বিদায়ের দিনক্ষণ জানিয়ে দিয়েছিলেন আরো আগে, ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে ইনজুরি-চোট জর্জরতার কারণে শেষ ম্যাচটায় মালাগায় অনুষ্ঠিত ডেভিস কাপে কোর্টে আদৌও নামতে পারবেন কিনা– জানেন না ক্লে কোর্টের অবিসংবাদিত রাজা রাফায়েল নাদাল। কিন্তু নাদালেরই সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী এবং অন্যতম ‘বড় ভক্ত’ রজার ফেদেরার এক খোলা চিঠিতে একবাক্যে মেনে নিচ্ছেন, নাদালের মতো আর কেউ তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে পারেননি।
নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে ফেদেরার তার প্রিয় বন্ধু এবং প্রতিন্দ্বন্দ্বী নাদালের জন্য লিখেছেন খোলা চিঠি। সেখানে ফেদেরার জানাচ্ছেন, নাদালের কারণেই টেনিসকে আরো উপভোগ করেছেন দ্য সুইস মায়েস্ত্রো।
নাদালের মুখোমুখি হয়েছেন অসংখ্যবার। ফেদেরার আর নাদালের লড়াই একবিংশ শতকের শুরুর টেনিসকে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়। ফেদেরার তার ক্যারিয়ারের ইতিটাও টেনেছেন নাদালকে কাছে রেখে, ২০২২ সালের লেভার কাপে একসঙ্গে খেলে। সে মুহূর্তটাকে ফেদেরার বলেছেন ‘তার ক্যারিয়ারের অন্যতম বিশেষ মুহূর্ত’ হিসেবে।
ফেদেরার তার লেখা খোলা চিঠিতে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, জয়ের চাইতে হারের তেতো স্বাদটা ৪৩ বছর বয়সী সুইস বেশি পেয়েছেন, যখন তিনি নাদালের মুখোমুখি হয়েছেন, “তুমি আমায় অনেকবার হারিয়েছ, অনেকবার। আমি যতবার তোমাকে হারিয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশি”, লেখেন ফেদেরার। স্মরণ করেন তাদের প্রথম সাক্ষাতের গল্পটাও, ২০০৪ সালের মার্চ মাসে মায়ামি মাস্টার্সে একেবারে স্ট্রেইট সেটে সে সময়ের বিশ্বের নাম্বার ওয়ান ফেদেরারকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন র্যাংকিংয়ের ৩৪ তম বাছাই স্প্যানিশ রাফা।
ততদিনে ফেদেরারের নামের পাশে চারটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম, আর নাদালের বয়স কেবল ১৭। ২০০৫ সালের ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে নিজের নাম ইতিহাসের বুকে লেখার আগেই ফেদেরারকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে নাদাল টেনিস জগতে রাজত্ব করতে এসেছেন। ফেদেরার-নাদাল রাইভালরিতে জয়ের সংখ্যা কিংবা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়– দুই জায়গাতেই নাদাল ছাড়িয়েছেন ফেদেরারকে। একে অপরের বিপক্ষে ৪০ দেখায় নাদাল জিতেছেন ২৪ বার, আর ফেদেরার শেষ হাসি হেসেছেন ১৬ বার। গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ডও নাদাল ভেঙেছিলেন ফেদেরারের ২০ টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড ছাড়িয়ে, থেমেছেন ২২ এ এসে।
“আমি ভেবেছিলাম আমিই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ, এবং সেটাই সত্যি ছিল ততদিন পর্যন্ত যেদিন মায়ামিতে তোমার মুখোমুখি হলাম। লাল, হাতাকাটা শার্টে বাইসেপস দেখিয়ে কোর্টে নামলে, আমাকে একদম সহজে হারিয়ে দিলে। তোমার জন্যই আমি খেলাটাকে অন্যভাবে দেখতে শিখেছি,” খোলা চিঠিতে লেখেন ফেদেরার। নাদালের তীব্র টপস্পিন সামলানোর জন্য ফেদেরার নিজের ব্যাকহ্যান্ডে আসলেই পরিবর্তন এনেছিলেন।
ক্লে কোর্টে ১৪ বার ফ্রেঞ্চ ওপেনজয়ী নাদালের উপরে আর কেউ নেই, সেই স্বীকৃতিটা ফেদেরার আরেকবার দিয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী স্প্যানিয়ার্ডকে, “ক্লে কোর্টে নামলে মনে হতো তোমার রাজ্যে প্রবেশ করেছি, আর সেখানে তুমি আমার চিন্তা-সামর্থ্যের বাইরে আমাকে খাটিয়ে মেরেছো। বিশ বছর পর, ১৪ টা ফ্রেঞ্চ ওপেন জয়। কী ঐতিহাসিক এক ক্যারিয়ার। স্পেনকে তুমি গৌরব এনে দিয়েছো। তোমার জন্য পুরো টেনিস বিশ্বও গর্বিত।”
ডেভিস কাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে স্পেন খেলবে মঙ্গলবার রাত ৯ টায়। ডেভিস কাপের ফাইনাল রবিবার ২৪ নভেম্বর। স্পেন তার মূল ভরসা রাখছে আরেক স্প্যানিশ সেনসেশন কার্লোস আলকারাজের উপর। তবে নাদালের ‘ওয়ান লাস্ট ডান্স’টা আদৌ কোর্টে হবে কিনা, সেটা তার শরীরের সামর্থ্যের উপর নির্ভর করবে।
No posts available.
বয়সের ছাপ স্পষ্ট। তারুণ্যের কাছে হার মানতে হচ্ছে প্রায়ই। তবু থামতে আপত্তি নোভাক জোকোভিচের। অবসরের কোনো পরিকল্পনাই নেই রেকর্ড ২৪বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ীর। সার্বিয়ান কিংবদন্তি খেলা চালিয়ে যাওয়ার প্রেরণা নিচ্ছেন ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, এনবিএ তারকা লেব্রন জেমস, সাবেক এনএফএল খেলোয়াড় টম ব্র্যাডির কাছ থেকে।
এ বছর চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের চারটিতেই সেমি ফাইনালে শেষ হয় জোকোভিচের যাত্রা। ইয়ানিক সিনার-কার্লোস আলকারাজের মতো টেনিসের বর্তমানদের কাছে নিয়মিতই আত্মসমর্পন করতে হচ্ছে তাকে। সর্বশেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা এসেছে ২০২৩ সালে। চোট আর বয়সের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে ৩৮ বছর বয়সী কিংবদন্তিকে। এরপরও দৃঢ় মানসিকতার অধিকারী জোকোভিচ চালিয়ে যেতে যান খেলা।
জোকোভিচ আছেন এখন সৌদি আরবে। মধ্য প্রাচ্যের দেশটিতে ‘সিক্স কিংস স্ল্যাম’-এর সেমিফাইনালে আরও একবার সিনারের কাছে হেরেছেন তিনি। সেমিতে জোকোকে ৪-৬, ২-৬ সেটে হারিয়েছেন চারবারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী ইতালিয়ান। আরেকটি ব্লকবাস্টার ফাইনালে আগামীকাল মুখোমুখি হবেন আলকারাজ-সিনার।
সেমিতে সিনারের কাছে হারের পর রিয়াদে জয় ফোরামে ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলেন জোকোভিচ। অবসরের প্রশ্নে বলেন,
‘দীর্ঘ ক্যারিয়ারই এখন আমার সবচেয়ে বড় প্রেরণা। আমি দেখতে চাই, আমি কত দূর যেতে পারি। বিশ্বজুড়ে খেলাধুলায় লেব্রন জেমসকে দেখুন—সে এখনো দারুণ খেলছে, বয়স ৪০। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও তাই, টম ব্র্যাডিও ৪০ বছর পেরিয়ে খেলেছেন। অবিশ্বাস্য! তারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করে। তাই আমিও চালিয়ে যেতে চাই—এটাই আমার অন্যতম অনুপ্রেরণা।’
টেনিসের পরিবর্তনশীল ভবিষ্যতের অংশ হতে চাওয়ার কথাও জানিয়ে জোকোভিচ বলেন,
‘আমি এমন সময়টায় বাঁচতে চাই। অর্থাৎ এখনো পেশাদার টেনিসে খেলতে চাই—যখন এই খেলাটিতে পরিবর্তন আসবে। আমি এতে ভীষণ রোমাঞ্চিত। আমার মনে হয়, টেনিস এমন এক খেলা, যা ব্যাপকভাবে বদলে যেতে পারে এবং যাবে। আমি সেই পরিবর্তনের অংশ হতে চাই, কেবল অংশ নয়, আমি চাই খেলাটির নবজাগরণের সময় কোর্টে থাকতে, যখন নতুন প্রজন্মের জন্য টেনিসের এক নতুন যুগের ভিত্তি তৈরি হবে।”
এই বছর জেনেভায় ক্যারিয়ারের ১০০তম শিরোপা জেতা জোকোভিচকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়—সিনার বা আলকারাজের মতো তরুণরা কি তাকে হারিয়েই অবসরে পাঠাবে? তখন মুচকি হেসে তিনি জবাব দেন, ‘তাদের হতাশ করতেই হচ্ছে—ওটা হতে যাচ্ছে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের টেনিস তারকা কোকো গফের পলকে যুক্ত হলো আরও একটি অর্জন। উহান টেনিসের ফাইনালে স্বদেশি জেসিকা পেগুলাকে স্ট্রেইট সেটে হারিয়ে দিয়েছেন টেনিসের তিন নম্বর র্যাঙ্কধারী এই নন্দিনী। টেনিসের হার্ড কোর্টে ৯টি শিরোপা জিতে গড়েছেন রেকর্ড।
উহানে আজ ছন্নছাড়া ও উদ্ভ্রান্তের মতো দেখাচ্ছিল পেগুলাকে। হারের আগেই যেন হেরে বসেন যুক্তরাষ্ট্রের এই টেনিস তারকা। আসরজুড়ে অপ্রতিরোধ্য থাকা ৬ নম্বর র্যাঙ্কধারী পেগুলা ছিলেন অসহায়ের মতো। স্বদেশি গফের কাছে ৬-৪ ও ৭-৫ সেটে হেরে কোর্ট ছাড়েন।
ম্যাচের সব বিভাগেই পিছিয়ে ছিলেন পেগুলা। শক্তিশালী সার্ভিস, ব্যাকহ্যান্ড, ফোরহ্যান্ডে তো ছিলই, দ্রুত কোর্ট কভারিংয়েও সুবিধা নিতে পারেননি তিনি। অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগিয়ে উহান ওপেনের রানী বনে গেলেন গফ।
রেকর্ড শিরোপা জয়ের পর গফ বলেছেন,
‘আমি আমার টিমের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এটি এশিয়ার অন্যতম সেরা প্রতিযোগিতা। আমার কোচ ক্রিস্টোফা ফেইরুলা শুরুতে আমাকে এখানে আসতে দিতে চায়নি। কারণ আমার ইউএস ওপেনে সময়টা খারাপ গেছে। কিন্তু আমি তাকে ভুল প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম।’
যুক্তরাষ্ট্রের এই টেনিস তারকা আরও বলেছেন,
‘আমি খুবই জেদি একজন মানুষ। তাই ইচ্ছা করেই তিনি (কোচ) আমাকে আসতে বারণ করেছিলাম। যাতে আমি ভালো রেজাল্ট করি।’
স্বদেশি গফের এই জয় দেশের জয় হিসেবেই দেখছেন পেগুলা। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন,
‘তার (গফ) সঙ্গে খেলতে পারাটা সম্মানের। একজন বন্ধু হিসেবে এবং একজন আমেরিকান হিসেবে। এই প্রথম দুইজন ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছি। খেলাটা বেশ মজার ছিল।’
যুক্তরাষ্ট্রের দুই টেনিস তারকা সেরেনা উইলিয়ামস ও ভেনাস উইলিয়ামসনের মুখোমুখি লড়াইয়ের যে ব্যাপার, তা মঞ্চায়ন হয়েছে সাংহাই মাস্টার্সে। যেখানে শিরোপার মঞ্চে একে অন্যের বিরুদ্ধে র্যাকেট ধরেছেন দুই চাচাতো ভাই ভ্যালেন্টিন ভাচেরোট ও আর্থার রিন্ডারকনেচ।
চীনের সাংহাইয়ে বাংলাদেশ সময় আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার লড়াইয়ে রিন্ডারকনেচকে ৪-৬, ৬-৩ ও ৬-৩ সেটে হারিয়ে দিয়েছেন ভ্যালেন্টিন। যা লেখা হয়েছে খেরোখাতায়। এর আগে সাংহাই মাস্টার্সে র্যাঙ্কিং বিচারে এত নিচে ( সিঙ্গেল, ২০৪) থেকে উপরের (সিঙ্গেল, ৪২) কাউকে হারাতে পারেননি কোনো প্রতিযোগী।
আরও বেশকিছু কারণে রেকর্ডবুকে লেখা থাকবে এই ম্যাচ এবং দুই চাচাতো ভাই। প্রতিযোগিতায় এটি সম্ভবত দ্বিতীয় ফাইনাল, যেখানে ১৯৯১ সালের পর রক্তের সম্পর্কের দুই প্রতিযোগী একে অন্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তবে কলেজ ও স্কুল জীবনে বহুবার মুখোমুখি হয়েছেন ভ্যালেন্টিন ও আর্থার।
২৬ বর্ষী ভ্যালেন্টিন সাংহাই মাস্টার্সে জয়ের পর আবেগি বার্তা দিয়েছেন। তার সে বার্তা মন চুয়েছে সকলের। শুরুতেই দাদা-দাদিকে স্মরণ করেছেন। বলেছেন, ‘আশাকরি দাদা-দাদি খুশি হবেন আমার এমন অর্জনে।’
জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে কান্না ধরে রাখতে পারেননি দু’জন। নিজেরা কেঁদেছেন, কাঁদিয়েছেন উপস্থিত সকলকে। ভ্যালেন্টিন বলেছেন,
‘এটা অবিশ্বাস্য, বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে কি ঘটছে। এটা (শিরোপা) কল্পনাও করতে পারছি না।’
‘প্রতিযোগিতায় আমাদের একজন হেরেছে, একজন জিতেছে। তবে আমি মনে করি আজ আমরা দুইজনই জিতেছি। তারচেয়েও বড়-আমাদের পরিবার জিতেছে।’
যোগ করেন তিনি।
চাচাতো ভাইয়ের বিপক্ষে হারের পর আর্থার বলেছেন,
‘ভ্যালেন্টিন, তুমি সর্বোচ্চটা দিয়েছ। আমি তোমার উপর সন্তুষ্ট। আমরা দুই কাজিন এখন আরও বেশি শক্তিশালী।’
থামার সময় বোধহয় চলেই এল। বয়স আর চোটের সঙ্গে লড়াই করে কেবল মনের জোরেই টিকে আছেন। তবে আর কত? এ বছরের সবক’টি গ্র্যান্ড স্ল্যামে তারুণের্য কাছে হার মানতে হয়েছে। এবার তো চোটর্জজর নোভাক জোবোভিচকে হারিয়ে ইতিহাসেই নাম লিখলেন ফরাসি ভ্যালেন্টিন ভাশারো।
সাংহাই মাস্টার্সের সেমিফাইনালে আজ জোবোভিচকে ৩-৬, ৪-৬ সেটে হারিয়েছেন ভ্যালেন্টিন ভাশারো। র্যাঙ্কিংয়ে ২০৪ নম্বরে থাকা এই খেলোয়াড় ইতিহাসের সর্বোনিম্ন র্যাঙ্কিংয়ে থেকে এটিপি মাস্টার্স ১০০০ ফাইনালে উঠলেন।
ফাইনালে ২৬ বছর বয়সী ভাশারোর প্রতিপক্ষ হতে পারে তাঁর চাচাতো ভাই আর্থার রিন্ডারনেক অথবা রাশানা দানিল মেদভেদেভ।
জোকোভিচকে হারিয়ে একেবারে বাকরুদ্ধই হয়ে যান ভাশারো। রেকর্ড ২৪বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ীর বিপক্ষে জয় পেয়ে মনে হচ্ছিল বুঝি স্বপ্ন দেখছেন তিনি। জয়ের পর আবেগঘন কণ্ঠে ফরাসি খেলোয়াড় বলেন,
‘শরীরে চিমটি কেটে দেখতে ইচ্ছে করছে—এটা কি সত্যি? কোর্টের অপর পাশে নোভাক জোকোভিচের মতো কিংবদন্তিকে পাওয়া—এটা আমার জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এই মুহূর্তে কত রকমের অনুভূতি যে কাজ করছে!’
পুরো টুর্নামেন্টেই ইনজুরির সঙ্গে লড়ছিলেন জোকোভিচ। গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে আগের ম্যাচগুলোতে বমিও করতে দেখা গেছে সার্বিয়ান কিংবদন্তিকে। সেমিফাইনালেও পুরনো সমস্যা ফিরে আসে। একাধিকবার চিকিৎসকের শরণাপন্নও হতে হয়েছে ৩৮ বছর বয়সী জোকোকে।
তবুও শরীরের সঙ্গে লড়াই করে দ্বিতীয় সেট পর্যন্ত ম্যাচ নিয়ে যান জোকোভিচ। দ্বিতীয় সেটে দর্শকদের আশার আলো দেখিয়ে জোকোভিচ ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়েও যান। মনে হচ্ছিল হয়তো নাটকীয়ভাবে ম্যাচে ফিরছেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত সেখান থেকেই ভাশারো টানা তিনটি গেম জিতে ম্যাচটা নিজের করে নেন।
ম্যাচ শেষে ভাশারোকে প্রশংসায় ভাসান জোকোভিচ।
‘আমি ভ্যালেন্টিনকে অভিনন্দন জানাই—তার প্রথম মাস্টার্স ফাইনালে উঠাটা একটা দারুণ গল্প। কোয়ালিফায়ার থেকে উঠে এসে এতদূর আসাটা বিস্ময়কর। আমি তাকে নেটের কাছে বলেছি, তার মানসিকতা ও খেলার ধরণ অসাধারণ ছিল। আজকের ম্যাচটা ওর প্রাপ্য ছিল। আমি ওকে ফাইনালের জন্য শুভকামনা জানাই।”
দুর্দান্ত এই জয়ের পর প্রথমবারের মতো বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের ১০০-র মধ্যে প্রবেশ করবেন ভাশারো। কোয়ার্টার ফাইনালে হোলগার রুনেকে হারানোর পর থেকেই এই অর্জনের পথ খুলে যায়। আর সাংহাই মাস্টার্সে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে লাইভ র্যাঙ্কিংয়ে এক লাফে ১৪৬ ধাপ এগিয়ে এখন উঠে এসেছেন ৫৮ নম্বরে।
একটু পরিশ্রম হয়েছে, এই যা। তা না হয় স্টেডিয়ামে আগত দশর্কদের অজানা ছিল না আরিনা সাবালেঙ্কার ভোজবাজি। প্রতিপক্ষে হয়তো একটু বাজিয়ে দেখবেন, নিজেও নেবেন লম্বা একটা দম-এরপরই তো দেখাবেন আসল খেল।
উহান ওপেনে আজ সেটাই হয়েছিল। যদিও ম্যাচ প্রথম সেট থেকেই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন ২০২৫ গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ী বেলারুশ নন্দিনী। রেবেকা শ্রামকোভাবকে ৪-৬, ৬-৩, ৬-১ ব্যবধানে পরাজিত করে প্রতিযোগীতার তৃতীয় রাউন্ডে ওঠেছেন টেনিসের নম্বর ওয়ান তারকা সাবালেঙ্কা।
এ জয়ে টুর্নামেন্টে টানা ১৮ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়লেন সাবালেঙ্কা। ২০১৮ সাল থেকে এই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচে পরাজিত হননি তিনি। উহান ওপেনের ইতিহাসে সাবালেঙ্কা এখন পর্যন্ত তিনটি শিরোপা জিতেছেন।
সাবালেঙ্কার পরবর্তী প্রতিপক্ষ হিসেবে লিউডমিলা সামসোনোভা। তার আগে আজ গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘আমি জানতাম লম্বা বিরতির পর রিদমে ফেরাটা এতটা সহজ হবে না। আনন্দিত যে দ্বিতীয় সেটেই আমি নিজেকে ফিরে পেয়েছি। সত্যিকার অর্থে আমি সেরাটা উপহার দিয়েছি।’
প্রতিপক্ষ রেবেকাকে নিয়ে তার মন্তব্য, ‘ও (রেবেকা) অবিশ্বাস্য খেলেছে। বিশেষ করে প্রথম সেটে। এর চেয়ে (৪-৬) আমি ভিালো রেজাল্ট করতে পারতাম না আমি।’
উহান ওপেনে তিন বারের চ্যাম্পিয়ন সাবালেঙ্কা। যখন বেলারুশ নন্দিনীকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘উহানের কন্যা’ উপাধি পাওয়ায় কেমন লাগে’, জবাবে তিনি বলেন- ‘‘প্রথমে আমাকে বলা হতো ‘চায়নার কন্যা’, তারপর ‘ফ্রাইড রাইসের রানী’— কারণ আমি এই খাবারটা খুব পছন্দ করি।’’
সাবালেঙ্কা যোগ করেন, “এরপর আমি (চীনের বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের ১০ নম্বরে থাকা)ঝেং চিনওয়েনের সঙ্গে কথা বলি, ওরা আসলে আমাকে বলে ‘বাঘিনী’। এতসব ডাকনাম যে, গুনে রাখা মুশকিল!”