বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এখন পর্যন্ত হওয়া তিনটি ম্যাচেই আগে ব্যাটিং করা দল গড়েছে বিশাল স্কোর। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের বিধ্বংসী ফিফটিতে সেই ধারা বজায় রাখল খুলনা টাইগার্স। দুইশ ছড়ানো স্কোর পাড়ি দিতে সামান্যতম লড়াইও জমাতে ব্যর্থ হল চিটাগং কিংসের টপ অর্ডার। তবে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করে নিভু নিভু জয়ের আশা জাগিয়ে তুললেন শামিম হোসেন। একাই শেষ পর্যন্ত লড়লেন মারমুখী এক ফিফটিতে, তবে সেটা যথেষ্ট হলো না জয়ের জন্য। বড় জয় দিয়েই আসর শুরু করল খুলনা।
মিরপুর বিপিএলের তৃতীয় ম্যাচে মেহেদি হাসান মিরাজের দল জিতেছে ৩৭ রানে। খুলনার দেওয়া ২০৪ রানের টার্গেটে চিটাগং ১৮.৫ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে করতে পারে মোটে ১৬৬ রান।
বড় স্কোর ডিফেন্ড করতে নেমে বল হাতে খুলনার শুরুটা ছিল একটু অন্যরকমই। পাঁচটি নো বল ও দুই ওয়াইড সহ প্রথম ওভার করতে ওশানে থমাস করেন ১২টি বল! ১৮ রানের সেই ওভারেই অবশ্য নাইম ইসলামকেও ফেরান এই ক্যারিবিয়ান পেসার।
ছক্কা মেরে রানের খাতা খোলা পারভেজ হোসেন ইমন বিপদ ডেকে আনেন অতি আগ্রাসী হতে গিয়েই। আবু হায়দার রনির প্রথম শিকার হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান। পাওয়ার প্লেতে ৫৬ রান তুলতেই আরও দুই উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে যায় চিটাগং।
ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে ক্রমেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় দলটি। ইনিংসের মাঝের সময়ে খুলনার স্পিনারদের সামনে সংগ্রাম করতে হয়ে তাদের। তাতে ৭৪ রান তুলতেই চলে যায় ৮ উইকেট।
আর সেখান থেকেই শুরু হয় শামিমের একক লড়াই। ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই খেলতে থাকেন বড় শট। নাসুম আহমেদের এক ওভারে চার বলের মধ্যে মারেন দুটি করে চার ও ছক্কা।
এরপর শামিমের আক্রমণের মুখে পড়েন আবু হায়দার। ১৫তম ওভারের প্রথম বলটি বোলারের মাথার ওপর দিয়ে সীমানা পার করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। মাত্র ২৩ বলে করে ফেলেন ফিফটি।
শেষ পর্যন্ত আবু হায়দারের বলেই সাজঘরে ফিরতে হয় শামিমকে। তবে তার আগে খেলেন স্মরণীয় এক ইনিংস, যা কিছুটা হলেও তার দলকে যুগিয়েছিল জয়ের আশা। মাত্র ৩৮ বলে শামিম ৭৮ রান করেন ৫টি ছক্কা ও ৭টি চারের মারে। ৪৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার আবু হায়দার।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনার নাইম শেখ প্রথম ওভারেই ছক্কা হাকিয়ে আভাস দেন আগ্রাসনের। অন্যপ্রান্তে উইলিয়াম বোসিস্টোও শুরুটা করেন ইতিবাচকভাবে। খালেদ আহমেদের প্রথম ওভারে টানা দুই ছক্কার পাশাপাশি একটি চারও মারেন নাইম।
শেষ পর্যন্ত আলিস আল ইসলামের বলে আউট হওয়ার আগে নাইমের ব্যাট থেকে আসে ৩ চার ও এক ছক্কায় ২৬ রান। খালেদকে চার ও ছয় মেরে শুরুটা ভালো পান মিরাজ। তবে এরপর আর সেভাবে এগিয়ে যেতে পারেননি খুলনা অধিনায়ক। ১০০ স্ট্রাইক রেটে করতে পারেন ১৮ রান।
