৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮:২৫ পিএম
উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশন আয়োজিত তারুণ্যের উৎসবে আরচ্যারীর চূড়ান্ত পর্ব ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে শেষ হয়েছে।
দিনব্যাপী নানা আয়োজনে আরচ্যারী প্রতিযোগিতা ছাড়াও ছিল পিঠা উৎসব, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি ও দেশীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বর্ণাঢ্য র্যালি দিয়ে শুরু হয় কার্যক্রম।
এরপর চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম ও বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব মোঃ আবুল হাসান, আর্চারি ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহফুজুর রহমান সিদ্দিকী, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ ফারুক ঢালী, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান ও জাতীয় দলের হেড কোচ মার্টিন ফ্রেডরিক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী আর্চারি ফেডারেশনের কার্যক্রম নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরচ্যারীর সাফল্যের প্রশংসা করেন তিনি। পদক জয়ের ক্ষেত্রে দেশের অন্য যে কোন খেলার চেয়ে আর্চারি এগিয়ে বলে উল্লেখ করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব। এই খেলার উন্নয়নে সরকারের সহযোগিতার কথা জানান তিনি।
আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা জানান। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আর্চারির যে সাফল্য তাতে এই ফেডারেশন জাতীয় সম্মান পাওয়ার যোগ্যতা রাখে বলে মনে করেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে ২০১৯ সাউথ এশিয়ান গেমসে আরচ্যারীর ১০টি সোনার মধ্যে বাংলাদেশের সবকটি জয়ের কথা তুলে ধরেন তিনি।
এছাড়া অলিম্পিক গেমসে বাংলাদেশের আর্চারদের সরাসরি অংশগ্রহণ অন্য ফেডারেশন থেকে আরচ্যারীকে আলাদা করেছে বলে জানান কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল।
দিনব্যাপী প্রতিযোগিতা শেষে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপি। তিনটি স্বর্ণ, তিনটি রৌপ্য ও চারটি ব্রোঞ্জসহ মোট ১০ টি পদক জিতেছে বিকেএসপির আরচ্যাররা। দুটি স্বর্ণ ও একটি রৌপ্য সহ মোট তিনটি পদক জিতে দ্বিতীয় হয়েছে নড়াইল জেলা। আর তৃতীয় হয়েছে ফরিদপুর জেলা।
মোট আটটি ইভেন্টে হয়েছে প্রতিযোগিতা। আটটি দলের ছেলে ও মেয়ে মিলে মোট ৫৯ জন আরচ্যার অংশ নেয় চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতায়।
বিকেলে হয়েছে সমাপণী অনুষ্ঠান। সমাপণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোঃ মোখলেস উর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ রেজাউল মাকছুদ জাহেদী।
সমাপণী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম , যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহম্মদ হিরুজ্জামান, বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল, আরচ্যারী ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহফুজুর রহমান সিদ্দিকী, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ ফারুক ঢালী।
তারুণ্যের উৎসবকে ধারণ করে চূড়ান্ত পর্বের আগে নীলফামারী, ফরিদপুর, টঙ্গীর আরচ্যারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, নাটোরের খুবজীপুর, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে নানা আয়োজন সম্পন্ন করছে বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশন। গত ১৫ জানুয়ারী নীলফামারী থেকে শুরু হয়েছিল আর্চারি ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব।
No posts available.

