১ নভেম্বর ২০২৫, ৩:৪৬ পিএম

টানা তৃতীয়বারের মতো জাতীয় মহিলা দাবায় চ্যাম্পিয়ন হলেন নোশিন আনজুম। ১১ রাউন্ডের মধ্যে ৩ ড্র, একটি হার ও ৭টি জয় নোশিনের। শুক্রবার শেষ রাউন্ডে ড্র করেন ওয়ারশিয়া খুশবুর সঙ্গে। তাতে নিশ্চিত হয় চ্যাম্পিয়নের মর্যাদা। ২০১৬ সাল থেকে জাতীয় মহিলা দাবা খেলা নোশিন পড়াশোনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগে। স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। দাবায় জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতি এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে আজ শনিবার কথা বলেছেন টি-স্পোর্টসের সঙ্গে।
টি-স্পোর্টস: জাতীয় নারী দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে আবারও চ্যাম্পিয়ন হলেন, অভিনন্দন
নোশিন আনজুম: ধন্যবাদ। অবশ্যই খুব ভালো লাগছে। এবার অলিম্পিয়াড আছেতো, সেজন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সব কিছু মিলে অনেক খুশি।
টি-স্পোর্টস: প্রতিযোগিতায় কোন ম্যাচটি সবচেয়ে কঠিন মনে হয়েছে?
নোশিন আনজুম: দশম রাউন্ড আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন ছিল। কালো ঘুটি নিয়ে ওই রাউন্ডে ড্র করতে হয়েছিল।
টি-স্পোর্টস: দাবায় আপনার এই অর্জনে কার অবদান বেশি?
নোশিন আনজুম: আমার মায়ের। শুরু থেকেই… ১১-১২ বছর বয়স থেকে আম্মু-ই আমাকে দাবা ফেডারেশনে নিয়ে যায়। তিনিই আমাকে অনুপ্রেরণা দেন।
টি-স্পোর্টস: হেরে গেলে কিংবা চাপের মধ্যে পড়লে ওই সময়টা কি করেন?
নোশিন আনজুম: হারলে তো অবশ্যই খারাপ লাগে। তখন জীবনের সেরা সময়গুলোর কথা ভাবি। হাসি-খুশি থাকার চেষ্টা করি। মা আমাকে মোটিভেট করে।
টি-স্পোর্টস: সামনে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় লক্ষ্য কি?
নোশিন আনজুম: আপাতত অলিম্পিয়াডে ভালো করার লক্ষ্য। কারণ অলিম্পিয়াডে যদি ভালো করি তবে দাবা বিশ্বকাপেও ভালো করতে পারব।
টি-স্পোর্টস: দাবাড় ক্যারিয়ারে কোন অর্জনটা পেলে সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন?
নোশিন আনজুম: গ্রান্ডমাস্টার হতে চাই।
টি-স্পোর্টস: আপনার চোখে বাংলাদেশে দাবাড়ুদের ভবিষ্যৎ কি?
নোশিন আনজুম: অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করি বাংলাদেশের অবস্থান খুবই খারাপ। দাবায় পপুলারিটি কম। তাতে কি হয়- আমরা স্পন্সর পাই না। আর এটা তো একটা ইনডোর গেমস। অন্যান্য দেশের গ্রান্ডমাস্টার হলে সরকার থেকে সুযোগ-সুবিধা দেয় কিন্তু আমাদের দেশে তা হয় না। কোচিং করিয়ে কিংবা অন্য উপায় টাকা আয় করতে হয়।
টি-স্পোর্টস: এবার জাতীয় নারী দাবার মান কেমন দেখলেন
নোশিন আনজুম: আমার কাছে এবারে প্রতিযোগিতা কঠিন এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মনে হয়েছে। ১২ জনের মধ্যে ৯জনই তো অনেক ইয়াং ছিলাম।
টি-স্পোর্টস: এবার কাকে সবচেয়ে বেশি কঠিন প্রতিপক্ষ মনে হয়েছে
নোশিন আনজুম: আলোর সঙ্গে আমি হেরেছি। এরপর ওয়ারশিয়া খুশবু এবং জান্নাতও অনেক ভালো খেলেছে। তাদের বিপক্ষে খেলা কঠিন ছিল।
টি-স্পোর্টস: দেশের সেরা নারী দাবাড়ু আপনি, তারপরও রেটিং নর্ম কম, এ নিয়ে আক্ষেপ হয় না?
