৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১:২৫ পিএম
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার হিসেবে অনেকেরই রয়েছে বিশেষ পরিচিতি। তবে স্রেফ টি-টোয়েন্টি ধারাভাষ্যকার হিসেবে যদি একজনের নাম বলতে বলা হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা হবে ড্যানি মরিসন। নিউজিল্যান্ডের সাবেক এই ক্রিকেটার খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় যা জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, খেলা ছাড়ার পর মাইক হাতে তার চেয়ে কয়েক গুন বেশি জনপ্রিয় হয়ে গেছেন বিশ্বজুড়ে। মজার ছলে কথা বলা, অদ্ভুত বাচনভঙ্গি আর হাস্যকর সব অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে ধারাভাষ্যকে তিনি দেন ভিন্ন মাত্রা। চলতি বিপিএলেও ধারাভাষ্য দিচ্ছেন মরিসন।
টি-স্পোর্টসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার মরিসন কথা বলেছেন ধারাভাষ্য, এই পেশায় ভালো করার উপায়, বিপিএল, সাকিব আল হাসান সহ নানা বিষয়ে।
পাঠকদের জন্য মরিসনের সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হল :
প্রশ্ন : প্রথমেই ধন্যবাদ আরও একবার বাংলাদেশে আসার জন্য। নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছেন মানুষ এখানে আপনাকে কতোটা আন্তরিকভাবে ভালোবাসে?
মরিসন : তা আর বলতে! ওদের ভালোবাসা আর সেলফির সিরিয়াল দেখে আমার তো মনে হয় এবারের বিপিএলের সবচেয়ে বড় তারকা বুঝি আমিই (হাসি)। সত্যি বলতে, আমি কৃতজ্ঞ সবার প্রতি। আগেও লোকেদের ভালোবাসা পেয়েছি বাংলাদেশে, তবে এবার কিছুটা আবেগী হয়ে যাচ্ছি। ধন্যবাদ বাংলাদেশ।
প্রশ্ন : আবেগের কথা বললেন। মাইক হাতে আপনি পুরোটা সময় ধরেই যেভাবে হাসি-ঠাট্টা করে যান, মজার মজার সব কথা বলেন… পেশাদার জায়গা থেকেও যদি বলি, বছরের পর বছর প্রতিদিন এই একটা কঠিন কাজ করে যাওয়া নিশ্চয় চ্যালেঞ্জিং লাগে? কারণ, লোক হাসানো দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন কাজের একটি বলেই মনে করা হয়।
মরিসন : নো মাই ফ্রেন্ড। দেখুন, আপনি যখন নিজের কাজটাকে ভালোবাসবেন, তখন সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই হয়ে যাবে। বাড়তি কিছু আর চেষ্টা করা লাগে না তখন। তবে এটাও ঠিক, আমাকে দেখলেই সবাই ধরেই নেয়, এই লোকটা এখন আমাদের হাসাবে। এই প্রত্যাশার চাপটা মাঝে মধ্যেই টের পাই।
প্রশ্ন : আপনার ইউনিক একটা ডায়লগ ডেলিভারি স্টাইল তো আছেই, সাথে এইযে একটু ভ্রু কুচকে, অঙ্গভঙ্গি দিয়ে দর্শকদের বাড়তি বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করেন, এক্ষেত্রে কি কিংবদন্তি চার্লি চ্যাপলিনের সাথে নিজের কোনো মিল পান?
মরিসন : ইউ মিন চার্লি মরিসন? (হাসি)। আমি আসলে ওভাবে দেখিনি কখনও বিষয়টা। গ্রেট চার্লি চ্যাপলিনের কথা বললেন। তার কাজের সাথে আসলে তুলনা চলে না কারোরই। ডায়লগ ছাড়া স্রেফ অঙ্গভঙ্গি দিয়েই তো তাকে আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হত। সেদিক থেকে আমার কাজ তো অনেক সহজ। যখন ইচ্ছা, কথা তো বলতে পারি। এই যেমন এখন আপনার সাথে কথা বলছি কোনো অঙ্গভঙ্গি ছাড়াই।
প্রশ্ন : একজন ধারাভাষ্যকারের জন্য মৌখিক অঙ্গভঙ্গি জানাটা কতোটা গুরুত্বপূর্ণ?
