লম্বা বিরতির পর ঘরের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ অপেক্ষাকৃত কম শক্তির হলেও লাল বলের ক্রিকেটে টপ অর্ডারের ধারাবাহিক ব্যর্থতা চিন্তার কারণ হতে পারে দলের জন্য। আর সেখানে উল্লেখযোগ্য অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ফর্মহীনতা। তবে বাঁহাতি এই ব্যাটার আশাবাদী, এই সিরিজ দিয়েই বড় রানে ফিরবেন তিনি।
বাংলাদেশের শেষ টেস্ট সিরিজ ছিল গত বছর, ক্যারিবিয়ানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেখানে সিরিজ ১-১ ড্র করলেও টপ অর্ডারের ব্যাটারদের কেউই ছিলেন না ধারাবাহিক। ওই সিরিজ না খেলা শান্ত এর আগে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে ছিলেন, তবে তিনিও পারেননি বড় স্কোর উপহার দিতে। ওপেনিং পজিশনে ক্রমাগত পরিবর্তনের সাথে অধিনায়কের রানে না থাকা জিম্বাবুয়ে সিরিজে সমস্যায় ফেলতেও পারে বাংলাদেশকে।
আরও পড়ুন
মেজর লীগ ক্রিকেটে দল পেলেন ওয়ার্নার |
![]() |
ম্যাচের আগের দিনের সংবাদ সম্মেলনে এসে শান্ত শোনালেন ফর্মে ফেরার জন্য তার একাগ্রতার কথা।
“গত বছর অনেক ইনিংসেই আমি সেট হয়ে যাওয়ার পর আউট হয়েছি, ৩০-৪০ রান করেছি। এই ফরম্যাটে এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমি এটা নিয়ে কাজ করেছি এবং আরও ভালো করার জন্য চেষ্টা করব। অবশ্যই টপ অর্ডার পারফর্ম করছে না, তবে তারা চেষ্টা করছে।”
তামিম ইকবালের অবসরের কারণে অনেকটা সময় ধরেই ওপেনার সংকটে আছে বাংলাদেশ দল, যা চলছে এখনও। ঘরোয়া ক্রিকেটে যথেষ্ট পরীক্ষিত হলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে পারেননি শাদমান ইসলাম ও জাকির হাসান। মূলত তিন নম্বর পজিশনের ব্যাটার মাহমুদুল হাসান জয় শুরুটা ভালো করলেও এরপর খেই হারিয়ে ফেলেছেন। অন্যান্য পজিশনেও নতুন যারা আসছেন, পারছেন না সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে।
আরও পড়ুন
মাঝপথে আইপিএলে দল পেলেন ‘বেবি এবি’ ব্রেভিস |
![]() |
তবে শান্ত মনে করেন, যত বেশি খেলবেন, ততোই ভালো করবেন নতুনরা।
“আমাদের তাদের প্রস্তুত হওয়ার জন্য যথেষ্ট সুযোগ দিতে হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে আমাদের কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় না। তাই আমরা যদি তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ করে দেই, তাহলে তারা পারফর্ম করতে শুরু করবে।”
আগামী রবিবার সিলেটে শুরু হবে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের প্রথম টেস্ট।
একদিন আগেই শেষ হওয়া প্রথম টেস্টের ঘন্টাখানেক বাদেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করেছে৷ দলের উল্লেখযোগ্য নাম অভিজ্ঞ ওপেনার এনামুল হক বিজয়, যিনি তিন বছর পর ডাক পেয়েছেন টেস্ট দলে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান সিরিজের শেষ ম্যাচের বাংলাদেশ স্কোয়াডে আরেকটি পরিবর্তন অবশ্য অনিবার্যই ছিল। পিএসএল খেলতে যাওয়া পেসার নাহিদ রানার জায়গায় এসেছেন স্পিনার তানভীর ইসলাম।
টেস্ট দলে ডাক পাওয়া বিজয় পুরষ্কার পেলেন চলমান বসুন্ধরা ঢাকা প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগে অসাধারণ ফর্ম দেখিয়ে। সম্প্রতি স্বীকৃত ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটার হিসেবে ৫০টি সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন ৩২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
