
অন্য ইউরোপিয়ান দলগুলো যখন ইউরোর বাছাইপর্বে ব্যস্ত, তখন জার্মানি খেলছে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ। যেহেতু ইউরোর পরের আসর জার্মানিতে, তাই স্বাগতিক হিসেবে সেখানে খেলবে জার্মানি। তবে, যদি বাছাইপর্ব খেলতে হতো, তাহলে জার্মানির শঙ্কাই থাকতো মূলপর্বে জায়গা করে নিতে পারবেতো ৩ বারের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা?
জার্মানির এই শঙ্কার কারণ সাম্প্রতিক ফর্ম। চলতি বছর ৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে মাত্র ১টিতে জিতেছে ৪ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। সবশেষ, ঘরের মাঠে হারতে হয়েছে জাপানের কাছে ৪-১ গোলে। এই জাপানের কাছে গেল বিশ্বকাপে হেরেই টানা আসরের গ্রুপ স্টেজ থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিলো জার্মানিকে। একমাত্র জয়ের স্মৃতি এই বছরের মার্চে পেরুকে হারানো। এছাড়া কলম্বিয়া, পোল্যান্ড, বেলজিয়ামের কাছে হেরেছে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। আর ইউক্রেনের সাথে বেঁচে গেছে ড্র করে।
আরও পড়ুন: জার্মানির কাছে আরও একবার স্বপ্ন ভঙ্গ আর্জেন্টিনার
ইউরোর ঠিক এক বছর আগে জার্মানির হতশ্রী পারফরম্যান্সে চাপে পড়ে গেছেন হেড কোচ হ্যান্সি ফ্লিক। গুঞ্জন রয়েছে, যে কোন সময় বরখান্ত হতে পারেন এই কোচ। যদিও হ্যান্সি ফ্লিকের দাবি, তিনিই যোগ্য ব্যক্তি জার্মানির কোচের চেয়ারটা সামলানোর জন্য। ২০২১ সালে দায়িত্ব পান ফ্লিক, এরপর থেকে ২৫ ম্যাচের ১২টিতে জিতেছে জার্মানি, হারতে হয়েছে ৬ ম্যাচ।
যদিও ফুটবলার দোষ নিচ্ছেন নিজেদের কাঁধেই। জাপানের বিপক্ষে ক্যাপ্টেনসির আর্মব্র্যান্ড পড়া ইলকায় গুনদোয়ানতো প্রশ্ন তুলেছেন ফুটবলারদের নিয়েই, “এই মুহূর্তে আমরা ভালো খেলছি না। বাজে একটা দিন গেছে। আমাদের নিজের কাছেই প্রশ্ন করা উচিত্।” জশুয়া কিমিখের কাঠগড়াতেও ফুটবলাররা, “ জাপানের বিপক্ষে হারটা আমাদের প্রাপ্যই ছিলো। সেকেন্ড হাফে আমাদেরতো কিছুই ছিলো না। আসলে আমরা বিশ্বকাপ থেকেই ভালো খেলতে পারছি না। এ কারণেই আমাদের কোয়ালিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ওরা আরও গোল পেতে পারত।“
১৩ সেপ্টেম্বর শক্তিশালী ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে জার্মানরা। সেই ম্যাচেও জার্মানি ঘুড়ে দাঁড়াতে না পারলে, চাকুরি বাঁচানোটাই কষ্টকর হয়ে যাবে বায়ার্ন মিউনিখকে ট্রেবল জেতানো হ্যান্সি ফ্লিকের।
No posts available.
