৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫৮ পিএম
টি-টিয়েন্টি ক্রিকেটে পাওয়ার প্লে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগেই। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়া বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে প্রথম ছয় ওভারেই খেই হারিয়ে ফেলে, যেখান থেকে বের হওয়া আর সম্ভব হয়নি। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও মানছেন, সর্বনাশ হয়েছে পাওয়ার প্লেতেই।
বাংলাদেশের শুরুটা ছিল ভালোই। আর্শদ্বীপ সিংকে চার মেরে রানের খাতা খুললেও প্রথম ওভারেই আউট হন অভিজ্ঞ লিটন দাস। বাংলাদেশের চাপ বাড়িয়ে এরপর ছয় ওভারের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৩৯। বিপরীতে রান তাড়ায় ছয় ওভারে ভারত করে ৭১ রান। দুই দলের পার্থক্য এখানেই ম্যাচে।
ম্যাচের পর শান্ত বলেছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাট করতে পারেনি তার দল। “আমার মনে হয় আমাদের শুরুটা ভালো হয়নি। টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ছয় ওভার খুব গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু আমরা সেখানে ভালো করতে পারিনি। আমাদের পরিকল্পনা ছিল ইতিবাচক ক্রিকেট খেলা। মনে হচ্ছিল আমাদের খুব বেশি পরিকল্পনা ছিল না, কিন্তু পরের ম্যাচে আমাদের সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে।”
পাওয়ার প্লেতে ধীরগতির ব্যাটিং করা বাংলাদেশ পুরো ইনিংসেই বজায় রাখে একই ধারা। ১০৮ স্ট্রাইক রেটে ১ চার ও ১ ছক্কায় ২৭ রান করেন শান্ত। আর সর্বোচ্চ ৩৫ করা মেহেদি হাসান মিরাজ বল খেলেন ৩২টি। অতিরিক্ত ডট বলের কারণে রান বের করার জন্য বড় শটের বিকল্প ছিল না। আর তা করতে গিয়েই হয় বিপত্তি। মাত্র ১২৭ রানেই শেষ হয় ইনিংস, যা ভারত পাড়ি দেয় দ্বাদশ ওভারেই।
শান্ত তাই ব্যাটারদের তাগিদ দিয়েছেন ডট বল কম খেলে রানের চাকা সচল রাখার। “আমাদের স্ট্রাইক রোটেটিংয়ে মনোযোগ দিতে হবে, টি-টোয়েন্টি শুধু মেরে খেলার বিষয় নয়। হাতে উইকেট থাকলে আমরা ভালো স্কোর করতে পারি। আমরা খুব বেশি রান করতে পারিনি। রিশাদ ভালো বোলিং করেছে এবং ফিজও ভালো ছিল, কিন্তু আমাদের বোর্ডে যথেষ্ট রান ছিল না।”
১ জুলাই ২০২৫, ৭:১৯ পিএম
২৯ জুন ২০২৫, ৩:০৭ পিএম
নাজমুল হোসেন শান্ত-মেহেদী হাসান মিরাজ, একসঙ্গে খেলেছেন বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে মিরাজের ক্যাপ্টেনসিতে খেলেছেন শান্ত। জাতীয় দলে মিরাজ খেলেছেন শান্ত'র ক্যাপ্টেনসিতে। ব্যাটন বদলে এখন শান্ত ওডিআই ক্রিকেট খেলবেন মিরাজের ক্যাপ্টেনসিতে। শুরুটা হবে বুধবার, শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় ক্রিকেট ভেন্যু প্রেমাদাসায়।
গত বছরের শেষ দিকে শান্ত'র অনুপস্থিতিতে ৪টি ওয়ানডে ম্যাচে ক্যাপ্টেনসি করেছেন। সেই অধ্যায়ে তার সাফল্যাঙ্ক ০। ৪ ম্যাচের চারটিতেই হার। সারজায় আফগানিস্তানের কাছে ৫ উইকেটে হারর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেন্ট কিটস এন্ড নেভিসে মিরাজের ক্যাপ্টেনসিতে ৫, ৭ এবং ৪ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কা সফরের প্রাক্কালে শান্ত'র হাত থেকে ওয়ানডে ক্যাপ্টেনসি নিয়ে সেই ব্যাটনটা দেয়া হয়েছে মিরাজের হাতে। ১৩ ওয়ানডে ম্যাচে ৪ জয়, ৯ হারের এই পুরস্কারটা মেনে নিতে পারেননি শান্ত। টেস্ট ফরম্যাটে ১ বছরের জন্য ক্যাপ্টেনসির মেয়াদ বাড়িয়েও শান্ত'কে নিবৃত্ত করা যায়নি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষে ক্যাপ্টেনসি অধ্যায়ের যবনিকা টেনেছেন শান্ত।
