৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮:২৫ পিএম
উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশন আয়োজিত তারুণ্যের উৎসবে আরচ্যারীর চূড়ান্ত পর্ব ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে শেষ হয়েছে।
দিনব্যাপী নানা আয়োজনে আরচ্যারী প্রতিযোগিতা ছাড়াও ছিল পিঠা উৎসব, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি ও দেশীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বর্ণাঢ্য র্যালি দিয়ে শুরু হয় কার্যক্রম।
এরপর চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম ও বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব মোঃ আবুল হাসান, আর্চারি ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহফুজুর রহমান সিদ্দিকী, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ ফারুক ঢালী, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান ও জাতীয় দলের হেড কোচ মার্টিন ফ্রেডরিক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী আর্চারি ফেডারেশনের কার্যক্রম নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরচ্যারীর সাফল্যের প্রশংসা করেন তিনি। পদক জয়ের ক্ষেত্রে দেশের অন্য যে কোন খেলার চেয়ে আর্চারি এগিয়ে বলে উল্লেখ করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব। এই খেলার উন্নয়নে সরকারের সহযোগিতার কথা জানান তিনি।
আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা জানান। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আর্চারির যে সাফল্য তাতে এই ফেডারেশন জাতীয় সম্মান পাওয়ার যোগ্যতা রাখে বলে মনে করেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে ২০১৯ সাউথ এশিয়ান গেমসে আরচ্যারীর ১০টি সোনার মধ্যে বাংলাদেশের সবকটি জয়ের কথা তুলে ধরেন তিনি।
এছাড়া অলিম্পিক গেমসে বাংলাদেশের আর্চারদের সরাসরি অংশগ্রহণ অন্য ফেডারেশন থেকে আরচ্যারীকে আলাদা করেছে বলে জানান কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল।
দিনব্যাপী প্রতিযোগিতা শেষে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপি। তিনটি স্বর্ণ, তিনটি রৌপ্য ও চারটি ব্রোঞ্জসহ মোট ১০ টি পদক জিতেছে বিকেএসপির আরচ্যাররা। দুটি স্বর্ণ ও একটি রৌপ্য সহ মোট তিনটি পদক জিতে দ্বিতীয় হয়েছে নড়াইল জেলা। আর তৃতীয় হয়েছে ফরিদপুর জেলা।
মোট আটটি ইভেন্টে হয়েছে প্রতিযোগিতা। আটটি দলের ছেলে ও মেয়ে মিলে মোট ৫৯ জন আরচ্যার অংশ নেয় চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতায়।
বিকেলে হয়েছে সমাপণী অনুষ্ঠান। সমাপণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোঃ মোখলেস উর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ রেজাউল মাকছুদ জাহেদী।
সমাপণী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম , যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহম্মদ হিরুজ্জামান, বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল, আরচ্যারী ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহফুজুর রহমান সিদ্দিকী, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ ফারুক ঢালী।
তারুণ্যের উৎসবকে ধারণ করে চূড়ান্ত পর্বের আগে নীলফামারী, ফরিদপুর, টঙ্গীর আরচ্যারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, নাটোরের খুবজীপুর, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে নানা আয়োজন সম্পন্ন করছে বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশন। গত ১৫ জানুয়ারী নীলফামারী থেকে শুরু হয়েছিল আর্চারি ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব।
No posts available.