নোশিন আনজুম: হ্যা অবশ্যই, আক্ষেপ তো থাকেই। রেটিং না বাড়লে তো নর্ম পাবো না। দেশে খেললে আসলে হয় না। কারণ দেশে সব খেলোয়াড়ের রেটিং কম। দেশের বাইরে খেলতে হয়, কিন্তু সেটার জন্য আর্থিক সহায়তা বা স্পন্সর নেই।
টি-স্পোর্টস: দাবাড় বাইরে প্রিয় কাজ কি
নোশিন আনজুম: বই পড়া, গান শোনা।
টি-স্পোর্টস: দাবাড়ু না হলে কি হতেন
নোশিন আনজুম: অন্য কোনো স্পোর্টসে থাকতাম। আমার ব্যাডমিন্টন খেলতে ভালো লাগে। এছাড়া আর্চারি আমার অনেক পছন্দের।
টি-স্পোর্টস: বাংলাদেশের কোনো ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়কে চেনেন?
নোশিন আনজুম: খেলা দেখা হয় না। শীতকাল আসলে খেলা হয়। আসলে খেলতে ভালো লাগে, দেখতে না।
টি-স্পোর্টস: গান শুনতে পছন্দ করেন, শিল্পী হওয়ার ইচ্ছে ছিল কখনও?
নোশিন আনজুম: একদম না।
টি-স্পোর্টস: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুষ্টি বিজ্ঞানে পড়ছেন, অন্য কোনো সাবজেক্ট না নিয়ে এটাই কেন
নোশিন আনজুম: ইঞ্জিনিয়ারিং, সায়েন্সের অন্য কোনো সাবজেক্ট নিলে… আমার আসলে ম্যাথমেটিক অনেক পছন্দের, ভালো লাগার সাবজেক্ট। কিন্তু সেটা নিলে খেলাটা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হতো। আমি দুইটাই (খেলা এবং পড়াশোনা) এক সঙ্গে চালাতে চেয়েছিলাম।
টি-স্পোর্টস: দাবা এবং পড়াশোনার মধ্যে কোনটিকে প্রায়োরিটি বেশি দেন?
নোশিন আনজুম: অবশ্যই দাবা। এটা আমার প্যাশনের জায়গা। এটা আমি নিজে অনুধাবন করি যখন জোনাল চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে গিয়েছিলাম। পড়ালেখায় খারাপ করলে অতটা খারাপ লাগে না, কিন্তু দাবায় খারাপ করলে নিতে পারি না। এই জন্য আমার কাছে মনে হয় যে যদি দুইটার মধ্যে একটাকে বেছে নিতে হয় তাহলে অবশ্যই দাবাকে নিব।
টি-স্পোর্টস: দাবা খেলা শুরু করেন কখন থেকে
নোশিন আনজুম: ক্লাস ফোরে থাকতে, আমার ৯ বছর বয়স থেকে। ২০১৩ সালে ঢাকায় আসি। পরের বছর ভিকারুননিসায় ভর্তি হই। ওখানে একটা টুর্নামেন্টে সিনিয়র একজনকে হারাই। তখন আম্মুও আমাকে এই খেলাটায় অনুপ্রাণিত করেন। দাবাড় প্রতি ঝোকটাও তখন থেকে বেড়ে যায়।
No posts available.