মরিসন : এটা আসলে নির্ভর করে একেকজনের ব্যক্তিত্বের ওপর। এটা যে থাকতেই হবে, তা নয়। কিংবদন্তি রিচি বেনোর কথাই যদি বলেন, আমরা তো রেডিওতে তার ওই ধারাভাষ্যই মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনতাম। আমি এই পেশায় যখন আসি, তখন ভেবেছিলাম অন্যদের চেয়ে ভিন্ন কিছু না করতে পারলে হয়ত বেশিদিন টিকতে পারব না।
প্রশ্ন : এটা নিছকই আপনার বিনয়…
মরিসন : নো মাই ফ্রেন্ড। দেখুন, আমি পুরো ব্যাপারটাকে আপনাদের সামনে প্যাকেজ হিসেবে তুলে ধরি বলেই হয়ত আপনারা আমাকে পছন্দ করেন। আপনি আমাকে যদি মাইকেল হোল্ডিংয়ের মত ক্রিকেট নিয়ে বিশ্লেষণ করতে দশ মিনিট দাঁড় করিয়ে দেন, লোকেরা তাহলে টিভি বন্ধ করে দেবে। আমাকে এখনও প্রতিদিন পড়ালেখা করতে হয় এই কাজে সেরাটা দেওয়ার জন্য। সব নোট করে রেখেও প্রায়ই তালগোল পাকিয়ে ফেলি। তখনই আপনাদের বোকা বানাতে মুখের একটা অদ্ভুত অঙ্গভঙ্গি করে বসি।
প্রশ্ন : ধারাভাষ্যকারদের জন্য ইম্প্রোভাইজেশনের গুরুত্ব কতটুকু তাহলে?
মরিসন : অনেক। আপনি সব প্রস্তুতি নিয়েও সব পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন না। একটা খেলায় চার হবে, ছয় হবে, আউট হবে - এসব তো আমরা জানিই৷ তবে ক্রিকেট খেলায় প্রতিটি বলই একটা নতুন ইভেন্ট, আর তাই আপনাকে মানসিকভাবে নিজেকে সবসময় প্রস্তুত রাখতেই হবে একটা চটকদার শব্দ বা পাঞ্চ লাইন বলে পরিস্থিতিটা তুলে ধরার জন্য। আপনাকে দর্শকদের এই ধারণা দিতে হবে যে আপনি এই ইভেন্টের জন্য শতভাগ প্রস্তুত ছিলেন। কারণ, মাঠে কী হচ্ছে সেটা তারা খালি চোখেই দেখছেন। আপনার কাজ সেখানে বাড়তি কিছু যোগ করে ইভেন্টটিকে আকর্ষণীয় করে তোলা।
প্রশ্ন : হার্ষা ভোগলে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, একজন ধারাভাষ্যকারের জন্য ভুল স্বীকার করে নেওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি এতে একমত হবেন?
মরিসন : অবশ্যই। দেখুন, এআইও কিন্তু হরদম ভুল করছে আজকল। সেখানে একটা মানুষ তো ভুল করবেই। আপনি ধারাভাষ্য দিচ্ছেন বলেই তো আপনি সবজান্তা হয়ে গেছেন বা আপনাকে সবজান্তা হতে হবে, ব্যাপারটা এমন নয়। খেলোয়াড়ের নাম ভুল হবে, শটের নাম ভুল বলবেন - এসব তো হবেই। আপনি ভুল করলে লোকেরা কিন্তু তা নিয়ে হাসাহাসি করবে না, যদি আপনি সেটা শুধরে নেন। ভুল করেও সেটাকে ঠিক প্রমাণের চেষ্টা করলে সেটা হাস্যরসের জন্ম তো দেবেই।
প্রশ্ন : হার্ষা ভোগলের কথা আসায় প্রশ্নটা প্রাসঙ্গিক মনে হল। সাবেক খেলোয়াড় না হলে ধারাভাষ্যকার হওয়া যাবে না, বা তিনি ভালো করতে পারবেন না, বর্তমানে এমন চর্চা দেখা যাচ্ছে বেশ। অথচ হার্ষা ভোগলেই কিন্তু প্রমাণ, খেলাটির প্রতি নিখাদ ভালোবাসা থাকলে এই পেশায় চূড়ান্ত সফল হওয়া সম্ভব। আপনার কী মনে হয়?
মরিসন : আপনি তো উত্তরটা দিয়েই দিলেন। খেলাটির প্রতি ভালোবাসা, হ্যাঁ, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যদি ক্রিকেট খেলাটা বোঝেন, বিশ্লেষণ করতে জানেন আর নিজের মত করে সেটা উপস্থাপন করতে পারেন, তাহলে আপনি পেশাদার ক্রিকেটার না হয়েও এই পেশায় স্বাগতম।
প্রশ্ন : আপনার সমসাময়িক অনেকেই তিন ফরম্যাটে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন। কিন্তু আপনি বলা যায় একরকম টি-টোয়েন্টি স্পেশালিষ্ট হয়ে গেছেন। অনেকেই মজার ছলে বলেন, এই ফরম্যাটটির আবিষ্কার হয়েছে আপনি ধারাভাষ্য দেবেন বলেই। টেস্ট ক্রিকেটকে মিস করেন?
