৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ৯:৫১ এম
“আশরাফুল ভাই ব্যাটসম্যান হিসেবে যেমন ছিলেন, এনালিস্ট হিসেবে এখন তারচেয়েও ভালো করছেন” - চমকে যাবেন না। এটা স্রেফ সিলেটের একজন দর্শকের মতামত। এর পক্ষে-বিপক্ষে যাওয়ার আগে বরং একটু আলোকপাত করা যাক ব্রডকাস্টার মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়ে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রথম সুপারস্টার কে, এই প্রশ্নের উত্তর একটাই - মোহাম্মদ আশরাফুল। বাংলাদেশের বেশ কিছু ইতিহাস গড়া ম্যাচে হেসেছিল তার ব্যাট৷ আনন্দের রেণু হয়ে তা ছড়িয়ে পড়েছিল ‘আশার ফুল’ সুরভীতে। সেই আশরাফুল এখন পুরোদস্তুর ব্রডকাস্টার, এই বিপিএলে কাজ করছেন দেশের প্রথম স্পোর্টস চ্যানেল টি স্পোর্টসের হয়ে। ক্রিকেটার আশরাফুলের মত নতুন ভূমিকাতেও চমক দেখাচ্ছেন বেশ।
আরও পড়ুন: তিনবার পৃথিবী ঘুরা দূরত্ব পেরিয়ে কানুভাইয়ের কাছে আশরাফুল 'শচীন'
আশরাফুল এখনও পেশাদার ক্রিকেট থেকে পুরোপুরি অবসর নেননি। তবে এর মধ্যেই ক্রিকেট এনালিস্ট হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে দেখা গেছে তাকে। সেখানে বিশ্লেষক হিসেবে নিজের প্রতিভা দেখান এই ডানহাতি ব্যাটার।
তবে ব্রডকাস্টার আশরাফুল সবাইকে বিমোহিত করেন মূলত ভারতের মাটিতে গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে। ম্যাচগুলো নিয়ে তার বিশ্লেষণী ক্ষমতা ছিল চোখে পড়ার মত। একজন ব্যাটারের ঠিক কোথায় সমস্যা হচ্ছে, কি করলে সমাধান মিলবে বা নির্দিষ্ট ব্যাটারকে কোথায় বল করতে হবে - সূক্ষ্ম এই ব্যাপারগুলো দারুণভাবে উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে জয়ের নায়ক আশরাফুল।
সেই ধারাবাহিকতায় এবার বিপিএলেও আছেন আশরাফুল। যথারীতি এখানেও দেখা যাচ্ছে তার সুন্দর সুন্দর বিশ্লেষণ। ফিটনেস ইস্যুতে সিলেট স্ট্রাইকার্স অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে নিয়ে তার করা একটি মন্তব্য বেশ সাড়াই ফেলে দিয়েছিল। সেটা ছাড়াও স্থানীয় ও বিদেশী ক্রিকেটারদের নিয়ে আশরাফুলের বিশ্লেষণ এখন পর্যন্ত চমৎকার হচ্ছে।
তো দর্শকরা কিভাবে দেখছেন তাদের প্রিয় ক্রিকেটারকে নতুন পেশায়? সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবারের দুটি ম্যাচ দেখতে উপস্থিত জামাল নামের এক ব্যক্তি উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়াই জানালেন আশরাফুলকে নিয়ে। “মানেন আর নাই মানেন, আশরাফুলই বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা ব্যাটসম্যান। উনি যে ক্রিকেট কত ভালো বোঝানে সেটা এখন দেশবাসী দেখতে পাচ্ছে। বাংলাদেশ দলে তাকে হয়ত আর দেখা যাবে না, কিন্তু টিভিতে আশরাফুলকে দেখে অনেক ভালো লাগছে।”