টেস্টে অবশ্য বিজয়ের পরিসংখ্যান খুব আশা জাগানিয়া নয়। ৫ টেস্টে ১০ গড়ে রান মাত্র ১০০, নেই কোনো ফিফটি। শেষবার লাল বলের ক্রিকেটে তাকে দেখা গিয়েছিল ২০২২ সালের জুনে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
আর তানভীর এখনও আছেন টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিজ্ঞতা চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের।
আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রামে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেটে জিতেছে জিম্বাবুয়ে।
দ্বিতীয় টেস্টের বাংলাদেশ স্কোয়াড :
নাজমুল হোসাইন শান্ত (অধিনায়ক), মাহমুদুল হাসান জয়, শাদমান ইসলাম, এনামুল হক বিজয়, মমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহিদুল ইসলাম, জাকের আলি আনিক, মেহেদি হাসান মিরাজ, হাসান মাহমুদ, খালেদ আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব।
তৃতীয় দিনের খেলা শেষে মুমিনুল হক আশা করছিলেন ২৭০ থেকে ৩০০ রানের লিড নেওয়ার। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে তার এমন প্রত্যাশা ভুল ছিল না। তবে ব্যাটারদের সেই দায়িত্বটা তো বুঝতে হবে এবং মাঠে করে দেখাতে হবে। এর কিছুই হলো না চতুর্থ দিনে। ভালো অবস্থানে থেকেও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় দুইশর কম টার্গেট দিতে পারল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। পুরো ম্যাচে হতাশ করা বোলাররাও পারলেন না বিশেষ কিছু করে দেখাতে। রান তাড়ায় কিছুটা নাটকীয়তা জন্ম দেওয়ার পর রেকর্ড গড়ে স্মরণীয় এক জয় তুলে নিল জিম্বাবুয়ে।
সিলেট টেস্টের চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে ১৭৪ রানের টার্গেটে জিম্বাবুয়ে জয় তুলে নিয়েছে ৩ উইকেটের। দুই ম্যাচের সিরিজে সফরকারীরা এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার শান্ত ও জাকের আলি অনিকের কাছে দলের আশা ছিল বড় একটা জুটির, যা দলকে নিয়ে যেতে পারত সুবিধাজনক অবস্থায়। তবে একরাশ হতাশারই জন্ম দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দিনের দ্বিতীয় ডেলিভারিতেই তাকে আউট করেন ব্লেসিং মুজারাবানি। বাউন্সারে টাইমিং না করতে পেরে লং লেগে ক্যাচ তুলে ৬০ রানে থামে শান্তর ইনিংস।
বাংলাদেশের টপ অর্ডারের ভীতি সঞ্চার করার মুজারাবনি এরপর দেখা পেয়ে যান ফাইফারের। স্রেফ ১১ রানেই সাজঘরের পথ ধরতে হয় মেহেদি হাসান মিরাজকে। তাইজুল ইসলামও অল্পে ফিরলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তবে সেখান থেকে লড়াই চালান জাকের ও হাসান মাহমুদ মিলে।
ওভারের পর হাসান কাটিয়ে দেন ব্লক করে। আর অন্যপ্রান্তে সুযোগ বুঝে রান বের করা জাকের আলি তুলে নেন ফিফটি। তবে হাসানের ওপর অতিরিক্ত বিশ্বাস রাখার কারণেই কিনা, একটা পর্যায়ে গিয়ে তাকে ওভারের পাঁচটা ডেলিভারিই খেলার ভার দিয়ে দেন জাকের। শেষ পর্যন্ত সেটাই কাল হয় দলের জন্য।
ওয়েলিংটন মাসাকাদজার পরপর দুই বলে দুই উইকেট পতনের পর দ্রুত রান বের করার চেষ্টায় ৫৮ রানে থামতে হয় দারুণ এক ইনিংস খেলা জাকেরকে। ৭২ রানে ৬ উইকেট নেন মুজারাবানি।
চতুর্থ ইনিংসে ১৭৪ বা তার বেশি রান তাড়া করে টেস্ট জয়ের রেকর্ড জিম্বাবুয়ের ইতিহাসে নেই। সেই কারণেই হয়ত ব্যাটিং সহায়ক এই উইকেটেও কিছুটা জয়ের আশা ছিল বাংলাদেশ শিবিরে। তবে সেটা মিলিয়ে যেতে সময় লাগেনি খুব একটা। প্রথম দশ ওভারে পেসার ও স্পিনাররা কেউই পারেননি ব্যাটারদের চাপে রাখতে।