মরিসন : দেখুন, জীবনের একটা পর্যায়ে এসে আপনাকে কিছু জিনিস বেছে নিতেই হবে। আপনি চাইলেও সব জায়গায় নিজের সেরাটা দিতে পারবেন না। সীমাবদ্ধতার ব্যাপার আছে। তাছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে কিন্তু আমার ধারাভাষ্য আপনার ভালো নাও লাগতে পারে। কুড়ি ওভারের ক্রিকেট আর পাঁচ দিন ধরে চলা একটা ম্যাচের যে বিস্তর ব্যবধান, সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। নিজের সীমাবদ্ধতা বোঝাটাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। একবার ভাবুন, প্যাট কামিন্স সারাদিন বল করে পাঁচ উইকেট নিয়ে ড্রেসিংরুমের দিকে যাচ্ছে, তার আগে তাকে দাঁড় করিয়ে আমি মজার মজার প্রশ্ন করা শুরু করলাম। খেলোয়াড় বা দর্শক, কারো কাছেই এটা ভালো লাগবে না।
প্রশ্ন : বিপিএলে ফেরা যাক। আগেও এসেছেন এই টুর্নামেন্টে। সব মিলিয়ে কেমন লাগে বিপিএল?
মরিসন : আমার কাছে তো দুর্দান্ত লাগে। এজন্যই তো অন্যদের ডাক উপেক্ষা করে চলে এলাম বাংলাদেশে। এটা অন্যদের আবার বলবেন না (হাসি)। বাংলাদেশের যে ভেন্যুতেই যাবেন, দর্শকদের যে উদ্দীপনা দেখবেন আপনি, এটা অবিশ্বাস্য। এই দেশের মানুষ ক্রিকেটকে ভীষণ ভালোবাসে। আর তাই এখানে কাজ করার সুযোগ পেলেই সেটা লুফে নিতে চাই। এখানকার লোকেদের সরল ভালোবাসা আমাকে ভীষণচ ছুঁয়ে যায়।
প্রশ্ন : আপনার জন্মদিন উদযাপন দেখে সেটা কিছুটা আন্দাজ করা যায়। এই বিপিএলে কোনো খেলোয়াড়ের জন্মদিন নিয়েও এত মাতামাতি দেখা যায়নি।
মরিসন : যেমনটা আগেই বললাম, নিজেকে এই বিপিএলের সবচেয়ে বড় তারকা মনে হচ্ছে (হাসি)। হ্যাঁ, যেটা বললেন, এত মানুষ আমার জন্মদিন মনে রাখবে, স্টেডিয়ামে কেকও কাটবে… ভাবা যায় না আসলে। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞ বিসিবির প্রতিও, তারা আমাকে সুযোগ করে দিয়েছে আবার বিপিএলে আসার জন্য।
প্রশ্ন : বিসিবির প্রতি আপনি কৃতজ্ঞতা জানালেন, তবে তাদেরও কী আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত? কারণ, প্রায় একই সময়ে চারটা টি-টোয়েন্টি লিগের মধ্যেও আপনি বিপিএলকে বেছে নিয়েছেন?
মরিসন : আপনি চাইলে ওভাবে দেখতে পারেন। তবে আমার কাছে পেশাদারিত্ব সবার আগে। লিগ চারটা হোক বা দশটা, সবার আগে যারা আমার সাথে যোগাযোগ করবে, তাদের সেই সম্মানটা তো আমাকে দিতেই হবে, তাই না? বিসিবির সাথে আমার সবার আগে কথা হয়েছে, তাই আমি তাদেরই প্রাধান্য দিয়েছি।
প্রশ্ন : তাহলে আপনাকে আরও প্রশ্নটা করাই যায় এই সূত্র ধরেই। বর্তমানে হরমেশাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের দেখা যাচ্ছে ছোট ছোট চুক্তি করে একেক দিন একেক লিগে খেলতে। এই বিপিএলেই যদি বলি, আন্দ্রে রাসেল, টিম ডেভিড, জেসন হোল্ডাররা বিপিএল খেলতে এলেন আগেরদিন রাতে আইএলটি২০ খেলে। আবার এই বিপিএলেই কয়েকজন খেলোয়াড়কে দেখা গেল এই লিগে আগে চুক্তিবদ্ধ হয়েও পরে তা বাতিল করে অন্য লিগে খেলতে। খেলোয়াড়দের মাঝে পেশাদারিত্ব কী দিন দিন কমে যাচ্ছে বলে মনে হয়?