১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫:১৩ পিএম
১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪১ পিএম
১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৯ এম

ক্লাব আমাকে বলির পাঁঠা বানিয়েছে—প্রিমিয়ার লিগে লিডস ইউনাইটেডের বিপক্ষে লিভারপুলের ড্রয়ের পর এমনই তীর্যক মন্তব্য করেছিলেন মোহাম্মদ সালাহ। এরপরই মিশরীয় তারকার ওপর বিরূপ পদক্ষেপ নেয় অ্যানফিল্ডের ক্লাব। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইন্টার মিলান ম্যাচে সালাহকে স্কোয়াডের বাইরে রাখেন আর্নে স্লট।
আগামীকাল প্রিমিয়ার লিগে ব্রাইটনের মুখোমুখি হবে লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে বাংলাদেশ সময় রাত দুইটার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে সালাহ ইস্যুতে কথা বলেছেন অল রেডসের ম্যানেজার।
দল নির্বাচন নিয়ে স্লট বলেছেন,
“আমরা ক্লাব হিসেবে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। আমি সেই (সালাহকে বসানো) সিদ্ধান্তের অংশ ছিলাম।”
লিভারপুলে সালাহর ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। গত এপ্রিলে অল রেডস শিবিরের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তিতে সই করা রাইট উইঙ্গারকে নিয়ে স্লট বলেছেন,
“আমি তাঁকে দলে রাখতে না চাওয়ার কোনো কারণ দেখি না।”
স্লট জানিয়েছেন, তিনি আগামীকাল সালাহর সঙ্গে বসবেন। রেডস ম্যানেজার বলেছেন,
“আমি সবসময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি (লিভারপুলের স্পোর্টিং ডিরেক্টর রিচার্ড হিউজেস এবং প্রধান নির্বাহী মাইকেল এডওয়ার্ডস)। কিন্তু যখন দলের একাদশ বা স্কোয়াড নির্বাচন করার সিদ্ধান্তের বিষয় আসে, তখন তারা সেটাকে আমার ওপর ছেড়ে দেয়।”
প্রিমিয়ার লিগে সান্ডারল্যান্ড ম্যাচের পর সালাহর এজেন্ট ও স্লটের সঙ্গে অনেক বিষয়ে কথা হয়েছে। বিশেষ করে দুই পক্ষই বিষয়গুলো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। সর্বোপরি আগামীকাল চূড়ান্তভাবে বসবেন দুইজন। এরপর বুঝা যাবে মোড় কোন দিকে নিচ্ছে।

অবশেষে জয়খরা কাটাল আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ২-০ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল লিগে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে তারা।
মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে ১৬ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল ব্রাদার্স। কিন্তু পেনাল্টি মিস করে বসেন মার্কোস রুদওয়েরে জেনার সিলভা।
৩২ মিনিটে কাজী রাহাদ মিয়ার লং থ্রো মোহাম্মদ শাওনের গায়ে লেগে সরাসরি খুঁজে নেয় জাল। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে আবারও লং থ্রোয়ে গোল পায় আরামবাগ। এবারও থ্রো নেন রাহাদ। তা ঠেকাতে গিয়ে উল্টো নিজেদের জালেই বল ফেলে দেন ব্রাদার্স গোলরক্ষক ইশাক আলী। বিরতির পর কোনো দলই আর গোলের দেখা পায়নি।
মুন্সীগঞ্জের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে ১-০ গোলে হারিয়েছে ফর্টিস এফসি।
৫০ মিনিটে বা প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে ফর্টিসের ওকাফরের শট যায় পোস্টের উপর দিয়ে। খানিক পর অন্য প্রান্ত দিয়ে বিপদসীমায় ঢুকে পড়েন পা ওমর বাবু। তবে তাঁকে আটকে দেন রহমতগঞ্জের গোলকিপার। ৫৭ মিনিটে গোললাইন ক্লিয়ার করে এ যাত্রায় বেঁচে যায় রহমতগঞ্জ।
৭০ মিনিটে প্রতিপক্ষের বক্সে ওকাফরের হেডে ফিরতি শট নেন মুরশেদ আলী। তাঁর নিচু শট গোলকিপার মামুন আলিফ নিয়ন্ত্রণে নেন। পরের মিনিটে আরও একবার গোলপোস্টের সামনে দারুণ সেভ করেছেন এই গোলকিপার।