৩৬ বলে পঞ্চাশে পা রাখা বোসিস্টো রানের চাকা কিছুটা সচল রাখার চেষ্টা করেন। তবে অন্যপ্রান্তে সেভাবে পাচ্ছিলেন না সমর্থন। শেষ পর্যন্ত কাজের কাজটা করে দেন অঙ্কন। ১৬তম ওভারে শামিম হোসেনকে টানা দুই ছক্কা মেরে ইনিংস শুরু করেন তরুণ এই ব্যাটার।
স্রেফ চার-ছক্কায় রান বের করা অঙ্কন এরপর শরিফুল ইসলামের এক ওভারেই হাঁকান তিন ছক্কা। ১৯তম ওভারে তুলে নেন ফিফটি মাত্র ১৮ বলে, যা বিপিএলের ইতিহাসে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে এখন সবচেয়ে কম বলে অর্ধশতকের রেকর্ড। আর সব মিলিয়ে অঙ্কনের ফিফটি এখন বিপিএলের চতুর্থ দ্রুততম।
অঙ্কন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫৯ রানে। ১৮ বলের ইনিংস সাজান ৮টি চার ও ৩ ছক্কায়। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে বোসিস্টো খেলেন ৫০ বলে ৭৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। খুলনা ইনিংস শেষ করে ৪ উইকেটে ২০৩ রানে, যা শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হয় দলের জয়ের জন্য।
২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৮:১৮ পিএম
একটা দল যখন ম্যাচের পর ম্যাচ জিততেই থাকে, তখন আড়ালে চলে যায় ছোট ছোট ভুলত্রুটিও। চলতি বিপিএলে টানা ৮ ম্যাচে রংপুর রাইডার্স যেভাবে ছুটছিল, তাতে মনে হচ্ছিল তারা হারতেই হয়ত ভুলে গেছে। সেই ধারার ইতি টেনে দিয়েছে দুর্বার রাজশাহী। ব্যাটে-বলে লড়াই জমাতে ব্যর্থ হয়েছে রংপুর। প্লে-অফ আগেই নিশ্চিত হয়ে গেলেও, এই পরাজয়কে সতর্কতা হিসেবে দেখছেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান।
আসরের অন্যতম শক্তিশালী দল রংপুর আসরের শুরু থেকেই খেলছে গোছানো ক্রিকেট। বিদেশী ক্রিকেটারদের নিয়ে খুব বেশি বদল আনেনি দলটি। দেশীদের মধ্যেও রাখা হচ্ছে ধারাবাহিকতা। সাথে সোহানের দুর্দান্ত নেতৃতে দেখা মেলে একের পর এক জয়ের। রাজশাহীর বিপক্ষে তাই ফেভারিট হিসেবেই নেমেছিল একবারের বিপিএল চ্যাম্পিয়নরা। তবে হারতে হয়েছে ২৪ রানে, যেখানে ফুটে উঠেছে কিছু দুর্বলতার জায়গা।
আরও পড়ুন
রংপুরকে ভুলতে বসা হারের স্বাদ দিল রাজশাহী |
সোহান তাই এই ম্যাচকে দেখছেন শিক্ষা নেওয়ার ভালো একটি উপলক্ষ্য হিসেবেই। “পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই আমরা ভালো খেলেছি। এই হারটা আমাদের জন্য একটা সতর্কবার্তা। সবার সবার জায়গা থেকে এটা নিয়ে চিন্তা করতে পারবে। আমার কাছে মনে হয় ক্রিকেট জিনিসটাই এমন, ভালো ক্রিকেট খেলেই জিততে হবে। আপনি মাঠে নামবেন আর জিতবেন, এটা আশা করা যায় না। আপনি যেদিন ভালো খেলবেন, সেদিনই জিতবেন। আমরা কোথায় ভুল করেছি, আমার কাছে মনে হয় এখান থেকে শক্তিশালীভাবে ফিরে আসা যায়, এসব নিয়ে সবাই চিন্তা করবে।”