মরিসন : ভালো প্রশ্ন। আমি শুধু নিজের জায়গা থেকেই উত্তরটা দিতে পারি। আর সেটা হল, না আপনি দুটোর কোনোটাই করতে পারেন না। নিজে খেলোয়াড় ছিলাম বলে জানি, হোক সেটা টি-টোয়েন্টি বা ওয়ানডে, এরপর রিকভারি টাইম আপনার লাগবেই। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, ঘুম এসবের দরকার তো আছেই। আপনি যদি সেটা না করে নিজেকে রোবট ভাবেন আর আগেরদিন রাতে খেলে, বিমান ধরে সকালে আরেক দেশে নেমে জার্সি গায়ে চাপিয়ে নেমে পডেন, সেরাটা কীভাবে দেবেন? ক্লান্তি তো ভর করবেই আপনার ওপর। তাছাড়া দলের অন্যদের সাথে তো মিশতেও পারলেন না ওভাবে। আর চুক্তি বাতিলের ব্যাপারটা একটা দলের জন্য খুব শকিং। আপনি একটা খেলোয়াড়কে নিলেন, তাকে নিয়ে পরিকল্পনা সাজালেন, মাঠে নামার আগে তাকে পেলেন না, এটা হতাশাজনক। তবে যুগ বদলে গেছে, এখন হয়ত এটাই পেশাদারিত্ব।
প্রশ্ন : এই যুগে এসে পেশাদার ক্রিকেটারদের জন্য পেশাদারিত্ব বজায় রাখাটাই কী সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ?
মরিসন : অবশ্যই। একটা সময় ছিল স্রেফ ঘরোয়া, টেস্ট আর ওয়ানডে ক্রিকেটই৷ আর এখন সারা বছরই খেলোয়াড়দের ব্যস্ত থাকতে হয় আন্তর্জাতিক বা ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট নিয়ে। ফিটনেস বজায় রেখে দিনের পর দিন কাজটা চালিয়ে যাওয়া নিশ্চয় সহজ হওয়ার নয়। হয়ত এই কারণেই এখন ফ্রিল্যান্স ক্রিকেটারদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের এটার সাথে মানিয়ে নেওয়া ছাড়া আর উপায় নেই।
প্রশ্ন : এই মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু কিছু অনিশ্চয়তাও তৈরি হচ্ছে। আগে বোর্ডের চুক্তিতে থাকলেই মিলত অর্থ। এখন সেটার বাইরে থাকলে, চোট পেলে সেটাও সারাতে হয় নিজের অর্থেই। আবার এই বিপিএলে আমরা দেখলাম, খেলোয়াড়দের পেমেন্ট নিয়ে নানা বিতর্ক। রীতিমত ম্যাচ বয়কট করতে হয়েছে প্রাপ্য পারিশ্রমিক বুঝে পেতে। খেলোয়াড় বা একটা লিগের জন্য এগুলো নিশ্চয় ভালো ব্র্যান্ডিং নয়?
মরিসন : অবশ্যই না। আপনি প্রথমে যেটা বললেন, সেটা একজন খেলোয়াড় জেনেই কিন্তু কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে রাখে নিজেকে। তবে বিপিএলে আমি যতটুক শুনেছি, তাতে মনে হয়েছে খেলোয়াড়দের পেমেন্ট নিয়ে যা যা হয়েছে, সেটা বিপিএলের জন্য ভালো বিজ্ঞাপন নয়। এমনিতেই এখন অনেক প্রতিযোগিতা লিগগুলোর মধ্যে, এভাবে চললে ভবিষ্যতে বড় তারকারা বিপিএলের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে।
একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। প্রশ্ন : একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় সাকিব আল হাসানের রাজনীতিতে নাম লেখানো বা এর রেশ ধরে তার বাংলাদেশের হয়ে খেলা নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, সেটা কীভাবে দেখছেন?
মরিসন : কঠিন প্রশ্ন। সাকিব কেন রাজনীতিতে আসল বা বাংলাদেশে এরপর কী কী হয়েছে, আমি এসবের খুব বেশি জানি না। তবে আমি মনে করি, পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে রাজনীতি করাটা যদি তার খেলায় প্রভাব না ফেলে, তাহলে হয়ত সেটা খুব বড় সমস্যা হওয়ার কথা না। আবারও বলছি, আমি জানি না ঠিক কেন সাকিব বাংলাদেশে তার শেষ ম্যাচটা খেলতে পারল না। তবে বিপিএলে তাকে আমি মিস করেছি। আমি নিশ্চিত সমর্থকরাও তাকে মিস করেছে ভীষণ।
প্রশ্ন : এই বিপিএলে বাংলাদেশের কার খেলা মনে ধরেছে আপনার?