৮২ মিনিটে ম্যাচে সবচেয়ে ভালো একটি আক্রমণ শানায় রহমতগঞ্জ, সেখান থেকে গোলেরও সুযোগ ছিল। তবে প্রতি আক্রমণে ওঠা আদু ক্লেমেন্তো শট নেওয়ার আগে বক্সে মাটিতে পড়ে যান। উঠে শট নেওয়ার আগে ফর্টিসের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়েরা ঘানার ফরোয়ার্ডকে রুখে দেন।
শেষ বাশি বাজির আগে পা ওমরের পাস থেকে বক্সে ঢুকেই ডান পায়ের শটে নেন ওকাফর। তার শট লাফিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেন রহমতগঞ্জের গোলকিপার। তবে তিনি নাগাল পাননি, বল পোস্টে লেগে সরাসরি জাল কাঁপায়।

প্রিয় দলের ব্যর্থতায় সবার মনই তো কাঁদে। কেউ হয়তো প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ হয়ে সাময়িক সময়ের জন্য খেলা দেখায় বিরতি দেন। কেউবা মনের ঝাল মেটান কড়া সমালোচনা করে। তবে কোনো সমর্থক যদি ক্লাবের বাজে পারফরম্যান্সে ক্ষিপ্ত হয়ে স্টেডিয়ামে অগ্নিসংযোগ করে বসেন! এমন ঘটনারই জন্ম দিল ফিনল্যান্ডের অন্যতম সফল এক ক্লাবের কিশোর সমর্থক।
ঘটনা গত রোববারের। ফিনল্যান্ডের শীর্ষ স্তরের লিগ ভেইক্কাউসলীগার ক্লাব এফসি হাকার একটি স্ট্যান্ড আগুন পুরো ধংসস্তুপে রূপ নেয়। ফিনল্যান্ডের সিসা-সুমোই পুলিশ জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যায় ভ্যালকেয়াকোস্কির টেহটান কেন্ট্টা স্টেডিয়ামে অগ্নিকাণ্ডের সময় তিনজন কিশোর উপস্থিত ছিলেন, যাদের প্রত্যেকের বয়স ১৫ বছরের নিচে। হেলসিঙ্কি থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার উত্তরে এই ঘটনা ঘটেছে।
ওই তিন কিশোরের মধ্যে একজন স্বীকার করেছেন সে এমন একটি বস্তু জ্বালিয়েছে, যা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। সন্ধ্যা আটটার দিকে আগুন ধরে এবং দ্রুত কাঠের অবকাঠামোতে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৩২ সালে নির্মিত ৩,২০০ আসনের স্টেডিয়ামের ৪০০ দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্ট্যান্ড পুড়ে যায়।
ফিনল্যান্ডের লিগের অন্যতম সফল ক্লাব এফসি হাকা। ১৯৩৪ সালের প্রতিষ্ঠার পর থেকে ন’টি ফিনিশ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ১২টি কাপ জিতেছে ক্লাবটি। তবে চলতি মৌসুমে হাকার পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। আগুনের ঘটনা ঘটে কিছু সপ্তাহ পর, যখন ক্লাবটি—যা ১৯৩৪ সালের প্রতিষ্ঠার ক্লাবটি ফিনল্যান্ডের শীর্ষ স্তরের ভেইককাউসলীগা থেকে অবনমিত হয়ে দ্বিতীয় ডিভিশনে নেমে যায়।
অবশ্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েও বয়সের কারণে পার পেয়ে যাচ্ছে ওই তিন কিশোর। এই ঘটনার তদন্ত চলমান, তবে ফিনিশ আইনে ১৫ বছরের নিচের কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।
যদিও ডিটেকটিভ ইন্সপেক্টর মাইজাস্টিনা টামমিস্তো বলেছেন,
‘দোষমুক্তির অর্থ মানে ক্ষতির দায় থেকে মুক্তি নয়। ফিনল্যান্ডে ক্ষতিপূরণের জন্য কোনো ন্যূনতম বয়স নেই।’
এফসি হাকার চেয়ারম্যান মার্কো ল্যাকসোনেন বলেছেন, ক্ষতির খরচ এখনও হিসাব করা হয়নি, তবে তা ব্যাপক হবে। ভ্যালকেয়াকোস্কি শহরের মালিকানাধীন এই ভেন্যুর প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন যে তারা যত দ্রুত সম্ভব পিচটি মেরামতের পরিকল্পনা করবেন।

ইউরোপীয় ফুটবলে সবচেয়ে সফল ক্লাবটি কালেভদ্রেই এমন সংকটের মুখে পড়ে। বিশ্বের সেরা কোচ আর সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে সাফল্য পেতেই অভ্যস্ত রিয়াল মাদ্রিদ। তবে সম্প্রতি খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। তারার হাঁট বসিয়েও মাঠে ছন্নছাড়া লস ব্লাঙ্কোসরা।
নতুন কোচ জাবি আলোনসো সমস্যার সমধান খুঁজে পেতে মরিয়া। কিন্তু অন্ধকার টানেলের আলো কতদূর সেটাই এখনও ধরতে পারছেন না রিয়াল কোচ। স্প্যানিশ এই কোচ হয়তো মনে মনে বলছেন, ‘বলুন দেখি কোথায় যায়, কোথায় গেলে সমাধান পাই!’