ম্যাচে বল হাতে রংপুর পারেনি শুরুর দিকে রাজশাহীর ব্যাটারদের দ্রুত রান তোলার গতিতে লাগাম দিতে। এনামুল হক বিজয় কিছুটা ধীরলয়ে ব্যাটিং করলেও সাব্বির হোসেনের ৩৯ রানের ক্যামিওতে পাওয়ার প্লেতে ভালো শুরু পায় দলটি। ইয়াসির আলির ফিফটির পর শেষ পাঁচ ওভারে ঘুরে দাঁড়ালেও টার্গেট দাঁড়ায় ১৭১। ব্যাট হাতেও প্রথম ছয় ওভারে সেভাবে রান করতে পারেনি রংপুর, যা চাপ বাড়ায় পরের দিকে।
দুই পাওয়ার প্লেতে ভালো না করাই হারের কারণ বলে মনে করেন সোহান।
“আমার কাছে মনে হয় পাওয়ার প্লেতে আমাদের শুরুটা ভালো হয়নি। উইকেট একটু ট্রিকি ছিল। তারপরও, আমরা কিছু রান বেশি দিয়ে দিয়েছি। হয়ত ১৫ ওভারের পর আমরা কামব্যাক করেছি, তবে রান কিছু বেশি হয়ে গেছে। একইসাথে, ব্যাটিংয়েও পাওয়ার প্লে আমাদের ভালো যায়নি। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং বলেন বা বোলিং, পাওয়ার প্লে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এই দুইটাই আমাদের বিপক্ষে গেছে।”
সেই জিএসএল জয় দিয়ে শুরু, এরপর বিপিএলে রেকর্ড টানা ৮ ম্যাচ জেতা রংপুর রাইডার্স প্রায় অজেয়ই হয়ে উঠেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের জয়রথ থামল, তাও আসরের অন্যতম অধারাহিক দল দুর্বার রাজশাহীর কাছে। ইয়াসির আলির ফিফটির পরও রংপুরের বোলাররা প্রতিপক্ষকে আটকে দিয়েছিলেন নাগালের মধ্যে থাকা স্কোরেই। অন্য ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে সাইফ হাসান ও নুরুল হাসান সোহান লড়াই করলেন বটে, তবে এই দফায় আর পারলেন না জেতাতে। রাজশাহী পেল উজ্জীবিত এই জয়।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৩১তম ম্যাচে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা রংপুরকে ২৪ রানে হারিয়েছে রাজশাহী। ১৭১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সোহানের দল থেমেছে ১৪৬ রানেই।
আরও পড়ুন
রংপুরকে ভুলতে বসা হারের স্বাদ দিল রাজশাহী |
এই ম্যাচ দিয়ে রংপুর একাদশে আসা ইরফান শুক্কুর নেমেছিলেন ওপেন করতে। তবে সুযোগটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন এই কিপার-ব্যাটার। প্রথম ওভারেই তাকে বোল্ড করেন রাজশাহী অধিনায়ক তাসকিন। আরেক ওপেনার স্টিভেন টেলরও ফেরেন এক ডিজিটে।
তবে রংপুরকে বড় ধাক্কাটা দিয়ে একই ওভারে গোল্ডেন ডাকের তেতো অভিজ্ঞতা উপহার দিয়ে ইফতিখার আহমেদকেও শিকার বানান এসএম মেহেরব। মাত্র ১৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া রংপুরের হাল ধরার চেষ্টা করেন সাইফ। মোহর শেখকে হাঁকান হ্যাটট্রিক বাউন্ডারি।
তবে তাল মেলাতে পারেননি বল হাতে দারুণ দিন পার করা খুশদিল। পাকিস্তান অলরাউন্ডারের অবদান ছিল মাত্র ১৪ রান। সাব্বির হোসেনকে টানা দুই ছক্কা মেরে চল্লিশের ঘরে পা রাখা সাইফ ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে ক্রমেই চাপ সরাচ্ছিলেন।
তবে ফিফটি থেকে সাত রান দূরে থাকতে তাকে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন শফিউল ইসলাম। ১৪ বলে ৮ রানের ইনিংসে রংপুরকে চাপে ফেলে সাজঘরের পথ ধরেন শেখ মাহেদি হাসান। ১৩ ওভারে বোর্ডে রান তখন মাত্র ৯১।