দুই বন্ধুর মধ্যে তৈরি হওয়া একটা পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার থেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি দিচ্ছে উত্তাপ। সেই ২০১৮ সালে প্রেমাদাসায় নিদাহাস কাপ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট থেকে শুরু দু'দলের মধ্যে মাঠ এবং মাঠের বাইরের যুদ্ধ। ২০২৩ বিশ্বকাপে সেই আগুনে ঘি ঢেলেছেন সাকিব, টাইমড আউটের ফাঁদে ফেলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউজকে আউট করে। ওই ম্যাচে জিতে বাংলাদেশ নিশ্চিত করেছিল আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বিদায় হয়ে গেছে শ্রীলঙ্কার। সেই থেকে সর্বশেষ ৪ ওয়ানডে ম্যাচে ৩ জয়ে বেটার দলের স্বীকৃতি বাংলাদেশের।
ওডিআই ক্রিকেটে 'হেড টু হেড'-এ এগিয়ে অবশ্য শ্রীলঙ্কা। ৫৭ ম্যাচে ১২ জয়ের বিপরীতে হেরেছে বাংলাদেশ ৪৩টি-তে। দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে ৬-২এ এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশের রেকর্ড আরো খারাপ। ২০ ম্যাচে জয় মাত্র ২টি। ওই দুই জয়ে অবশ্য দুটি ওয়ানডে সিরিজ ১-১এ সমতায় শেষ করতে পেরেছে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে রেকর্ডটা দারুণ মুশফিকুর রহিমের। এই দুই দলের মুখোমুখি লড়াইগুলোতে ৩৯ ম্যাচে সর্বাধিক
১২০৯ রান মুশফিকুর রহিমের। ২ সেঞ্চুরি, ৬ ফিফটিতে ৩৫.৫০ গড়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রান করা মুশফিকুর রহিমকে আসন্ন সিরিজে পাচ্ছে না বাংলাদেশ দল। মিডল অর্ডারের ভরসা মাহমুদউল্লাহও নেই এই সিরিজে। এই দুই পরীক্ষিত ব্যাটারের শুণ্যস্থান পূরণ করবে কে ? এটাই প্রশ্ন।
তবে ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেছেন পেসার তাসকিন। এক সিরিজ পর ফিরেছেন মোস্তাফিজ। ওপেনার নাঈম শেখ ২২ মাস পর ফেরার স্বপ্ন দেখছেন। ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন এবং বাঁ হাতি স্পিনার তানভির দেখছেন ওয়ানডে অভিষেকের স্বপ্ন।
প্রিয় ফরম্যাট ওডিআইয়ে সর্বশেষ ১০ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় মাত্র ২টি। শ্রীলঙ্কা সেখানে সর্বশেষ ৫ ম্যাচে ৩টি জয় নিয়ে অবতীর্ন হচ্ছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০০৭ সালে মাহমুদউল্লাহর অভিষেকের পর এই প্রথম পঞ্চপাণ্ডবের ( মাশরাফি, সাকিব, তামীম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ) সবাইকে ছাড়া খেলছে বাংলাদেশ। এমন একটি পরিস্থিতিতে পঞ্চপাণ্ডবের প্রতিনিধিহীন বাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পেস বোলিংয়ের উপর আস্থা রাখতে চায়। তাসকিন, মোস্তাফিজের সঙ্গে নাহিদ রানা-কে নিয়ে পেস অ্যাটাক সাজানোর কথা ভাবছে টিম ম্যানেজমেন্ট। স্পিনে অধিনায়ক মিরাজের সঙ্গে লেগ স্পিনার রিশাদ অটোমেটিক চয়েস। নাঈম শেখ না, পারভেজ হোসেন ইমন-তা নিশ্চিত করেনি টিম ম্যানেজমেন্ট এখনো। তবে ওপেনিংয়ে তানজিদ হাসান তামিমের সঙ্গী লিটন দাস, তা প্রায় নিশ্চিত। নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হোসেন হৃদয়, জাকের আলী অনিকরা আছেন তাদের পেছনে।
শ্রীলঙ্কার মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের অতীত নেই বংলাদেশ দলের। মিরাজের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কী এমন ইতিহাস রচনা করতে পারবে ? টেস্ট সিরিজ হারের বদলা ওয়ানডে সিরিজে নেয়ার দিকেই তাকিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।
