২২ আগস্ট ২০২৫, ২:৪৫ পিএম
কেউ চুক্তিতে স্বাক্ষর করার কলম হাতে নিয়েও রাজি হননি, আবার কেউ লুকিয়ে থেকেছেন ট্রান্সফার এড়ানোর জন্য। ফুটবলে চমকপ্রদ ট্রান্সফার হাইজ্যাকের ঘটনা নেহাত কম নয়। আলফ্রেদো দি স্তেফানো-রোনালদিনহো থেকে হালে ইবোরেচি এজে।
ফুটবল আর কেবল খেলা নেই। এটা এখন ব্যবসা—আর সেটা যথেষ্ট নির্মমও বটে। ট্রান্সফার মার্কেটের চেয়ে ভালো উদাহরণ আর নেই, যেখানে টাকারই রাজত্ব, আর 'জেন্টলম্যানস এগ্রিমেন্ট' এখন কেবল ঠাট্টার। এ কারণেই সমর্থকদের জন্য এটা ভীষণ সরলমনা ভাবনা, একটা ‘হয়ার উইগো’ মানেই কোনো ডিল নিশ্চিত।
বাস্তবে কোনো ক্লাব কিছুই নিশ্চিত ধরে নিতে পারে না যতক্ষণ না খেলোয়াড় ‘ডটেড লাইনে’ স্বাক্ষর করছেন। শেষ মুহূর্তে অনেক কিছুই ভেসে যায়।
তবে কোনো ট্রান্সফার ভেসে যাওয়ার সবচেয়ে বড় হুমকি হলো শেষ মুহূর্তের অন্য কারও আগ্রহ—যেটা এবার টটেনহ্যাম হটস্পার টের পেয়েছে। অনেব দূর এগিয়ে যাওযার পরও ইবোরেচি এজের আর্সেনালে যোগ দেওয়া স্পার্সদের জন্য ভিমড়ি খাওয়ার জোগাড়। রীতিমতো ইংল্যান্ডের মিডফিল্ডারকে ‘হাইজ্যাক’ করেছে করেছে গানাররা। এ আর নতুন কি, ফুটবল ইতিহাসে এমন হাইজ্যাকড ট্রান্সফারের তালিকা বেশ লম্বাই। আছেন কিংবদন্তি তারকারাও।
আলফ্রেদো দি স্তেফানো
বার্সেলোনার কাছ থেকে রিয়াল মাদ্রিদের আলফ্রেদো দি স্তেফানোর হাইজ্যাক হওয়া ট্রান্সফারকে ঘিরে অসংখ্য গল্প ও গুজব আছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন, ১৯৫৩ সালে স্তেফানো কলম্বিয়ান ক্লাব মিয়োনারিওসের হয়ে খেলছিলেন, কিন্তু তাঁর মালিকানা রিভার প্লেটের কাছে ছিল।
তখন স্তেফানো বার্সেলোনা যাওয়ার একটি প্রাথমিক চুক্তি হয়েছিল। ঝামেলা শুরু হয় বার্সেলোনার পক্ষ থেকে রামন ট্রিয়াস ফারগাস ছিলেন আইনজীবী, যিনি স্তেফানোকে নিয়ে চুক্তি করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ক্লাবের কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যেমন প্রেসিডেন্ট মার্তি কারেত্তো, তাঁকে যথাযথভাবে সমর্থন করেননি। তখনই অভিযোগ ওঠে—এটা নাকি ছিল স্প্যানিশ সরকারের আশীর্বাদে মাদ্রিদের সাজানো ষড়যন্ত্র।
বিষয়টি আরও জটিল হয় যখন স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন (আরএফইএফ) হঠাৎ বিদেশি খেলোয়াড়দের স্বাক্ষর করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। তারা বার্সার কাছে প্রস্তাব দেয়, যদি তারা দি স্তেফানোকে মাদ্রিদের সঙ্গে ভাগ করতে রাজি হয়, তাহলে তাঁকে এই নিয়মের বাইরে রাখা হবে।
শর্ত অনুযায়ী, প্রতি মৌসুম শেষে স্তেফানোর আল্টারনেটিভভাবে দুই ক্লাবের হয়ে খেলবেন। বার্সা রাজি হয়, কিন্তু কাতালুনিয়ায় সৃষ্ট তীব্র সমালোচনার কারণে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই সভাপতি কারেত্তোকে পদত্যাগ করতে হয়।
শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনা চুক্তি থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়, মাদ্রিদ থেকে কিছু ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করে। তাদের চোখের সামনেই দি স্তেফানো রিয়াল মাদ্রিদকে ইউরোপিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে প্রভাবশালী দলে রূপান্তরিত করেন।
আরও পড়ুন
২০২৭ বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকায় |
![]() |
পল গ্যাসকয়েন
স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন মনে করতেন ববি চার্লটনের পর পল গ্যাসকয়েন ইংল্যান্ডের সবচেয়ে প্রতিভাবান খেলোয়াড়। তাই নিউক্যাসলের এই মিডফিল্ডার যখন ১৯৮৮ সালের গ্রীষ্মে ফার্গুসনকে কথা দিলেন, তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেবেন, তখন ছুটিতে মাল্টায় থাকা ফার্গুসন বেশ খুশিই ছিলেন।
কিন্তু সেই মৌখিক চুক্তির দুই দিন পরই টটেনহ্যামের চেয়ারম্যান আয়ারভিং স্কলার গ্যাসকয়েনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইংলিশ তারকার ভাষ্য অনুযায়ী, তার বাবা বলেছিলেন,
‘ওদের বল, ফাক অফ! তুমি ম্যানইউতেই স্বাক্ষর করবে।’
তবে স্কলার হাল ছাড়েননি। তিনি নাকি গ্যাসকয়েনের বাবাকে প্রতিশ্রুতি দেন, গ্যাসকয়েন যদি টটেনহ্যামে সই করেন তবে তিনি ১ লাখ ২০ হাজার পাউন্ড পাবেন। এটা শোনার পর তাঁর বাবা বলেছিলেন,
‘তাহলে আর কীসের অপেক্ষা, ছেলে?’
