২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১:১৯ পিএম

এখন পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে ব্রাজিলের অনেকেই আলো ছড়িয়েছেন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন বিশ্বকাপ জয়ী স্ট্রাইকার রোনালদো নাজারিও। বর্তমান সময়ে অর্জনের দিক থেকে রিয়ালের হয়ে তার মতোই সেরা ফুটবল খেলছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তাতে একটি রেকর্ডের পাতায় তিনি চলে গেছেন চূড়ার খুব কাছে, যেখানে তার সামনে আছেন কেবল রোনালদোই।
গত বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সালজবার্গের বিপক্ষে রিয়ালের ৫-১ গোলে জয়ের ম্যাচে দুই বার জালের দেখা পান ভিনিসিয়ুস। এর মধ্যে প্রথমটি ছিল ইউরোপের সফল দলটির হয়ে তার ১০০তম গোল। সব মিলিয়ে রিয়ালের জার্সিতে তার গোল ১০১টি। ব্রাজিলিয়ানদের মধ্যে রিয়ালের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের তালিকায় সবার ওপরে আছেন রোনালদো। ২০০২ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে কিংবদন্তি এই ফুটবলার করেন ১০৪ গোল।
ম্যাচের পর ভিনিসিয়ুস স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই রেকর্ড নিজের করার দিকেই চোখ তার এখন।
“আমি এই জার্সি গায়ে গোল করতে পেরে খুশি। এই ক্লাবের হয়ে ব্রাজিলিয়ানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল করার দিক থেকে আমি রোনালদোর থেকে এখন তিন গোল দূরে আছি। আশা করি আমি আরও গোল করতে পারব।”
ব্যক্তিগত ও দলগত অর্জনের দিক থেকে বিচার করলে অবশ্য এরই মধ্যে পূর্বসূরিকে ছাড়িয়ে গেছেন ভিনিসিয়ুস। এর মধ্যে দুইবার পেয়ে গেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদ, যার দুটিতেই আবার রয়েছে তার গোল। তিনটি লা লিগা ছাড়াও রয়েছে আরও শিরোপা। আর গত বছর প্রথমবারের মত জেতেন ফিফার দ্য বেষ্ট খেতাব।
সালজবার্গের বিপক্ষে ভিনিসিয়ুস ছাড়াও আরেক ব্রাজিলিয়ান রদ্রিগোও ছিলেন দারুণ ছন্দে। দুটি গোল করেন তিনিও। অন্যটি আসে কিলিয়ান এমবাপের কাছ থেকে। আর গোল না করলেও দুর্দান্ত খেলেছেন মিডফিল্ডার জুড বেলিংহাম।
আর তাই নিজে এই ম্যাচের ‘এমভিপি’ নির্বাচিত হয়েছেন, এটা কিছুটা অবাকই করল ভিনিসিয়ুসকে।
“আমার মনে হয়েছিল প্রথমার্ধে আমি ভালো খেলতে পারিনি। রদ্রি এটার প্রাপ্য ছিল, এমনকি জুড ও অন্য খেলোয়াড়রাও। কিন্তু আমি জয় ও গোল পেয়ে খুশি, এমনকি সেটা আমি খারাপ খেলার পরও।”
No posts available.
৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৪ এম
৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০৫ এম

দা-কুমড়ো সম্পর্ক যাকে বলে, বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদের সম্পর্ক সমসময় এমনই। তবে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে সম্প্রতি খানিকটা বেশি দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে দুই স্প্যানিশ জায়ান্ট। কদিন পরপরই কথার লড়াইয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলছেন বার্সা-রিয়ালের সভাপতি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই ক্লাবের বিরোধের কারণ রেফারি। দু’পক্ষই একে অন্যকে রেফারির অবৈধ সুবিধা পাওয়া নিয়ে পাল্টাপাল্টি দোষারাপ করে আসছে। এবার বিতর্কের আগুন উশকে দিলেন বার্সা সভাপতি হোয়ান লাপার্তা।
লা লিগার রেফারি নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ জানাতে দেখা যায় রিয়াল মাদ্রিদের অফিসিয়াল টিভি ‘আর এম টিভিকে’। রিয়ালের নিজস্ব এই চ্যানেলের সমালোচনা করে লাপার্তা বলেছেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদ তাদের ক্লাবের চ্যানেল আরএমটিভি-এর মাধ্যমে প্রভাব প্রয়োগের চেষ্টা করছে। তাদের উচিত তাদের নিজস্ব চ্যানেল রেফারিদের বিষয়ে কী করে তা দেখা। কারণ তারা সেটি খুবই তীব্র এবং অযৌক্তিকভাবে করে।’
রেফারির কমিটিতে রিয়াল মাদ্রিদের কোনো না কোনো সদস্য সবসময়ই প্রভাব রাখে বলে মন্তব্য করেন লাপার্তা, ‘রেফারিদের কমিটির ৭২ বছরের ইতিহাসে সবসময়ই একজন সদস্য রিয়াল মাদ্রিদ থেকে এসেছে। মাদ্রিদের প্রভাব অনেক ক্ষমতা রাখে। জয় পেতে আমাদের সবসময়ই ভালো লাগে, কারণ জয় তখন আরও মূল্যবান হয়ে ওঠে।
বার্সার বিরুদ্ধে রেফারির সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আছে। নেগ্রেইরা কেস নামে পরিচিত এই মামলা এখনো আদালতে বিচারাধীন। কাতালান ক্লাবটির বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ নিয়ে সমসময় সরব রিয়াল মাদ্রিদ। কদিন আগে ইউরোপের সবচেয়ে সফল ক্লাবটির সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ তো বার্সার সোনালী প্রজন্মের সাফল্য নিয়েই প্রশ্ন তুলেন।
বার্সা সভাপতি ক্লাবের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এটি চলতেই থাকবে যতক্ষণ না বিচারক বলেন “যথেষ্ট হয়েছে”। আমরা আইনগত পথে রয়েছি, এবং সব সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে বার্সেলোনা রেফারিদের কেনেনি এবং কোনো ভুল করেনি।’
লাপার্তার মতে কোনো একটি পক্ষ এই মামলা টিকিয়ে রাখতে চায়, ‘আমাদের বিচার করা হয়েছে তখনও যখন আমরা আদালতে যাইনি। আমি নিশ্চিত বার্সেলোনা সম্পূর্ণভাবে মুক্তি পাবে। এমন কিছু পক্ষ আছে যারা এই মামলাকে জীবিত রাখতে চায়। তারা বলে আসছে, বার্সেলোনা রেফারিদের থেকে সুবিধা পেয়েছে—এটি একেবারেই মিথ্যা।’
চলতি মৌসুমে ভালো-মন্দ মিলিয়ে যাচ্ছে বার্সেলোনার। এল ক্লাসিকো হারের পরও লা লিগায় পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে লামিনে ইয়ামাল-রাফিনহারা। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সুবিধা করতে পারছে না তাঁরা। ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতার চলতি আসরে ৫ ম্যাচে মাত্র দুটিতে জয় পেয়েছে হান্সি ফ্লিকের দল।

মাঝমাঠে থেকে তাঁর রক্ষণভেদী পাস, বলের নিয়ন্ত্রণ, সমানতালে সামলাচ্ছেন রক্ষণও। এককথায় একজন আর্দশ মিডফিল্ডারের ‘ফুল প্যাকেজ’। বলা হচ্ছে মাঝমাঠের এক শিল্পীর কথা, টনি ক্রুস। ফুটবলকে এরইমধ্যে বিদায় বলে দিয়েছেন এই জার্মান মায়েস্ত্রো। জার্মান দলে মাঝমাঠে তাঁর রেখে যাওয়া ছাপ কে পূরণ করবে? পুরো মাঠে দাপিয়ে বেড়ানো এই মিডফিল্ডারের বিকল্প পাওয়া কি সম্ভব?