চোটের কারণে প্রথম দুই ম্যাচ মিস করলেও শুরুতে আশা ছিল গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে খেলার। তবে কিলিয়ান এমবাপে এখন পর্যন্ত আর মাঠে নামতে পারেননি ক্লাব বিশ্বকাপে। নকআউট পর্বের শুরুতেই ফরাসি তারকাকে পাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক কোচ জাবি আলোনসো। তিনি আশাবাদী, য়্যুভেন্তুসের বিপক্ষে এমবাপের খেলার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
২৬ বছর বয়সী এমবাপে ফিট থেকেই রিয়াল স্কোয়াডের সাথে যোগ দেন ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে। তবে আল হিলালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের আগে গ্যাস্ট্রোএন্টারাইটিসে আক্রান্ত হন তিনি। সুস্থ না হওয়ায় এরপর মিস করেন পাচুকা ও সালজবুর্গের সাথে ম্যাচও। তাকে ছাড়াই গ্রুপ এইচ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয় রিয়াল। শেষ ষোলোতে আগামী বুধবার রাত ১টায় খেলবে শেষ ষোলোতে য়্যুভেন্তুসের সাথে।
আরও পড়ুন
সিটিকে হারিয়ে সৌদি লিগ সমালোচকদের ধুয়ে দিলেন মিলিনকোভিচ-সাভিচ |
![]() |
ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে আলোনসো জানিয়েছেন, এই ম্যাচেই এমবাপে ফিরতে পারেন একাদশে।
“কিলিয়ান এখন অনেক ভালো বোধ করছে। প্রতিদিনই তার সাথে আমার কথা হচ্ছে। ম্যাচের আগের দিন সকালে আমরা তার সাথে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। এই ম্যাচে তার খেলার বড় সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কতটুকু খেলবে, এটা বলা মুশকিল। তবে মাঠে নামার সম্ভাবনা অনেক বেশি।”
২০২৪-২৫ মৌসুম শেষে রিয়ালের ডাগআউটে কার্লো আনচেলত্তির স্থলাভিষিক্ত হন আলোনসো। দায়িত্ব নিয়ে দল নিয়ে কাজ করার সুযোগ কমই পেয়েছেন তিনি। মাত্র কয়েকটি অনুশীলন সেশন পার করেই নেমে পড়তে হয়েছে ক্লাব বিশ্বকাপে। প্রথম ম্যাচটা ড্র হলেও পরের দুই ম্যাচে কিছুটা ছন্দ ফিরে পেয়েছে রিয়াল।
আরও পড়ুন
ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের পর ‘মানসিক বিশ্রামের’ সন্ধানে গার্দিওলা |
![]() |
আলোনসো মনে করেন, শেষ আটে যেতে হলে সেরা ফুটবলই খেলতে হবে তাদের।
“য়্যুভেন্তুসের বিপক্ষে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে বড় একটা ম্যাচ। এমন ম্যাচের জন্য আমরা গত সপ্তাহ ধরেই প্রস্তুতি নিয়েছি। এটা আমাদের জন্য ভিন্ন এক প্রতিযোগিতা। তবে রিয়াল মাদ্রিদের মত ক্লাবে সবসময়ই প্রতিটি ম্যাচেই জেতার প্রত্যাশা থাকে। এই ম্যাচে আমাদের নিখুঁত পারফরম্যান্স দেখাতে হবে।”
স্থায়ী কোচ ছাড়াই খেলা হয়ে গেছে কয়েকটি সিরিজ। কোচ বদল করলেও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) টেস্ট দলের জন্য অস্থায়ী কোচের ওপরই আবার আস্থা রাখল। সাবেক অলরাউন্ডার আজহার মাহমুদকে টেস্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে তারা।
পিসিবি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মাহমুদ এই দায়িত্ব পালন করবেন পিসিবির সাথে তার বর্তমান চুক্তির মেয়াদ পর্যন্ত, যার মধ্যে থাকবে আগামী অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠের টেস্ট সিরিজ।
আরও পড়ুন
পিএসজিকে কেইনের হুঁশিয়ারি, ‘যেকোনো দলকেই হারাতে পারে বায়ার্ন’ |
![]() |
পাকিস্তানের টেস্ট দলের স্থায়ী প্রধান কোচের পদটি সেই গত ডিসেম্বরে জেসন গিলেস্পির পদত্যাগ করার পর থেকেই খালি। এরপর সাবেক পেসার আকিব জাভেদ অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজে। তিনি সাদা বলের দলেরও অন্তর্বর্তী কোচ ছিলেন গ্যারি কারস্টেন সরে দাঁড়ানোর পর। বর্তমানে সেই দায়িত্বটি পালন করছেন অভিজ্ঞ কোচ মাইক হেসন।