প্রণোদনা সেখানেই শেষ হয়নি। গ্যাসকয়েন দাবি করেন, স্কলার নাকি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাঁর বাবাকে একটি বিএমডব্লিউ সফট টপ গাড়ি (প্রাইভেট নাম্বার প্লেটসহ), মাকে একটি বাড়ি আর র বোনকে একটি সানবেড কিনে দেবেন।
ফার্গুসন যখন ছুটির সময়েই জানলেন গ্যাসকয়েন টটেনহ্যামে যাচ্ছেন, তখন তিনি প্রচণ্ড রাগান্বিত হন এবং কয়েক বছর পর্যন্ত গ্যাসকয়েনের সঙ্গে কথা বলেননি। তিনি সব সময় বলতেন, গ্যাসকয়েন বিশাল ভুল করেছেন ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে তাঁর অধীনে খেলার সুযোগ না নিয়ে। গ্যাসকয়েনও পরে স্বীকার করেছিলেন, মজার ছলে বলেছিলেন—
‘আমার বোন যদি শুধু একটা স্প্রে ট্যান নিত, তাহলে আমার হাতে আরও অনেক মেডেল থাকত!’
রয় কিন
১৯৯৩ সালের গ্রীষ্মে শুক্রবার রাতের দিকে নটিংহ্যাম ফরেস্টের তরুণ তারকা রয় কিন ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সের ম্যানেজার কেনি ডালগ্লিশের সঙ্গে হাত মেলান ইউড পার্কে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে। ডালগ্লিশ চেয়েছিলেন চুক্তি তখনই লিখে স্বাক্ষর করা হোক, কিন্তু ক্লাবের প্রশাসনিক কর্মীরা সবাই অফিস শেষ করে চলে গিয়েছিলেন। তাই কাগজপত্রে স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়নি সোমবারের আগে।
এর মধ্যেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ম্যানেজার অ্যালেক্স ফার্গুসন কিনকে ফোন করেন এবং ব্যক্তিগতভাবে দেখা করে বোঝান কম বেতন নিয়েও যেন তিনি ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে যোগ দেন।
ব্ল্যাকবার্নের কাছে খবরটি ভালোভাবে নেয়া হয়নি। ডালগ্লিশ কিনকে বলেছিলেন,
‘কেউ এরকম কাণ্ড করে না কেনি ডালগ্লিশের সঙ্গে। তুমি এক ছোট্ট বজ্জাত, এর পরিণতি তোমাকে ভোগ করতে হবে।’
পরে কিন স্বীকার করেন, ওই ঘটনার পর অনেকদিন পর্যন্ত তিনি ভয়ে কাঁধের ওপর তাকিয়ে হাঁটতেন এবং প্রতিশ্রুতি ভাঙার জন্য খারাপও লাগত। তবে তাঁর কোনো অনুশোচনা ছিল না, কারণ তিনি ম্যানইউতে গিয়ে ক্লাব ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক হয়ে ওঠেন।
বছর কয়েক পর, টেলিভিশনে এক প্যানেল আলোচনায় কিনের পাশে বসে ডালগ্লিশ নিজেই স্বীকার করেছিলেন—কিন আসলে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলেন।
ইমানুয়েল পেতি
১৯৯৭ সালের গ্রীষ্মে ইমানুয়েল পেতি টটেনহ্যামের সঙ্গে সম্ভাব্য ট্রান্সফার নিয়ে আলোচনা করতে লন্ডনে উড়ে আসেন। তবে ফরাসি তারকা পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন না প্রস্তাবিত চুক্তি নিয়ে, তাই কিছুটা সময় চান ভেবে দেখার জন্য।
কিন্তু হোটেলে ফেরার বদলে, টটেনহ্যামের ট্যাক্সিভাড়ায় চড়ে পেতি সোজা চলে যান আর্সেন ওয়েঙ্গারের বাড়িতে—সাবেক মোনাকো বসের সঙ্গে হাইবারিতে পুনর্মিলনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে।
পরে পেতি বলেন,
‘আর্সেনাল আমাদের সবাইকে সেখানে নিয়ে যায়, কারণ তারা সবকিছু গোপন রাখতে চেয়েছিল। তাদের প্রস্তাব টটেনহ্যামের তুলনায় অনেক ভালো ছিল এবং আমি সত্যিই আবার আর্সেনের অধীনে খেলতে চাইছিলাম। তিনি আমাকে অন্যভাবে দেখেছিলেন, একজন মানুষ হিসেবে। আর (ভাইস-চেয়ারম্যান) ডেভিড ডেইনও খুব ভদ্র আচরণ করেছিলেন। আমি তাদের আগ্রহ অনুভব করছিলাম এবং যে প্রজেক্ট তারা সামনে রেখেছিল তা আমাকে উত্তেজিত করেছিল, বিশেষ করে যেসব খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলতে যাচ্ছিলাম।’
‘তিন ঘণ্টা পর আমি বললাম, হ্যাঁ, আমি আপনাদের জন্য স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত।’ সিদ্ধান্তটি দারুণ প্রমাণিত হয়—কারণ প্রথম মৌসুমেই পেতি আর্সেনালকে ঘরোয়া ডাবল জেতাতে সাহায্য করেন।
রোনালদিনহো
