২১ নভেম্বর ২০২৫, ৯:২৪ পিএম

সাধারণত কাবাডি দল হয়ে থাকে ১৪ সদস্যের। কিন্তু জার্মানি এসেছে ১০ জন নিয়ে! দলটিতে নানান পেশার খেলোয়াড় রয়েছেন। ডাক্তার, ছাত্রী ও চাকুরীজীবি। বিশ্বকাপ কাবাডির তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় পুরো দল নিয়ে ঢাকায় আসতে পারেনি জার্মানি। শেষ মুহূর্তে কয়েকজন দল থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয়।
এছাড়া আরও একটি বিষয় রয়েছে। এক বছরও হয়নি নারী কাবাডিতে নাম লিখিয়েছে জার্মানি। এখনও তাদের খেলাটি সৌখিনতার পর্যায়ে আছে। স্টুটবার্গ ও নুরেমবার্গে মাত্র কাবাডির চর্চা হয়। সবমিলিয়ে ৩০ থেকে ৪০ জন নারী খেলোয়াড় আছেন।
সপ্তাহান্তে খেলোয়াড়রা এক হয়ে কাবাডির চর্চা করে থাকেন। দলটির কেউ কেউ আবার একাধিক খেলা খেলে থাকেন। বক্সিং, রাগবি ও ফুটবল অন্যতম।
ঢাকায় চলমান নারী বিশ্বকাপ কাবাডিতে টানা তিন ম্যাচে হেরেছে জার্মানি। তবে পরাজয়ের পরও দলটির খেলোয়াড়দের মুখে হাসি লেগেই আছে। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক কোনও আসরে খেলতে এসে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি উপভোগও করছেন জার্মানির খেলোয়াড়রা। তাদের অন্যতম খেলোয়াড় এমা এটলের কথাতেই তা পরিস্কার।
বর্তমান দলটির কোচ একজন ভারতীয়। ঢাকায় জার্মানির জন্য ম্যাচ জেতা কঠিন হবে, দলের অন্যতম খেলোয়াড় এমা এটলে তা আগে থেকেই জানতো। তাই পুরো টুর্নামেন্টটি সবাই মিলে বেশ উপভোগ করছেন।
মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে খেলা শেষে এক ফাঁকে স্টুটবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী এমা জানালেন,
‘আমরা এই প্রথম বিশ্বকাপে খেলতে এসেছি। শুধু তাই নয়, প্রতিযোগিতামূলক খেলাতেও প্রথম আসলাম। এর আগে শুধু আমাদের প্রতিবেশী নেদারল্যান্ডের সঙ্গে খেলেছি। ওরা আমাদের চেয়ে ভালো দল। সেই ম্যাচগুলোর ভিডিও ইউটিউবে রয়েছে।’
জার্মানি তিনটি ম্যাচেই আত্মসমর্পন করেছে। ম্যাচে কোনও সময় তারা রেইড করতে এসে হাসছে। আবার প্রতিপক্ষ কীভাবে খেলছে তা অবাক চোখে দেখছে। এমনকি খেলার আইন কানুনও শেখার পর্যায়ে তারা। এমা বললেন,
‘আমরা এক বছরও হয়নি কাবাডি শিখছি। এখনও সেই পর্যায়ে শিখে উঠতে পারিনি। তাই এখানে অনেক কিছু শিখছি। বলতে পারেন খেলার নিয়ম কানুনও। আর একটি কথা বলে রাখি বলতে পারেন বাংলাদেশে এসেছি কাবাডি উপভোগ করতে।’
কাবাডি জার্মান খেলোয়াড়দের জীবিকার উৎস নয়। সৌখিনতার বশে শুধু খেলছেন। তবে স্বপ্ন দেখেন হয়তো সামনের কয়েক বছর পর তাদের ওখানে প্রো কাবাডি হবে। খেলার মধ্যে পেশাদ্বারত্ব আসবে। এমা আশাবাদী কন্ঠে বললেন,
‘আমরা তো শুরু করলাম বেশি দিন হয়নি। এখন ৩০-৪০ জন খেলোয়াড় আছে। মাত্র দুটি শহরে কাবাডির কিছু প্রচলন হচ্ছে। সামনের দিকে হয়তো একসময় পুরো জার্মানি জুড়ে কাবাডির চর্চা হবে। আমরাও একসময় আমাদের দেশে প্রো কাবাডির আয়োজন করতে পারবো। আমাদের মেয়েরা খেলবে। আমরা সবাই পেশাদার হবো।’
বাংলাদেশে এসে আতিথিয়েতা পেয়ে খুশি সবাই। এখানকার অভিজ্ঞতা নিজ দেশে কাজে লাগিয়ে কাবাডিকে জনপ্রিয় করতে চাইছেন এমা ও তার সতীর্থরা।
No posts available.
২০ নভেম্বর ২০২৫, ৪:৫১ পিএম