আর মাহমুদ আগেও পাকিস্তান জাতীয় দলের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১৯ বিশ্বকাপে ছিলেন দলটির বোলিং কোচ। এছাড়া ২০২৪ সালের শুরুতে নিউজিল্যান্ড সফরের আগে অন্তর্বর্তীকালীন সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। এবার পেলেন আরও বড় দায়িত্ব।
নিজের সময়ের অন্যতম সেরা বোলিং অলরাউন্ডারদের একজন মাহমুদ ১৯৯৬ থেকে দুই দশকের ক্যারিয়ারে পাকিস্তানের ১৪৩টি ওয়ানডে ও ২১টি টেস্ট হয়ে খেলেছেন। ছিলেন ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলা দলের সদস্য। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মাহমুদের নামের পাশে রয়েছে ১৬২টি উইকেট। ব্যাটার হিসেবে রয়েছে ৩টি টেস্ট সেঞ্চুরিও।
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ বিমান সংস্থা টার্কিশ এয়ারলাইন্স দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল এবং বাস্কেটবলে স্পন্সর করছে। ইউরো এবং উইয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো ফুটবলের আকর্ষণীয় আসরের স্পন্সর পার্টনার টার্কিশ এয়ারলাইন্স। বিশ্বের জনপ্রিয় এবং ঐতিহ্যবাহী ক্লাব এফসি বার্সেলোনা এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্পন্সরও তুরস্কের রাষ্ট্রীয় এই বিমান সংস্থা। গলফ এবং ইকুয়েস্ট্রিয়ানেও তাদের অর্থায়ন কুড়িয়েছে প্রশংসা।
বাংলাদেশের খেলাধুলায়ও পৃষ্ঠপোষকতার হাত সম্প্রসারিত করেছে এই সংস্থা। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এবং বাংলাদেশের ভলিবলের পৃষ্ঠপোষক টার্কিশ এয়ারলাইন্স, এবার বাংলাদেশের ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক ক্রিকেট দল রংপুর রাইডার্সের স্পন্সর হয়েছে। আগামী ১০ থেকে ১৯ জুলাই গায়ানায় অনুষ্ঠেয় গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সের ট্রাভেল পার্টনার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। রোববার বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে টার্কিশ এয়ারলাইন্স। টার্কিশ এয়ারলাইন্সের বাংলাদেশ শাখার মহাব্যবস্থাপক ইসলাম গৌরে এবং রংপুর রাইডার্সের সিইও ইশতিয়াক সাদেক এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময়ে রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নূরুল হাসান সোহান উপস্থিত ছিলেন। আসন্ন গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সের জার্সির সামনের অংশে দেখা যাবে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের লোগো। সেই জার্সিটাও উন্মোচিত হয়েছে এই অনুষ্ঠানে।
আরও পড়ুন
জিএসএলে আবারও বাংলাদেশের গর্বের উপলক্ষ্য হতে চায় রংপুর রাইডার্স |
![]() |
গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সের স্পন্সর পার্টনার হতে পেরে গর্বিত টার্কিশ এয়ারলাইন্স। সংবাদ সম্মেলনে সে কথাই বলেছেন টার্কিশ এয়ারলাইন্সের বাংলাদেশ ব্রাঞ্চের জেনারেল ম্যানেজার ইসলাম গৌরে। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেছেন-' অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি দেশে বিমান চলাচলকারী বিমান সংস্থা হিসেবে টার্কিশ এয়ারলাইন্স সবসময় খেলাধুলার অদম্য শক্তিতে বিশ্বাসী। ফুটবল, বাস্কেটবল থেকে শুরু করে টেনিস এবং গলফ খেলায় টার্কিশ এয়ারলাইন্স সহায়তার হাত প্রশস্ত করেছে। আমাদের এই সাপোর্ট মহাদেশ জুড়ে বিস্তৃত হয়েছে। এখন আমরা বাংলাদেশেও সেই সহায়তা প্রসারিত করতে পেরে আনন্দিত। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) দিয়ে বাংলাদেশের খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ততা শুরু করেছে টার্কিশ এয়ারলাইন্স। বাংলাদেশের ভলিবলের পৃষ্ঠপোষকতাও করেছে টার্কিশ এয়ারলাইন্স। আজ, আমরা এমন একটি দলকে সমর্থন করে আরও একটি পদক্ষেপ নিচ্ছি যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি জাতির আশা-প্রত্যাশা বহন করবে।'