কেনেট আইখর্ন। ক্রুসের রেখে যাওয়া শূন্যস্থান ভরাট করার মতো এক প্রতিভাকে কিন্তু পেয়ে গেল জার্মানি। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই অনন্য প্রতিভা দিয়ে নজর কেড়েছেন এই মাঝমাঠের ভবিষ্যত তারকা। বুন্দেসলিগার দ্বিতীয় সারির ক্লাব হার্থা বার্লিনের এই ফুটবলারকে পেতে ইতিমধ্যেই ইউরোপের বড় বড় ক্লাবগুলোর তীব্র লড়াইয়ে নেমেছে।
‘নতুন টনি ক্রুস’ নামে খ্যাত এই কিশোরের গত ২ ডিসেম্বরে ডিএফবি-পোকালে করা ঐতিহাসিক গোলটি তাকে নিয়ে আগ্রহকে আরও বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। কাইসারস্লাউটার্নের বিপক্ষে ওই ম্যাচে ৬–১ গোলের দারুণ জয়ে মাঠ ছাড়ে তাঁর ক্লাব। কিন্তু ম্যাচটির সবচেয়ে বড় ঘটনা ছিল একটি বিশেষ মুহূর্ত—মাত্র ১৬ বছর বয়সী কেনেট আইখর্নের গোল। ২০০৯ সালে জন্ম নেওয়া এই প্রতিভাবান ফুটবলার স্বরণীয় এক মূহুর্তের স্বাক্ষী হয়েছেন। পেশাদার ক্যারিয়ারে এটি যে ছিল তাঁর প্রথম গোল।
অনেকেই বলতে পারেন মাত্র একটি গোল করেই তাকে ‘নতুন টনি ক্রুস’ বলা বাড়াবাড়ি। তবে আইখর্নের আসল কাজ যে গোল করা নয়। মাঠে তাঁর ভূমিকা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার—অর্থাৎ গোলমুখ থেকে অনেক দূরের পজিশন, কখনো সেন্ট্রাল মিডফিল্ড। হার্থার ৪-২-৩-১ ফরমেশনে আইখর্ন সাধারণত রক্ষণভাগের সামনে দুই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের একজন হিসেবে খেলেন।
মাত্র ১৬ বছর বয়স হলেও কোচ স্টেন লেইটল আইখর্নের প্রতি আস্থা রাখছেন শুরু থেকেই। চলতি মৌসুমে ইতোমধ্যে দশের বেশি ম্যাচ খেলেছেন আইখর্ন, যার বেশিরভাগই ছিল প্রথম একাদশে। জার্মান সংবাদমাধ্যমগুলো ইতোমধ্যেই তাকে তুলনা করছে টনি ক্রুসের সঙ্গে। শুধু খেলার ধরণ নয়, বরং বল নিয়ন্ত্রণ, ড্রিবলিং, নিখুঁত পাসিং ও স্নায়ুচাপ সামলানোর ক্ষমতার জন্য। এতো কম বয়সী খেলোয়াড়দের মধ্যে যা সচরাচর দেখাই যায় না।
গত আগস্টে আইখর্ন বুন্দেসলিগা–২’ এর ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়সী ফুটবলার হিসেবে অভিষিক্ত হন, মাত্র ১৬ বছর ১৪ দিনে। আর সেটা প্রথম পেশাদার চুক্তিতে সই করার কয়েক দিনের মধ্যেই। তাঁর দ্রুত উন্নতি আর অসাধারণ প্রতিভা দৃষ্টি এড়ায়নি ইউরোপের কোনো বড় ক্লাবেরই। পিএসজি, বায়ার্ন মিউনিখ, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, বার্সেলোনা, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রিয়াল মাদ্রিদ—সবাই তাকে নিজেদের স্কাউটিং তালিকায় রেখে দিয়েছে।
পাফরম্যান্সের সঙ্গে আইখর্নের বাজারমূল্যও বাড়ছে তরতর করে। ইতোমধ্যেই প্রায় পৌঁছেছে ২০ কোটি ইউরোর কাছাকাছি। ১৬ বছর বয়সী একজন ফুটবলারের জন্য নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর সংখ্যাই বটে।
আর মাস ছয়েক পরই বিশ্বকাপ। জার্মানির বিশ্বকাপ স্কোয়াডে কি আইখর্ন নামের এই ‘নতুন টনি ক্রুস’ জায়গা করে নিতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।