প্রিমিয়ার দাবা লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তিতাস ক্লাব। ৯ খেলায় ১৮ পয়েন্ট পেয়ে এক রাউন্ড আগেই চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করেছে ক্লাবটি। বাংলাদেশ নৌবাহিনী ১০ খেলায় ১৮ পয়েন্ট নিয়ে রানার্স-আপ হয়েছে। আগামীকাল শেষ ম্যাচে তিতাস হারলেও গেম পয়েন্টে এগিয়ে থাকায় তারাই শীর্ষে থাকবে।
বাংলাদেশের দাবায় পরিচিত নাম তিতাস ক্লাব। ১৯৯৭ সাল থেকে দাবা লিগে খেলে আসছে ক্লাবটি। ২০০০ সালে প্রথম বিভাগে শিরোপা জিতেছিল তিতাস। ২০১১ সালের আগ পর্যন্ত প্রথম বিভাগই ছিল দাবার সর্বোচ্চ স্তর। এই বছর মে মাসেই ২৪ বছর পর দাবার শীর্ষ পর্যায়ের শিরোপা জিতেছিল তিতাস। ছয় মাসের ব্যবধানে তিতাস আবার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। মে মাসে অনুষ্ঠিত হওয়া লিগটি ছিল মূলত গত বছরের আর এই লিগটি চলতি বছরের।
গত লিগেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তিতাস ক্লাব। এবারও তারা শিরোপা ধরে রেখেছে। তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল নৌবাহিনী। যাদেরকে হারিয়ে তিতাসের চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার। আজ শুক্রবার দশম রাউন্ডের খেলায় তিতাস ক্লাব ৩.৫-০.৫ গেম পয়েন্টে বাংলাদেশ পুলিশ চেস ক্লাবকে পরাজিত করে।
তিতাস ক্লাবের পক্ষে ফিদে মাস্টার সাকলাইন মোস্তফা সাজিদ, আন্তর্জাতিক মাস্টার মোহাম্মদ ফাহাদ রহমান ও ফিদে মাস্টার তাহসিন তাজওয়ার জিয়া যথাক্রমে বাংলাদেশ পুলিশ চেস ক্লাবের আন্তর্জাতিক মাস্টার আবু সুফিয়ান শাকিল, ভারতীয় বিভর আদাক ও ফিদে মাস্টার নাইম হককে পরাজিত করেন। বাংলাদেশ পুলিশ চেস ক্লাবের তাশরিক সায়হান শান তিতাস ক্লাবের মিশরীয় গ্র্যান্ড মাস্টার ফওজি আদমের সঙ্গে ড্র করেন।
৯ খেলায় ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। লিওনাইন চেস ক্লাব সমান খেলায় ১২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে। ৯ পয়েন্ট করে নিয়ে মানহা’স ক্যাসেল ও সাধারণ বীমা কর্পোরেশন স্পোর্টিং ক্লাব যুগ্মভাবে পঞ্চম স্থানে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী ৪-০ গেম পয়েন্টে জনতা ব্যাংক অফিসান ওয়েলফেয়ার সোসাইটিকে হারায়।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আন্তর্জাতিক মাস্টার মনন রোজ নীড়, ফিদে মাস্টার মো. শরীফ হোসেন, আন্তর্জাতিক মাস্টার মো. মিনহাজ উদ্দিন, ফিদে মাস্টার মোহাম্মদ জাভেদ যথাক্রমে জনতা ব্যাংক অফিসান ওয়েলফেয়ার সোসাইটির বাবুল মল্লিক, মো. আসাদুজ্জামান, খন্দকার নজরে মওলা ও ফারসাত হোসেন অয়নের বিপক্ষে জেতেন।
লিওনাইন চেস ক্লাব ৪-০ গেম পয়েন্টে স্পোর্টস বাংলাকে হারায়। ক্লাবটির ফিদে মাস্টার মোহাম্মদ আব্দুল মালেক, ভারতীয় আন্তর্জাতিক মাস্টার হিমাল গুসাইন, ভারতীয় আন্তর্জাতিক মাস্টার সুরেশ হার্স ও অমিত বিক্রম রায় যথাক্রমে স্পোর্টস বাংলার মুকিতুল ইসলাম রিপন, আসিফ মাহমুদ, গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া ও ফয়সাল হোসেনকে হারান। মানহা’স ক্যাসেল ৩-১ গেম পয়েন্টে দীপালী মেমোরিয়াল চেস ক্লাবকে হারায়। মানহা’স ক্যাসেলের ক্যান্ডিডেট মাস্টার মো. সাজিদুল হক ও মো. নাসির উদ্দিন যথাক্রমে দীপালী মেমোরিয়াল চেস ক্লাবের মো. জাকির হোসেন ও কাজী সাইফকে হারান। দীপালী মেমোরিয়াল চেস ক্লাবের তাহমিদুল হক মানহা’স ক্যাসেলের অনত চৌধুরীর বিপক্ষে জেতেন। মানহা’স ক্যাসেলের ফিদে মাস্টার সৈয়দ মাহফুজুর রহমান দীপালী মোমোরিয়াল চেস ক্লাবের তানভীর আলমের বিরুদ্ধে ওয়াক-ওভার পান।

