২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮:২৪ পিএম

নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পর বাংলাদেশ সহ-অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ বলেছেন, ৩০০-৩১০ রান করলে জিততে পারত বাংলাদেশ। আর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত তুলে ধরেছেন বিদেশের মাটিতে ভালো ক্রিকেট না খেলতে পারার বিষয়টি। দুজনের দুই রকমের মন্তব্যে আপনার মনে একটা প্রশ্ন জাগতেই পারে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কি স্রেফ খেলার জন্যই খেলছে বাংলাদেশ নাকি খেলোয়াড়দের সামর্থ্য ছিল বড় কিছু করার?
প্রশ্নটা করা এই কারণেই, একই টুর্নামেন্টে যেখানে দলগুলো করছে ৩০০, এমনকি ৩৫০ প্লাস স্কোরও, সেখানে দুই ম্যাচেই যে ব্যাট হাতে খাবি খেল বাংলাদেশ। দুবাইয়ের উইকেটে বড় রান করাটা চ্যালেঞ্জই, তবে সেই ম্যাচে ভারতের সাথে ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে সেখানেই ম্যাচটা হেরে বসে দলটি। অথছ, ওই সময়ে না হয়েছে এমন কোনো দুর্দান্ত বোলিং, না উইকেটে ছিল কোনো জুজু। ব্যাটারদের দায়িত্বহীন শটে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার প্রবণতায় শুরুতেই মেরুদণ্ড ভেঙে যায় দলের।
আরও পড়ুন
| ভেসে গেল অস্ট্রেলিয়া-দ.আফ্রিকা লড়াই, চাপ বাড়ল ইংল্যান্ডের |
|
একটা টুর্নামেন্টের শুরুটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে অমন ভয়াবহ এক ব্যাটিং ধসে বাংলাদেশ পায় ভুলে যাওয়ার এক অভিজ্ঞতা। এরপর টেনেটুনে ২২৮ করলেও ম্যাচে সেভাবে লড়াই আর জমাতেই পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসের মাঝে কয়েকটি উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছে ভারত, ক্যাচও পড়েছে একটা বটে, তবে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে যাবে এমনটাও মনে হয়নি প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তার গভীরতার কারণেই।
আর এখানেই চলে আসে সামর্থ্যের প্রশ্ন। ভারত এই টুর্নামেন্ট খেলছে দলের তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটেরই অন্যতম সেরা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহকে ছাড়া। অথচ ঠিকই তারা হেসেখেলে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই তাদের ব্যাটাররা জানান দিয়েছেন নিজেদের সামর্থ্যের। আর সেটা স্পষ্ট হয়েছে শুবমান গিল ও বিরাট কোহলির দুই সেঞ্চুরিতে।
ভারত ম্যাচে দ্রুত ৫ উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশ ২২৮ পর্যন্ত যেতে পেরেছিল তাওহীদ হৃদয়ের লড়াকু সেঞ্চুরির কারণেই। তবে নব্বইয়ের ঘরে যেতে ক্র্যাম্পের কারণে দাঁড়াতেই যেন পারছিলেন না এই তরুণ ব্যাটার। ফলে ২৫০ রানের ভিত থাকলেও তিনি শেষের দিকে সেভাবে রানই বের করতে পারেননি। অর্জন বলতে ওই তার শতকই।
একই ম্যাচে গিল ওপেন করতে নামেন ৫০ ওভার ফিল্ডিংয়ের ক্লান্তি নিয়ে। আর মাঠ ছাড়েন দলকে জিতিয়ে, অপরাজিত সেঞ্চুরিতে। একবারও ক্যাম্প হয়নি তার। ম্যাচ শেষেও তার প্রাণশক্তি বলে দিচ্ছিল, চাইলেই অনায়াসে আরও ৫০ ওভার ব্যাট করা সম্ভব তার পক্ষে। তাওহীদ বা বাংলাদেশের অন্য ব্যাটারদের সাথে সামর্থ্যের ফারাকটা এখানেই হয়ে যায় শীর্ষ ব্যাটারদের।