জাবি হয়তো সমাধান পেতে পারেন রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক ফরোয়ার্ড করিম বেনজেমা থেকেও। না, আল ইত্তিহাদের ফরাসি তারকা ফরোয়ার্ডকে মাঠে নয়, তাঁর পরামর্শ থেকে প্রতিকার পেলেও পেতে পারেন রিয়াল কোচ।
সম্প্রতি ফরাসি সংবাদমাধ্যম লেকিপ’ কে দেওয়া দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন বিষয়ে মন খুলে কথা বলেন বেনজেমা। আলোচনার বিষয় ফ্রান্স জাতীয় দলে সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন থেকে শুরু করে রিয়াল মাদ্রিদের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যন্ত।
রিয়ালের বর্তমান সংকট নিয়ে কী ভাবছেন বেনজেমা? শোনা যাক ৩৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের মুখ থেকেই, রিয়াল মাদ্রিদের যে জিনিসটার অভাস সেটা হলো, সরাসরি সংযোগ। এমবাপ্পে, ভিনিসিয়াস, বেলিংহাম এবং রোদ্রিগো প্রত্যেককে মাঠে কী করতে হবে তা জানা উচিত। বেলিংহামকে বুঝতে হবে, তিনি প্লেমেকার, গোলদাতা নয়। এমবাপ্পে গোলস্কোরার, প্লেমেকার নয়। ভিনিসিয়াস ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার নয়, তিনি বাঁ পাশের উইঙ্গার। যতক্ষণ সবাই মাঠে কী করতে হবে তা জানবে, ততক্ষণ সব ঠিক থাকবে। কারণ আমরা এমন খেলোয়াড়দের কথা বলছি যারা বিশ্বের শীর্ষ ১০-এ, এবং তারা সবাই একই দলে। কোচ কিছু করতে পারবে না, সবকিছু খেলোয়াড়দের উপর নির্ভর করে।’
রিয়ালের এই দলে পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতার ঘাটতি দেখছেন বেনজেমা। এছাড়া তাঁর মতে পরিবর্তিত ফুটবলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না স্প্যানিশ ক্লাবটির খেলেযাড়রা। আল ইত্তিহাদের স্ট্রাইকার যোগ করেন, ‘বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদে সেই ধরনের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আর নেই, যারা বেলিংহাম, এমবাপ্পে বা ভিনিসিয়াসকে বলতে পারে তারা কোথায় ভুল করছে। তাই পরিস্থিতি জটিল… কোচ হয়তো বলে, কিন্তু ভিন্নভাবে। কারণ আজকাল ফুটবল… সত্যি বলতে, খুব জটিল। খেলোয়াড়রা একে অপরের সঙ্গে আর কথা বলে না। দেখা যাচ্ছে, আমি আমার কাজ করেছি, আমার গোল করেছি—আজকের ফুটবল এমন।’
রিয়ালের এই দলকে অনেকে ‘গ্যালাক্টিকো’ বলে থাকেন। বেলিংহাম, এমবাপে, ভিনিনিয়ুসরা বর্তমানে ফুটবলবিশ্বের অন্যতম সেরা। তবে দলের বড় তারকা থাকার নেতিবাচক দিকও আছে। ইগো বা অহংবোধের কারণে মাঠে একটি দল হয়ে খেলা সম্ভব হয় না। বেনজেমা সেই কথাটাই মনে করিয়ে দিলেন, ‘যদি তোমার সতীর্থ তোমার চেয়ে ভালো হয়, সেটা মেনে নিতে হবে। সমস্যা হলো তা মানা নয় যে তোমার সামনে যে খেলোয়াড় গোল করছে সে বেশি স্কোর করছে।
এই কারণেই সমস্যা হয়, যখন পাঁচ বা ছয়জন বড় খেলোয়াড় একসঙ্গে থাকে। প্রত্যেকের কিছু না কিছু অবদান থাকে। এবং শেষ পর্যন্ত, গোলদাতা খেলোয়াড় একটু বেশি মনোযোগ পায় অন্যদের তুলনায়। কিন্তু তারও সব সময় অন্যদের প্রয়োজন! সে একা সব কিছু করতে পারবে না।’
সমালোচনা হজম করারও মতো দৃঢ় মানসিকতার বিকল্প দেখছেন না বেনজেমা, ‘সমালোচনা সবসময় মেনে নেওয়া কঠিন। তবে এটি প্রকৃতপক্ষে এক ধাপ এগোনোর সুযোগ। যদি তুমি এটাকে ভালোভাবে গ্রহণ করো, তুমি উন্নতি করবে। এটা তোমার জন্য এবং সবার জন্যই ভালো।
কিন্তু সত্যি বলতে, মাদ্রিদটা বিষয়টা জটিল; এখানে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে।’
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ আট ম্যাচে মাত্র দু’টিতে জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। লা লিগায় এল ক্লাসিকো জিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা থেকে এগিয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ পথ হারিয়েছে রিয়াল। এখন পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা কাতালান জায়ান্টদের চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে তারা। আগামী রোববার লিগে তাদের প্রতিপক্ষ দিপোর্তিভো আলাভেস।