২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২:০২ পিএম
২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭:৪৫ পিএম
২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ এম
২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬:৩২ পিএম

বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ব্যাডমিন্টন সিরিজ টুর্নামেন্টের পুরুষ দ্বৈতে বাজিমাত স্বাগতিকদের। আগের দিন চার জুটি কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে ইতিহাস রচনা করে। সেখান থেকে আজ বৃহস্পতিবার তিন জুটি সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়। সন্ধ্যায় শেষ চারের লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশের শাটলাররা।
সকালে মিশ্র দ্বৈতে ঊর্মি আক্তারকে নিয়ে হেরে গেলেও, পুরুষ দ্বৈতে আর ভুল করেননি আল আমিন জুমার। দীর্ঘদিনের সঙ্গী মোয়াজ্জেম হোসেন অহিদুলকে নিয়ে সেমিতে পা রাখেন তিনি। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার জুটিকে ২১-১৪ ও ২৫-২৩ পয়েন্টের ব্যবধানে পরাজিত করেন তারা।
সেমিফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশের গৌরব সিংহ-তানভীর ইসলাম জুটি। ভিয়েতনামের থান- ডান এন জুটিকে ২১-১৫ ও ২১-১৫ পয়েন্টের ব্যবধান হারিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নেন। ভারতের প্রদীপ কুমার-অতুল কুমার ভাইদের হারিয়ে শেষ চারে উঠেন বাংলাদেশের রাহাতুন নাঈম ও মিজানুর রহমান জুটি।
জয়ের দিনে হতাশার গল্পও আছে। চারটি কোয়ার্টারের মধ্যে একটিতে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। দিনাজপুরের এলোরা একাডেমির শাটলার রিয়াদুল ইসলাম-তনয় সাহা জুটি ৯-২১, ১৩-২১ পয়েন্টের ব্যবধানে থাইল্যান্ডের লোথং-তাছিন জুটির কাছে পরাজিত হন।

সোমবার থেকে ঢাকায় শুরু হয়েছে ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল সিরিজ। পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ব্যাডমিন্টন সিরিজের প্রথমদিন হতাশায় পার করেছেন স্বাগতিক শাটলাররা। পুরুষ এবং নারী একক- দুই বিভাগে কোর্টে নামলেও জিততে পারেননি বাংলাদেশের কোনো শাটলার।
কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল বাংলাদেশের তারকা শাটলার আইমান ইবনে জামান। প্রতিপক্ষ না আসায় পরবর্তী রাউন্ডে উন্নীত হয়েছেন তিনি।
সোমবার অবশ্য বাংলাদেশের টপ সিডেড কেউ নামেননি। আগামীকাল মঙ্গলবার আল আমিন জুমার, ঊর্মি আক্তার, মোয়াজ্জেম হোসেন অহিদুল, আইমান ইবনে জামানরা কোর্টে নামবেন।
সকালে নারী এককে শুরুতে কোর্টে নামেন জেরিন ইকবাল মোহনা। ভিয়েতনামের প্রতিযোগীর সামনে দাঁড়াতেই পারেননি; হেরেছেন ২১-৩ ও ২১-৯ পয়েন্টের ব্যবধানে।
সদ্য শেষ হওয়া বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জের পুরুষ দ্বৈতে দারুণ পারফর্ম করা আকিব সুলাইমানও আজ হতাশ করেছেন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতের রিয়ান রঞ্জনের কাছে ২১-৮ ও ২১-১৬ পয়েন্টের ব্যবধানে হেরেছেন।
এদিন জিততে পারেননি মোস্তাকিম হোসেনও। মালয়েশিয়ার প্রতিযোগী কং ঝিংয়ের বিরুদ্ধে প্রথম সেট লড়াই করে হারলেও ২২-২০, পরের সেট ২১-১৫ পয়েন্টে হেরে সিরিজের পুরুষ একক থেকে বিদায় নেন মোস্তাকিম।