২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১:৩১ পিএম
২৪ নভেম্বর ২০২৫, ৫:০৬ পিএম
২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৯:০৩ পিএম
২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৪:০১ পিএম

সোমবার ঢাকায় শেষ হয়েছে ১০ দিনব্যাপী নারী কাবাডি বিশ্বকাপ। সফল এই আয়োজন বিশ্ব কাবাডি অঙ্গন দীর্ঘ দিন মনে রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। আয়োজনের কৃতিত্বের দাবিদার সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন (বিকেএফ) এবং তাদের সহযোগিরা।
এর আগে ২০১২ সালে ভারতের পাটনায় প্রথমবার হয়েছিল নারী কাবাডি বিশ্বকাপ। দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় পর বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন আবারও নারী কাবাডিকে বিশ্বমঞ্চে ফিরিয়ে এনেছে।
বিশ্বকাপ খেলে যাওয়া ইরানের খেলোয়াড় আসমা ফাখরি বলেন,
‘বাংলাদেশ খুব ভালোভাবে টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে। এখানকার মানুষ খুবই আন্তরিক। এখানে সবাই মিলে সময়টা খুব উপভোগ করেছি। আশা করি ভবিষ্যতে সব দেশ বাংলাদেশকে অনুসরণ করে এমন আয়োজন করবে।’
শিরোপা জয়ী ভারতীয় নারী কাবাডি দলের কোচ তেজস্বিনী বাইয়ের কণ্ঠেও ঝরেছে বাংলাদেশের প্রশংসা,
‘চমৎকার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ।আয়োজন ছিল শীর্ষমানের। এখানকার জল-হাওয়া, আবাসন, খাবার ভীষণ উপভোগ্য। আমি মনে করি বাংলাদেশ প্রমাণ দিয়েছে তারাও বড় টুর্নামেন্ট আয়োজনের সামর্থ্য রাখে।’
আসরের ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল চাইনিজ তাইপে। গত আসরের মতো এবারও শিরোপা গেছে ভারতের ঘরে। তবে আগের আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া চাইনিজ তাইপের ফাইনালে আসাটা ছিল বড় চমক। দলটির কোচ ডেভিড সাই—তাইপের প্রথম জাতীয় দলের খেলোয়াড়।
২০০৯ সালে কাবাডিতে হাতেখড়ির পর ডেভিড ভারতের প্রো-কাবাডি লিগে টানা দুই মৌসুম খেলেছেন। দীর্ঘ সময়ে ভারতে থেকে কাবাডি সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজ দেশে তাইপেকে পরাশক্তিতে রূপ দিতে বড় ভূমিকা রাখছেন তিনি।
বাংলাদেশের আয়োজন নিয়ে ডেভিড বলেন,
‘ব্যবস্থাপনা সত্যিই চমৎকার। একদম বিশ্বমানের আয়োজন। তাইপেতে কাবাডি জনপ্রিয় নয়, সেখানে কোনো সমর্থনও নেই। বাংলাদেশ অসাধারণ কাজ করেছে। বিশ্বাস করি এর ফলে অন্য দেশও এমন আয়োজন করতে উৎসাহ পাবে।’
চাইনিজ তাইপের আই মিন লিন টুর্নামেন্টের সেরা রেইডারের খেতাব জিতেছেন। তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন,
‘বাংলাদেশের আতিথেয়তায় আমি অবাক হয়েছি, কারণ সংবাদে যা শুনেছিলাম তা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে অনেক মানুষ, এবং সবাই বাংলাদেশকে উৎসাহ দিচ্ছে। এটা দেখে মনে হয়েছে— আমাদের দেশের মানুষও যদি আমাদের এভাবেই সমর্থন দেয়, আমরাও বহুদূর এগিয়ে যাব।’
প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলতে এসে কেনিয়ার অধিনায়ক মার্সি আকিনিয়ি ওবিয়েরো বলেন,
‘এখানকার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। আবহাওয়া কেনিয়ার মতোই। মনে হচ্ছে যেন নিজের দেশে আছি। এটি আমাদের প্রথম বিশ্বকাপ, সবচেয়ে বড় মঞ্চ। আমাদের লক্ষ্য ছিল এখানে আনন্দ করা এবং প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করা।’
জার্মানিও প্রথমবার অংশ নেয় বিশ্বকাপে। তাদের অধিনায়ক এমা অ্যাটলে বলেন,
‘অসাধারণ ছিল সবকিছু। প্রথমে কোর্টে ঢোকার সময় আমরা নার্ভাস ছিলাম, কিন্তু এখন খুব উপভোগ করছি।’
সবচেয়ে জোরালো প্রশংসা এসেছে একেএফ (এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশন)- এর মহাসচিব মোহাম্মদ সারওয়ার রানার কাছ থেকে, ‘ব্যবস্থাপনা একেবারে বিশ্বকাপের মানের— বরং তার চেয়েও বেশি। বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে যে ভবিষ্যতে তারা বড় বড় কাবাডি আসর আয়োজন করতে সক্ষম।’