খেলা ছাড়ার পর থেকে এনায়েত উল্লাহ খান যেন খেলোয়াড় তৈরির কারিগর। জাতীয় এবং রেংকিং টুর্নামেন্ট মিলিয়ে পাঁচবারের সাবেক চ্যাম্পিয়ন এই শাটলার অবশ্য একা নন, বলা যেতে পারে সপরিবারেই কোচিংয়ের নেশায় ডুবে আছেন তিনি। এক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গী স্ত্রী এলিনা সুলতানাও জাতীয় এবং রেংকিং টুর্নামেন্ট মিলিয়ে ১৪ বারের সাবেক চ্যাম্পিয়ন। ওয়ার্ল্ড ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের লেভেল টু সার্টিফায়েড দুই কোচ এবার জুটি বেঁধে এমন এক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে নামছেন যেটি বাংলাদেশেই হতে যাচ্ছে এই প্রথম।
ট্যালেন্ট স্পোর্টস লিমিটেডের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘ব্যাডমিন্টন বাংলাদেশ’-এর পৃষ্ঠপোষকতায় দেশজুড়ে প্রথমবারের মতো একযোগে হতে যাওয়া খুদে ব্যাডমিন্টন প্রতিভা বাছাইয়ে তাঁদের সহযোগী হবেন আরও এক ঝাঁক দক্ষ এবং প্রতিশ্রুতিশীল কোচ। বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগ এবং জেলা শহরে আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে এই আয়োজন হতে যাচ্ছে।
এই উদ্যোগের বিশেষত্ব তুলে ধরে এনায়েত বলেন, ‘দেশে এর আগেও যে প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচী হয়নি তা নয়। তবে সেগুলো হয়েছে ছোট পরিসরে। ব্যাডমিন্টন বাংলাদেশ-ই প্রথম যারা ৮টি বিভাগ এবং ৬৪ জেলাতে পর্যায়ক্রমে খুদে প্রতিভার সন্ধান করার কাজে হাত দিতে যাচ্ছে।’
মূলত দুটি বয়স শ্রেণিতে প্রতিভাবান খেলোয়াড় খুঁজে নেওয়া হবে এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে। অনূর্ধ্ব-১৪ গ্রুপে অংশ নিতে পারবে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সীর। ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের জন্য থাকছে অনূর্ধ্ব-১৯ গ্রুপ।
প্রতিযোগীদের মোবাইল আসক্তি থেকে বের করে আনাও এই আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন এনায়েত। এজন্য ঠিক করা হয়েছে এমন স্লোগানও, ‘মোবাইল ফেলে ব্যাডমিন্টন কোর্টে চলো’। দুই বয়স শ্রেণিতে একক খেলা পদ্ধতিতে টুর্নামেন্ট পরিচালিত হবে।
টুর্নামেন্ট শেষে বাছাই করা খেলোয়াড়দের নিয়ে আসা হবে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের আওতায়। প্রশিক্ষণ কত দিন ধরে চলবে, সে বিষয়ে ধারণা দিতে গিয়ে এনায়েত বলেন ‘আমাদের এই আয়োজন চলতেই থাকবে। প্রতি বছর জানুয়ারিতে আমরা টুর্নামেন্ট করবো। এক টুর্নামেন্ট শেষে পরের আসর শুরু পর্যন্ত আমাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চলবে। বলতে পারেন, বাছাই হওয়া প্রতিভাবানরা আমাদের প্রশিক্ষণের ছায়ায় থাকবে প্রায় বছরখানেক।’