নারী এককে বাংলাদেশের স্মৃতি রাজবংশী ভারতের নিশু মালিকের বিরুদ্ধে পরাজয়ের তেতো স্বাদ নেন। প্রথম সেট কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়তে না পারলেও, দ্বিতীয় সেটে দারুণ লড়াই করেন। তবে ভারতের কাছে স্মৃতি ২১-১১ ও ২১-১৯ পয়েন্টের ব্যবধানে পরাজিত হন।
এদিকে নারী এককে লিকা পোদ্দারও হেরেছেন। ভারতের বালা রেড্ডির কাছে ২১-১৯ ও ২১-১৩ পয়েন্টের ব্যবধানে পরাজিত হন তিনি।

দুই দিন বিরতির পর ঢাকায় আজ থেকে শুরু হচ্ছে আরও একটি আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা। ১৭ দেশ নিয়ে চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর আজ থেকে এক দল বেশি নিয়ে কোর্টে গড়াচ্ছে ব্যাডমিন্টন সিরিজ। প্রথম টুর্নামেন্টে তথা ইউনেক্স-সানরাইজ আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জে মিশ্র দ্বৈতে আল আমিন জুমার ও ঊর্মি আক্তার রুপা জেতেন। এরপর থেকেই নতুন করে আলোচনায় দেশের ব্যাডমিন্টন।
যে কোনো সাফল্যের পর তা ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। মিশ্র দ্বৈত ইভেন্টে জুমার-ঊর্মিদের এখন চ্যালেঞ্জ সামনে দেশকে আরও কিছু দেওয়ার। আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রতিযোগিতায় দারুণ কিছু করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তাঁরা। একই সঙ্গে চান তাঁদের নিয়ে, দেশের শাটলারদের নিয়ে হোক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। তাতে সম্মতি বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের। বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ফেডারেশনের কর্তা-ব্যক্তিরা। লম্বা সময় অনুশীলন যেমন দরকার তেমন উন্নতমানের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি বড় মাপের কোচও রাখতে চায় ফেডারেশন।
এর আগে এসএ গেমসকে কেন্দ্র করে ক্যাম্প চালু করে ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন। যদিও দক্ষিণ এশিয়ার এই প্রতিযোগিতা আর আলোর মুখ দেখেনি। তবে গেমসকে সামনে রেখে নেওয়া প্রস্তুতির ফল বাংলাদেশের শাটলাররা পেয়েছেন ঢাকায় হওয়া চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায়।
তবে এসএ গেমসের প্রস্তুতির স্বরূপ খেলোয়াড়দের অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও থাইল্যান্ডের মতো দেশে পাঠানো হলেও তার সুফল কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, খেলোয়াড়দের দেওয়া তথ্য মতে, বিদেশি প্রতিপক্ষরা সারা বছর আধুনিক কোচ ও উন্নত সুবিধায় প্র্যাকটিস করে, যেখানে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা কেবল টুর্নামেন্ট এলেই স্বল্পমেয়াদি ক্যাম্পের সুযোগ পান।
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে মালয়েশিয়ার জুটির কাছে হারের পর ঊর্মি আক্তার বলেন, ‘ওরা আসলে দীর্ঘ সময় ধরে প্র্যাকটিস করে, ভালো কোচের অধীনে থাকে এবং ওদের সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি। ওদের স্পন্সর, ট্রেনিং সব কিছুই আমাদের চেয়ে ভালো।’শুধু এসএ গেমস নয় প্রতি বছরই দীর্ঘমেয়াদি ক্যাম্প চান জুমার, ‘সামনে অনিশ্চয়তা তো আছেই। যদি আবার এরকম দীর্ঘমেয়াদি ক্যাম্পের সুযোগ পাই, তবে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।’
