদশে থাকবে কিনা, আগামীকাল (শনিবার) সকালে আমরা সেই সিদ্ধান্ত নেব। তবে সে মাঠে নামবে, এটা নিশ্চিত।”
দিয়াগো জতার মৃত্যুর খবর জানার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন রুবেন নেভেস। আল হিলালের হয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলতে নেমে পারেননি আবেগ সামলাতে। সেখান থেকে সরাসরি পর্তুগালের এই ফুটবলার যোগ দিয়েছেন জতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়। চোখের জলে সেখানে হাতে তুলে নিয়েছেন প্রিয় বন্ধুর কফিন।
শনিবার পর্তুগালের পোর্তোর কাছাকাছি মাত্রীজ দে গনডোমার চার্চে জতা ও তার ভাইয়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এই শহরেই গত শুক্রবার পরিবার-বন্ধুদের উপস্থিতিতে হয় তাদের শ্রদ্ধানুষ্ঠান। আল হিলালের হয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ আটের ম্যাচ থাকায় সেই অনুষ্ঠানে হাজির হতে পারেননি নেভেস। তবে ম্যাচটা শেষ হওয়ার ১২ ঘণ্টা পর চলে যান জতাকে শেষবারের মত বিদায় জানাতে।
আরও পড়ুন
জতার মৃত্যু বিশ্বাস হচ্ছে না রোনালদোর, বাকরুদ্ধ ক্লপ |
![]() |
স্পেনের উত্তরাঞ্চলে গত বৃহস্পতিবার গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান জতা ও তার ভাই আন্দ্রে সিলভা। পর্তুগাল জাতীয় দলে দীর্ঘ সময় ধরে খেলার সুবাদে ২৮ বছর বয়সী জতার সাথে নেভেসের রয়েছে দারুণ এক বন্ধুত্বের সম্পর্ক। আর তাই যুক্তরাষ্ট্রে বসেই যখন বন্ধুত অকাল প্রয়াণের খবর পাওয়ার পর থেকেই ভেঙে পড়েব নেভেস।
নেভেস সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে লিখেন,
“তারা বলে, আমরা যখন কাউকে হারিয়ে ফেলি, তখন তাকে ভুলে যাই। কিন্তু আমি তোমাকে কখনো ভুলব না ভাই আমার!”
গত শনিবার রাতে চলমান ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্লুমিনেন্সে ও আল হিলালের ম্যাচে শুরুর আগে জতার স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। সেই সময় মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা নেভেস ও পর্তুগাল জাতীয় দলের আরেক সদস্য জোয়াও কানসেলো কান্না ধরে রাখতে পারেননি। তাদের অশ্রুসিক্ত মুখের ছবি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত লিভারপুল ফরোয়ার্ড দিয়োগো জতা ও তার ভাই আন্দ্রে সিলভার প্রতি সম্মান জানাতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছেন লিভারপুল দলের খেলোয়াড়রা। এই দুজনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে পর্তুগাল যাচ্ছেন ক্লাবটির সদস্যরা, সূত্রের বরাত দিয়ে এমনটাই দাবি ইএসপিএনের।
গত বুধবার রাতে স্পেনের উত্তরাঞ্চলে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান জতা ও তার ভাই। ধারণা করা হচ্ছে, সোমবার প্রাক-মৌসুম অনুশীলনের জন্য ইংল্যান্ডে ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন সদ্যই পর্তুগালের হয় ইউয়েফা নেশন্স লিগ জেতা জতা। তবে মাঝপথেই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি ও তার ভাই দুজনেই।
আরও পড়ুন
জতার মৃত্যুর শোকে ভেঙে পড়েছেন নেভেস-কানসেলো |
![]() |