বাছাই করা প্রতিভাবানদের মধ্য থেকে দেশ সেরা হবে যাঁরা তাঁদের পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন টুর্নামেন্টেও অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। নিজেদের আয়োজনে ব্যাডমিন্টন বাংলাদেশ ছোটদের পাশাপাশি নিরাশ করছে না বড়দেরও। অনূর্ধ্ব-৪৫ (২০-৪৫ বছর) এবং ঊর্ধ্ব-৪৫ (৪৫-৭৫ বছর) বয়স শ্রেণিতে বড়রাও দ্বৈত খেলা পদ্ধতির মাধ্যমে খেলার সুযোাগ পাবেন।
টুর্নামেন্টে অংশ নিতে সব বয়স শ্রেণির খেলোয়াড়দের অনলাইনে নিবন্ধন প্রক্রিয়া অবশ্য একই। জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয় পত্রে থাকা স্থায়ী ঠিকানা অনুযায়ী টুর্নামেন্টের ওয়েবসাইটে www.badmintonbangladesh.com প্রতিযোগীর ঠিকানা উল্লেখ করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য এক হাজার টাকা এন্ট্রি ফি পরিশোধ করতে হবে অনলাইনে। প্রতিটি জেলায় সর্বোচ্চ ৫০ জন প্রতিযোগী রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। রেজিস্ট্রেশন করা যাবে ২০২৬ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। চারটি বয়স শ্রেণিতে তিন লাখ টাকার অর্থ পুরস্কারের পাশাপাশি সার্টিফিকেট, ক্রেস্টসহ থাকছে নানা উপহারও।

দুবাইয়ে এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে জ্যাভেলিন ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিতেছেন চৈতি রাণী দেব। ন্যাশনাল প্যারালিম্পিক কমিটি অব বাংলাদেশ (এনপিসি) জানিয়েছে, চৈতির সাফল্য শুধু ব্যক্তিগত মাইলফলক নয়, এটি বাংলাদেশের প্যারা ক্রীড়াঙ্গনের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন, যা দেশের সকল প্রতিবন্ধী ক্রীড়াবিদের সম্ভাবনার উজ্জ্বল প্রতীক।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের প্রান্তিক সম্প্রদায় থেকে উঠে আসা প্রতিভা চৈতি। এনপিসি বাংলাদেশ মনে করে, সীমিত সুযোগ-সুবিধার এক প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে উত্তরণ তাঁর। চৈতির সাফল্য সহস্রাধিক প্রতিবন্ধী তরুণ ক্রীড়াবিদের জন্য শক্তিশালী অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। প্রমাণ করবে সঠিক সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও সুযোগ পেলে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন সম্ভব।
এনপিসি বাংলাদেশ ২০২৫ জাতীয় যুব প্যারা গেমস চলাকালে প্রতিভা অনুসন্ধান কার্যক্রমের মাধ্যমে চৈতির সম্ভাবনা দেখতে পায়। নির্বাচনের পর তিনি এক মাসব্যাপী নিবিড় প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন। যেখানে অভিজ্ঞ কোচ ও প্রশিক্ষকেরা তাঁর দক্ষতা শাণিত করা, শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার উপযোগী প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে নিবিড়ভাবে সহায়তা করেন।
প্রতিভার প্রাথমিক শনাক্তকরণ, পদ্ধতিগত প্রশিক্ষণ এবং প্যারা অ্যাথলেটদের প্রতি নিয়মিত বিনিয়োগ অপরিহার্য মনে করছে এনপিসি। যথাযথ পরিচর্যা, আধুনিক সুবিধা ও উচ্চমানের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হলে বাংলাদেশের আরও অনেক প্যারা অ্যাথলেট বিশ্বমঞ্চে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবেন বলে আশা তাদের।