মাস ছয়েক পরই বিশ্বকাপ। নিজ নিজ দেশকে বিশ্বসেরার মঞ্চে সমর্থন জানাতে ফুটবল সমর্থকরা উঠে পড়ে লেগেছেন টিকিট সংগ্রহে। আর এই টিকিট নিয়েই শুরু হয়েছে বিপত্তি। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকোর যৌথভাবে আয়োজিত বিশ্বকাপের তৃতীয় ধাপে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে ফিফা। আর টিকিটের আকশচুম্বি দামেই চটেছে ফুটবল সমর্থকরা। ইউরোপের ফুটবল সমর্থকরা তো রীতিমতো ফিফাকে ‘চরম বিশ্বাসঘাতক’ বলছে।
গতকাল থেকে শুরু হয়েছে তৃতীয় ও শেষ দফার টিকিট বিক্রি। এটিকে বলা হচ্ছে ‘র্যান্ডম সিলেকশন ড্র’য়ের তৃতীয় পর্ব। যা ২০২৬ সালের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। আগ্রহীদের ফিফার টিকিটিং ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘ফিফা আইডি’তে সাইন আপ করতে হবে। এরপর ‘সাইন ইন’ করে নির্দিষ্ট ম্যাচগুলোর টিকিটের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীদের নিয়ে ফেব্রুয়ারিতে লটারি করবে ফিফা। কেউ তাদের চাহিদা অনুযায়ী পাবেন, কেউ কম পাবেন। যারা টিকিট পাবেন, তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে তখন টাকা কেটে নেওয়া হবে।
তবে যত ঝামেলা টিকিটের দাম নিয়ে। অনেকের মতোই ইউরোপের ফুটবল সমর্থকদের আশঙ্কা আগামী বিশ্বকাপের টিকিটের উচ্চ মূল্যের কারণে প্রবেশাধিকার হারাতে পারেন অনেকে। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের টিকিটের দাম অতীতের সব আসরের তুলনায় ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ফিফা তাদের নিয়ম অনুযায়ী টিকিটের ৮ শতাংশ জাতীয় সংস্থার জন্য বরাদ্দ রাখে। যাতে তারা তাদের দলের সবচেয়ে নিবেদিত ভক্তদের কাছে বিক্রি করতে পারে। জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের প্রকাশিত একটি তালিকায় দেখা গেছে, গ্রুপ পর্বের বিভিন্ন ম্যাচের টিকিটের দাম ১৮০ ডলার থেকে ৭০০ ডলার পর্যন্ত। ফাইনালের জন্য সর্বনিম্ন দাম ছিল ৪১৮৫ ডলার আর সর্বোচ্চ ৮৬৮০ ডলার।
বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের টিকিটের এই মূল্য ফিফার পূর্ববর্তী দাবীর সঙ্গে একেবারেই সাংঘর্ষিক।। যেখানে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছিল ৬০ ডলারেও টিকিট পাওয়া যাবে। আর ৭ বছর আগে টুর্নামেন্টের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল কর্মকর্তাদের লক্ষ্য ছিল, শুরুর দিকের ম্যাচগুলোর জন্য ২১ ডলারের মূল্যের সাত লাখেরও বেশি টিকিট থাকবে।
ইউরোপের ফুটবল সমর্থকদের সংগঠন (এফএসই) বর্তমান দামকে ‘মাত্রাতিরিক্ত’ বলে বর্ণনা করেছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘এটি বিশ্বকাপের ঐতিহ্যের প্রতি এক বড় বিশ্বাসঘাতকতা, যা সেই ভক্তদের অবদানকে পুরোপুরি উপেক্ষা করছে, যারা এই মহা উৎসবকে প্রাণবন্ত করে তোলে।’
ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ‘ইংল্যান্ড সাপোর্টাস ট্রাভেল ক্লাব’কে টিকিটের তথ্য জানিয়েছে। যদি কোনো সমর্থক প্রতি ম্যাচের টিকিট থেকে শুরু করে ফাইনাল পর্যন্ত সব ম্যাচ দেখেন, তাহলে খরচ হবে মাত্র ৭ হাজারেরও বেশি ডলার। যা ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ বেশি।
ফুটবল সমর্থক সংগঠন এফএসই ফিফাকে অনুরোধ করেছে, ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি অবিলম্বে বন্ধ করতে, যতক্ষণ না এমন একটি সমাধান পাওয়া যায় যা বিশ্বকাপের ঐতিহ্য, সর্বজনীনতা এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্বকে সম্মান করে।