মরিসন : নাঈম শেখ। এবার দেখে মনে হচ্ছে ব্যাটিংয়ে সে অনেক উন্নতি করেছে। বড় বড় ছক্কা মারতে পারে এখন। বোলারদের মধ্যে তাসকিনের কথাই বলব। ওর দল প্লে-অফে খেললে হয়ত (এক আসরে) ৩০ উইকেট নিয়ে ফেলত। তবে আমি তার এই পারফরম্যান্সে অবাক না। সে যথেষ্ট অভিজ্ঞ। ১০ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা একজন বোলারকে আপনি আক্রমণের নেতা হিসেবেই দেখতে চাইবেন।
প্রশ্ন : আরেক অভিজ্ঞ পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে কেমন দেখলেন?
মরিসন : শেষ ম্যাচেও তো দারুণ বোলিং করল ফিজ। তবে পুরো টুর্নামেন্টে যদি বলেন, আমি তার কাছ থেকে তাসকিনের মতোই বিশেষ কিছু আশা করেছিলাম। সামনেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, বাংলাদেশের ভালো করতে হলে ফিজকে জ্বলে উঠতেই হবে।
প্রশ্ন : শেষ প্রশ্নটা এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়েই। কোন দলকে ফেভারিট মনে হচ্ছে আর বাংলাদেশের সম্ভাবনা কেমন দেখেন?
মরিসন : কাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকেই রাখতাম ফেভারিট হিসেবে। তবে এখন আমি ভারতের সাথে সেখানে পাকিস্তান, ইংল্যান্ডকেই এগিয়ে রাখব। বাংলাদেশ চমকে দিতে পারে, তবে সেজন্য ফিজ, মুশি, রিয়াদের মত অভিজ্ঞদের সেরা ফর্মে থাকতেই হবে।
No posts available.
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৪ পিএম
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫:২৬ পিএম
এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ভালো দারুণ শুরুরই আভাস দিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। ভারতের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩.৪ ওভারে ২৬ রান করে স্বাগতিকরা। তবে জাসপ্রিত বুমরাহর দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে উদ্বোধনী জুটি ভাঙতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে আমিরাতের ইনিংস। কুলদিব যাদব ও শিবাম দুবের ঘূর্নিতে দিশেহারা হয়ে ১৩.১ ওভারে ৫৭ রানেই গুটিয়ে যায় তারা।
টি-২০ তে নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডেই লিখল আমিরাত। এর আগে দুবাইতেই ২০২৪ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৬২ রানে অলআউট হয় তারা। কুড়ি ওভারে ভারতের বিপক্ষে যেকোনো দলের এটি সর্বনিম্ন ইনিংস। এছাড়া এশিয়া কাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানের বিব্রতকর রেকর্ডেও জায়গা হলো মধ্য প্রাচ্যের দেশটির। ২০২২ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে হংকংয়ের ৩৮ রান টুর্নামেন্টের সর্বনিম্ন।
আরও পড়ুন
অবসরের সময় জানালেন ওতামেন্ডি |
![]() |
দুবাইয়ে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। হার্দিক পান্ডিয়ার প্রথম ওভারেই ৮ রান তুলে নেন আলিশান শারাফু। পরের দুই ওভারে আরো ১৫ রান যোগ করে আমিরাত। ধসের শুরুটা হয় চতুর্থ ওভারে। ১৭ বলে ২২ রান করা শরাফুর স্ট্যাম্প ছত্রখান করে দেন বুমরাহ। আমিরাতের ইনিংসে সর্বোচ্চ রান আসে এই ওপেনারের ব্যাট থেকেই।
এরপর বাকি ব্যাটারা ছিলেন কেবল আসা-যাওয়ার মধ্যেই। আমিরাত অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিমের (১৯ বলে ২২) ব্যাট থেকে আসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। আর বাকি কেউই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক। ২.১ ওভারে ৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন কুলদিব যাদব। আর ২ ওভারে ৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন দুবে।
চোট কাটিয়ে প্রায় এক বছর পর সরাসরি বিশ্বকাপ দিয়ে জাতীয় দলে ফিরলেন উদেশিকা প্রবোধানি। তাকে নিয়েই সামনের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি)।