উল্টো জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার রান করতে থাকেব ইতিবাচক ব্যাটিংয়েই। উইকেটের জন্য মরিয়া হওয়ার কারণেই কিনা, প্রতি ওভারেই দেখা মেলে বাজে ডেলিভারির। ফলে চার-ছক্কায় সহজেই রানের চাকা সচল রাখেন ব্যাটাররা। আর এতে দ্রুতই ম্যাচের লাগাম একেবারেই চলে যায় জিম্বাবুয়ের হাতে।
অবশেষে দলীয় শতক থেকে পাঁচ রান দূরে থাকতে আসে ব্রেকথ্রু। মিরাজের বলে মিড অফে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন বেন কারান। তবে তার আগে উপহার দেন ৪৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। স্পেলে শুরু থেকেই এলোমেলো বোলিং করা আরেক স্পিনার তাইজুল ইসলাম অন্যপ্রান্তে ছন্দ খুঁজে পান নিক ওয়েলচকে ফিরিয়ে। ২ উইকেটে ১১৭ রান নিয়ে চার বিরতিতে যায় জিম্বাবুয়ে।
সেখান থেকে ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখতে দরকার ছিল দ্রুত কয়েকটি উইকেট। আর মিরাজের হাত ধরে সেটা চলেও আসে। প্রথমে সিন উইলিয়ামসকে শিকারের পর ইনিংসের ৩৩তম ওভারে এনে দেন বড় উইকেট। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৫৮ রান করা ব্রায়ান বেন্নেট। ১২৮ রানে প্রতিপক্ষের ৪ উইকেট তুলে কিছুটা হলেও ম্যাচে ফেরার আভাস জাগে বাংলাদেশ দলে।
সেই পালে আরও হাওয়া দেন তাইজুল। লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন অভিজ্ঞ ক্রেইগ এরভিন। পরের ওভারে ফের উইকেট। দারুণ এক টার্নিং ডেলিভারিতে নায়াশা মায়াভোকে ক্লিন বোল্ড করে ইনিংসে চতুর্থ উইকেটের দেখা পান মিরাজ।
ক্রমেই জমা ওঠে ম্যাচে এরপর বাংলাদেশকে কিছুটা চাপে ফেলে ওইয়েলিংটন মাসাকাদজা। তাইজুলের পরপর দুই ওভারে ছক্কা ও চার মেরে অনেকটাই চাপ সরান। জিম্বাবুয়ের দরকার যখন আর মাত্র ১৩ রান, ঠিক তখন ফের বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে হাজির হন মিরাজ। মাসাকাদজাকে বোল্ড করে প্রাণ ফেরার স্বাগতিক শিবিরে।
তবে ওই ওভারেই চার মেরে জিম্বাবুয়েকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান রিচার্ড এনগারভা। তাইজুলের করা পরের ওভারের প্রথম বলেই আসে আরেকটি চার। খানিক বাদে ওয়েসলি মাধেভেরের আরেকটি বাউন্ডারিতে ঐতিহাসিক এক জয় নিশ্চিত হয় জিম্বাবুয়ের। বিফলে যায় মিরাজের ৫৪ রানে ৫ উইকেটের দারুণ এক স্পেল।
ডমেস্টিক ভায়োলেন্সের ঘটনায় অনেকটা সময় ধরেই আইন-আদালতের মধ্য দিয়ে যাওয়া মাইকেল স্লেটার পেলেন বড় শাস্তিই। সহিংসতার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় চার বছরের স্থগিত কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই ওপেনার।
তবে ৫৫ বছর বয়সী স্লেটারকে এযাত্রায় আর জেলে যেতে হচ্ছে না। কারণ, তিনি এরই মধ্যে জামিন না পাওয়ায় ২০২৪ সাল থেকে এক বছরেরও বেশি সময় কারাগারে কাটিয়েছেন।
১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৭৪টি টেস্ট খেলা স্লেটার দুটি সাধারণ আক্রমণ, একজনকে অবৈধভাবে আঘাত করা, একজনকে শারীরিক ক্ষতির জন্য আক্রমণ করা, একটি চুরির ঘটনা এবং দুটি শ্বাসরোধের অভিযোগে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন।
রায়ের বিচারক গ্লেন ক্যাশ মঙ্গলবার স্লেটারকে বলেন, “আপনি যে একজন মাদকসেবী, তা স্পষ্ট। মদ্যপান করাটা আপনার একটা অভ্যাস হয়ে গেছে, আপনার পুনর্বাসন সহজ হবে না।”