প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ফুটসাল নারী বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হলো ব্রাজিল। ফিলিপাইনের ম্যানিলার ফিলস্পোর্টস অ্যারেনা-তে দর্শক ঠাসা গ্যালারির সামনে পর্তুগালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে সেলেসাও নারীরা। আসরে অপরাজিত থেকে শিরোপা জিতল ব্রাজিল। আসরে সর্বোচ্চ ৭ গোল করে গোল্ডেন বুট জিতেছেন সেলেসাওদের এমিলি মারকন্ডেস।
১৬ দেশের অংশগ্রহণে প্রথমবার অনুষ্ঠিত হয় নারী ফুটবলার বিশ্বকাপ। সেমিফাইনালে হারের পর তৃতীয় হয়েছে স্পেন এবং চতুর্থ আর্জেন্টিনা। গত ২১ নভেম্বর শুরু হওয়া টুর্নামেন্ট গতকাল ব্রাজিলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে পর্দা নামল। প্রতিযোগিতার সেরা গোলকিপারের পুরস্কার জিতেছেন পর্তুগালের আনা ক্যাথারিনা। ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড জিতেছে ব্রাজিল।
হাইভোল্টেজ ফাইনালে ম্যাচের শুরু থেকেই গোল পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে দুই দল। তবে পর্তুগালের চেয়ে আক্রমণে এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। লুইস কনসেসাওর ব্রাজিল দল পুরো ম্যাচ জুড়ে পর্তুগিজ গোলরক্ষক আনা কাটারিনা পেরেইরার কঠিন পরীক্ষ নিয়েছে। বেশ কয়েকটি অসাধারণ সেভ করে দলকে লড়াইয়েও রাখেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত সাম্বাদের থামাতে ব্যর্থ হন।
ম্যাচের ৯ মিনিটে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ব্রাজিলকে প্রথম গোলটি এনে দেন এমিলি। এরপর সমতায় ফেরার চেষ্টা চালায় পর্তুগালও। যদিও প্রথামার্ধে তাদের নেওয়া ৪টি শট জালের স্পর্শ পায়নি। বিপরীতে শুরু অর্ধে ব্রাজিলের অনটার্গেট শট ছিল ৮। এরমধ্যে একটি রূপ নেয় গোলে।
আরও পড়ুন
| চোট, জোড়া লাল কার্ড আর বিব্রতকর হারে ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন রিয়ালের |
|
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান ২-০ করে ব্রাজিল। ম্যাচের ২২ মিনিট ২৫ সেকেন্ডে আমানদিনহার গোলে লিড বাড়ায় তারা। এরপর ম্যাচে ফেরার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালায় পর্তুগিজ। তবে উল্টো ম্যাচের শেষদিকে আরেকটি গোল হজম করে পর্তুগাল। ৪০ মিনিটের খেলায় ৩৭ মিনিট ৫১ সেকেন্ডে তৃতীয় গোলটি করেন দেবরা ভেনিন। শেষ পর্যন্ত ৩-০ গোলেই জয় নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের।
এর আগে সেমিফাইনালে স্পেনকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে ব্রাজিল। অন্যদিকে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে পর্তুগাল। ফাইনালের আগে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ৫-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে স্পেন। গোল্ডেন বুট জেতেন ব্রাজিলের এমিলি।
ব্রাজিল কোচ উইলসন সাবোইয়া পর্তুগালের বিপক্ষে এই জয়কে শুধু একটি ট্রফি জয়ে সীমাবদ্ধ রাখতে চান না। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, ‘আমি সত্যিই খুশি। খেলোয়াড়রা অসাধারণ, কোচিং স্টাফও চমৎকার। এই জয় একটি বড় ছাপ রেখে যাচ্ছে আমাদের দল। কারণ, এটি স্কুল, ক্লাব ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফুটসালকে আরও জনপ্রিয় করবে। এর ফলে আরও ভালো কোচ এবং খেলোয়াড় জন্মাবে।’