আরও পড়ুন
| ‘বড় মঞ্চে সাকিবের মত পারফর্ম করতে ব্যর্থ মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ’ |
|
অন্য উদাহারণটি হতে পারেন কোহলি। দুবাইয়ের গরমের মধ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়ায় তিনিও উপহার দেন ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি। চেজ মাস্টার খ্যাত এই ব্যাটার শতক করেছেন নব্বইয়ের বেশি স্ট্রাইক রেটে। চার মারেন মাত্র ৭টি। অর্থাৎ, বাউন্ডারি থেকে মাত্র ২৮ রান করেও তিনি দারুণ একটা স্ট্রাইক রেট বজায় রেখেছেন। দৌড়ে রানই নিয়েছেন ৭২টি।
এর একদিন বাদে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেন করতে নেমে রাওয়ালপিন্ডির ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে শান্ত ৭৭ রান করতে বল খেলেছেন ১১০টি। তিনি কোহলির চেয়ে চার মেরেছেন দুটি বেশি। তবে ডট বলের সংখ্যাও তার বেশি, ৬২টি। আর এখানেই চলে আসে বাংলাদেশ ব্যাটারদের সামর্থ্যের বিষয়টি। একজন ব্যাটার প্রায় ১০ ওভার যদি একটা রানও না বের করতে পারেন, সেই দলের ইনিংস কার্যত নেমে আসে ৪০ ওভারে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই একটা দলের জন্য ৩০০ পার করা স্কোর গড়ার কাজটা ভীষণ কঠিন হয়ে যায়।
তাওহীদের ওই একশ করার আগেই ফিটনেসের কমতি ফুটে ওঠা বা শান্তর ডট বলের হিড়িক যেন বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিটের দীনতাই ফুটিয়ে তোলে। অবশ্য দুই ম্যাচে সর্বোচ্চ রান করা দুজনকে উদাহারণ হিসেবে টেনে আনাটা কিছুটা দৃষ্টিকটু লাগতেই পারে। মন্দের ভালো তো ছিলেন তারাই।
তবে অন্যদের দিকে তাকালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ কেন আর কোন লক্ষ্যে খেলছে, তা নিয়েই যে প্রশ্ন জাগতে বাধ্য। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে রিকি পণ্টিং যখন বলেছিলেন, বাংলাদেশের কোনো সম্ভাবনাই দেখছেন না তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক সাধারণত ক্রিকেট নিয়ে ভুল ভবিষ্যৎবাণী কমই করেন।
দুই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটাররা প্রমাণ দিয়েছেন, ভুল ছিলেন না পন্টিং। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যর্থ ছিলেন তিন অভিজ্ঞ সৌম্য সরকার, মেহেদি হাসান মিরাজ ও মুশফিকুর রহিম। এদের মধ্যে দুজনই আবার মারেন ডাক। তিনজনের আউটের ডেলিভারি ছিল না খুব বিশেষ কিছু।
তবে নিউজিল্যান্ড ম্যাচ যেন ছাড়িয়ে গেছে সেই ব্যর্থতার গল্পও। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বিশের ঘরে ভালো শুরু পেয়েও আউট হয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। দুটি বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞ একজন ব্যাটারের কাছ থেকে বড় ইনিংস তো দল আশা করতেই পারে। অবশ্য অভিজ্ঞতার বিচারে দলের সবচেয়ে প্রবীণ দুই ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহই তো করেছেন সবচেয়ে বেশি হতাশ।
ভারত ম্যাচ মিস করা মাহমুদউল্লাহ ১০৬ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর নেমে যেভাবে মিচেল ব্রেসওয়েলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন, তা অবাক করেছে ধারাভাষ্যকারদের। এর আগে একই ভুল করেছেন মুশফিকুরও। অথচ ওই সময়ে তাদের দরকার ছিল দেখেশুনে খেলে ইনিংস মেরামতের। এই টুর্নামেন্টেই ৩৫১ রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার তুলনামূলক দুই অনভিজ্ঞ ব্যাটার জস ইংলিশ ও অ্যালেক্স কেরি যেভাবে জুটি গড়েছেন খুব বেশি আগ্রাসন না দেখিয়েই, তা বাংলাদেশের ২০ বছরের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের জন্য হতে পারে এক শিক্ষা। ডট বলের চাপ এলেও তারা সিঙ্গেলস বের করে সেটা সরিয়েছেন। কয়েকটা বল ডট গেলেই মুশফিকুর বা মাহমুদউল্লাহরা বারবার চাপের মুখে স্রেফ বড় শটেই নিস্তার চান, তা উদ্বেগজনকই।
আরও পড়ুন
| রান আউট-ক্যাচ মিসের আক্ষেপে বিদায় বাংলাদেশের |
|
যেহেতু তারা দুজনই আছেন ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায়, সেদিক থেকে বাংলাদেশের বড় চিন্তার কারণ হতে পারেন মিরাজ। মূলত বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে খেললেও এই দলে তিনি এখন নিয়মিত ব্যাট করছেন ওপরের দিকেই। মজার ব্যাপার হল, ওয়ানডেতে তার সেরা সব পারফরম্যান্স এসেছে ব্যাট হাতেই। অবশ্যই সাকিব আল হাসান যুগে এটা বাংলাদেশের জন্য দারুণ খবর। তবে মিরাজের মূল কাজ তো বল হাতে, কারণ দলের চতুর্থ বা পঞ্চম বোলার যে তিনিই।
সেই মিরাজ ১০৫টি ওয়ানডেতে নিয়েছেন মাত্র ১১০ উইকেট। গড়ে প্রতি উইকেট নিতে গুনেছেন ৪৫ রানের বেশি। দলের একজন মূল বোলার যখন দিনের পর দিন গড়পড়তা পারফরম্যান্স উপহার দিবেন, তখন সেটা দলকে বাড়তি চাপে ফেলবেই। হচ্ছেও তাই। মিরাজের করা ১০টি ওভার ওয়ানডেতে প্রতিপক্ষকে সেভাবে চাপে ফেলতেই পারছে না মাঝের ওভারে। ফলে নিউজিল্যান্ড ম্যাচের মত পেসাররা শুরুটা দারুণ কিছু করলেও মিরাজের স্পেলে প্রতিপক্ষ পাচ্ছে সহজ রান বের করার সুযোগ। তাতে চাপও যাচ্ছে আলগা হয়ে।
সব মিলিয়ে তাই এক ম্যাচ হাতে রেখেই আসর থেকে বিদায় নেওয়া বাংলাদেশ দল ব্যর্থ হল বিরেন্দর শেবাগকে একটা জবাব দিতে। সাবেক ভারত ওপেনার প্রথম ম্যাচের পর বলেছিলেন, দলটা বাংলাদেশ বলেই তাদের কাছে হারার চিন্তাও নাকি হয়নি তার। ওয়াসিম জাফর বা শেন বন্ডের মত সাবেকরা এমন তির্যক মন্তব্য না করলেও বলেছেন, বড় মঞ্চে বাংলাদেশের এমন বাজে প্রদর্শনী অবাক করেছে তাদের।
এই অবাক বিস্ময়ে আছেন বাংলাদেশের সমর্থকরাও, যারা ভারত ম্যাচের আগের দিন রাতে শান্ত-তাসকিন-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের দেখলেন সাবেক ওপেনার তামিম ইকবালের সাথে ডিনার করতে। যেখানে তৈলাক্ত খাবারের সাথে ছিল আবার কোমল পানীয়ও। টুর্নামেন্টে নিজেদের সবচেয়ে বড় ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের নিবেদনের এই চিত্র বলে দেয়, নিজেদের সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা যেন তারা মেনে নেন মাঠে নামার আগেই।
ক্রিকেট পাগল একটা দেশের সমর্থকদের জন্য এই নির্মম সত্য মেনে নেওয়াটা কঠিনই বটে। কারণ, তারা যে প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশকে সেরাদের সেরা হওয়ার। তবে খেলোয়াড়দের সামর্থ্যের কমতি থাকা বা লড়াইয়ের আগে হালকা মেজাজে থাকাটা বলে দেয়, সময় এসেছে ‘রিয়েলিটি চেক’ দেওয়ার। শান্তরা সেটা পাবেন কি?
No posts available.
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৬ পিএম
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮:১৪ পিএম
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬:৫০ পিএম

সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র, দ্বিতীয়টিতে নিরঙ্কুশ জয় নিউ জিল্যান্ডের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ২-০ ব্যবধান করার লক্ষ্য কিউইদের।
আগামী ১৮ ডিসেম্বর অতিথি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাউন্ট মাউঙ্গানুইয়ে ম্যাচের স্কোয়াডে পরিবর্তন এনেছে নিউ জিল্যান্ড। এজাজ প্যাটেল ও টম ব্লান্ডেল দলে ফিরেছেন। চোটের কারণে বাদ পড়েছেন ব্লেয়ার টিকনার। ফেরা হয়নি মিচেল স্যান্টনার ও ম্যাট হেনরির।
এক বছরেরও বেশি সময় পর টেস্ট দলে ডাক পেয়েছেন এজাজ। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে মুম্বাই টেস্টে ভারতের বিপক্ষে তিনি শেষ খেলেছিলেন। সেই ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার খেতাবও জিতেছিলেন এজাজ।
ক্রাইস্টচার্চে প্রথম টেস্টে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়া উইকেটকিপার-ব্যাটার টম ব্লান্ডেল এক ম্যাচ বিরতিতে ফিরেছেন। কাঁধের চোটের কারণে ফার্স্ট বোলার ব্লেয়ার টিকনার দল থেকে ছিটকে গেছেন।
তৃতীয় টেস্টে নিউজিল্যান্ড স্কোয়াড: টম ল্যাথাম (অধিনায়ক), টম ব্লান্ডেল (উইকেটকিপার), মাইকেল ব্রেসওয়েল, ক্রিস্টিয়ান ক্লার্ক, ডেভন কনওয়ে, জ্যাকব ডাফি, জ্যাক ফাউলকস, ড্যারিল মিচেল, এজাজ প্যাটেল, গ্লেন ফিলিপস, মাইকেল রে, রাচিন রবীন্দ্র, কেন উইলিয়ামসন ও উইল ইয়ং।

সিরিজের প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে রান-পাহাড়ে চড়েছিল দু’দল। প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করা ভারত তুলেছিল ১৭৫ রান, পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা পৌঁছেছিল রেকর্ডের খুব কাছাকাছি— তুলেছিল ২১৩ রান। তবে ধর্মশালায় ফিরতেই ফ্যাকাশে ম্যাচের রঙ।
রবিবার এগিয়ে যাওয়ার ম্যাচে প্রোটিয়াদের ১১৭ রান তাড়া করতে নেমে ২৫ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় পায় ভারত। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
এদিন টস হেরে আগে ব্যাটিং করে দক্ষিণ আফ্রিকা করে ১১৭ রান, যা ম্যান ইন ব্লুদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রোটিয়াদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর।
টপ অর্ডারের ব্যর্থতার দিনে একমাত্র এইডেন মার্করামের ব্যাটেই সুর ওঠে। একাই দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নেমে ১৮.৩তম ওভারে ড্রেসিংরুমে ফেরেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে দলের সর্বোচ্চ ৬১ রান। ৪৬ বল মোকাবিলায় ২টি ছক্কা ও ৬টি চারে এই ইনিংস খেলেন মার্করাম।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, এদিন প্রোটিয়াদের মাত্র তিন ব্যাটার—মার্করাম, দোনোভান ফেরেইরা ও হেনরিখ নরকিয়া—দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেন। ফেরেইরা ১৫ বলে করেন ২০ রান এবং পেসার নরকিয়ার ব্যাট থেকে আসে ১২ রান।