ঘরের মাঠে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের দল থেকে বাদ পড়া ব্যাটার ইমেশা দুলানিকেও ফেরানো হয়েছে দলে। তবে বাদ পড়েছেন রাশ্মিকা সেভান্দি, মানুদি নানিয়াক্কারা, হানশিমা করুনারত্নে ও ইনোশি ফার্নান্দো।
গত বছরের অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন প্রবোধানি। ফিরে ফিরে আসা হ্যামস্ট্রিং চোট কাটিয়ে প্রায় এক বছর পর আরেকটি বিশ্বকাপ দিয়েই আবার মাঠে নামবেন ৩৯ বছর বয়সী বাঁহাতি এই অভিজ্ঞ পেসার।
আরও পড়ুন
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে দুই ‘জুজু’ |
![]() |
প্রবোধানির সঙ্গে পেস বিভাগে আরও থাকছেন ৩৫ বছর বয়সী আচিনি কুলাসুরিয়া ও ২৪ বছর বয়সী মালকি মাদারা। নানিয়াক্কারার জায়গায় স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়া দুলানি মূলত ব্যাক-আপ হিসেবে থাকবেন দলের সঙ্গে।
ব্যাটিং বিভাগে অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তুর সঙ্গে আছেন হাসিনি পেরেরা, বিশ্মি গুনারত্নে, হার্শিতা সামারাবিক্রমা, কাভিশা দিলহারি, নিলাক্ষী ডি সিলভা, পিউমি বাদালগে ও আনুশকা সাঞ্জিভানি।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শুরু হবে বিশ্বকাপের নতুন আসর। গুয়াহাটিতে উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতের সঙ্গে খেলবে তারা। এরপর চারটি ম্যাচ কলম্বোতে খেলবে লঙ্কানরা। পরে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে মুম্বাই যাবে তারা।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশকে নিয়ে কথা বলার কিছু নেই: অশ্বিন |
![]() |
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম রাউন্ডে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে আবার কলম্বোয় ফিরবে শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ স্কোয়াড
চামারি আতাপাত্তু (অধিনায়ক), হার্শিতা সামারাবিক্রমা, বিশ্মি গুনারত্নে, নিলাক্ষী সিলভা, কাভিশা দিলহারি, আনুশকা সাঞ্জিভানি (উইকেটরক্ষক), ইমেশা দুলানি, হাসিনি পেরেরা, আচিনি কুলাসুরিয়া, পিউমি বাদালগে, ডেওমি ভিহাঙ্গা, মালকি মাদারা, উদেশিকা প্রবোধানি, সুগান্ধিকা কুমারি, ইনোকা রানাভিরা।
ট্রফি উঁচিয়ে ধরার বড় স্বপ্ন নিয়ে এশিয়া কাপ খেলতে গিয়েছে বাংলাদেশ দল। সেই মিশনে বৃহস্পতিবার তাদের প্রতিপক্ষ হংকং। আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় দিয়েই আসর শুরুর প্রত্যাশা বাংলাদেশ দলের। তবে অতীত রেকর্ড মাথায় রাখলে, ম্যাচটি মোটেও সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। এর পেছনে রয়েছে দুইটি জুজু- প্রথমত হংকং আর দ্বিতীয়টি আবু ধাবির মাঠ।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশকে নিয়ে কথা বলার কিছু নেই: অশ্বিন |
![]() |
টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত হংকংয়ের বিপক্ষে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। অবশ্য খেলেছেও শুধু একটি ম্যাচ। তবে সেটিও আবার নিজেদের ঘরের মাঠে। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছিল হংকং।
চট্টগ্রামে হওয়া ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করে মাত্র ১০৮ রানে অল আউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। অল্প পুঁজি নিয়েও অবশ্য বোলাররা লড়াই করেন। তবে মুনির দারের ২৭ বলে ৩৬ রানের সৌজন্যে ২ বল বাকি থাকতে ২ উইকেটের জয় পায় হংকং।
ওই ম্যাচের প্রায় ১১ বছর পর আবার হংকংয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাত্তাই পায়নি হংকং। আর টানা তিন সিরিজ জিতে দারুণ ছন্দে আছে বাংলাদেশ। তাই ম্যাচটিতে পরিষ্কার ফেবারিট লিটন কুমার দাসেরই দল।
আরও পড়ুন
‘রান স্কোরিং ওয়ার্কশপে’ সমস্যা সমাধানে জোর রেনশ-রসের |
![]() |