ব্যাডমিন্টনের মতো টেকনিক্যাল ও ব্যয়বহুল খেলায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভালো করা প্রায় অসম্ভব মনে করেন জুমার। তাই পৃষ্ঠপোষকদের এগিয়ে আসা উচিত, ‘আমাদের অনুশীলনের অভাব তো আছেই। এক বক্স শাটলের দাম এখন ৬০০০ টাকা, যা দিয়ে বড়জোর ২-৩ দিন অনুশীলন করা যায়। এত ব্যয়বহুল খেলায় একা ট্রেনিং চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাসেল কবির সুমন বলেন, ‘আমাদের এই ক্যাম্পটা স্বল্প সময়ে হয়েছে। বাইরেও খেলছি গত তিন-চার মাসে। এর মধ্যেই কিন্তু আমরা এই অর্জন করতে। এই অভ্যাস যত বাড়াতে পারব তত আমাদের ফল ভালো হবে। দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বাইরে খেলতে হবে।’
দীর্ঘমেয়াদী কোচ নিয়োগেরও চেষ্টা চালাচ্ছে ফেডারেশন। সুমন বলেন, ‘আগে আমরা একটা গণ্ডির মধ্যে ছিলাম, ওর বাইরে যেতাম না। আমার ফেডারেশন সভাপতিকে বলছি, যে দীর্ঘমেয়াদী একটা কোচ দরকার। আপনি এটা এনে দেন, সঙ্গে সঙ্গে এরা বাইরের সব টুর্নামেন্ট খেলবে। রেজাল্টও অটোমেটিক হবে, এই টুর্নামেন্টই তা প্রমাণ।’
আজ থেকে পল্টনের শহীদ তাজউদ্দীন ইনডোর স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে ইউনেক্স-সানরাইজ সিরিজ টুর্নামেন্ট। ৫ হাজার ডলারের প্রাইজমানির এই টুর্নামেন্টে থাকছেন আগের অনেকেই। নতুন করে যোগ হয়েছে কাজাখস্তান। ভারতের কিছু শাটলার ফিরে গেছেন, আসছেন নতুন কয়েকজন।

আগামীকাল সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ব্যাডমিন্টন সিরিজ। পাঁচ দিনব্যাপী এই টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে ২৬ ডিসেম্বর। পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়ামে ১৮ দেশের শাটলাররা তাদের নৈপুণ্য প্রদর্শন করবেন।
সিরিজ শুরুর আগে ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন। যা ১৬ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ২০ ডিসেম্বর শেষ হয়। সেখানে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ১৭টি দেশ এতে অংশ নিয়েছিল।
এই সিরিজেও খুব একটা পরির্বতন আসছে না। নতুন করে কাজাখস্তান যুক্ত হয়েছে। এছাড়া ভারতের কয়েকজন শাটলার ফিরে যাচ্ছেন, তাদের জায়গায় আসছেন নতুন কয়েকজন। ৫ হাজার ডলারের বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল সিরিজে টপ সিডেড খেলোয়াড়রা অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশের টপ সিডেড হিসেবে আল আমিন জুমার, মোয়াজ্জেম হোসেন অহিদুলরা থাকছেন।
চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্টে প্রাইজমানি ছিল সাড়ে ১৭ হাজার ডলার; সিরিজে ৫ হাজার ডলার। দুই টুর্নামেন্টের পার্থক্য জানতে চাইলে ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক রাসেল কবির সুমন জানান,
‘এখানে মূল্য পার্থক্য হলো পয়েন্টে। চ্যালেঞ্জে বেশি পয়েন্ট। সিরিজে কম।’