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নির্বাচন হবে আগামী ৩০ নভেম্বর। নির্বাচন এবং বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) উভয়ই কক্সবাজারের বে-ওয়াচ বলরুমে অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের নির্বাচনে মহাসচিব ও সহ-সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের বিপরীতে অতিরিক্ত মনোনয়ন জমা পড়েনি এবং যারা জমা দিয়েছেন তাদের মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। ভোটাভুটির প্রয়োজন পড়ছে না। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে মহাসচি, ৫ জন সহ-সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আরও ২২ জন সদস্য।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে), বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতির পর ক্রীড়াঙ্গনে আলোচিত পদ অলিম্পিকের মহাসচিব। সেই পদে এবার বসতে যাচ্ছেন সাবেক জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন ও ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জোবায়েদুর রহমান রানা।
অলিম্পিক এসোসিয়েশন মূলত গেমস নিয়েই কাজ করে। ফুটবল, ক্রিকেট বাদে অন্য সকল ফেডারেশনে নানাবিধ সমস্যা দেখভাল করে করে সংস্থাটি।

নেপালের ‘মেরা পিক’ পর্বতের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উড়ালেন পর্বতারোহী ইমতিয়াজ ইলাহী ও শাহনাজ আক্তার। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও আজ নেপালের স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে পৌঁছান তাঁরা।
অভিযানে অংশ নেওয়া ইমতিয়াজ ইলাহী একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা এবং শাহনাজ আক্তার পেশায় একজন দন্তচিকিৎসক। গতকাল রাত আড়াইটায় মেরা হাইক্যাম্প থেকে রওয়ানা দেন তাঁরা।
অভিযানটি পরিচালিত হয় বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাবের তত্ত্বাবধানে, নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্বরেকর্ডধারী পর্বতারোহী তাশি গ্যালজেন শেরপা। ক্লাবের এটি ৪৪তম অভিযান।
চূড়ায় ওঠার অনুভূতি জানিয়ে শাহনাজ আক্তার বলেন,
‘পর্বতে প্রথম সাফল্য পেলাম, খুবই আনন্দিত। এবারই ৬ হাজার মিটার উচ্চতার কোনো পর্বতের চূড়ায় পা রেখেছি। এখানেই থামতে চাই না। লাল-সবুজের প্রতিনিধি হয়ে আরও রেকর্ডের সাক্ষী হতে চাই।’
গত ১৯ অক্টোবর নেপালের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাবের সদস্য শামীম সাব্বির ও ডা. শাহনাজ আক্তার। উদ্দেশ্য ছিল সলোখুম্বু অঞ্চলের ৬ হাজার ১১৯ মিটার উচ্চতার লবুচে পর্বত অভিযানের। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ায় সামিট ছাড়াই ফিরে আসতে হয় তাঁদের।
শামীম ঢাকায় ফিরলেও নেপালেই অবস্থান করেন শাহনাজ। কয়েকদিন কাঠমান্ডুতে অবস্থান করে নতুন একটি অভিযানে অংশ নেন তিনি। যেখানে তাঁর সঙ্গী হিসেবে ছিলেন ইমতিয়াজ ইলাহী ও হোমায়েদ ইশতিয়াক মুন।

মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে আজ বৃহস্পতিবার ইরানকে হারিয়ে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে চাইনিজ তাইপে। চতুর্থ ম্যাচে এসে প্রথম হার দেখল ২০১২ বিশ্বকাপের রানার্সআপ ইরান।
এদিন শুরুতে দুবার এগিয়ে যায় ইরান। তাদের স্বস্তি কেড়ে নিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে চাইনিজ তাইপে; সমতায় ফেরে ৪-৪ পয়েন্টে। ইরানকে এক দফা অল আউট করে ১০-৫ পয়েন্টে এগিয়ে যায় চাইনিজ তাইপের মেয়েরা। প্রথমার্ধের শেষদিকে ইরান টানা ৪ পয়েন্ট পেলেও চাইনিজ তাইপে প্রথমার্ধ শেষ করে ১৭-১১ ব্যবধানে এগিয়ে।
দ্বিতীয়ার্ধে ইরান চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি। তবে টেকনিকে তাইনিজ তাইপের সঙ্গে পেরে ওঠেনি তারা। কাবাডি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া চাইনিজ তাইপে এ অর্ধেও আধিপত্য ধরে রাখে। একের পর এক পয়েন্ট তুলে ম্যাচ জিতে নেয় ৩১-২১ পয়েন্টে।