কাবাডি বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হলেও গুরুত্বের দিক থেকে ফুটবল-ক্রিকেটের সমান মনোযোগ পায় না। তবে এবার বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন প্রতি ম্যাচেই প্রচুর দর্শক আনতে সক্ষম হয়েছে। নিরাপত্তার কড়াকড়ির মাঝেও তারা বিনামূল্যে দর্শকদের গ্যালারিতে জায়গা করে দিয়েছে।

ভারতের শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে পর্দা নামলো নারী কাবাডি বিশ্বকাপের। রোমাঞ্চকর ফাইনালে চায়নিজ তাইপেকে ৩৫–২৮ পয়েন্টে হারিয়েছেন ভারতের সাঞ্জু দেবীরা।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে আজ প্রথমার্ধে ২০–১৬ পয়েন্টে এগিয়ে বিরতিতে যায় ভারত। বিরতির পর ব্যবধান কমানো দূরে থাক, উল্টো ম্যাচ থেকে ধীরে ধীরে ছিটকে যায় চায়নিজ তাইপে। ম্যাচ শেষ হওয়ার চার মিনিট আগে চায়নিজ তাইপে ফেরার আভাস দিলেও ভারতের স্কোর আর ধরতে পারেনি।
খালি হাতে বিশ্বকাপ শেষ করেনি বাংলাদেশ। স্বাগতিকরা জিতেছে ব্রোঞ্জ। ব্যক্তিগতভাবে আসরের সেরা ডিফেন্ডারের পুরস্কার জিতে টুর্নামেন্টটি স্মরণীয় করে রেখেছেন স্মৃতি আক্তার।
দলীয় পুরস্কারের পাশাপাশি তিনটি ব্যক্তিগত পুরস্কার দেওয়া হয়েছে সমাপনীতে। তৃতীয় ব্যক্তিগত পুরস্কার জিতেছেন চাইনিজ তাইপের মিন লিন, যিনি আসরের সেরা রেইডার হয়েছেন।
সমাপণী অনুষ্ঠানে প্রধাণ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব মাহবুব-উল-আলম।। চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে ট্রফি তুলে দিয়েছেন তিনি। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি আব্বাস আভারসেজি, প্রো কাবাডির লিগ কমিশনার অনুপম গোস্বামী ও আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশনের পরিচালক তেজস্বী সিং গেলত।

নির্বাচনী প্রচারণায় জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ব্যবহার না করার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। আজ এক চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তারা।
এনএসসির চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা দেশের সম্পদ এবং নাগরিকদের একাত্মতার প্রতীক। তাঁদের ভাবমূর্তি কোনো রাজনৈতিক বা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়া ক্রীড়াঙ্গনের নিরপেক্ষতা ও পবিত্রতার জন্য ক্ষতিকর।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছু মহল বা ব্যক্তি খেলোয়াড়দের নির্বাচনী প্রচারণায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। এটি ক্রীড়ানীতি বিরোধী এবং ক্রীড়াঙ্গনের পরিবেশ কলুষিত করতে পারে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্দেশনা, জাতীয় দলের কোনো খেলোয়াড়কে সরাসরি অথবা পরোক্ষভাবে রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারণায় বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে ব্যবহার করা যাবে না।
খেলোয়াড়দের কোনো নির্বাচনী সভার মঞ্চে এবং প্রচারণামূলক কার্যক্রমে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। সব খেলোয়াড়কে তাঁদের ক্রীড়া নৈপুণ্যের মাধ্যমে দেশের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
এনএসসি সতর্ক করেছে, এই নির্দেশনার ব্যত্যয় দেশের সুস্থ ক্রীড়া পরিবেশকে মারাত্মকভাবে কলুষিত করতে পারে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করাতে বলা হয়েছে।

নারী কাবাডি বিশ্বকাপে ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন নিয়ে লড়াইয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু চায়নিজ তাইপের কাছে ২৫-১৮ পয়েন্টের ব্যবধানে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় স্বাগতিক দলের।
মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে আজ দ্বিতীয় সেমিফাইনালে হারের আগেই অবশ ্য ব্রোঞ্জপদক নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ!