আরও পড়ুন: বিপিএল শুরু ১৯ জানুয়ারি, সব খেলা টি স্পোর্টসে
স্টেডিয়ামের বাইরে টিকিটের লাইনে থাকা ব্যবসায়ী আব্দুল আওয়াল সেভাবে এখন আর খেলা দেখার সময় পান না। সিলেটে বিপিএল হচ্ছে বলে তাই এসেছেন সরাসরি উপভোগ দেখতে। তার বিশ্বাস, বিশ্বের সেরা বিশ্লেষকদের একজন হবেন আশরাফুল। “প্রথমেই টি স্পোর্টসকে ধন্যবাদ, কারণ তারাই আশরাফুলের মাঝে লুকিয়ে থাকা এই প্রতিভা আমাদের দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। এক দুইটা ম্যাচে তার কথা শুনছি, ইনশাআল্লাহ অনেক ভালো করবেন সামনে।”
আশরাফুলের আবেদন যে এখনও একটুও কমেনি, তা দেখা গেল রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ম্যাচ চলাকালীন সময়ে। গ্যালারির পাশ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন এই তারকা। গ্যালারি থেকে ভেসে আসল ‘আশরাফুল ভাই, আশরাফুল ভাই’ চিৎকার। ভক্তদের নিরাশ না করে গ্রিলের এপার থেকেই ছবি তোলার জন্য পোজ দিলেন আশরাফুল।
আরও পড়ুন: শুরু হচ্ছে টি টেন লিগ, সব ম্যাচ দেখা যাবে টি স্পোর্টসে
কিছুক্ষণ বাদে তাদের একজনের সাথে কথা হল গ্যালারিতে। নাম রুহুল আমিন, কাজ করেন একটি মুদি দোকানে। ছুটি নিয়ে খেলা দেখতে এসে আশরাফুলের সাতে ছবি তুলতে পেরে তার উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। “ভাই, কোনোদিন চিন্তাও করিনাই যে আশরাফুল ভাইয়ের সাথে ছবি তুলতে পারব। টিভিতে তার খেলা দেখে বড় হইসি। অস্ট্রেলিয়ার সাথে তার সেই সেঞ্চুরির ভিডিও এখনও ইউটিউবে দেখি। সেলেব্রিটি হলে অনেকেই ভক্তদের আর গোনায় ধরেনা, কিন্তু আশরাফুল ভাইকে আমরা ডাক দেওয়ার সাথে সাথেই উনি দাঁড়িয়ে গেছেন। সিলেট আজকে না জিতলেও সমস্যা নাই, আমি খুশি।”
সিলেট শেষ পর্যন্ত হেরেই গেছে আবারও, তবে আশরাফুলের সেই ভক্ত হয়ত খুশিই থাকবেন। কারণ প্রিয় তারকার সাথে ছবি যে তোলা হল!
ব্রডকাস্টার আশরাফুল এভাবেই তার ভক্তদের আনন্দের উপকরণ হচ্ছেন। যেমনটা একটা সময় হত তার ব্যাটিং। বাংলাদেশের খেলা মানেই তখন আশরাফুলের ব্যাটিংয়ের দিকে সবার চোখ। কখনও হাসিয়েছেন, কখনও কাঁদিয়েছেন। তবে আনন্দের মাত্রাটা তীব্র বলেই আজও সজীব একজন আশরাফুল, বা একজন ব্রডকাস্টার আশরাফুল!
No posts available.