তবে সেই জয়টি পেতে আবু ধাবি জুজুও কাটাতে হবে বাংলাদেশের। কারণ জায়েদ স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত জয়ের রেকর্ড নেই তাদের। ২০২১ সালে ওই মাঠে দুই টি-টোয়েন্টি খেলে ন্যুনতম লড়াইও করতে পারেনি বাংলাদেশ।
জায়েদ স্টেডিয়ামে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমে ইংল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। পরে তাদেরকে ৬ উইকেটে উড়িয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ম্যাচের একটিতেও ব্যাটে-বলে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারেনি বাংলাদেশ।
ইংলিশদের বিপক্ষে ৯ উইকেটে মাত্র ১২৪ রান করে তারা। দলের সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন মুশফিকুর রহিম। সেটিও কিনা ৩০ বল খেলে। আর কেউ ২০ রানও করতে পারেননি। পরে ১৪.১ ওভারেই ম্যাচ জিতে যায় ইংল্যান্ড।
আরও পড়ুন
ফর্মে সই নিয়ে ফিক্সিং বন্ধের উপায় খুঁজবেন বুলবুল |
![]() |
আর প্রোটিয়াদের বিপক্ষে চূড়ান্ত ভরাডুবির সামনে পড়ে বাংলাদেশ। কাগিসো রাবাদা, আনরিখ নর্কিয়ার গতির ঝড়ে মাত্র ৮৪ রানে গুটিয়ে যায় তারা। আট নম্বরে নামা শেখ মেহেদি হাসান ২৭ রান করে দলকে পঞ্চাশের আগে অলআউট হওয়া থেকে বাঁচান।
চার বছর পর এবার অবশ্য প্রতিপক্ষ তুলনামূলক দুর্বল। তাই দুই জুজু কাটিয়ে উঠতে পারলেই জায়েদ স্টেডিয়ামে প্রথম জয়ের পাশাপাশি হংকংকে প্রথমবার হারানোর কীর্তি গড়তে পারবে বাংলাদেশ।
আফগানিস্তান-হংকং ম্যাচ দিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ২০২৫ সালের এশিয়া কাপ। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের মুখোমুখি হবে ভারত। দেশটির সাবেক অফ স্পিনারের মতে, এই টুর্নামেন্টে ভারতের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই নেই। এমনকি বাংলাদেশ দল নিয়ে কথা বলারই কিছু দেখেন না তিনি।
এশিয়া কাপে অংশ নেওয়ার দলগুলোর সার্বিক সম্ভাবনা নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও আপলোড করেছেন অশ্বিন। যেখানে মূলত ভারতের এক আধিপত্যের কথাই বারবার বলেছেন তিনি। ভিডিওর একপর্যায়ের তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলার কিছু নেই।
আরও পড়ুন
‘রান স্কোরিং ওয়ার্কশপে’ সমস্যা সমাধানে জোর রেনশ-রসের |
![]() |
“আমরা দেখুন এমনকি বাংলাদেশ নিয়েও কোনো কথা বলিনি। কারণ তাদের নিয়ে এখানে কথা বলার তো কিছু নেই। এসব দলগুলো কীভাবে ভারতের বিপক্ষে লড়াই করবে?”
টুর্নামেন্টের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে তাই এশিয়া কাপের বদলে আফ্রো-এশিয়া কাপ আয়োজনের পরামর্শ দেন অশ্বিন।
“তারা (আয়োজকরা) চাইলেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে এখানে যুক্ত করতে পারে এবং এটিকে আফ্রো-এশিয়া কাপ হিসেবে আয়োজন করতে পারে। যাতে টুর্নামেন্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়। এখন যে অবস্থায় আছে, তাদের উচিত ভারত ‘এ’ দলকে এই টুর্নামেন্টে নিয়ে কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা।”
আরও পড়ুন
ফর্মে সই নিয়ে ফিক্সিং বন্ধের উপায় খুঁজবেন বুলবুল |
![]() |
সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানের উত্থান নিয়ে আলোচনা হয় অনেক। উদ্বোধনী ম্যাচে হংকংকে উড়িয়ে এশিয়া কাপের শুরুটাও প্রত্যাশামাফিক করেছে তারা। তবে অশ্বিনের মতে, ভারতের বিপক্ষে হালে পানি পাবে না আফগানরা।
“এমনকি আফগানিস্তানের বোলারদের তথাকথিত হুমকির কথাও যদি বলি, ভারত ১৭০-এর বেশি রান করলে তারা কি সেটা তাড়া করতে পারবে? এটা তো অসম্ভরের কাছাকাছি।”
এসময় তিনি নিজেই অবশ্য ভারতকে হারানোর একটি তরিকা বলে দেন। তবে সেই তরিকা কেউ ব্যবহার করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন না অশ্বিন।
আরও পড়ুন
দেশের সংকট মিটিয়ে বিদেশেও কোচ পাঠানোর আশা বুলবুলের |
![]() |