২০১২ সালে পাটনায় হওয়া প্রথম নারী বিশ্বকাপে পঞ্চম হয়েছিল বাংলাদেশ। এবার স্বাগতিকরা তৃতীয় স্থান নিয়ে আসর শেষ করল। প্রথম সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ১২ পয়েন্টের ব্যবধানে হেরেছে ইরান, চাইনিজ তাইপের কাছে বাংলাদেশের হারের ব্যবধান ছিল ৭। সুবাদে প্রথম আসরের তুলনায় দুই ধাপ উন্নতি করল বাংলাদেশ।
এদিন প্রথম রেইডে ব্যর্থ হন আন্তর্জাতিক কাবাডিতে নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা বাংলাদেশ অধিনায়ক রূপালী আক্তার। পরে ট্যাকলে পয়েন্ট হারান স্মৃতি আক্তারও। এগিয়ে যায় চাইনিজ তাইপে। তৃতীয় মিনিটে বোনাস পয়েন্ট নিয়ে খাতা খোলে বাংলাদেশ। ঘুরে দাঁড়াতে সময় নিল না তারা। অষ্টম মিনিটে শ্রাবণী মল্লিকের সফল রেইডে ৫-৪ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
২০১২ সালের নারী কাবাডি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া চাইনিজ তাইপে এবারের আসরে শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করছে। ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠে আসা দলটি বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমার্ধ শেষ করে ৯-৮ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে। ব্যবধান আরও বাড়তে পারত, বিরতির বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে সুপার ট্যাকলে ২ পয়েন্ট তুলে বাংলাদেশ ব্যবধান কমিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান ঘুচিয়ে ১০-৮ পয়েন্টে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। চাইনিজ তাইপেও পাল্টা আঘাতে ১০-১০ সমতায় ফিরে। সময় গড়ানোর সাথে সাথে আধিপত্য বাড়তে থাকে চাইনিজ তাইপের। এ অর্ধের পঞ্চম মিনিটে বাংলাদেশকে অল আউট করে তারা এগিয়ে যায় ১৫-১২ পয়েন্টে। বাকিটা সময়ে দাপট ধরে রেখে ২৫-১৮ পয়েন্টে জয় তুলে নেয় চাইনিজ তাইপে।
সোমবার ফাইনালে চাইনিজ তাইপে মুখোমুখি হবে ভারতের। আসরের প্রথম সেমিফাইনালে ইরানকে হারিয়েছিল ভারত।

সফলভাবে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ। মাঠের পারফরম্যান্সেও স্বাগতিকরা পিছিয়ে নেই। টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছেন রুপালী-বৃষ্টিরা। তাতে নারী বিশ্বকাপ কাবাডিতে প্রথমবার কোন পদকও জিতেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ নারী কাবাডি দল এই টুর্নামেন্টের আগে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণে ছিল, সেটির ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে তাদের পারফরম্যান্সে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব-উল-আলম মনে করেন, আরও বড় সাফল্যের সামর্থ্যও আছে বাংলাদেশ দলের।
ক্রীড়াঙ্গনের যে কোন ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে নিজেদের আরও মেলে ধরার জন্য সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, ‘এরই মধ্যে ব্রোঞ্জ পদক পাওয়ার নিশ্চয়তা আমরা লাভ করেছি। আশা করছি সেমিফাইনালে যদি চাইনিজ তাইপেকে হারাতে পারি, তবে পরবর্তীতে লক্ষ্য থাকবে স্বর্ণ পদক অর্জনের। সব খেলাতেই দীর্ঘমেয়োদী প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে, তাহলেই আমরা বিভিন্ন গেমসগুলোতে আরও ভাল করতে পারবো।’
এবারের কাবাডি বিশ্বকাপ এবং সম্প্রতি শেষ হওয়া এশিয়ান যুব গেমস এবং ইসলামিক সলিডারিটি গেমসের অভিজ্ঞতায় মাহবুব-উল-আলম জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেদের আরও উজ্জ্বলভাবে মেলে ধরতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা, ‘একটা দেশ যদি খেলাধূলা বা যে কোন ক্ষেত্রে উন্নতি করতে চায়, তাহলে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা ২০১ টি উপজেলাতে মিনি স্টেডিয়াম করেছি, সেখানে সব ধরণে খেলাধূলার ব্যবস্থা থাকবে। আমাদের জেলা স্টেডিয়ামগুলো আধুনিকায়ণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।’
নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশ নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে বলেও মনে করে যুব ও ক্রীড়া সচিব, ‘বাংলাদেশের জন্য এটা অত্যন্ত গৌরবের যে, আমরা এখানে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পেরেছি। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন দক্ষতা এবং পেশাদারত্বের সঙ্গে পরিচালনা করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা চেষ্টা করছি সব ধরণের সহায়তার জন্য। প্রশাসনিক, আর্থিক সহায়তা আমরা দিয়েছি।’