শনিবার পর্তুগালের পোর্তোর কাছাকাছি মাত্রীজ দে গনডোমার চার্চে তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে। গনডোমার শহরেই জতার শৈশব কেটেছে। সেখানেই শুরু হয় তার ফুটবল যাত্রা। তিনি সহ তার পরিবারেরও বর্তমানে সেখানেই বসবাস। এই শহরেই গত শুক্রবার পরিবার-বন্ধুদের উপস্থিতিতে হয় তাদের শ্রদ্ধানুষ্ঠান।
২৮ বছর বয়সী জতার মৃত্যুর পর লিভারপুলের অ্যান্ডি রবার্টসন, মোহামেদ সালাহ ও ভার্জিল ফান ডাইকরা আবেগঘন শোকবার্তা প্রকাশ করেছেন। ক্লাব কোচ আর্নে স্লট এবং মালিক ফেনওয়ে স্পোর্টস গ্রুপ থেকেও এসেছে আনুষ্ঠানিক শোকবার্তা।
জতার অকাল প্রয়াণ না হলে আগামী সোমবার থেকে নতুন মৌসুমের প্রস্তুতি শুরু করত লিভারপুল। তবে ক্লাবের সাবেক এই খেলোয়াড়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা তাদের প্রাক-মৌসুমের প্রথম অনুশীলন সেশন স্থগিত করেছে। এছাড়াও ক্লাবটির পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছে জতার পরিহিত ২০ নম্বর জার্সিকে অবসরে পাঠানোর।
নতুন মৌসুমের জন্য ক্লাব খোঁজার সময়ে মাঠের বাইরের ঘটনায় বড় ধাক্কা খেলেন থমাস পার্টে। সাবেক আর্সেনাল মিডফিল্ডারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ছয়টি অভিযোগ এনে চার্জ গঠন করেছে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, ঘটনাগুলো ঘটেছে ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে। ভিন্ন ভিন্ন এসব ঘটনায় পার্টের বিরুদ্ধে তিনজন নারীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে মোট ছয়টি মামলা দায়েত করা হয়েছে। এদের মধ্যে এক নারীর অভিযোগ দুইবার ধর্ষণের, আরেক নারীর অভিযোগ তিনটি ধর্ষণের। আর তৃতীয় নারীর পার্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন তাকে যৌন নিপীড়নের।
আরও পড়ুন
‘হৃদয়ের ডাক’ শুনে বার্সাকে হতাশ করে বিলবাওতেই থেকে গেলেন নিকো |
![]() |
অভিযোগের ভিত্তিতে ৩২ বছর বয়সী ঘানা জাতীয় দলের এই ফুটবলার আগামী ৫ আগস্ট ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্টে হাজির হবেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
এই বিষয়ে তদন্ত টিমের প্রধান, ডিটেকটিভ সুপারিনটেনডেন্ট অ্যান্ডি ফারফি বিবৃতিতে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
“এখন আমাদের মূল অগ্রাধিকার হলো অভিযোগকারী নারীদের প্রতি যতোটা সম্ভব সহায়তা প্রদান করা। কেউ যদি এই ঘটনার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকেন বা তাদের কাছে কোনো তথ্য থাকে, তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
২০২০ সালে স্প্যানিশ ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদ থেকে ৪৫ মিলিয়ন পাউন্ড ট্রান্সফার ফিতে আর্সেনালে যোগ দেন পার্টে। ২০২৪-২৫ মৌসুমেও ছিলেন মিকেল আর্তেতার দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। প্রিমিয়ার লিগে খেলেন ৩৫টি ম্যাচ, গোল করেন ৪টি।
আরও পড়ুন
জতার মৃত্যুর শোকে ভেঙে পড়েছেন নেভেস-কানসেলো |
![]() |
গত ৩০ জুন আর্সেনালের সাথে পার্টের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ফলে তিনি এখন ফ্রি এজেন্ট হয়ে গেছেন। নতুন ক্লাবের সন্ধানে থাকা অবস্থায় ভিন্ন ঘটনায় এবার এসেছেন আলোচনায়।