আরও পড়ুন
ইয়াসিরের ঝড়ো ফিফটির পর রংপুরের ফাইটব্যাক |
সেখান থেকেই লড়াইয়ের শুরু সোহানের। পরপর দুই বলে মেহেরবকে ডিপ মিড উইকেট ও লং অন দিয়ে মারেন ছক্কা। দারুণ সব শটে রংপুর অধিনায়ক যেন ফিরিয়ে আনছিলেন ফরচুন বরিশাল ম্যাচের স্মৃতি, যেখানে তিনি শেষ ওভারে ২৬ রান নিয়ে জিতিয়েছিলেন দলকে।
তবে এবার আর পারেননি। বার্লের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় ৪১ রানে। ২৬ বলের ইনিংস সাজান ৪টি চার ও ২ ছক্কায়। ২ ছক্কা ও এক চারে সাইফউদ্দিন ২৩ রানের ক্যামিও খেলেন বটে, তবে জয়ের কাছাকাছিও তা নিতে পারেনি তার দলকে। ২২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে রাজশাহীর বোলিংয়ের সেরা অলরাউন্ডার বার্ল।
এর আগে একাদশে মাত্র দুই বিদেশী ক্রিকেটার নিয়ে নামা রাজশাহী শুরুটা ভালো করতে পারেনি সেভাবে। ১৯ রানে মোহাম্মদ হারিসের বিদায়ের পর রানের চাকা সচল রাখার কাজটা একাই এগিয়ে নেন সাব্বির হোসেন। এনামুল হক বিজয় রান করলেও সেটা ছিল ধীরলয়ে।
তবে সেটা বুঝতে দেননি সাব্বির। খেলেন মাত্র ১৯ বলে ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংস। এক ওভারেই তাকে ও রায়ান বার্লকেও ফিরিয়ে রংপুর শিবিরে হাসি ফোটান খুশদিল শাহ।
আরও পড়ুন
লড়াকু ইনিংসেও খুলনাকে জেতাতে পারলেন না নাইম |
মাঝে কয়েক ওভার এরপর রানের গতি কমে এলেও সেটা দলটি কাটিয়ে ওঠে ইয়াসির আলির ব্যাটা চড়ে। মাত্র ২৭ বলে করেন ফিফটি। মাত্র ৩২ বলে তার ৬০ রানের ইনিংস শেষের পর ফের ধাক্কা খায় রাজশাহীর ইনিংস। শেষ চার ওভারে একের পর এক উইকেট হারিয়ে টেনেটুনে করতে পারে ৯ উইকেটে ১৭০, যা অবশ্য শেষ পর্যন্ত এনে দেয় দারুণ এক জয়।
একাদশে মাত্র দুই বিদেশী ক্রিকেটার রেখে শুরুতেই চমক দেখানো দুর্বার রাজশাহীর ভরসার জায়গা ছিল দেশি ব্যাটাররা। সাব্বির হোসেন ও এনামুল হক বিজয় সেই কাজটা ভালোই করলেন শুরুতে। তবে মূল তাণ্ডব দেখালেন ইয়াসির আলি। পাঁচে নেমে প্রায় ১৮৮ স্ট্রাইক রেটের এক ইনিংসে এলোমেলো করে দিলেন ছন্দে থাকা রংপুর রাইডার্স বোলারদের। তবে তার বিদায়ের পর ঘুরে দাঁড়াল নুরুল হাসান সোহানের দল। সম্ভাবনা জাগিয়েও রাজশাহী পারল না বড় স্কোর গড়তে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৩১তম ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাটিং করা রাজশাহী পেয়েছে ৯ উইকেটে ১৭০ রানের পুঁজি। সর্বোচ্চ ৬০ রান এসেছে ইয়াসিরের ব্যাট থেকেই।
কয়েকটি চারের মারে আশা জাগালেও মোহাম্মদ হারিস পারেননি ইনিংস টেনে নিতে। বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসানের শিকার হওয়ার আগে করতে পারেন ১৯ রান। শুরুতে কিছুটা দেখেশুনে খেলা সাব্বির চড়াও হন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ওপর। পঞ্চম ওভারে টানা তিন বলে বলে হাঁকান একটি ছক্কা ও দুটি চার।
আরও পড়ুন
রংপুরকে ভুলতে বসা হারের স্বাদ দিল রাজশাহী |