“আমি একদিক থেকে আশা করি, অন্য কোনো দল যেন এই টুর্নামেন্টে শিরোপা জেতে। তাহলে অন্তত এশিয়া কাপে কিছুটা হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ফিরবে।”
“ভারতকে হারানোর একমাত্র উপায় হতে পারে, নিজেদের একটা ভালো দিনে কোনোভাবে ভারতকে ১৫৫ রানের মধ্যে আটকে রাখা এবং সেটি তাড়া করা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এমনিতে রোমাঞ্চকর, তবে এশিয়া কাপে ভারত এটিকে একতরফা বানিয়ে ফেলবে বলেই মনে হয়।”
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আয়োজনে বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ব্যাটিংয়ের বিশেষ প্রোগ্রাম- রান স্কোরিং ওয়ার্কশপ। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত চলবে এই কর্মশালা।
অস্ট্রেলিয়ান কোচিং বিশেষজ্ঞ অ্যাশলে রস ও ইয়ান রেনশ এই কোর্স পরিচালনা করছেন। যাদের মূল লক্ষ্য ব্যাটিং ও ব্যাটিং কোচিংয়ের সব দিককে ঘিরে কাজ করা। বিশেষ করে রান করার শিল্পকে আরও কার্যকরভাবে উন্নত করা।
কর্মশালার প্রথম দিনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা দেন রস। তিনি বলেন, সমস্যা সমাধান করতে পারার সামর্থ্য এনে দেওয়াই মূলত তাদের লক্ষ্য।
আরও পড়ুন
ফর্মে সই নিয়ে ফিক্সিং বন্ধের উপায় খুঁজবেন বুলবুল |
![]() |
“ক্রিজের অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বোলারই একটা সমস্যা হাজির করে। খেলার পরিস্থিতি আরেকটা সমস্যা। সেরা ব্যাটাররা আসলে সেরা সমস্যা-সমাধানকারী। আমরা চাই খেলোয়াড়রা যেন সমস্যার সমাধান খুঁজে নেওয়ার মতো মানসিকতা গড়ে তোলে। কারণ কোচ মাঠে গিয়ে তাদের হয়ে খেলতে পারবে না। ব্যাটারদের সবসময় একাই নামতে হয়।”
“আমরা চাই ওরা যেন আত্মবিশ্বাসী সিদ্ধান্তগ্রহণকারী হয়। যখন তারা বিশ্বমানের বোলারদের বিপক্ষে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়বে, তখন যেন নিজেদের বলতে পারে- আমি ভালো সিদ্ধান্তগ্রহণকারী, আমি সমস্যা-সমাধানকারী, আমি যেকোনো চ্যালেঞ্জ সামলাতে পারব। সফলতার জায়গা এটিই।”
আরও পড়ুন
দেশের সংকট মিটিয়ে বিদেশেও কোচ পাঠানোর আশা বুলবুলের |
![]() |
এই কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন দেশের ২০ জন সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটার ও কোচ। বাংলাদেশি ক্রিকেটার ও কোচদের জ্ঞান ও দক্ষতায় মুগ্ধ রস।
“আমরা ভাগ্যবান, কারণ এখানে দারুণ জ্ঞানভান্ডার আছে। ইয়ান আর আমি তত্ত্বের কথা বলছি, কিন্তু এখানকার অসাধারণ ব্যাটাররা দেখাচ্ছেন, বাংলাদেশে কীভাবে জিনিসগুলো হয়। আমাদের কাজ মূলত ওদের ভেতরকার জিনিসগুলো বের করে আনা। জ্ঞান আসলে ওদের মধ্যেই আছে।”
কর্মশালায় অংশ নেওয়াদের তালিকায় আছেন মোহাম্মদ আশরাফুল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শাহরিয়ার নাফীস, রাজিন সালেহর মতো বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়করা। এছাড়াও প্রথম দিন কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
এসব অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের উপস্থিতিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ান প্রশিক্ষক।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ দল নিয়ে 'আত্মবিশ্বাসী' বুলবুলের দুই পরামর্শ |
![]() |
“আমরা সৌভাগ্যবান যে টেস্ট অভিষেকে ১৪৫ রান করা একজনকে (বুলবুল) পাচ্ছি। আমরা তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছি। তত্ত্ব নিয়ে আমরা কথা বলতে পারি, কিন্তু পাশে যখন এমন ‘জীবন্ত গ্রন্থ’ থাকে, তখন দুর্দান্ত সব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।”
“আমরা যখন ধারণা নিয়ে আলোচনা করি, ওরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে- কীভাবে অনুশীলন করে, কোনটা তাদের জন্য কার্যকর, আর কীভাবে তারা সবচেয়ে ভালোভাবে কোচিং পেয়েছে। এই মিশ্রণ অসাধারণ এক শেখার পরিবেশ তৈরি করেছে।”