গ্লোবাল সুপার লিগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স আসন্ন আসরে শিরোপা অক্ষুণ্ণ রাখার মিশনে উড়াল দিবে গায়ানায়। এই মিশনে রংপুর রাইডার্সের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন টার্কিশ এয়ারলাইন্সের বাংলাদেশ শাখার জেনারেল ম্যানেজার ইসলাম গৌরে-'এবছর রংপুর রাইডার্স গায়ানায় অনুষ্ঠিত গ্লোবাল সুপার লিগে (জিএসএল) প্রতিনিধিত্ব করবে। তুরস্কের সাথে এদেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির মধ্যে সেতুবন্ধনকারী হিসেবে টার্কিশ এয়ারলাইন্স এই যাত্রায় সহায়তা করতে পেরে আনন্দিত। আমরা টুর্নামেন্টে রংপুর রাইডার্সের সাফল্য কামনা করি এবং এই অংশীদারিত্ব সম্ভব করতে যারা সাহায্য করেছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই।'
গত বছর ক্যারিবিয়ানে রংপুর রাইডার্স যখন গ্লোবাল সুপার লিগে খেলতে যায়, তাদের গায়ে ফেভারিটের তকমা দেননি সেভাবে কেউই। প্রথম কয়েকটি ম্যাচে ধাক্কা খেলেও দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের শিরোপা উঁচিয়ে ধরে নুরুল হাসান সোহানের দল। এবারের আসরেও বাংলাদেশের একমাত্র দল হিসেবে এই প্রতিযোগিতায় খেলতে যাচ্ছে রংপুর। অধিনায়ক সোহানের আশা, শিরোপা ধরে রেখে আবারও দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনবেন তারা।
বিশ্বজুড়ে পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের পাঁচ দল নিয়ে গতবার বসেছিল জিএসএলের জমজমাট আসর। প্রথম কয়েকটি ম্যাচ হেরে খাদের কিনারায় চলে গিয়েছিল রংপুর। এরপর একের পর এক ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি। একবারের বিপিএল চ্যাম্পিয়ন রংপুরের জনপ্রিয়তা আগে থেকেই বাংলাদেশে বেশ। জিএসএলের শিরোপা বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্ব মঞ্চেও নতুন করে জানান দেয় রংপুরের দুর্দান্ত উপস্থিতি।
আরও পড়ুন
রংপুর রাইডার্সের পৃষ্ঠপোষক টার্কিশ এয়ারলাইন্স |
![]() |
আগামী জুলাইয়ে হতে যাওয়া জিএসএলের দ্বিতীয় আসরকে সামনে রেখে রোববার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে রংপুর, যেখানে ঘোষণা করা হয় স্পন্সরের নাম ও করা হয় জার্সি উন্মোচন। সোহান সেখানেই শোনান দল নিয়ে তার বড় স্বপ্নের কথা।
“গত বছর আমরা যখন গ্লোবাল সুপার লিগে গিয়েছিলাম, আমাদের কেউই সেভাবে গোনায় ধরেনি। প্রথম দুইটা ম্যাচ হারের পর একটু ব্যাকফুটেই ছিলাম। সেখান থেকে আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ। আমার কাছে মনে হয় এবার তাই অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে। গত দুই-তিন মাসে ম্যানেজমেন্ট দল গোছানো নিয়ে অনেক কাজ করেছে। আমরা যখন দল সাজাই, তখন অনেক মতের অমিল থাকেই। তবে আমি বিশ্বাস করি শেষ পর্যন্ত আমরা যে দলটি পেয়েছি, সেটা নিয়ে ইনশাল্লাহ ভালো কিছু করতে পারব। আমরা আমাদের সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করব।”
বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি দল হলেও রংপুর দিনশেষে জিএসএলের মত একটি তারকায় ঠাসা টুর্নামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করবে বাংলাদেশকেই। গতবার তাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা সামগ্রিকভাবেই ছিল দেশের ক্রিকেটের জন্য ইতিবাচক বার্তা। এবার রংপুর যখন জিএসএল খেলতে যাচ্ছে, তখন চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছে বাংলাদেশ জাতীয় দল।