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫:০৬ পিএম
এশিয়া কাপের ফাইনালে আগামীকাল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামছে পাকিস্তান। তার আগে দলটির সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ-উল হক অনুজদের দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। সালমান আলি আগাদের ভরসা দিয়ে জানিয়েছেন, পুরো পাকিস্তান আছে তাঁদের পাশে।
পিটিভি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মিসবাহ বলেন,
‘মানুষ প্রার্থনা শুরু করেছে! তারা একত্রিত হচ্ছে। ক্রিকেট এমন একটি বিষয় যা এই জাতিকে একত্রিত করে। বিশেষ করে যখন পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে খেলা হয়। আমি মনে করি না দেশের এমন কেউ আছেন যে পাকিস্তানের ভালো হওয়ার আশা করছেন না। সবাই চায় পাকিস্তান ভালো খেলুক এবং এই খেলায় (ফাইনালে) জিতুক।’
আরও পড়ুন
মাহমুদউল্লাহর ঝড়ের পর জয়-দিপুর তাণ্ডব |
![]() |
বিশ্লেষকদের মতে, এবারের এশিয়া কাপে পাকিস্তান দল হিসেবে ততটা শক্তিশালী নয়। নড়বড়ে দল নিয়েও ফাইনালে পৌঁছেছে তারা। যদিও গ্রুপ ও সুপার ফোরে শুধু ভারতের কাছেই শুধু হেরেছেন সালমানরা, বাকি সব ম্যাচেই পেয়েছেন জয়। দলটির আরেক সাবেক অধিনায়ক শোয়েব মালিক বলেছেন, পাকিস্তানের হারানোর কিছু নেই।
মালিকের সেই মন্তব্য টেনে মিসবাহ বলেন,
‘যেমন শোয়েব মালিক বলেছেন, পাকিস্তানের কিছু হারানোর নেই। ভারত ফেভারিট, সবাই জানে তাদের দল শক্তিশালী। পাকিস্তান কোনোভাবে ফাইনালে পৌঁছেছে। এখন শুধু একদিন, এক খেলার ব্যাপার। যদি একজন খেলোয়াড় একটি ভালো ইনিংস খেলতে পারে, একটি বড় ইনিংস বা একটি ভালো বোলিং স্পেল দিতে পার – তবে আপনি এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন। সবাই আশা করছে আমরা একটি দারুণ দিন পাবো আর ভারত একটি খারাপ দিন কাটাবে। অনেক দিন ধরে এর চেয়ে বড় খেলা হয়নি।’
আরও পড়ুন
ফাইনালের মঞ্চে ভারতের চেয়ে এগিয়ে পাকিস্তান |
![]() |
পাকিস্তানের ব্যাটিং পরিকল্পনা নিয়েও মিসবাহ মন্তব্য করেছেন। ফাইনালে নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করতে নিষেধ মিসবাহর, ‘আমি মনে করি এটা সঠিক নয়। আগে থেকে লক্ষ্য নির্ধারণ করা সঠিক উপায় নয়। একটি কৌশল তৈরি করতে হবে, পিচ ভালোভাবে মূল্যায়ন করতে হবে – বল ব্যাটে আসছে কি না। তারপর শুরু করার ধরন নির্ধারণ করতে হবে।’
মিসবাহ আরও বলেন,
‘অবশ্যই আপনি টি-টোয়েন্টিতে ১৮০-এর বেশি রান আশা করবেন, কিন্তু সেই রান ইনিংসের বিভিন্ন অংশে ভাগ করতে হবে। প্রথম তিন ব্যাটারকে পাওয়ার-প্লেতে আক্রমণ করার লাইসেন্স আছে। যদি তা না হয়– বল থেমে যাচ্ছে, স্লিপ/সুইং করছে বা বোলিং খুব ভালো, তবে পরবর্তী পরিকল্পনায় যেতে হবে। ধরুন পাওয়ারপ্লেতে ৬০ রান হচ্ছে না, আমরা কি এখানে ৪৫ রান করতে পারি? পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিবর্তন করুন।’
আরও পড়ুন
রউফের জরিমানার টাকা দিয়ে দেবেন পিসিবি সভাপতি |
![]() |
মিসবাহর দাবি, পাকিস্তান ঠিকঠাকভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারছে না,
‘পাকিস্তান দল লক্ষ্য পুনর্মূল্যায়ন ঠিকভাবে করছে না। এরপর পরবর্তী চার ওভারের পরিকল্পনা করুন এবং পুনর্মূল্যায়ন করুন। এরপর পরবর্তী চার ওভার। শুরুতে ইতিবাচক ভাবেই খেলবেন, কিন্তু তিন ওভারের মধ্যে পিচ ও পরবর্তী পরিকল্পনা কিভাবে করতে হবে তা বোঝা যাবে। আমি মনে করি পাকিস্তান দল এ ধরনের পুনর্মূল্যায়ন করছে না।”