২০২২ কাতার বিশ্বকাপ জয়ের মধ্য দিয়ে লিওনেল মেসি তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যায়িরারে পূর্ণতা দিয়েছেন। চাইলে তো আর্জেন্টাইন মহাতারকা তখনই অবসরের ঘোষণা দিতে পারতেন। তবে বাকি আট-জনের মতো সেরাদের ক্ষুধা তো আর সহজে মেটে না। তিন তারকার জার্সি গায়ে চড়িয়ে সর্বকালের অন্যতম সেরা মেসি উপভোগের মন্ত্র এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মাঠে।
কিন্তু আসন্ন ২০২৬ বিশ্বকাপ কি খেলবেন মেসি? ফুটবলপ্রেমীদের অনেক দিন ধরেই ধোঁয়াশার মধ্যেই রাখছেন ইন্টার মায়ামির তারকা। ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের’ উত্তাপ এরইমধ্যে পেতে শুরু করেছে ফুটবলবিশ্ব, অথচ সবশেষ আসরের চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক খেলবেন কিনা সেটাই নিশ্চিত নয় এখনো।
সবশেষ আরও একবার ভক্ত-সমর্থকদের কৌতূহলী মনের প্রশ্ন ইএসপিএনের কাছ থেকে পেলেন মেসি। তবে রেকর্ড আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর উত্তরে এবারও কোনো নতুনত্ব নেই। ওয়াশিংটন ডি.সি.-তে আজ অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের ড্র। এর আগে ইএসপিএনের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বললেন না ৩৮ বছর বয়সী মহাতারকা।
সহজ কথায় মেসির আগামী বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ এখনো অনিশ্চিত। শোনা যাক মেসির ভাষায়, ‘আশা করি আমি সেখানে (বিশ্বকাপ) থাকতে পারব। আগেও বলেছি, সেখানে থাকতে আমি ভীষণ চাই।’ তবে মেসির ঠিক পরের কথাটা শুনলে খানিকটা শঙ্কা জাগতেই পারে ভক্তদের। বিশ্বকাপজয়ী আলবিসেলেস্তা বলেছেন, ‘পরিস্থিতি যদি কোনোভাবে খুব প্রতিকূল হয়, সবচেয়ে খারাপ হয়, যদি খেলতে না-ও পারি, অন্তত দর্শক হিসেবেই দেখব—তবু তা হবে এক বিশেষ অনুভূতি।’
যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডার যৌথ আয়োজনে হতে যাওয়া বিশ্বকাপে মেসির আর্জেন্টিনা ভারসাম্যপূর্ণ শক্তিশালী দল নিয়েই মাঠে নামবে। দক্ষিণ আমেরিকার সেরা দল হয়ে বিশ্বকাপের টিকিট কেটেছে তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। সতীর্থ আর কোচকে নিয়ে মেসির কণ্ঠে শোনা যায় ভূয়সী প্রশংসা, ‘সত্যি বলতে, আমাদের অসাধারণ সব খেলোয়াড় আছে, এবং এটা অনেক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে স্কালোনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সবার যে উদ্দীপনা ও আগ্রহ, সেটা আরও স্পষ্ট।
মেসি আরও যোগ করেন, ‘সবার মানসিকতাই দুর্দান্ত। এটা পুরোপুরি বিজয়ীদের দল—মানসিকভাবে শক্ত, আরও জিততে চায়, আর সেই তাগিদটা খুব ছোঁয়াচে। অনুশীলনে, ম্যাচে—সব জায়গায় সেটা চোখে পড়ে। ওদের অনুশীলন করতে দেখলেই বোঝা যায়, তারা নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দেয়।’

১৯৮৬ বিশ্বকাপ মানেই ডিয়েগো ম্যারাডোনা। ‘হ্যান্ড অব গড’, শতাব্দীর সেরা গোল, আর অ্যাজটেকা স্টেডিয়ামে ট্রফি উঁচিয়ে ধরা আর্জেন্টিনার সেই স্বপ্নময় মুহূর্ত- সবকিছুই ফুটবল ইতিহাসের অংশ। তবে এ গল্পের আড়ালে আছে আরেকটি দৃশ্য। এমন একটি জার্সি, যা কিনতে হয়েছিল নকল পণ্যের বাজার থেকে। ‘রেপ্লিকা’ সেই জার্সিই হয়ে যায় ইতিহাসের অংশ।