২০২৪ সালের এপ্রিলে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের একটি আদালতে জামিন আবেদন নাকচ হওয়ার পর সেখানেই স্লেটার অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর থেকেই তিনি পুলিশি হেফাজতে ছিলেন এবং এক বছরেরও বেশি সময় কাটান কারাগারেই।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আট বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে স্লেটার ৫ হাজার ৩১২ রান রান করেন। ২০০৪ সালে অবসর নেওয়ার পর তিনি ধারাভাষ্যকার হিসেবে নতুন অধ্যায় শুরু করেন। প্রথমে যুক্তরাজ্যের চ্যানেল ৪-এ এবং পরে অস্ট্রেলিয়ার সেভেন নেটওয়ার্কে দেখা যায় তাকে, যেখান থেকে তাকে ২০২১ সালে বাদ দেওয়া হয়।
২০২২ সালে সিডনির একটি আদালত স্লেটারকে দুটি সাধারণ আক্রমণ এবং একজন নারীকে ইভটিজিংয়ের চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। শাস্তি হিসেবে তাকে দুই বছরের কমিউনিটি কারেকশনস আদেশে দণ্ডিত করা হয়।
লিড বাড়িয়ে নেওয়ার কাজটা প্রথম সেশনে কঠিন হয়ে গেল বৈরী আবহাওয়ায়। কিছুটা সহায়ক কন্ডিশনে এরপর দ্রুত কয়েকটি উইকেটে চাপ তৈরি করল জিম্বাবুয়ে। যখনই একটা জুটি জমে যাওয়ার পথে, তখনই আসল আঘাত। মুমিনুল হক ফিফটি মিস করলেও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দলকে পথ দেখালেন দারুণ এক ইনিংসে। বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে তাই কিছুটা এগিয়েই থাকল স্বাগতিকরা।
সিলেটে আগেভাগেই শেষ হয়ে যাওয়া তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের লিড ১১২ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে স্কোর দাঁড়িয়েছে ৫৭ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৪। ক্রিজে আছেন শান্ত (৬০*) ও জাকের আলি অনিক (২১*)।
বৃষ্টি ও ভেজা আউটফিল্ডের কারণে ভেসে যায় সকালের সেশন। ১ উইকেটে ৫৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশনে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। আগের দিন সংগ্রাম করে ব্যাট করা মাহমুদুল হাসান জয় পারেননি বেশিক্ষণ টিকতে। ব্লেসিং মুজারাবানির বাউন্সার তার গ্লাভলে লেগে জমা হয় প্রথম স্লিপে থাকা ফিল্ডারের হাতে।
৬৫ রানের জুটিতে এরপর বাংলাদেশকে আশা দেখান শান্ত ও মুমিনুল। দুজনেই সমান গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ফিফটির দিকে। লিডও পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ৬৫ রানের জুটি যখন ক্রমেই জমে যাচ্ছিল, তখনই আঘাত হানেন ভিক্টর নিয়াউচি। ৬ বাউন্ডারিতে ৪৭ রানে থামান মুমিনুলকে।
চা বিরতির ঠিক আগে ফের বাংলাদেশের চাপ বাড়ান মুজারাবানি। প্রথম ইনিংসের মত এই দফায়ও মাত্র চার রান করে ক্যাচ আউটে শেষ হয় দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমের ইনিংস।
তবে একপ্রান্ত আগলে ২৬ রানে জীবন পাওয়া শান্ত তুলে নেন ফিফটি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে সাবধানী ব্যাটিং করে জাকের আলি। বৃষ্টির কারণে আগেভাগে খেলা শেষ হওয়ার আগে তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৩৯ রান।
চলতি বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের ব্যস্ততা খুব একটা নেই। তারপরও বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি বেড়ে যাওয়ায় ২০২৫ সালে বেতন এবং ম্যাচ ফি থেকে খেলোয়াড়দের আয়ের অঙ্ক দুই কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