এরপর নাহিদ রানাকেও ওড়ান ছক্কায়। ক্রমেই যখন বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন রংপুরের জন্য, সেই সময়েই তাকে থামান খুশদিল শাহ। তবে তার আগে সাব্বির উপহার দেন ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ৩৯ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। তবে ওই ওভারেই রায়ান বার্লকেও ফিরিয়ে রাজশাহীর চাপ বাড়ান খুশদিল।
এরপর কিছুটা কমে যায় রানের গতি। সেটা সচল হয় ইয়াসিরের হাত ধরে। মাহেদি হাসানের এক ওভারে চার ও ছক্কার পর আগ্রাসন দেখান আরেক স্পিনার রাকিবুলের ওভারেই। লং-অন ও ডিপ মিড উইকেট দিয়ে পরপর দুই বলে মেরে দেন দুই ছক্কা। পরের ওভারে সাইফউদ্দিনেরও হয় একই অভিজ্ঞতা।
মাত্র ২৭ বলে ফিফটিতে পা রাখেন ইয়াসির। ফিরতি স্পেলে এসে এক ছক্কা হজমের পর তাকে শেষ পর্যন্ত বিদায় করেন খুশদিল। ডানহাতি এই ব্যাটার তার ৩২ বলের ইনিংস সাজান ৬ ছক্কা ও ২ চারে।
১৬ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ১৫৩ রান করা রাজশাহীর ইনিংসে লাগাম এরপরই টেনে ধরেন রংপুরের বোলাররা। দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সেভাবে রানই বের না করতে দিয়ে নিয়মিত বিরতিতে শিকার করেন উইকেট।
আরও পড়ুন
রঞ্জিতেও হাসল না রোহিতের ব্যাট |
৩১ বলে ৩৪ রানের মন্থর ইনিংসে খেলে রান আউটে কাঁটা পড়েন এনামুল হক। আরও একবার দলকে হতাশ করেন আকবর আলি। নিজের শেষ দুই ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন আকিফ জাভেদ, যা রাজশাহীর জন্য শেষের ঝড় তোলার কাজটা করে তোলে ভীষণ কঠিন। সব মিলিয়ে ২৩ রানে ৩ উইকেট তার নামের পাশে।
অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের অন্যতম প্রতিভাবান ও স্টাইলিশ ব্যাটার হিসেবেই বিবেচনা করা হয় তাকে। অবসর নেওয়ার এক দশক পর সেই মাইকেল ক্লার্ক পেয়েছেন দারুনে এক সম্মান। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক।
বৃহস্পতিবার এই সম্মান গ্রহণ করেন ক্লার্ক। অস্ট্রেলিয়ার হল অব ফেমে তিনি ৬৪তম খেলোয়াড়। এই মৌসুমে তালিকায় যুক্ত হবেন আরও দুজন।
ক্লার্কের ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়, যেখানে তিনি ছিলেন অধিনায়ক। তবে ডানহাতি এই ব্যাটার বেশি আলো ছড়িয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটেই। ১১৫ ম্যাচে করেছেন ৮ হাজার ৬৪৩ রান, যা যা তাকে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রানস্কোরারদের তালিকায় রেখেছে ছয় নম্বর স্থানে।
আরও পড়ুন
হল অব ফেমে জায়গা করে নিলেন মাইকেল ক্লার্ক |
মাত্র ১৭ বছর বয়সে নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হওয়ার ক্লার্ল ওয়ানডেতেও একেবারেই মন্দ ছিলেন না। ৭ হাজার ৯৮১ রানের মাধ্যমে তিনি অজিদের এই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি রানস্কোরারদের তালিকায় আছেন চতুর্থ স্থানে।