মিসবাহর ব্যাখ্যা,
‘পাওয়ার-প্লের পর আপনি শুধু আউট হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে হিট করতে পারবেন না। শট নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, কোথায় শট খেলবেন, কোন বোলারকে টার্গেট করবেন, এবং সর্বদা স্ট্রাইক রোটেশন বজায় রাখতে হবে।’
মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও মাহফিজুল ইসলাম রবিনের ভালো শুরুর পর ঝড়ো ফিনিশিং এনে দিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ঢাকা মেট্রো পেল বড় সংগ্রহ। কিন্তু সেটি যথেষ্ট হলো না জয়ের জন্য। কারণ পরের ইনিংসে তাণ্ডব চালালেন মাহমুদুল হাসান জয় ও শাহাদাত হোসেন দিপু।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মেট্রোকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম। আগে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রান করে মেট্রো। জবাবে জয় ও দিপুর বিধ্বংসী ফিফটিতে মাত্র ১৬.৫ ওভারেই ম্যাচ জিতে যায় চট্টগ্রাম।
৪ চারের সঙ্গে ৬টি ছক্কা মেরে ৩৭ বলে ৭১ রান করেন জয়। তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ২ চার ও ৫ ছক্কায় দিপুর ব্যাট থেকে আসে ৩২ বলে ৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংস।
রান তাড়ায় চট্টগ্রামকে ভালো শুরু এনে দেন জয় ও মুমিনুল হক। উদ্বোধনী জুটিতে ৩৩ বলে ৫৩ রান যোগ করেন তারা দুজন। ১৮ বলে ৩১ রান করে আউট হন দীর্ঘ দিন ধরে 'টেস্ট বিশেষজ্ঞ' তকমা লেগে যাওয়া অভিজ্ঞ ব্যাটার মুমিনুল।
দ্বিতীয় উইকেটে মাত্র ৩৮ বলে ৭৪ রানের জুটি গড়েন জয় ও দিপু। ১২তম ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন জয়। এরপর আর উইকেট পড়তে দেননি দিপু ও ইয়াসির আলি রাব্বি। অধিনায়ক রাব্বি ১০ বলে করেন ১২ রান।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার নাঈম ও রবিনের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা করে মেট্রো। উদ্বোধনী জুটিতে ৫১ বলে ৮১ রান যোগ করেন নাঈম-রবিন। নবম ওভারে ফেরার আগে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৩ বলে ৪৬ রান করেন নাঈম।
এক ওভার পর রবিনও ধরেন অধিনায়কের পথ। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৭ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন মেট্রোর প্রথম জয়ের নায়ক। এরপর সাদমান ইসলাম (১০ বলে ১৫) ও আনিসুল ইসলাম ইমন (১০ বলে ৩) হতাশ করলে চাপে পড়ে মেট্রো।
তবে সপ্তম উইকেট জুটিতে দায়িত্ব নেন মাহমুদউল্লাহ ও আবু হায়দার রনি। দুই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মিলে মাত্র ২৩ বলে গড়েন ৫৬ রানের হার না মানা জুটি। ৩টি করে চার-ছক্কা মেরে ২২ বলে ৪১ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। রনির ব্যাট থেকে আসে ১২ বলে ২৪ রান।
চট্টগ্রামের পক্ষে ৩২ রানে ২ উইকেট নেন নাঈম হাসান।
এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই এশিয়া কাপের দীর্ঘ ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনালে মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান। তবে এরই মধ্যে অন্যান্য টুর্নামেন্টে পাঁচবার দেখা হয়েছে দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের। যেখানে ভারতের চেয়ে এগিয়ে পাকিস্তান।
ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি বা টেস্ট- তিন ফরম্যাট মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষে খেলা পাঁচ ফাইনাল ম্যাচের মধ্যে তিনটিই জিতেছে পাকিস্তান। আর বাকি দুইটিতে জয়ী ভারত।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তাই রোববারের ম্যাচটি পাকিস্তানের জন্য এগিয়ে যাওয়ার। আর ভারতের চেষ্টা থাকবে প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে সমতা ফেরানোর।
১৯৮৫ সালে সাত দলের অংশগ্রহণে হওয়া বিশ্ব ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে প্রথম মুখোমুখি হয় ভারত ও পাকিস্তান। যেখানে ৮ উইকেটের সহজ জয় ভারত। আগে ব্যাট করে মাত্র ১৭৬ রান করে পাকিস্তান। পরে ক্রিস শ্রীকান্ত ও রবি শাস্ত্রীর ফিফটিতে জিতে যায় ভারত।
পরের বছর অস্ট্রেলেশিয়া কাপের ফাইনালে আবার দেখা হয় দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের। এবার ক্রিকেট বিশ্বকে রোমাঞ্চকর এক লড়াই উপহার দেয় দুই দল। আগে ব্যাট করে সুনিল গাভাস্কার, শ্রীকান্ত ও দিলিপ ভেংসরকারের ফিফটিতে ৭ উইকেটে ২৪৫ রান করে ভারত।
পরে রান তাড়ায় পাকিস্তানকে একাই এগিয়ে নেন জাভেদ মিঁয়াদাদ। তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর শেষ বলে ৪ রান বাকি থাকে পাকিস্তানের। চেতন শর্মার ফুল টসে ছক্কা মেরে দলকে ১ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় এনে দেন মিঁয়াদাদ।
এরপর আবার ১৯৯৪ সালের অস্ট্রেলেশিয়া কাপের ফাইনাল। এবার ভারতকে ৩৯ রানে হারিয়ে ফাইনাল ম্যাচের লড়াইয়ে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় পাকিস্তান। ব্যাট হাতে ৮৭ বলে ৬৯, বোলিংয়ে ২২ রানে ২ উইকেট ও ফিল্ডিংয়ে ২ ক্যাচ নিয়ে নায়ক আমির সোহেল।
আরেকটি ভারত-পাকিস্তান ফাইনালের জন্য ১৩ বছর অপেক্ষা করতে হয়। ২০০৭ সালের আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচেই মুখোমুখি হয় দুই প্রতিবেশি দেশ। যেখানে ৫ রানের জয় পায় ভারত।
আগে ব্যাট করে গৌতম গম্ভীরের ৫৪ বলে ৭৫ ও শেষ দিকে রোহিত শর্মা ১৬ বলে ৩০ রানের সৌজন্যে ১৫৮ রানের পুঁজি পায় ভারত। জবাবে মিসবাহ উল হকের ব্যাটে জয়ের পথেই ছিল পাকিস্তান। কিন্তু ৪ বলে ৬ রানের সমীকরণে শেষ ব্যাটার হিসেবে মিসবাহ আউট হয়ে যান।
এরপর আবার ১০ বছরের অপেক্ষা। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ফাখার জামানের ঝড়ে উড়ে যায় ভারত। ১০৬ বলে ১১৪ রান করেন তিনি। এছাড়া আজহার আলি ৭১ বলে ৫৯ ও মোহাম্মদ হাফিজ ৩৭ বলে ৫৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললে ৩৩৮ রান করে ফেলে পাকিস্তান।
জবাবে মোহাম্মদ আমির, হাসান আলির তোপে মাত্র ১৫৮ রানে অল আউট হয়ে যায় ভারত। পাকিস্তান পায় ১৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়।
এখন ৮ বছর পর আবার আরেকটি ফাইনালে মুখোমুখি দুই দল। সেখানে পাকিস্তানের চতুর্থ হয় হবে নাকি ভারতের তৃতীয়, সেটি বলে দেবে সময়।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে আচরণবিধি ভাঙার দায়ে ম্যাচ ফির ৩০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে হারিস রউফের। তবে এই অর্থ নিজের পকেট থেকে দিতে হবে না পাকিস্তানি পেসারের।