এই বছরে আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামে (এফটিপি) থাকা দ্বি-পাক্ষিক সফরসূচিতে ৬ টেস্ট, ১০ ওডিআই এবং ১২ টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা বাংলাদেশের। পাশাপাপাশি সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে গ্রুপ পর্বের বাধা বেরুতে না পারলেও ৩টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
নির্ধারিত ম্যাচগুলোর সব ক'টি খেলতে পারলে একজন ক্রিকেটার শুধু এই খাত থেকে আয় করবেন ১ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা! এই বছরটিতে বেতন এবং ম্যাচ ফি থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা আয়ের হাতছানি ছিল অভিজ্ঞ পেসার তাসকিন আহমেদের সামনে। তবে 'এ' প্লাস গ্রেডে মাসে ১০ লাখ টাকা বেতনের ক্যাটাগরিতে থাকা একমাত্র এই ক্রিকেটার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ মিস করায় তার আয়ের অঙ্ক এবার হচ্ছে না প্রত্যাশিত।
আর শুধুমাত্র লাল বলের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থেকেও বেতন-ম্যাচ ফি খাত থেকে সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হকের আয় ছাড়িয়ে যাবে কোটি টাকা।
আগামী বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ততা বাড়ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। ফলে বেতন-ম্যাচ ফি খাত থেকে চুক্তিবদ্ধ এক একজন ক্রিকেটারের আয়ের হতে পারে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। আইসিসির এফটিপিতে ২০২৬ সালে ৮ টেস্ট, ২০ ওডিআই, ১২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বরাদ্দ আছে বাংলাদেশ দলের। এর সঙ্গে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারত-শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ৪ ম্যাচ এবং পরবর্তী ধাপে উত্তীর্ন হলে ক্রিকেটারদের আয়ের সীমা ছুঁয়ে ছাড়িয়ে যাবে অতীতের সব রেকর্ডকে।
বর্ধিত ম্যাচ ফি'র হিসাবে কোনো ক্রিকেটার ২০২৬ সালে সবকটি ম্যাচ খেলতে পারলে বছর শেষে ম্যাচ ফি'র অঙ্কটা দুই কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই করবে। এর সাথে বেতন থেকে বছরে কারো কারো কোটি টাকা আয়ের সুযোগ তো আছেই। এর বাইরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) এবং বিদেশে ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট থেকে মোটা অঙ্ক আয়ের সুযোগ তো থাকছে।
এক সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মধ্যে বছরে আয়ের হিসেবে পাঁচ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এবার পালা সাকিবের উত্তরসূরিদের। নিজেকে ফিট রেখে আন্তর্জাতিক এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে মগ্ন থাকলে তাসকিন, নাজমুল হোসেন শান্তদের আয়ের অঙ্ক পাঁচ কোটি টাকা ছুঁয়ে যাওয়াও অসম্ভব কিছু নয়।
তবে বিসিবির চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের বেতন এবং ম্যাচ ফি জ্যামিতিক হারে বেড়ে যাওয়াকে স্বাভাবিক বলছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট।
“ক্রিকেটারদের বেতন এবং ম্যাচ ফি বাড়িয়ে প্রশংসা পাচ্ছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক ভাই। তবে আমি এটাকে স্বাভাবিকই বলবো। কারণ, বাংলাদেশের ক্রিকেটের ব্রান্ড ভেল্যুটা জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের জন্য বেড়েছে। আইসিসি,এসিসি বিভিন্ন খাত থেকে বিসিবির আয়ের মাধ্যম ক্রিকেটাররাই।”
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
৭ দিন আগে
১৮ দিন আগে
১৮ দিন আগে