২০০৩ সালের গ্রীষ্মে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড রোনালদিনহোকে দলে টানতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিল। ‘সব সংখ্যাই মিলে গিয়েছিল’, বলেছিলেন ইউনাইটেডের সাবেক সিইও ডেভিড গিল।
রোনালদিনহো নিজেও ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে যেতে রাজি ছিলেন, পরে প্রকাশ করেন—চুক্তি সম্পন্ন হতে আর ৪৮ ঘণ্টাও বাকি ছিল না। এক ফোনকল বদলে দেয় সবকিছু—সান্দ্রো রোসেলের কাছ থেকে।
রোনালদিনহোর সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক ছিল সাবেক নাইকি নির্বাহী রোসেলের, যিনি তখনই হুয়ান লাপোর্তাকে বার্সেলোনার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে সাহায্য করেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণায় রোসেল-লাপোর্তা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তারা ম্যানইউ থেকে ডেভিড বেকহ্যামকে স্বাক্ষর করাবেন। কিন্তু বেকহ্যাম চির প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদে চলে গেলে, তারা দৃষ্টি ঘোরায় রোনালদিনহোর দিকে।
রোনালদিনহো ব্যাখ্যা করেছিলেন,
‘ইউনাইটেডের সঙ্গে চুক্তি কেবল কিছু খুঁটিনাটি বিষয় বাকি ছিল, তখনই রোসেল ফোন করে বললেন তারা নির্বাচন জিততে চলেছেন। আর রোসেল আমাকে অনেক আগেই জিজ্ঞেস করেছিলেন: আমি যদি বার্সার প্রেসিডেন্ট হই, তুমি আসবে তো? আমি হ্যাঁ বলেছিলাম।’
ফলাফল—রোনালদিনহো গেলেন কাম্প ন্যুয়ে। ঠিক যেমনটা গিল আশঙ্কা করেছিলেন, একবার বার্সেলোনা দৌড়ে ঢুকলে সব শেষ,
‘আমার মনে হয়েছিল যদি বার্সেলোনা না থাকত তবে আমরা তাকে পেয়ে যেতাম, কারণ প্রায় সব ডিলই হয়ে গিয়েছিল।’
আরও যোগ করেন,
‘ম্যানইউর সাফল্যের প্রতি সব সম্মান রেখেও বলছি, ওরা ছিল তার প্রথম পছন্দ। এটা আমাদের দোষ ছিল না। আসলেই বার্সেলোনা চলে এসেছিল। আমরা কাছাকাছি ছিলাম, কিন্তু সিগারটা পেলাম না।’
আরও পড়ুন
সিধুকে পেছনে ফেলে রেকর্ড গড়লেন ব্রিটজকে |
![]() |
জন ওবি মিকেল
জন ওবি মিকেল একবার বলেছিলেন লিন থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড হয়ে চেলসিতে তাঁর যাওয়া ‘সিনেমার মতো’—আর সেটা কোনো বাড়াবাড়ি নয়।
২০০৫ সালের ২৯ এপ্রিল ইউনাইটেড ঘোষণা করে তারা লিন থেকে মিকেলকে ৪ মিলিয়ন পাউন্ডে কিনে নিয়েছে এবং পরের বছরের জানুয়ারিতে তিনি ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আসবেন। পরে চেলসি অভিযোগ তোলে, তারা আগেই মিকেল ও তাঁর প্রতিনিধিদের সঙ্গে চুক্তি করেছিল, এমনকি লিনে যোগ দেওয়াটাও চেলসির পরিকল্পনার অংশ ছিল ভবিষ্যতে তাঁকে দলে ভেড়ানোর জন্য।
শুরু হয় পাল্টাপাল্টি দাবি-দাওয়া। এক পর্যায়ে মিকেল আসলেই গায়েব হয়ে যান—গুজব ছড়ায় চেলসি তাঁকে অপহরণ করেছে। পরে তিনি ব্যাখ্যা দেন,
‘আমি কেবল জনসমক্ষে আসিনি, যাতে কেউ আমার অবস্থান জানতে না পারে। কিন্তু নরওয়েতে পাবলিক ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল—যদি কেউ আমাকে দেখে, পুলিশকে খবর দিতে হবে। তাই আমাদের লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল। অবশ্যই, ইউনাইটেড আমাকে খুঁজছিল, লিন-ও তাই। সময়টা ছিল সত্যিই কঠিন।’
শেষ পর্যন্ত তিন ক্লাব একসঙ্গে বসে সমাধান করে। চেলসি ১৬ মিলিয়ন পাউন্ড দেয়, যার ১২ মিলিয়ন যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হাতে।
রবিনহো
ম্যানচেস্টার সিটির আবুধাবি-ভিত্তিক মালিকরা ২০০৮ সালে বাজারে একটি বড়সড় সাইনিং করতে চেয়েছিলেন, আর রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান তারকা রবিনহো তাতে দারুণ ফিট ছিলেন। বার্নাব্যুয়ে উপেক্ষিত রবিনহো জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি প্রিমিয়ার লিগে যেতে চান, আর সাবেক ব্রাজিল কোচ লুইজ ফেলিপে স্কোলারির সঙ্গে চেলসিতে কাজ করার ব্যাপারেও ছিলেন উচ্ছ্বসিত।