২০০৪ সালে ভারত সফরে টেস্ট অভিষেকেই হইচই ফেলে দেন ক্লার্ক। ১৫১ রান করে হন ম্যাচ সেরা। এই ভারতের বিপক্ষে ২০১১-১২ মৌসুমে তার ব্যাট থেকে আসে ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৩২৯ রান। ষষ্ঠ অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার হিসেবে সেবার টেস্ট ট্রিপল সেঞ্চুরি করেন ক্লার্ক।
টেস্ট অধিনায়ক্ত্ব পান ২০১১ সালে, স্থলাভিষিক্ত হন আরেক অস্ট্রেলিয়া গ্রেট রিকি পন্টিংয়ের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৩-১৪ মৌসুমে অ্যাশেজে হোয়াইটওয়াশের নেতৃত্বে দেন ক্লার্ক। অবসরও নেন ইংলিশদের কাছে হেরেই, ২০১৫ সালে।
আরও পড়ুন
বায়ার্ন সেরা ক্লাবের কাতারে নেই, মানছেন কিমিখও |
অধিনায়ক তো বটেই, ব্যাটার হিসেবেই ক্লার্ককে বিবেচনা করা হত সময়ের অন্যতম সেরা হিসেবে। নিজের দিনে প্রতিপক্ষের সেরা সব বোলারদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার বেশ কিছু কীর্তি আছে তার। এমনকি কাঁধে চোট নিয়েও সেঞ্চুরি করে নিজের ব্যাটসম্যানশিপের ছাপ রেখেছেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ততায় দীর্ঘ একটা সময় খেলেননি ঘরোয়া ক্রিকেটে। তবে ভারতের জার্সিতে লাল বলের ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময় পেছনে ফেলতে সেখানেই ফিরতে হয়েছে রোহিত শর্মাকে। তবে রঞ্জি ট্রফিতে ফেরার ম্যাচেও যথারীতি ব্যর্থ ভারত অধিনায়ক। এক ডিজিটেই আউট হয়ে দীর্ঘায়িত হল তার রান খরা।
রঞ্জি ট্রফিতে মুম্বাইয়ের বিকেসি-তে শরদ পাওয়ার একাডেমিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিপক্ষে গ্রুপ ‘এ’ ম্যাচে সকালেই ব্যাট করতে নামেন রোহিত। তবে সবাইকে হতাশ করে টিকতে পারেন মাত্র ১৯ বল, আর রান আসে মোটে তিন।
আরও পড়ুন
অবসর সিদ্ধান্ত কোহলি-রোহিতের ওপরই ছেড়ে দিলেন গম্ভীর |
এর মধ্য দিয়ে অব্যাহত রইল লাল বলের ক্রিকেটে রোহিতের লম্বা সময় ধরে চলা বাজে ফর্ম। গত বছর ঘরের মাঠে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচটি টেস্ট টেস্টে মাত্র একটি ফিফটি করেন রোহিত। দশ ইনিংসের চারবার আউট হন এক ডিজিটে।
এরপর অস্ট্রেলিয়া সফরে পাঁচ ইনিংসে তার মাত্র একটি দুই অঙ্কের স্কোর ছিল, যেখানে তিনি পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে অংশ নিয়েছিলেন। অধিনায়ক হলেও শেষ টেস্টে থেকে নিজের নাম সরিয়েও নেন রোহিত।
সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ মৌসুম রোহিত শেষ করেন টেস্টে মাত্র ১০.৯৩ গড় নিয়ে। ১৬ ইনিংসে তার এই গড় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২০০৬ সালের পর থেকে কমপক্ষে ১৫ ইনিংস ব্যাট করা (শীর্ষ ছয়ে ব্যাট করা) খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন গড়। তার ওপরে আছেন কেবল ইংল্যান্ডের হাসিব হামিদ, ২০১৮ মৌসুমে ১৮ ইনিংসে তার গড় ছিল মাত্র ৯.৪৪।
আরও পড়ুন
রোহিতের চোখে অশ্বিন সত্যিকারের ‘ম্যাচ উইনার’ |
৬ দিন আগে
১১ দিন আগে
১১ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৭ দিন আগে
১৭ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৪ দিন আগে