উগান্ডাকে ৪২-২২ পয়েন্টে হারিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জার্মানিকে উড়িয়ে দিয়েছিল ৫৭-২৭ পয়েন্টে। তৃতীয় ম্যাচে জয়ের ধারা ধরে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। ৪৩-১৮ পয়েন্টে হারতে হয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতের কাছে।
মিরপুর সোহরাওয়ার্দী স্টেডিয়ামে বুধবার ভারতের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি স্বাগতিকরা। শারীরিক গড়ন, টেকনিক ও ট্যাকটিকস—সব বিভাগেই এগিয়ে থাকা ভারতের সামনে চাপে ছিল রূপালী আক্তারের দল।
আলো ঝলমলে কোর্টে প্রথম পয়েন্ট তুলে ভারত, পরের রেইডে সমতা আনে বাংলাদেশ। লড়াকু ম্যাচের ইঙ্গিত দেওয়া দ্বৈরথ সময়ের সঙ্গে অসম হয়ে যায়—প্রতিষ্ঠিত হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের আধিপত্য। ভারত কেন বিশ্বসেরা—রেইড এবং ট্যাকল দুই বিভাগেই প্রমাণ করেন ঋতু নেগি ও সোনালী বিষ্ণু সিঙ্গাতেরা। বৃষ্টি-রূপালিরা রেইড করেও পয়েন্ট ছিনিয়ে আনতে পারেননি, ট্যাকলেও দেখাতে পারেননি মুন্সিয়ানা।
ভারত একের পর এক রেইড করে পয়েন্ট নিতে থাকে। ৬ মিনিটের মধ্যে চম্পা ঠাকুরকে কোর্ট থেকে ছিটকে দিয়ে বাংলাদেশকে অলআউট করে ভারত, স্কোর দাঁড়ায় ১২-৫। রূপালি ও বৃষ্টি মাঝে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন বটে, ততক্ষণে বাংলাদেশ আবারও অল আউট হয়।
প্রথমার্ধে ২৯-৮ পয়েন্টে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। বিরতির পরও একই চিত্র—ভারতের আধিপত্য অব্যাহত ছিল। ম্যাচে বাংলাদেশকে তৃতীয়বারের মতো অল আউট করে ৪২-১৫ পয়েন্টে লিড নেয় ভারত। শেষ পর্যন্ত বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা অনায়াসে ৪৩-১৮ পয়েন্টে বাংলাদেশকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নেয়।
আগামী দিন বাংলাদেশের খেলা নেই। ২২ নভেম্বর চতুর্থ ম্যাচে স্বাগতিকদের প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড। সে ম্যাচে জিতলে সেমিফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত হবে লাল-সবুজদের। ভারত পরের ম্যাচে মুখোমুখি হবে জার্মানির।

নারী কাবাডি বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার জার্মানিকে ৫৭-২৭ পয়েন্টে হারিয়েছেন রূপালী আক্তাররা।
এদিন শুরু থেকেই প্রতিপক্ষকে কাবু করে একের পর এক রেইডে পয়েন্ট সংগ্রহ করতে থাকেন শ্রাবণী মল্লিক, বৃষ্টি বিশ্বাস ও স্মৃতি আক্তাররা। ম্যাচ ঘড়ির পাঁচ মিনিটেই জার্মানিদের প্রথমবার অল আউট করে স্বাগতিকরা।
একচেটিয়া এই ম্যাচে প্রায় সব খেলোয়াড়কেই পরখ করে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে কাবাডি শুরু করা জার্মানি মেয়েরা এক পর্যায়ে ভালোই প্রতিরোধ গড়ে তোলে। শারীরিক গঠনে ইউরোপের প্রতিনিধিরা শক্তপোক্ত হলেও কৌশলে এগিয়ে ছিল দেশের মেয়েরা।
দশম মিনিটে দ্বিতীয়বার অলআউট হয় জার্মানি নন্দিনীরা, তখন ম্যাচের ব্যবধান দাঁড়ায় ২২-৫ পয়েন্টে। প্রথমার্ধ শেষে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ২৮-৯ পয়েন্টে।
দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিকদের গা ছাড়া ভাবের কারণেই জার্মানি বেশ কিছু পয়েন্ট আদায় করে নেয়। ম্যাচের শেষ ছয় মিনিট বাকি থাকতে জার্মানি তৃতীয়বার অলআউট হয়। তখন স্কোর ছিল ৪৩-২১। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ম্যাচ শেষ করে ৫৭-২৭ ব্যবধানে। এর মধ্যে জার্মানদের আরও একবার অলআউট করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক রূপালি আক্তার বলেন, ‘সামনে ভারতের সাথে খেলা, আমরা ভালো খেলার চেষ্টা করব। কেননা, ওরা এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ভালো দল। টানা দুই জয় পাওয়ায় আত্মবিশ্বাস ও মনোবল অনেক বেড়েছে।’