কিন্তু দীর্ঘ আলোচনার পরও, রবিনহো চেলসির হয়ে নয়, বরং ৩২.৫ মিলিয়ন পাউন্ডে শেষ দিনে সিটিতে স্বাক্ষর করেন। নাটকীয় এই পরিবর্তনে নিজেও হতবাক হয়ে প্রথম সাক্ষাৎকারেই ভুল করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন ‘চেলসিতে যোগ দেওয়ায়।’
উইলিয়ান
এখানে একসঙ্গে দুই হাইজ্যাক! ২০১৩ সালের গ্রীষ্মে লিভারপুলই উইলিয়ানকে স্বাক্ষর করানোর দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল। কিন্তু হঠাৎ মনে হলো টটেনহ্যাম যেন দৌড়টা জিতে যাচ্ছে। শেষ মুহূর্তে চেলসি ঝাঁপিয়ে পড়ে। মালিক রোমান আব্রামোভিচ সরাসরি আনঝি মাখাচকালার মালিক সুলেইমান কেরিমভকে ফোন করে ৩২ মিলিয়ন পাউন্ডে ডিল পাকিয়ে ফেলেন, যখন উইলিয়ান স্পার্সের মেডিকেলের জন্য লন্ডনে ছিলেন।
‘এই হলো মেডিকেল কনট্রাক্টের আগে করার ঝুঁকি’, মন্তব্য করেছিলেন হাসিখুশি হোসে মরিনহো। ‘সবচেয়ে ভালো হলো গোপনে মেডিক্যাল করা।’
স্পার্স চেয়ারম্যান ড্যানিয়েল লেভি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন। দাবি উঠেছিল চেলসি নাকি শুধু প্রতিশোধ নিতে উইলিয়ানকে কাড়ল। তবে ব্লুজরা সেটা অস্বীকার করে বলেছিল, তারা বহুদিন ধরেই ব্রাজিলিয়ানকে ট্র্যাক করছিল।
দানি আলভেস
২০১৭ সালের গ্রীষ্মে ম্যানচেস্টার সিটি এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিল দানি আলভেসকে পাবে, সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল।
আলভেস বার্সেলোনায় গার্দিওলার সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন। কিন্তু বিয়ের সপ্তাহান্তেই হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদলে গোপনে পিএসজিতে স্বাক্ষর করেন, তখনও সিটি কর্মকর্তারা তাঁর আগমনের অপেক্ষায়! সিটি ক্ষুব্ধ হয়। জুভেন্টাসও ক্ষুব্ধ হয়, কারণ আলভেস বলেছিল সে গার্দিওলার সঙ্গে আবার কাজ করতে চায়। আলভেসের দাবি ছিল, এটি ছিল পারিবারিক সিদ্ধান্ত।
জর্জিনিও
ক্লাবটি ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। সিটি খেলোয়াড় আর নাপোলির সঙ্গে সব কিছু মিটিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে নাপোলি প্রেসিডেন্ট ডি লরেন্টিস কথার খেলাপ করে, জর্জিনিওকে মাউরিজিও সারির সঙ্গে চেলসিতে পাঠান।
ডি লরেন্টিস দাবি করেছিলেন জর্জিনিও নাকি লন্ডনেই থাকতে চেয়েছিল। তবে খেলোয়াড়ের এজেন্ট সরাসরি বলেন, ‘এটা ছিল নাপোলির সিদ্ধান্ত।’
আলেক্সিস সানচেজ
২০১৭ সালের গ্রীষ্মে আলেক্সিস সানচেজ প্রায় ম্যানচেস্টার সিটিতে স্বাক্ষর করেই ফেলেছিলেন। জানুয়ারিতে যখন আর্সেনাল তাঁকে বিক্রি করতে রাজি হয়, তখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ঢুকে পড়ে এবং তাঁকে প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকভোগী বানানোর প্রস্তাব দেয়।
সানচেজ পরে বলেন, টাকা নয়, বরং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ঐতিহাসিক ৭ নম্বর জার্সিই তাঁকে প্রলুব্ধ করেছিল,
‘আমি ভাবলাম, একজন চিলিয়ান খেলোয়াড় ইউনাইটেডে খেলছে, এর আগে যা হয়নি। আর সেই সাত নাম্বার, যেটা একদিন ক্যান্টোনা, বেকহ্যাম, রোনালদো পরেছিল—এটা ছিল স্বপ্ন।’
বাস্তবতা ছিল দুঃস্বপ্ন। তিন মৌসুমে তিনি মাত্র ৩ গোল করেছিলেন লিগে, আর ২০১৯ সালে ইন্টার মিলানে যোগ দেন।
এবারেচি এজে
চলতি মৌসুমে এবেরেচি এজের ট্রান্সফার কাহিনি যেন একেবারে সিনেমার মতো। টটেনহ্যাম ভেবেছিল ক্রিস্টাল প্যালেস থেকে এজেকে দলে টানা তাদের জন্য কেবল সময়ের ব্যাপার। তারা প্যালেসের সঙ্গে ট্রান্সফার ফি চূড়ান্ত করে ফেলেছিল, খেলোয়াড়ের সঙ্গেও ব্যক্তিগত শর্তাবলি মিটে গিয়েছিল। চেয়ারম্যান ড্যানিয়েল লেভিও নিশ্চিত ছিলেন , এজেকে স্পার্সের জার্সিতেই দেখা যাবে।