পর্তুগাল কোচ কনসেসাওরও তার দলের জন্য শুধুই গর্ব প্রকাশ করেছেন, ‘ব্রাজিলকে অভিনন্দন। তারা ভালো খেলেছে। আমাদের একটি অবিশ্বাস্য প্রতিযোগিতা ছিল। আমরা গর্বিত এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরে। ব্রাজিল খুব শক্তিশালী একটি দল, একক নৈপুণ্যে দলকে জেতানো অনেকেই আছে তাদের। আমি আমার খেলোয়াড়দের নিয়ে খুব গর্বিত। আমরা পর্তুগিজ নারী ফুটসাল এবং পর্তুগিজ জনগণকে যথাযোগ্য সম্মান জানিয়েছি।’

অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন, দ্রুতই ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলার কথা তাঁর। তবে জন সিনা রেসলিং ছাড়লেও সেটি কখনোই পুরোপুরি ছেড়ে যাওয়া হবে না, বলছেন সাবেক ডব্লিউডব্লিউই উইমেনস চ্যাম্পিয়ন ন্যাটালিয়া নিডহার্ট। রেসলিং–জগতে অবদান ও ব্যক্তিত্ব নিয়ে জন সিনাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তিনি। পর্দা বা রিংয়ের বাইরে জন সিনার অন্য এক প্রশংসিত রূপের কথা জানিয়েছেন ন্যাটালিয়া।
বাস্টেড ওপেন রেডিওর সাক্ষাৎকারে ন্যাটালিয়া সিনার ব্যাপারে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। শুরুর দিক থেকেই তরুণ রেসলারদের পাশে থাকার জন্য সিনাকে কৃতিত্ব দেন ন্যাটালিয়া, ‘প্রথম ম্যাচ শুরু হতেই… যেই ম্যাচেই তিনি না থাকেন, সেগুলোও তিনি দেখতেন। ম্যাচ শেষে যে-ই ব্যাকস্টেজে ফিরত, জন তাদের সঙ্গে বসে কথা বলত, আলোচনা করত।’
রিয়্যালিটি শো টোটাল ডিভাসের সাফল্যেও সিনার বড় অবদান আছে বলে মনে করেন ন্যাটালিয়া। বললেন, ‘আমরা মেয়েরা শো’টা সফল করতে চেয়েছিলাম, আর জনও চাইত। সে নিজেকে সামনে এনে সহায়তা করেছে। শোর সাফল্যের বড় অংশ ছিল জন। টিজে (টায়সন কিড) চোট পেয়ে হাসপাতালে থাকার পর জন আমাদের দুজনকে ডিনারে নিয়ে গিয়েছিল। সে টিজেকে বুঝিয়েছিল— ও এখনো গুরুত্বপূর্ণ, কেউ তাকে ভুলে যায়নি।’
আরও পড়ুন
| সফল নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজনে প্রশংসায় ভাসছে বাংলাদেশ |
|
ডব্লিউডব্লিউইর কঠিন সময়গুলোতে সিনার ইতিবাচক ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন ন্যাটালিয়া। তাঁর ভাষায়, ‘এটা এমন এক বিষয়, যা আমরা প্রায়ই বলি না… কারণ ঘটনাটা খুবই ট্র্যাজিক। কিন্তু জন ডব্লিউডব্লিউই কে এমনভাবে সহায়তা করেছে, যা বিশাল। আমি ওর সঙ্গে কাজ করেছি বলে গর্ব করি, ট্যুরে একসঙ্গে থাকতে পেরে গর্ব করি, বন্ধুর মতো ওকে চিনি বলেও গর্ব করি।’
রেসলিংকে ‘হোটেল ক্যালিফোর্নিয়ার’ সঙ্গে তুলনা করে সিনার সম্পর্ক ব্যাখ্যা করেন ন্যাটালিয়া। সাবেক ডব্লিউডব্লিউই উইমেনস চ্যাম্পিয়ন বলেন, ‘রেসলিং এমন জায়গা, তুমি চাইলে বেরিয়ে যেতে পারো, কিন্তু কখনোই পুরোপুরি ছাড়তে পারবে না। জন রেসলিংয়ের ভেতরেই রয়ে গেছে। সে সবসময়ই এই শিল্পের অংশ হয়ে থাকবে।’
দ্রুতই জন সিনার বিদায়ী ইভেন্ট শুরু হচ্ছে। ১৩ ডিসেম্বর রিংয়ে শেষ বারের মতো প্রতিযোগিতায় নামার কথা যুক্তরাষ্ট্রের এই রেসলারের।