ঢাকায় আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনের ফাইনালে উঠে আগেই ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন আল আমিন জুমার ও ঊর্মি আক্তার জুটি। তবে ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জে স্বর্ণ জিততে পারেননি তাঁরা। আজ শনিবার মিশ্র দ্বৈতের ফাইনালে মালয়েশিয়ান জুটির কাছে হেরে গেছেন তারা।
এদিন প্রথম সেটে লড়াই করলেও, পরের সেটে আর পেরে ওঠেননি জুমার-ঊর্মি। ২৭-২১ ও ২১-১৪ পয়েন্টের ব্যবধানে হেরে রৌপ্য জিতেছেন তাঁরা। রাষ্ট্রীয় শোক দিবসের কারণে ফাইনালে কোনো আনুষ্ঠানিকতা রাখা হয়নি। এদিক কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রত্যেক শাটলার এবং কোচ-কর্তারা মাঠে যে যার কাজ সম্পন্ন করেছেন। তবে আনন্দ-অনুষ্ঠান না থাকলেও, ফাইনালে ওঠার কারণে অর্থ পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের মিশ্র দ্বৈতের তারকা জুটি জুমার-ঊর্মি।
বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সভাপতি হাবিব উল্যা ডন দুজনকে পাঁচশত করে মোট ১ হাজার ডলার অর্থ পুরস্কার দিয়েছেন। একই সঙ্গে শাটলারদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশী কোচসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদানেরও আশ্বাস দিয়েছেন হাবিব উল্যা ডন।
ফাইনাল শেষে আল আমিন জুমার বলেন,
‘প্রথমবারের মতো আমরা কোনো আন্তর্জাতিক ইভেন্টের ফাইনালে উঠতে পেরেছি এটা যেমন আনন্দের, তেমনি চ্যাম্পিয়ন হতে না পেরে একটু তো খারাপ লাগছেই। ওরা আমাদের চেয়ে সুযোগ-সুবিধা ট্রেনিংয়ে অনেক এগিয়ে। সেদিক থেকে আমরা কিছুটা হলেও পিছিয়ে। একক, দ্বৈত এবং মিশ্র দ্বৈত তিন বিভাগেই আমি খেলেছি। আমি কোনো ক্লান্তি অনুভব করেনি, আনন্দ নিয়েই খেলেছি। এবার পারিনি, ভবিষ্যতে অবশ্যই দেশের জন্য স্বর্ণ পদক জিতে আনব।'
ফাইনাল শেষে ঊর্মি আক্তার জানান,
‘এসএ গেমস সামনে রেখে আমরা যে তিন মাসের ট্রেনিংয়ে ছিলাম, সেটা অনেক কাজে দিয়েছে। ওই কারণেই এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠতে পেরেছি। ওদের সঙ্গে আমাদের অনেক পার্থক্য। ওদের ড্রেস দেখলেই বুঝবেন। ওরা বড় বড় স্পন্সর নিয়ে খেলে। আমাদের সেভাবে কোনো স্পন্সর নেই। দীর্ঘ মেয়াদী ট্রেনিংয়ের সুবিধা নেই। আমরাও যদি ওদের মতো সব ধরনের সুবিধা পেতাম, তাহলে আরও অনেকদূর যেতে পারতাম। কারণ ওরাও মানুষ, আমরাও মানুষ।'
মিশ্র দ্বৈতের পাশাপাশি আজ আরও চারটি ইভেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। পুরুষ এককে দুই ভারতীয়র লড়াইয়ে মেইরাবা মাইসনাম ২১-৭ ও ২১-১২ পয়েন্টে নুমাইর শাইককে পরাজিত করেন। নারী এককে চ্যাম্পিয়ন হন যুক্তরাষ্ট্রের ইসিকা জয়সোয়াল। ভারতের তানভি রেড্ডিকে ২২-২০, ২১-২৩ এবং ২১-১৫ পয়েন্টে পরাজিত করে স্বর্ণ জেতেন ইসিকা।
পুরুষ দ্বৈতের ফাইনালে ভিয়েতনামের ড্যাং খাহ-ট্রান হোং জুটিকে ২১-১৯ ও ২১-১২ পয়েন্টের ব্যবধান হারান ভারতের নিরঞ্জন-রুবান কুমার জুটি। সবশেষ নারী দ্বৈতের ফাইনালে থাইল্যান্ডের পাত্থারিন-সারিসা জানপেং জুটির কাছে মালয়েশিয়ার গ্যান মিন-তান জিং জুটিকে ২১-৭, ২০-২২ ও ২১-১৫ পয়েন্টে পরাজিত করেন।