অতিথিদের সর্বোচ্চ জুটি ছিল মার্কো জেনসন ও মার্করামের। এই জুটি থেকে আসে ৩৬ রান। এ ছাড়া দলীয় ১১৩ রানে ফেরার আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ছোট ছোট জুটি গড়ার চেষ্টা দেখা যায়। তবে বেশিরভাগই থিতু হওয়ার আগেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ১১৭ রানেই থামে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।
এদিন বল হাতে দারুণ এক কীর্তি গড়েন হার্দিক পাণ্ডিয়া। দুটি উইকেট নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে নিজের শততম উইকেট পূর্ণ করেন তিনি। এর আগে এই অলরাউন্ডার টি-টোয়েন্টিতে ১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন।
পাণ্ডিয়ার পাশাপাশি দুটি করে উইকেট নেন হার্ষিত রানা, বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব।
১১৭ রান তাড়া করতে নেমে ধীরস্থির কৌশলেই এগোয় ভারত। মূলত সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য এবং ধর্মশালার কন্ডিশন মাথায় রেখে ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ের বদলে স্বাভাবিক খেলাতেই মনোযোগ দেয় তারা। তার ফলও আসে মধুর।
সিরিজে দ্বিতীয় জয়ের দিনে অভিষেক শর্মা ও শুভমান গিলের জুটি ভাঙে দলীয় ৬০ রানে, অভিষেক ৩৫ রানে আউট হলে। কটক ও নিউ চণ্ডীগড়ে ১৭ রান করে আউট হওয়া অভিষেক আজ নিজের সংগ্রহ বাড়াতে সক্ষম হন।
মার্কো জেনসনের বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন শুভমান গিলও। গত দুই ম্যাচে দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে না পারা এই ওপেনার আজ করেন ২৮ রান। তবে সূর্যকুমার যাদব ব্যর্থতার বৃত্তেই বন্দি থাকেন। স্বাগতিক অধিনায়ক কটকের মতো আজও ১২ রান করেন। তাকে ফিরিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের মধ্যে শীর্ষ উইকেটশিকারির দৌড়ে আরও এগিয়ে যান লুঙ্গি এনগিদি। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ৭৭টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
ভারতের ইনিংস শেষের পথে এগিয়ে নেন তিলক ভার্মা ও শিভাম দুবে। দুবের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ২৬ রান। এর মধ্য দিয়েই স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ৪ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। দু’জনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতেই জয় বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।

বছরের শেষটা ভারত সফর দিয়ে করার কথা ছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের। তবে সেটি স্থগিত হয়ে গেছে। এই ফাঁকা সময়টা কাজে লাগাতে তাই দেশের শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে উইমেন'স ক্রিকেট লিগ (ডব্লিউসিএল) আয়োজন করছে বিসিবি।
রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে সোমবার শুরু হবে ডব্লিউসিএলের খেলা। সেন্ট্রাল জোন, ইস্ট জোন, সাউথ জোন ও নর্থ জোনে ভাগ হয়ে খেলবেন নিগার সুলতানা জ্যোতি, ফাহিমা খাতুন, সোবহানা মোস্তারি, রাবেয়া খানরা।