কারণ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সভাপতি মহসিন নাকভি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, রউফের জরিমানার টাকা নিজের পকেট থেকে দিয়ে দেবেন। সূত্রের বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
জিও নিউজকে সূত্র জানিয়েছে, শুধু রউফ নয়, এশিয়া কাপে পাকিস্তানের যে কোনো ক্রিকেটারের ওপর আসা আর্থিক জরিমানা নিজের পকেট দিয়ে দেবেন পিসিবি সভাপতি। এর মধ্যে রউফ ছাড়াও ওপেনার সাহিবজাদা ফারহানের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নিয়েছে আইসিসি।
আরও পড়ুন
ব্যাট হাতে ১০ বলে ৩০ রান করে খালেদ-রাজার বাজিমাত |
![]() |
ফারহানকে অবশ্য অর্থ জরিমানা করা হয়নি। শুধু তিরস্কৃত করে ছেড়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা।
গত রোববার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালে দর্শকদের উদ্দেশ্যে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করা রউফকে পরে শাস্তির ঘোষণা দেয় আইসিসি। একই ম্যাচে ফিফটির পর ব্যাটকে বন্দুক বানিয়ে উদযাপন করায় শাস্তির মুখে পড়েন ফারহান।
ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকেও ম্যাচ ফির ৩০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। দুই দলের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে তার বিরুদ্ধে ছিল রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন জাতীয় দলের সাবেক বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। তাই নির্বাচকের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন সাবেক তারকা ক্রিকেটার।
বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম্যানেজার জামালউদ্দিন বাবু টি স্পোর্টসকে জানিয়েছেন, শনিবার নির্বাচকের চাকরি ছাড়ার চিঠি জমা দিয়েছেন রাজ্জাক। পরে বিসিবির নির্বাচন কমিশনে গিয়ে পরিচালক পদের জন্য মনোনয়ন পত্র কেনেন তিনি।
আরও পড়ুন
ব্যাট হাতে ১০ বলে ৩০ রান করে খালেদ-রাজার বাজিমাত |
![]() |
রাজ্জাক চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেল আবারও হয়ে গেল দুই জনের। প্রধান নির্বাচক হিসেবে আছেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। আর সম্প্রতি প্যানেলের নতুন সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে হাসিবুল হোসেন শান্তকে।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও হাবিবুল বাশার সুমনের নির্বাচক প্যানেলে তৃতীয় সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন রাজ্জাক। প্রায় সাড়ে ৪ বছর এই পদে থাকার পর এবার বোর্ডে পরিচালক হিসেবে কাজ করার ইচ্ছা সাবেক বাঁহাতি এই স্পিনারের।
আরও পড়ুন
ফাইনালে শঙ্কামুক্ত অভিষেক, হার্দিকের জন্য অপেক্ষা |
![]() |
বিসিবি নির্বাচনে শনিবার সকাল ১০টায় শুরু হয়েছে পরিচালক পদের মনোনয়নপত্র বিতরণ। খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার হয়ে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন তুলেছেন রাজ্জাক। রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিল করার সময়।
রাজ্জাকের পাশাপাশি এরই মধ্যে বিসিবির পরিচালক পদের জন্য মনোনয়ন তুলেছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল, খালেদ মাসুদ পাইলট, তামিম ইকবাল (পক্ষে মিনহাজ উদ্দিন খান), ফারুক আহমেদের মতো সাবেক ক্রিকেটাররা।