গল্পটা অন্যদিকে মোড় নেয়। কাই হাভার্টজের হাঁটুর চোটের খবর বের হতেই আর্সেনাল হঠাৎ করে এজেকে দলে ভেড়ানোর উদ্যোগ নেয়। ছোটবেলা থেকেই আর্সেনালের সমর্থক এজে, প্রিয় ক্লাবের ডাক পেয়ে আর পেছনে তাকাননি।
ফলে সব দিক দিয়েই এগিয়ে থেকেও টটেনহ্যাম শেষ মুহূর্তে এজেকে হারায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্সেনালের কাছে। আর এভাবেই উত্তর লন্ডনে জন্ম নেয় নতুন এক ট্রান্সফার নাটক, যা টটেনহ্যামের জন্য বিব্রতকর হলেও আর্সেনাল সমর্থকদের জন্য ছিল উচ্ছ্বাসে ভরপুর। এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারকে পেতে ৬৭.৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করতে হয়েছে আর্সেনালকে।
২৭ আগস্ট ২০২৫, ৫:৪১ পিএম
২৭ আগস্ট ২০২৫, ২:১৮ পিএম
ম্যাচের ডেডলক ভাঙতে বাংলাদেশের সময় লাগল ৩৮ মিনিট। বিরতিতে যাওয়ার আগে দুই দল গোল করল আরও একটি করে। ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় নেপাল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে লাল সবুজের মেয়েদের বিপক্ষে লড়াইটুকু জমাতে পারেনি তারা। সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের কাছে হারে ৪-১ গোলে।
দারুণ এই জয়ের পর বাংলাদেশ দলের কোচ মাহবুবুর রহমান লিটুর আছে আক্ষেপ। ক্লিনশিট রাখা গেলে আরও বেশি খুশি হতেন তিনি। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে লিটুর মুখে চওড়া হাসি। শিষ্যদের প্রশংসার পাশাপাশি কিছুটা আক্ষেপ ঝরল লিটুর কণ্ঠে,
‘মেয়েরা মোটামুটি ভালো খেলার চেষ্টা করেছে। তারপরও আমি বলব কিছু ভুল ছিল। তবে এটা খেলারই অংশ। আলহামদুলিল্লাহ আমরা ৪-১ গোলে জিতেছি। ম্যাচটা ক্লিনশিট রাখতে পারলে ভালো হতো।’
আরও পড়ুন
‘চেয়ার-খেলা’ পাকিস্তান ক্রিকেটের বড় সমস্যা |
![]() |
ক্লিনশিট রাখতে না পারায় বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগমের দায় নেই খুব একটা। ডিফেন্ডারদের ভুলের সুযোগ নিয়ে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বাংলাদেশের জাল কাঁপান নেপালের অধিনায়ক ভূমিকা বুদাথোকি। ম্যাচে ছোট-খাটো ভুল হলেও কোচ লিটু যেন মনে করিয়ে দিলেন এটা অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ের খেলা। শেখার সময়টাতে ভুল হলে সমস্যা দেখছেন না তিনি,
‘আমাদের সামনে আরও সময় আছে। ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলে চেষ্টা করব যাতে ভুল না হয়। তবে এই পর্যায়ের খেলায় মেয়েরা ভুল করবে স্বাভাবিক, ভুল থেকেই তারা শিখবে।’
চলমান সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় খেলায় ভারতের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারার পর নেপালের বিপক্ষে টানা দুটি ম্যাচ জিতে নিল বাংলাদেশ। তার আগে ভুটানের বিপক্ষে জয়ের ব্যবধান ছিল ৩-১। আগামী শুক্রবার এই প্রতিযোগিতায় নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে বাংলাদেশ খেলবে ভুটানের বিপক্ষে। আর শেষ ম্যাচে ৩১ আগস্ট বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত।
সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান স্পোর্টওয়ার্কজ এর চ্যানেল হ্যাকিংয়ের শিকার হলে আজ খেলা দেখায় সাফের ইউটিউব চ্যানেল। নির্ধারিত সময়ে খেলা সরাসরি সম্প্রচার করতে পারেনি তারা। ২৪ মিনিটের পর লাইভ দেখা যায় বাংলাদেশ ও নেপাল ম্যাচ। খেলা দেখায় সমর্থকদের জন্য কিছুটা সমস্যা তৈরি হলেও কাঙ্ক্ষিত জয় ঠিকই পেয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
সুরভী আকন্দ প্রীতির দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে ফিরতে দেখায় নেপালকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ। সুরভীর হ্যাটট্রিক ছাড়াও গোল পেয়েছেন থুইনুইয়ে মারমা। প্রতিযোগিতায় প্রথম দেখায় নেপালকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল কোচ মাহবুবুর রহমান লিটুর দল।