উদ্বোধনী ম্যাচে সকাল ৯টায় মুখোমুখি হবে সেন্ট্রাল জোন-নর্থ জোন। একই দিন দুপুর দেড়টায় লড়বে ইস্ট জোন ও সাউথ জোন।
ডাবল লেগ পদ্ধতির এই টুর্নামেন্ট শেষ হবে আগামী ২৫ ডিসেম্বর। টুর্নামেন্টের শেষ দিন দুপুর দেড়টায় ফিরতি ম্যাচে লড়বে সেন্ট্রাল জোন ও নর্থ জোন। অর্থাৎ মৌসুমের শুরু ও শেষের ম্যাচ দুইটি খেলবে তারা দুই দল।
একনজরে চার দলের স্কোয়াড
সেন্ট্রাল জোন
নিগার সুলতানা জ্যোতি (অধিনায়ক), ইশমা তানজিম, দিলারা আক্তার, জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা, রিতু মণি, সাবিকুন নাহার জেসমিন, সুমাইয়া আক্তার, ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণা, জান্নাতুল মাওয়া, আনিসা আক্তার সোবা, মোসাম্মত ইভা, সুবর্ণা কর্মকার, লেকি চাকমা ও তমালিকা সুমনা।
ইস্ট জোন
ফাহিমা খাতুন (অধিনায়ক), স্বর্ণা আক্তার, রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক, হাবিবা ইসলাম পিংকি, সাথী রানী, ফাতেমা জাহান সোনিয়া, তাজ নেহার, ফুয়ারা বেগম, উন্নতি আক্তার, মুর্শিদা খাতুন, হালিমাতুল সাদিয়া, আশরাফি ইয়াসমিন আরথি, মুমতাহেনা হাসনাত সিনথিয়া, সুমি আক্তার।
নর্থ জোন
সোবহানা মোস্তারি (অধিনায়ক), শামীমা সুলতানা, সানজিদা আক্তার মেঘলা, শারমিন আক্তার সুপ্তা, ফারজানা ইয়াসমিন, শরিফা খাতুন, শারমিন সুলতানা, আফিয়া আসিমা ইরা, দিশা বিশ্বাস, মেহেরুন নেসা জয়া, লাকি খাতুন, ফারজানা আক্তার লিসা, পূজা চক্রবর্তী, নুসরাত জাহান।
সাউথ জোন
রাবেয়া খান (অধিনায়ক), মারুফা আক্তার, জুয়াইরিয়া ফেরদৌস, সুলতানা খাতুন, লতা মন্ডল, ফারজানা হক, মিষ্টি রানী সাহা, ফাতেমা আক্তার ইতি, ফাহমিদা ছোঁয়া, দীপা খাতুন, হ্যাপি আলম, আয়েশা আক্তার (জুনিয়র), লিমা খাতুন শিবানী রানী।

দুর্দান্ত বোলিংয়ে ভারতকে বেশি দূর যেতে দিলেন না পাকিস্তানের বোলাররা। মোটামুটি সহজ লক্ষ্য পেয়ে তাই জয়ের স্বপ্ন হয়তো দেখছিল তারা। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় সেই স্বপ্নভঙ্গ! ভারতের কাছে হেরে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ শুরু করেছে পাকিস্তান।
দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমি মাঠে রোববার পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ৯০ রানে হারায় ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল। আগে ব্যাট করে মাত্র ২৪০ রানের পুঁজি নিয়ে চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের ১৫০ রানেই অল আউট করে দেয় ভারত।
পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচ হারের পর অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছে ভারতের যুবারা। এই ম্যাচের শুরুতেও ছিল দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ছাপ। টসের সময় হাত মেলাননি দুই দলের অধিনায়ক।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেন কনিষ্ক চৌহান। সাত নম্বরে নেমে ৪৬ বলে ৪৬ রান করেন তিনি। পরে বল হাতে মাত্র ৩৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তরুণ অফ স্পিনারই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তেমন সুবিধা করতে পারেনি ভারত। আলোচিত মারকুটে ওপেনার বৈভব সুরিয়াবংশী মাত্র ৫ রান করে ফিরে যান। আরেক ওপেনার আয়ুশ মাত্র ঝড় তুলে মাত্র ২৫ বলে ৩৮ রান করে ফিরে যান।