সোহান তাই এবারও ভালো ফলাফল বয়ে এনে দেশের ক্রিকেটে এনে দিতে চান স্বস্তির সুবাতাস।
“সত্যি বলতে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সময়টা একটু কঠিন যাচ্ছে। গত বছর আমরা গ্লোবাল সুপার লিগ জিতেছি, যা বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় একটি অধ্যায়। তাই আমরা এবারও সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে চাই। গতবারও আমাদের কেউই সেভাবে হিসাবের মধ্যে রাখেনি বা ভাবেনি যা আমরা ফাইনাল পর্যন্ত যাব। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এবার চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে খেলতে যাব, অবশ্যই একটা চ্যালেঞ্জ থাকবে। আমি মনে করি সবাই এই চ্যালেঞ্জটা উপভোগ করবে।”
এবারের জিএসএলের আসরে গায়ানা বাদে বাকি তিন দলই ছিল না প্রথম আসরে। সবগুলো দলই ঘোষণা করেছে শক্তিশালী দল। সাথে রংপুরের ওপর থাকবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলার চাপ, যা কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলতে পারে দলের পারফরম্যান্সে।
আরও পড়ুন
টেস্ট ক্যাপ্টেনসি ছাড়লেন শান্ত, তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক ফর্মূলা নিতে পারেননি |
![]() |
সোহান অবশ্য চাপ অনুভব করছেন না।
“গত বছরও যখন গিয়েছি, অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। গতবার আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাংলাদেশকে নিয়েও আলোচনা বেড়ে গিয়েছিল। আমরা চ্যাম্পিয়ন হিসেবে যাচ্ছি, তাই চেষ্টা করব ভালো করার। চ্যালেঞ্জ অবশ্যই থাকবে, আমরা চেষ্টা করব সেটা মোকাবেলা করব। চাপের কিছু নেই, আমাদের নিজেদের খেলাটা উপভোগ করবে।”
জিএসএল শুরু হবে আগামী ১০ জুলাই থেকে, ক্যারিবিয়ানের গায়ানায়। একই সময়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের খেলা থাকায় রংপুরকে এবার দল গোছাতে বাড়তি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। কারণ, তাদের শেষ পর্যন্ত সেসব খেলোয়াড়কেই নিতে হয়েছে, যারা জাতীয় দলের অংশ হবেন না। ফলে ইচ্ছা থাকলেও কয়েকজন খেলোয়াড়কে নিতে পারেনি রংপুর।
এই প্রসঙ্গে রংপুরের টিম ডিরেক্টর শানিয়ান তানিম স্পষ্ট বলেছেন, জাতীয় দলের হয়ে খেলাটাই প্রতিটি ক্রিকেটারের কাছে প্রধান বিষয় হওয়া উচিত।
“আপনারা জানেন ক্যারিবিয়ানে গিয়ে খেলার ক্ষেত্রে লজিস্টিকসের অনেক জটিল কিছু ধাপ থাকে। তাই আমরা বোর্ডের কাছে জানতে চেয়েছিলাম কারা দলে থাকতে পারে, সেভাবেই আমরা দল সাজিয়েছি এবং এনওসি চেয়েছি। মেহেদি হাসান মিরাজ, শামীম হোসেন, নাঈম শেখদেরও এনওসি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন, তাই তাদের রাখা হয়নি। আমি মনে করি জাতীয় দলের প্রাধান্যই সবার আগে। হ্যাঁ, আমরা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি। তবে জাতীয় দলই সবার আগে। আমাদের দলের কেউই যদি বাংলাদেশ দলে ডাক পান, তাহলে আমরা সেটাও স্বাগত জানাব।”
জিএসএলে রংপুর রাইডার্স স্কোয়াড : নুরুল হাসান সোহান (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, রাকিবুল ইসলাম, ইয়াসির আলী রাব্বি, কামরুল ইসলাম রাব্বি, সাইফ হাসান, ইব্রাহিম জাদরান, ইফতেখার আহমেদ, কাইল মেয়ার্স, তাবরাইজ শামসি, খাজা নাফে, খালেদ আহমেদ, আকিফ জাভেদ, হারমিত সিং।