আজ ভুটানের থিম্পুর চাংলিনিথাং স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই বল নিয়ন্ত্রণে রেখে নেপালের রক্ষণে বার বার হানা দিতে থাকে বাংলাদেশ। তবে সাফল্য পেতে অপেক্ষা করতে হয় ৩৯ মিনিট পর্যন্ত।
৩২ মিনিটে প্রীতির রক্ষণছেঁড়া পাস, নেপালের গোলরক্ষক লাক্সমি ওলি এগিয়ে আসার আগে বলের নাগাল পাননি আলপি। তিন মিনিট পর আলপির ক্রসে এবার গোলমুখের সামনে বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি প্রীতি।
আরও পড়ুন
রিয়ালের পর লেভারকুসেনে ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন ভাসকেজের |
![]() |
৩৭ মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে প্রতিপক্ষের কয়েকজনকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন প্রীতি। এই ফরোয়ার্ডের কাছ থেকে বল পেয়ে অবশ্য নেপালের গোলরক্ষকের শরীর বরারবর মারেন আলপি। তবে পরের মিনিটে আর ভুল করেননি থুইনুইয়ে। কয়েকজনের বাধা পেরিয়ে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে সোজা নিচু শটে নেন, লাক্সমির পায়ের নিচ নিয়ে বল জড়ায় জাল। খেলায় ১-০ গোলে লিড নেয় বাংলাদেশ।
৪০ মিনিটে বাংলাদেশের রক্ষণ ফাঁকি দিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে যান নেপালের ইয়াম কুমারি, সামনে গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম। তবে বিপজ্জনক হওয়ার আগেই পেছন থেকে দৌড়ে দারুণ ট্যাকল করেন অর্পিতা। বিরতির আগেমুহূর্তে লিড দ্বিগুণ করেন প্রীতি। ৪৫ মিনিটে নেপালের দুই ডিফেন্ডার সামঝানা চান্দ ও মায়া শ্রেষ্ঠকে বোকা বানিয়ে প্রীতির পায়ে বল তুলে দেন মামনি চাকমা। বাম প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে চিপ শটে গোলরক্ষকের মাথার উপর দেয়ে জালে বল জড়ান প্রীতি।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের দুই মিনিটের মাথায় ডিফেন্ডারদের ভুলে গোল হজম করে বাংলাদেশ। ববিতা কার্কির কর্নার থেকে বল পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন আলপি। বক্সের সামনে বল পেয়ে সোজা গোলে শট নেন নেপালের ফরোয়ার্ড রাবিনা। সেটি সহজেই আটকান মমিতা খাতুন। তবে বল তখনও নিজেদের বক্সে, সেখান থেকে বল ক্লিয়ার করবেন এ নিয়ে দ্বিধা দেখা যায় বাংলাদেশের তিন ডিফেন্ডার সুরভী রানী, ক্রানুচিং মারমা ও অর্পিতার মধ্যে। সেই সময় দৌড়ে এসে গতিময় শটে লক্ষ্যভেদ করেন নেপালের অধিনায়ক ভূমিকা বুদাথোকি। শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় টিটুর দল।
৫০ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ হাতছাড়া করেন নেপালের অধিনায়ক। সামনে ছিলেন কেবল বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইয়ারজান, তবে ভূমিকা বল মারেন পোস্টের বাইরে দিয়ে। ৫৫ মিনিটে নেপালের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে প্রতিপক্ষের বিপদসীমায় ঢুকে পড়েন পূর্ণিমা মারমা, যদিও তার নেওয়া শট বাইরে দিয়ে যায়।
৬৭ মিনিটে আলপিকে তুলে কোচ রিয়াকে বদলি হিসেবে নামান কোচ টিটু। পরের মিনিটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারলেই গোল পেতে পারতেন পূর্ণিমা। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় প্রীতিও পড়েন নেপালি ডিফেন্ডারদের বাধার মুখে।
আরও পড়ুন
পুরোনো কোচকে নতুন করে ফেরাল আফগানিস্তান |
![]() |
এ সময় একের পর এক আক্রমণ শানায় বাংলাদেশ। টানা তিনটি কর্নারও আদায় করে নেয় দল। সবশেষটি থেকে গোলও আদায় করেন প্রীতি। ৭০ মিনিটে মামনি চাকমার কর্নার থেকে গোলমুখের সামনে আলতো টোকায় বল জালে জড়ান প্রীতি। নেপালের বিপক্ষে আগের ম্যাচেও গোল পেয়েছিলেন এই ফরোয়ার্ড।
৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর গোলের ক্ষুধা যেন বাংলাদেশকে আরও পেয়ে বসে। নেপালের ডিফেন্ডারদের ব্যস্ত সময় উপহার দেন বাংলাদেশের মেয়েরা। চাপ ধরে রেখে ৮৬ মিনিটের মাথায় ব্যবধান আরও বাড়ান প্রীতি। সেই সঙ্গে ম্যাচে নিজের হ্যাটট্রিকও পূর্ণ করেন তিনি। ডানপ্রান্ত দিয়ে ঢুকে নেপালের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে প্রীতির কাছে পাস দেন পূর্ণিমা। গোলমুখের সামনে থেকে সহজেই জাল কাঁপান প্রীতি। এই নিয়ে টুর্নামেন্টে ৫ গোল হলো তার। শেষ পর্যন্ত ৪-১ গোলের দারুণ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশের মেয়েরা।
এই জয়ে চার ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৯, টেবিলের দুইয়ে তারা। এক ম্যাচ কম খেলে শীর্ষে থাকা ভারতের অর্জন সমান ৯ পয়েন্ট। সন্ধ্যা ৬টায় তাদের মোকাবিলা করবে ভুটান। চার ম্যাচ শেষে তিন হার এবং এক জয়ে পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে নেপালের। এখন পর্যন্ত কোনো পয়েন্ট পায়নি স্বাগতিক ভুটান।
প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের পরের ম্যাচ আগামী পরশু, প্রতিপক্ষ ভুটান। যাদেরকে প্রথম দেখায় ৩-১ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
রিয়ালে মাদ্রিদের সিনিয়র দলে যখন অভিষেক হয়, তখন ক্যারিয়ারে ছিল না বড় অর্জন। তবে স্প্যানিশ ক্লাবটিতে লম্বা এক অধ্যায়ে অসংখ্য শিরোপা জিতে লুকাস ভাজকেজ নাম লিখিয়েছেন লেভারকুসেনে। অভিজ্ঞ এই ফুটবলারের আশা, রিয়ালের ধারা বজায় রেখে জার্মানিতেও ইতিহাস গড়তে পারবেন তিনি।
চলতি বছরের ক্লাব বিশ্বকাপে খেলে রিয়ালকে বিদায় জানান ভাজকেজ। তার আগে ক্লাবটির হয়ে ৪০০-এর বেশি ম্যাচ খেলে ১০ বছরের ক্যারিয়ারে ২৩টি শিরোপা জিতেছেন তিনি, যার মধ্যে রয়েছে চারটি লা লিগা ও পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।
লেভারকুসেনে যোগ দিয়ে ভাজকেজ তাই শুনিয়েছেন বড় স্বপ্নের কথাই।
“আমি বায়ার লেভারকুসেনে যাত্রা শুরু করার জন্য মুখিয়ে আছি। আমার সাবেক কোচ কোচ জাবি আলোনসো এবং আমার সাবেক সতীর্থ দানি কারভাহাল এই ক্লাবের ব্যাপার অনেক ইতিবাচক কথা বলেছে। তাছাড়া ম্যানেজমেন্টের সাথে আলোচনার পর বুঝতে পেরেছি, এই ক্লাবটি জেতার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আর তাদের এই মানসিকতা আমার লক্ষ্য ও প্রত্যাশার সঙ্গে শতভাগ মিলে যায়।”
আরও পড়ুন
এই সিনারই টেনিস ছেড়ে দেওয়ার কথা দেন মা-বাবাকে |
![]() |
রিয়ালের যুব একাডেমিতে বেড়ে ওঠা ভাসকেজ ক্লাবের সিনিয়র দলে অভিষেকের আগে এক মৌসুম ধারে খেলেন স্প্যানিশ ক্লাব এস্পানিওলে। এরপর ২০১৫ সালে ফিরে আসেন চেনা ঠিকানায়। জিনেদিন জিদানের কোচিংয়ে রিয়ালের টানা তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন তিনি। তবে গত দুই মৌসুম ধরে ক্রমেই দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েন তিনি। মূলত উইঙ্গার হলেও খেলতে হয়েছে ডিফেন্ডার হিসেবে।
এবার তাই নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন লেভারকুসেনে, যারা গত মৌসুমে বুন্দেসলিগায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিল। আর এর আগের মৌসুমে রিয়ালের বর্তমান কোচ আলোনসোর অধীনে তারা লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়। তার বিদায়ের পর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন এরিক টেন হাগ। চলতি মৌসুমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হফেনহাইমের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে লেভারকুসেন।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের গত মৌসুমে ১৫তম হওয়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নতুন আসরের শুরুটাও হয়েছে বেশ বাজে। প্রথম দুই ম্যাচে জয় নেই তাদের। মাত্র ১ পয়েন্ট নিয়ে এখন ১৬ নম্বরে ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি।