তিন নম্বরে নেমে দুই দল মিলিয়েই ম্যাচের সর্বোচ্চ ৮৮ রানের ইনিংস খেলেন অ্যারন জর্জ। এরপর কনিষ্কের চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংসের সৌজন্যে আড়াইশর কাছে যায় ভারত।
পাকিস্তানের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সায়াম ও আব্দুল সুবহান।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই নিয়মিত উইকেট হারায় পাকিস্তান। তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেন শুধু তিন ব্যাটার- উসমান খান (৪২ বলে ১৬), ফারহান ইউসুফ (৩৪ বলে ২৩) ও হুজাইফ আহসান (৮৩ বলে ৭০)।
কনিষ্ক ৩৩ রানে নেন ৩ উইকেট। এছাড়া মাত্র ১৬ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন দিপেশ দেবেন্দ্র।

দেশের প্রতিষ্ঠিত ও স্বনামধন্য ৩২টি সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে বরাবরের ন্যায় আবারও আয়োজিত হতে চলেছে রংপুর রাইডার্স বিএসজেএ মিডিয়া কাপ-২০২৫। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নামবে দেশের খেলাধুলার একমাত্র চ্যানেল টি স্পোর্টস। তাদের প্রতিপক্ষ জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ।
মাওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে বেলা ১১টায় শুরু হবে টি স্পোর্টস ও কালের কণ্ঠের ম্যাচ। ৩২ দলের টুর্নামেন্টে ‘এফ’ গ্রুপে টি স্পোর্টস ও কালের কণ্ঠের পাশাপাশি রয়েছে এটিএন নিউজ ও বাংলা নিউজ।
টুর্নামেন্টের সব খেলাই হবে হকি স্টেডিয়ামের নীল টার্ফে। সোমবার সকাল ৯টা থেকেই অবশ্য শুরু হয়ে যাবে ব্যাট-বলের লড়াই। তবে টি স্পোর্টসের ম্যাচ দিয়েই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে রংপুর রাইডার্স বিএসজেএ মিডিয়া কাপ-২০২৫ পাওয়ার্ড বাই এইস ডেভেলপার্স।
উদ্বোধনী দিনে সকাল ৯টায় খেলবে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও দৈনিক মানবজমিন এবং সময় টিভি ও দৈনিক নয়া দিগন্ত। এরপর সকাল ১০টায় লড়বে এটিএন বাংলা ও ক্রিকফ্রেঞ্জি এবং জাগো নিউজ ও ডিবিসি।
পরে বেলা ১১টায় টি স্পোর্টস ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সঙ্গে পাশাপাশি মাঠে খেলবে চ্যানেল আই ও দৈনিক কালবেলা। আর দুপুর ১২টায় দিনের শেষ দুই ম্যাচে খেলবে ডেইলি সান ও দৈনিক দেশ রুপান্তর এবং ডেইলি স্টার ও দৈনিক কালবেলা।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক টুর্নামেন্টের গ্রুপিং
গ্রুপ এ: যুগান্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, সমকাল, ঢাকা পোস্ট
গ্রুপ বি: ডেইলি সান, ডিবিসি, দেশ রুপান্তর, জাগো নিউজ
গ্রুপ সি: ডেইলি স্টার, চ্যানেল ২৪, ইনকিলাব, দেশ টিভি
গ্রুপ ডি: চ্যানেল আই, বৈশাখি টিভি, কালবেলা, জি টিভি
গ্রুপ ই: সময় টিভি, এন টিভি, নয়া দিগন্ত, এখন টিভি
গ্রুপ এফ: টি স্পোর্টস, এটিএন নিউজ, কালের কণ্ঠ, বাংলা নিউজ
গ্রুপ জি: বাংলাদেশ প্রতিদিন, মাছরাঙা, মানবজমিন, আর টিভি
গ্রুপ এইচ: এটিএন বাংলা, বাংলা ভিশন, ক্রিকফ্রেঞ্জি, দীপ্ত টিভি