মেক্সিকোয় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের ঠিক আগমুহূর্তে ফিফা জানায়- ইংল্যান্ড সাদা জার্সি পরবে, তাই আর্জেন্টিনাকে পরতে হবে গাঢ় রঙের বিকল্প জার্সি।
সমস্যা দেখা দেয় এখানেই। আর্জেন্টিনার সেকেন্ড কিট ছিল মোটা সুতি কাপড়ের, যা মেক্সিকোর তীব্র রোদে খেলার জন্য অস্বস্তিকর।
কোচ কার্লোস বিলার্দো বুঝে যান এই জার্সি পরে খেললে বিপদ নিশ্চিত। তবে দলের হাতে আর কোনো বিকল্প ছিল না। তাই ম্যাচের আগের দিন বিকেলেই দৌড় দিতে হয় মেক্সিকো সিটির তেপিতো এলাকায়।
এটি তখন ‘নকল পণ্যের বাজার’ নামে পরিচিত। সেই বাজারের ফুটপাতের দোকান থেকেই সংগ্রহ করা হয় হালকা, বাতাস চলাচল সুবিধাযুক্ত নীল রঙের কয়েক সেট ‘রেপ্লিকা’ জার্সি।
তবে সেই জার্সিগুলোতে ব্যাজ বা নম্বর কিছুই ছিল না। টিম হোটেলে ফিরে শুরু হয় তড়িঘড়ি প্রস্তুতি। কেউ লোগো সেলাই করছে, কেউ নম্বর লাগাচ্ছে- মাঝরাত পর্যন্ত টানা কাজ। ভোরে জার্সি দেখে ম্যারাডোনা হাসিমুখে বলে ওঠেন ‘এটা তো খুব সুন্দর।‘
পরদিন সেই ‘রেপ্লিকা’ জার্সি গায়েই মাঠে নামে আর্জেন্টিনা। আর সেই জার্সিতেই জন্ম নেয় ‘হ্যান্ড অব গড’ গোল ও 'শতাব্দীর সেরা গোল’। ইংল্যান্ডকে ২-১ হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। পরে ফাইনালে জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জেতে আলবিসেলেস্তেরা।
তেপিতোর বাজার থেকে কেনা সেই নীল জার্সিগুলো আর কখনো ব্যবহার হয়নি। তবে ইংল্যান্ড ম্যাচে ম্যারাডোনার পরিহিত ঐতিহাসিক জার্সিটি ২০২২ সালে নিলামে বিক্রি হয় রেকর্ড ৯৩ লাখ ডলারে।

ফুটবল ম্যাচের তীব্র উত্তেজনায় সামিল হন দর্শক থেকে কোচ সবাই। সেই উত্তেজনা সামলাতে গিয়ে অদ্ভুত এক ঘটনার জন্ম দিলেন আর্জেন্টিনার কোচ গুস্তাভো কস্টাস। ম্যাচ চলাকালীন মাঠের বসে সিগারেট ধরিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছেন ৬২ বছর বয়সী এই কোচ।
মঙ্গলবার আর্জেন্টিনার লিগে রেসিং এবং টাইগ্রে দুই দলই লড়ছিল সেমিফাইনালে ওঠার জন্য। নির্ধারিত সময় গোলশূন্য থাকার পর ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। সেখানে উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে কস্টাস নিজেকে শান্ত করতে মাঠেই সিগারেট ধরান। যা টেলিভিশনের ক্যামেরায় ধরা পড়তেই হাসাহাসি, আলোচনার পাশাপাশি দেখা দেয় বিতর্ক।
পেনাল্টির আগে সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে নার্ভাস হয়ে পড়েন কস্টাস। তখনই তিনি বেঞ্চে যান এবং সহকারীদের সামনে দাঁড়াতে বলেন যেন কেউ দেখতে না পারে। সেই ফাঁকে তিনি পকেট থেকে সিগারেট বের করে মাঠেই ধূমপান করেন।
তবে ঘটনার পরের সুখবর পেনাল্টি শ্যুটআউটে রেসিং জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে। লিগ কর্তপক্ষ এখনো অবশ্য এই ঘটনার জন্য শাস্তি দেওয়া হয়নি ক্লাব কিংবা কোচের।
আগামী রোববার সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে রেসিং ও বোকা জুনিয়র্স। অন্য সেমিফাইনালে লড়বে এস্তুদিয়ান্তেস ও হিমনাসিয়া।