দলের এমন অবস্থায় প্রধান কোচ রুবেন আমোরি মেনে নিয়েছেন, ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ বা ওই ধরনের ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টে খেলার মতো অবস্থায় নেই ইউনাইটেড।
গত মৌসুমের লিগে ১৫তম হওয়ায় চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরোপা লিগ বা কনফারেন্স লিগে খেলার সুযোগ পায়নি ইউনাইটেড। তবু গত আসরের ইউরোপা লিগের ফাইনাল জিতে চ্যাম্পিয়নস লিগের টিকেট পাওয়ার হাতছানি ছিল তাদের।
আরও পড়ুন
চ্যানেল হ্যাকড, সাফে বাংলাদেশ-নেপাল লড়াই দেখার বিকল্প উপায় |
![]() |
কিন্তু টটেনহ্যাম হটস্পারের কাছে হেরে সেটিও কাজে লাগাতে পারেনি আমোরির দল। আর এবার নতুন মৌসুমে প্রথম ম্যাচে আর্সেনালের কাছে হেরেছে তারা। পরের ম্যাচে ফুলহ্যামের বিপক্ষে আত্মঘাতী গোলের সুবিধা নিয়েও জিততে পারেনি তারা।
এবার ইংলিশ লিগ কাপের (ইএফএল) ম্যাচে বুধবার রাতে গ্রিমসবি টাউনের মুখোমুখি হবে ইউনাইটেড। ম্যাচের আগে আমোরি মেনে নিলেন, ইউরোপে খেলার অবস্থা নেই তার দলের।
“আমার মনে হয়, আমরা এখনও ইউরোপে খেলার জন্য প্রস্তুত নই। এটা আমার ভাবনা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কঠিন সব ম্যাচ, এরপর প্রিমিয়ার লিগের লড়াই, এসবের জন্য দল গড়ে তুলতে সময় লাগবে আমাদের।”
“ফুটবলারদের আগে লড়াই করতে হবে দলে জায়গার জন্য। এরপর সবকিছু বদলাতে পারে।”
ভুটানে চলমান মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৭ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের খেলাগুলো সরাসরি সম্প্রচার করে আসছিল সহযোগী প্রতিষ্ঠান স্পোর্টওয়ার্কজ। তবে আজ সকালে হ্যাকিংয়ের শিকার হয় তাদের ইউটিউব চ্যানেলটি।
এক বিবৃতিতে সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ) জানিয়েছে, হ্যাকারদের থেকে চ্যানেল এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি; তবে খেলা সম্প্রচারের বিকল্প উপায় বের করেছে তারা। নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলেই খেলা সরাসরি সম্প্রদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাফ। এই লিঙ্কে প্রবেশ করলেই দেখা যাবে খেলা।
আরও পড়ুন
হ্যাকিংয়ের শিকার সাফ সম্প্রচারকারী চ্যানেল, বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ দেখানো নিয়ে শঙ্কা |
![]() |
থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ খেলবে নেপালের বিপক্ষে। একই ভেন্যুতে সন্ধ্যা ৬টায় ভারতের মোকাবিলা করবে স্বাগতিক ভুটান। দুটি ম্যাচই সাফের ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি দেখানো হবে।
নারী সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ প্রতিযোগিতাটি চলছে রাউন্ড রবিন লিগ ভিত্তিতে। এখন পর্যন্ত প্রত্যেক দল তিনটি করে ম্যাচ খেলেছে। ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে ভারত। দুই ম্যাচে জয় ও একটিতে হেরে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে দুইয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা। তিন থাকা নেপালের পয়েন্ট তিন। আর একটি ম্যাচও জিততে না পারা ভুটান রয়েছে পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচে।
৬ ম্যাচ শেষে পয়েন্টে টেবিলের শীর্ষ দল জিতবে শিরোপা। সাফের সব প্রতিযোগিতায় ট্রফি থাকলেও এই একটি টুর্নামেন্টে এখনো চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা।
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৪ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
১১ দিন আগে
১১ দিন আগে
১১ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে