পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে টেস্ট সিরিজে হারানোর দুর্দান্ত স্মৃতি নিয়েই ভারতে পা রেখেছিল বাংলাদেশ। সিরিজ না জিতলেও অন্তত ভালো ক্রিকেটের প্রত্যাশা তাই সবারই ছিল। তবে দুই ম্যাচের একটির দুই সেশন বাদে প্রতিটিতেই ভারতের সামনে দাঁড়াতে পারেননি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্ট তো হেরে গেছে আদতে দুই দিনেই। এমন পারফরম্যান্সের পর দল নিয়ে একরাশ হতাশাই ফুটে উঠল নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠে। বাংলাদেশ অধিনায়কের অকপট স্বীকারোক্তি, সব বিভাগেই লড়াই করতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
চেন্নাই টেস্টের প্রথম দিনে ১৪৪ রানে ভারতের ৬ উইকেট তুলে দারুণ অবস্থানে চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে অশ্বিন-জাদেজার ১৯৯ রানের রেকর্ড জুটিতে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ভারত শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে চারদিনেই হারায় ২৮০ রানে। দ্বিতীয় টেস্টে তো অবস্থা আরও নাজুক। বৃষ্টির কারণে ওভারের হিসাবে মাত্র দিন হওয়া ম্যাচেই বাংলাদেশকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়ে স্বাগতিকরা জিতেছে ৭ উইকেটে। দুই ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর যথাক্রমে ২৩৩ ও ১৪৬।
ধবলধোলাই হয়ে শান্ত এমন হতশ্রী ক্রিকেটের পেছনে অজুহাত না খুঁজে মেনে নিয়েছেন তাদের ব্যর্থতা।
“দুই টেস্টেই আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি। এই পরিস্থিতিতে আমাদের ভালো ব্যাটিং করতে হবে। আপনি যদি আমাদের ব্যাটারদের দেখেন - আমরা ৩০-৪০ বল খেলে আউট হয়েছি। টেস্ট ম্যাচে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, ব্যাটসম্যানরা যখন মাঠে নামেন, তখন তাদের বড় রান করতে দেখা উচিত। (প্রথম টেস্টে) সেই সময়ে অশ্বিন ও জাদেজা যেভাবে ব্যাট করেছিল - তারা সত্যিই দারুণ ব্যাটিং করেছিল। বোলিং ইউনিট হিসেবে আমাদের সেই মুহূর্তগুলোর দিকে তাকাতে হবে। বের করতে হবে কীভাবে আমরা সেই সময়ে উইকেটগুলো নিতে পারি। সেই জুটিই ওই ম্যাচ থেকে আমাদের ছিটকে দেয়। এই টেস্টে (প্রথম ইনিংসে) মুমিনুল যেভাবে ব্যাটিং করেছে, সেটা আমদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আর মিরাজ দুই ইনিংসেই যেভাবে বোলিং করেছে, সে সত্যিই ভালো বোলিং করেছেন।”
প্রথম টেস্টে তাও কিছুটা লড়েছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় টেস্টে পুরো দল তো বটেই, শান্ত নিজেও ব্যাটার হিসেবে দলকে বেশ হতাশই করেছেন। প্রথম ইনিংসে সেট হয়ে ৩১ রানে আউট হয়েছেন। আর দ্বিতীয় ইনিংসে ক্রিজে গিয়েই দল যখন ম্যাচ বাঁচাতে প্রবল চাপের মুখে, তখন রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে হন বোল্ড। পুরো দলের ব্যাটিংয়ের চিত্রটাও একই এই ম্যাচে, স্রেফ মুমিনুল হক বাদে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার প্রথম ইনিংসে করেছেন প্রশংসা করার মত এক সেঞ্চুরি।
আর বোলারদের মধ্যে এই সিরিজে বাংলাদেশে সেরা পারফর্মার ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। দ্বিতীয় টেস্টের দুই ইনিংসেই ভারতের ব্যাটারদের আগ্রাসনের মধ্যেও নিয়েছেন ছয় উইকেট। প্রথম টেস্টেও বেশ ভালো বোলিংই করেন এই তরুণ অলরাউন্ডার।
৭ অক্টোবর ২০২৪, ১:১৮ এম
৭ অক্টোবর ২০২৪, ১:১৩ এম
আগের ম্যাচে ব্যাটিং ও বোলিং, দুটিতেই ছিলেন ব্যর্থ। তবে পরের ম্যাচেই নিজেকে ফিরে পেলেন সাকিব আল হাসান। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্রিকেট লিগ টি-টেন এ রবিবারের ম্যাচে টেক্সাস গ্ল্যাডিয়েটরসের বিপক্ষে ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়েছেন বাংলদেশ অলরাউন্ডার। যদিও জয়ের দেখা পায়নি তার দল লস অ্যাঞ্জেলেস ওয়েভস।
সাকিব ক্রিজে গিয়েছিল ছয় নম্বর ওভারে, দলের রান তখন তিন উইকেটে ৩৯। সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়ার টিভ ডেভিডকে নিয়ে গড়েন বিধ্বংসী এক জুটি। মাত্র ১১ বলে ২০ রান করেন সাকিব, ইনিংস সাজান তিন চার ও এক ছক্কায়। ২০ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন ডেভিড। চতুর্থ উইকেটে এই দুজন যোগ করেন ৭৭ রান, যা লস অ্যাঞ্জেলেসকে এনে দেয় ১২৬ রানের লড়িয়ে স্কোর।
বল হাতেও ওপেনিং করেন এই দুজন। দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে আসেন সাকিব। নিজের দ্বিতীয় ওভারে অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার ফেরান বিপজ্জনক দাভিদ মালানকে। ১৬ বলে ৩৮ রান আসে সাবেক ইংলিশ ওপেনারের ব্যাট থেকে।
সাকিব তার তৃতীয় ও শেষ ওভারে শিকার বানান নিক কেলিকে। তিন ওভারের স্পেল শেষ করেন ২ উইকেটে ৩৭ রানে। ওভার প্রতি রান দেন ১২.৩৩ করে, যা দলের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার।
১০ বলে অপরাজিত ৩৯ রান করে টেক্সাস গ্ল্যাডিয়েটরকে ৮.৫ ওভারেই জয়ের বন্দরে নিয়ে যান জেমস ফুলার। দলটিতে খেলছেন সাবেক পাকিস্তান অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদিও। যদিও ব্যাটে বা বলে ভুলে যাওয়ার মত একটা দিনই কেটেছে তার। ১ ওভারে ২৪ রান দেওয়ার পর ব্যাট হাতে পাঁচ বলে করতে পেরেছে মাত্র ২ রান।
অবসরে গেছেন তিন তারকা ক্রিকেটার, বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আরও কয়েকজন শীর্ষ খেলোয়াড়দের। প্রায় দ্বিতীয় সারির ভারত দলের বিপক্ষেও প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। স্রেফ উড়ে গেছে সফরকারীরা। এমন হারের পর অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্তর মনে হচ্ছে, সামগ্রিকভাবেই দুই দলের মাঝে পার্থক্যটা বিশাল।
এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটে অন্যতম শক্তিশালী বেঞ্চ ভারতেরই। দলটির মূল দলের বাইরেও যারা থাকেন, তাদের অনেকেই অন্য দেশের একাদশে অনায়াসেই জায়গা করে নেবেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) কল্যাণে প্রতি বছর উঠে আসছেন নতুন নতুন প্রতিভা। ফলে ভারতের হাতে বাড়ছে দক্ষ ক্রিকেটারের সংখ্যা। বিপরীত চিত্র বাংলাদেশের, যেখানে বিশ্বকাপে ভরাডুবির পরও দলে এসেছে মাত্র তিন পরিবর্তন, যার মধ্যে একটি আবার সাকিব আল হাসানের অবসরের কারণে। অর্থাৎ, বিকল্প খেলোয়াড় খুব বেশি নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে হেরে টি-স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ অধিনায়ক অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন নিজেদের দুর্বলতার জায়গা। “এটা সত্য কথা যে দুই দলের অনেক পার্থক্য আছে। এবং এই জায়গায় অস্বীকার করার কিছু নেই। পার্থক্য আছে, এটা মাঠেও দেখা যায়, মাঠের বাইরেও দেখা যায়। আইপিএলের সাথে তো বিপিএলের তুলনা তো কখনই হবে না। তাই মাঠে ও মাঠের বাইরে আমাদের কীভাবে উন্নতি করতে হবে, সেটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। বিপিএল কীভাবে আরও ভালো করা যায়, কীভাবে আরও ক্রিকেটার এখান থেকে বের হয়ে আসতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর আমরা যারা খেলছি, তাদেরও উন্নতি করতে হবে। তবে আমি বিশ্বাস করি, আমরা এরচেয়েও ভালো দল।”
ধুমধাড়াক্কা ক্রিকেটের এই ফরম্যাটে ভারত ঠিক সেভাবেই খেলেছে, যেভাবে আসলে খেলা দরকার। ১২৮ রানের টার্গেট স্পর্শ করেছে ১১.৫ ওভারেই। আর এই রান করতেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন সাতে নামা মেহেদি হাসান মিরাজ। টপ অর্ডার ছিল একেবারেই ব্যর্থ, যার ফলে প্রথম ছয় ওভারে আসে মাত্র ৩৯ রান।
তবে শান্ত মনে করেন, তাদের পরিকল্পনা ঠিকই ছিল। প্রয়োজন শুধু সেটা কাজে লাগানোর। “সবার অ্যাপ্রোচ আমার ভালো লেগেছে। তবে আমাদের এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে আমরা কোন সময়ে কোন পরিস্থিতিতে কেমন শট খেলব। আমরা যে আটজন ব্যাটসম্যান খেলেছি, আমাদের সবারই এই জায়গায় খেয়াল রাখতে হবে। আমি বিশ্বাস করি এই অ্যাপ্রোচে যদি আমরা সামনে খেলি, তাহলে অবশ্যই আমরা ভালো করব।”
সিরিজের প্রথম ম্যাচেই এই ধরনের হার একটা দলকে স্বাভাবিকভাবেই একটা বড় ধাক্কা দেয়। বুধবার সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে তাই বাংলাদেশকে খুব বিশেষ কিছুই করতে হবে। শান্ত বিশ্বাস রাখছেন নিজেদের সামর্থ্যে। “অবশ্যই বিশ্বাস করি আমরা কামব্যাক করতে পারি। যা বললাম, আমি বিশ্বাস করি না যে আমরা এমন দিল। আমরা এরচেয়েও ভালো দল। আশা করব পরবর্তী ম্যাচটা আরও বেশি প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ন হবে।”
৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৮ দিন আগে
১৮ দিন আগে
১৯ দিন আগে
২২ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৬ দিন আগে