আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের মাঝেও অস্বস্তি হয়ে এসেছিল নাজমুল হোসেন শান্তর চোট। ফিল্ডিংও করতে পারেননি তাই। আর তৃতীয় ম্যাচের আগে এসেছে দুঃসংবাদ, কুঁচকির চোটে শেষ পর্যন্ত সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কা স্রেফ কাপ্তানকে হারানোই নয়, দুই ম্যাচেই দলের সেরা ব্যাটারও যে ছিলেন শান্ত।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২৩৫ রান তাড়ায় নাটকীয় ব্যাটিং ধসে মাত্র ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। তবে ওই ম্যাচে শান্তর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এক পর্যায়ে ২ উইকেটে ১২০ রান ছিল সফরকারীদের। মূলত তার বিদায়ের পর শুরু হয় বিপর্যয়। সেদিন ফিফটি মিস করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে শান্ত খেলেন ৭৭ রানের দারুণ এক ইনিংস। বাংলাদেশের লড়াকু স্কোর গড়া ও ম্যাচ জেতার পেছনে যার ছিল বড় অবদান। ম্যাচ সেরাও হন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।
আরও পড়ুন
মুস্তাফিজ-তাসকিনের তোপ সামলে নবির ব্যাটে চড়ে আফগানিস্তানের লড়াকু পুঁজি |
![]() |
চলতি বছর ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানস্কোরার শান্ত। আর এই কারণেই দারুণ ফর্মে থাকা অবস্থায় সিরিজের শেষ ম্যাচে তাকে না পাওয়াটা বাংলাদেশকে চাপে ফেলবে কিছুটা হলেও। কারণ, শীর্ষ ব্যাটারদের কেউই যে নেই ফর্মে। আগেই সিরিজ শেষ হয়ে গেছে মুশফিকুর রহিমের। টানা দুই ম্যাচে মিডল অর্ডার দলকে বিপদে ফেলেছে বেশ।
ফলে শান্ত না থাকায় ব্যাটিংয়ে অনেকটাই শক্তি কমে গেল বাংলদেশের। মুশফিকুর রহিম চোটে পড়ার পর তার জায়গায় দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে আসেন জাকের আলি অনিক। ফলে এই মুহূর্তে স্কোয়াডে বাড়তি একমাত্র ব্যাটার আছেন কেবল ওপেনার জাকির হাসান। বাঁহাতি এই ব্যাটারের তৃতীয় ম্যাচ খেলা তাই নিশ্চিতই। তবে তানজিদ হাসান ও সৌম্য সরকারের ওপেনিং করার সম্ভাবনাই প্রবল। সেক্ষেত্রে তিনে দেখা যেতে পারে জাকিরকে।
এটি ছাড়া দ্বিতীয় ম্যাচের দল থেকে একাদশে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। একাদশে এসেই আগের ম্যাচে দুর্দান্ত করেছেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। স্পশালিস্ট বোলারদের মধ্যে তিন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম দুই ম্যাচেই ভালো করেছেন। আর স্কোয়াডে বাড়তি ব্যাটার না থাকায় ব্যাটিং অর্ডারে কারও জায়গা হারানোর সুযোগই নেই।
আরও পড়ুন
আগে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, নাহিদ রানার অভিষেক |
![]() |
বাংলাদেশ সম্ভাব্য একদশ :
মেহেদি হাসান মিরাজ (অধিনায়ক),তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার, জাকির হাসান, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলি অনিক, তাসকিন আহমেদ, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।
২৬ জুন ২০২৫, ৭:০৪ পিএম
২৫ জুন ২০২৫, ৭:২৩ পিএম
একদিন আগেই বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার রজত জয়ন্তী উৎসব করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিশাল কেক কেটে টেস্ট মর্যাদার রজত জয়ন্তী উৎসবে উন্মোচিত হয়েছে টেস্ট ক্রিকেটারদের অনার্স বোর্ড। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা করেছেন অতিথিরা। তবে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের ওই উৎসব থেকে টনিক নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। গল টেস্টে বীরত্বপূর্ণ ড্র ফিকে হয়ে যাচ্ছে কলম্বোতে।
কলম্বোর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ দলের বিপর্যস্ত অতীতটাই যেনো আর একবার ফিরে পেতে যাচ্ছে শান্ত’র দল। ইতোপূর্বে এই ভেন্যুতে ৩টি টেস্টের প্রতিটিতেই বড় হারকে নিয়তি বলে মেনে নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ২০০১ সালে ইনিংস ও ১৩৭ রানে, ২০০২ সালে ২৮৮ রানে এবং ২০০৭ সালে ইনিংসও ২৩৪ রানে হারের সেই কষ্টটা এবারো বুঝি ভুলিয়ে দিতে পারছে না বাংলাদেশ দল। তৃতীয় দিনে এসে টেস্টের গতিপথ প্রায় নির্ধারিত হয়ে গেছে। তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ১১৫/৬।
এই ভেন্যুতে এখন আরও একবার ইনিংস হারের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। ইনিংস হার এড়ানোর জন্য এখন দরকার ৯৭ রান। যেভাবে বল ঘুরতে শুরু করেছে, শ্রীলঙ্কার তিন স্পিনার যেভাবে টুটি চেপে ধরেছে, তাতে আপাতদৃষ্টিতে ইনিংস হার এড়ানোটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এদিন দু দলের স্পিনারদের ছোবলে ২৮৩ রানে পড়েছে ১৪টি উইকেট। ২৯০/২ স্কোর নিয়ে এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কা থেমেছে ৪৫৮/১০-এ। এই দিন শ্রীলঙ্কার ৮ উইকেট ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ ১৬৮ রানে। দিনের প্রথম ঘন্টায় ৫২ রান যোগ করে ৩ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার বড় লিডের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ বোলাররা। লাঞ্চের পর ৭০ মিনিটে স্কোরশিটে ৫৭ উঠতে শ্রীলঙ্কা হারিয়েছে শেষ ৪ উইকেট।
দিনের শুরুটা করেছিলেন তাইজুল ইসলাম। দিনের ৬ষ্ঠ ওভারে আগের দিনের সেঞ্চুরিয়ান পাথুম নিশাঙ্কাকে কাভারে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন তিনি। গল-এ ১৮৩’র পর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে থেমেছেন এই সেঞ্চুরিয়ান ১৫৮-তে। ধনঞ্জয়াকে সেট হওয়ার আগে ফিরিয়ে দিয়েছেন তাইজুল। আর্ম বলে ধনঞ্জয়াকে (১০) করেছেন এলবিডাব্লুউ।
লাঞ্চের পর থারিন্দু (১০) এবং আসিথাকে শিকারে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৭তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট শিকারের মাইলস্টোন পূর্ণ করেছেন (৪২.৫-৪-১৩১-৫)।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এমন কৃতিত্ব তাইজুলের জন্য দ্বিতীয়বার। আর দুবারই শ্রীলঙ্কার মাটিতে। ২০২১ সালে পাল্লেকেলের (৫/৭২) পর এবার সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাবে পেলেন ইনিংসে পাঁচ উইকেটের দেখা।
গল টেস্টে নিজেকে চেনানো অফ স্পিনার নাঈম হাসানও এদিন দারুণ বল ঘুরিয়েছেন। আগের দিন চান্দিমালের শিকারী নাঈম টেস্টের তৃতীয় দিন শিকার করেছেন ২ উইকেট। সেঞ্চুরির পথে সওয়ার কুশল মেন্ডিজকে (৮৭ বলে ৮ চার, ২ ছক্কায় ৮৪) ফাঁদে ফেলে স্লিপে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন। দিনুশাকে (১১) করেছেন বোল্ড। টেস্টে ফেরাটা সুখকর হয়নি মিরাজের। ৭৫ রান খরচায় উইকেটহীন কাটিয়েছেন এই অফ স্পিনার।
ইনিংস হার এড়াতে হলে করতে হবে ২২২। এই টার্গেটটা সম্ভবত মাথায় না রেখেই তৃতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে বাংলাদেশ দল। তার প্রতিফলনই ছিল ব্যাটিংয়ে। আগের ৭টি টেস্টে ৩৯-এর বেশি করতে না পারা এনামুল হক বিজয় এদিন এসেই ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং শুরু করেছেন। এমন মেজাজটা ধরতে পেরে আসিথা দিয়েছিলেন বাউন্সার। সেই বাউন্সারের জবাব হুকে দিতে যেয়ে নিজের মৃত্যু ডেকে এনেছেন বিজয়। দিয়ে এসেছেন শর্ট লেগে ক্যাচ (১৯ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ১৯)।
৩১ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপের ব্যাটিং পার্টনার সাদমান বাঁহাতি স্পিনার প্রবথ জয়সুরিয়াকে কাভারে খেলতে যেয়ে ক্যাচে থেমেছেন (২৪ বলে ১২)। শ্রীলঙ্কা সিরিজে আগের তিনটি ইনিংসের তিনটিতেই মুমিনুল দিয়ে এসেছেন উইকেট। চতুর্থ ইনিংসেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অফ স্পিনার ধনঞ্জয়ার বলে স্লিপে দিয়েছেন ক্যাচ (৪৮ বলে ১৯)।
স্পিনের বিপক্ষে বরাবরই দক্ষ মুশফিকুর রহিম প্রবথ জয়সুরিয়ার টার্ন অনুমান করতে পারেননি। ব্যাকফুটে ডিফেন্স করতে যেয়ে হয়েছেন বোল্ড (৫৩ বলে ২৬)। যখন তখন দিনের খেলা শেষ হবে, সেই হিসাবটা মাথায় ছিল না মিরাজের। থারিন্দুর বলে এলবিডাব্লুউতে (১৬ বলে ১১) কাটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে দিয়ে আম্পায়াররা প্রকারান্তরে তা জানিয়ে দিয়েছেন মিরাজকে।
শ্রীলঙ্কার তিন স্পিনার প্রবথ (১৫-২-৪৭-২), ধনঞ্জয়া (৪-১-১৩-২), থারিন্দু (২.৪-০-১০-১) যেভাবে বল ঘোরাচ্ছেন, তাতে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন পার করাটা হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
গুরুত্বপূর্ণ ছাড়া এখন নিউজিল্যান্ড দলের অন্য কিছু সিরিজেই অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন কেন উইলিয়ামসন। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী মাসে জিম্বাবুয়েতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলের বাইরে রাখা হয়েছে তারকা এই ব্যাটারকে।
কিউদের নতুন প্রধান কোচ রব ওয়াল্টার ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই ত্রিদেশীয় সিরিজকে কাজে লাগাতে চাইছেন। সেই লক্ষ্যে ঘোষিত স্কোয়াডে দলে জায়গা মিলেছে অ্যাডাম মিল্নে ও বেভন জ্যাকবসের।
উইলিয়ামসন বর্তমানে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে মিডলসেক্সকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এছাড়াও তিনি দ্য হান্ড্রেডে লন্ডন স্পিরিটের হয়ে খেলবেন, তাই নিউজিল্যান্ডের এই সফরে তিনি থাকছেন না। এর আগে মিস করেন পাকিস্তানের সাথে সাদা বলের সিরিজও।
আর গতিময় পেসার লকি ফার্গুসনকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। আরেক ডানহাতি পেসার কাইল জেমিসন প্রথম সন্তানের অপেক্ষায় আছেন, তাই তিনি দলের বাইরে আছেন। অন্য পেসার বেন সিয়ারস সাইড ইনজুরিতে ভুগছেন।
মিল্নে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর এই প্রথমবার জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টিতে ফিরলেন। টেক্সাস সুপার কিংসের হয়ে চলমান মেজর লিগ ক্রিকেটে ৪ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে দারুণ ছন্দে আছেন অভিজ্ঞ এই পেসার। আর জ্যাকবস প্রথম জাতীয় দলে ডাক পান গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে। তিনি আইপিএলের নিলামে গত বছর দল পান মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে।
আইপিএলের কারণে পাকিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ মিস করা গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র ও অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনাররা দলে ফিরেছেন। তবে ওপেনার ডেভন কনওয়ে দলে জায়গা পাননি।
ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ম্যাচ আগামী ১৬ জুলাই হারারেতে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। তবে ওই সময় মেজর লিগ ক্রিকেটের ফাইনাল থাকায়, নিউজিল্যান্ড স্কোয়াডে থাকা কেউ যদি সময়মতো জিম্বাবুয়েতে পৌঁছাতে না পারেন, তাহলে পরে তার বিকল্প খেলোয়াড় স্কোয়াডে ডাকা হবে বলে জানানো হয়েছে।
যে পিচে প্রথম দিন ব্যাটিংয়ে ধুঁকেছে বাংলাদেশ, সেই পিচেই দ্বিতীয় দিন শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডাররা করেছে স্বাচ্ছন্দে ব্যাটিং! মিরাজ-এবাদতের প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশ দলের বোলিং শক্তি অনেক বেড়ে যাওয়ার কথা। তবে কলম্বোয় এই দিন আতঙ্ক ছড়াতে পারেনি বাংলাদেশ বোলররা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের একটি পার্টনারশিপও সেঞ্চুরির মুখ দেখেনি, সেখানে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় জুটি যোগ করেছে ১৯৪ রান। লেজের জোরে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ২৪৭/১০ স্কোর। এই স্কোর যে যথেষ্ট নয়, ব্যাটিং বান্ধব হয়ে ওঠা সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠের পিচ সে কথাই বলছে। দ্বিতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ২৯০/২। ইতোমধ্যে নিয়েছে স্বাগতিক দল ৪৩ রানের লিড। যেভাবে স্বাচ্ছন্দে ব্যাট করছে শ্রীলঙ্কা, তাতে স্বাগতিক দলের রান পাহাড়ে বাংলাদেশের চাপা পড়ার শঙ্কাই প্রবল।
প্রথম দিন লেজের জোরে দিন পার করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনেও টেল এন্ডাররা টপ অর্ডারদের দিয়েছেন শিক্ষা। আগের দিনের ২২০/৮-এর সঙ্গে এদিন বাংলাদেশের শেষ দুই জুটি যোগ করেছে ২৭ রান। খেলেছে তারা ৫১টি বল। দিনের চতুর্থ ওভারে পেসার আসিথা ফার্নান্দোর লো বাউন্সি ডেলিভারিতে এবাদত এলবিডাব্লুউতে থেমেছেন ৮ রানে। দিনের নবম ওভারে বাঁ হাতি স্পিনার দিনুশার আর্ম বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন তাইজুল। ৬০ বলে ৩৩টি মূল্যবান রানের ইনিংসে ৫টি বাউন্ডারি মেরেছেন তাইজুল। সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাবে অনুষ্ঠানরত টেস্টে অভিষিক্ত সোনাল দিনুশা পেয়েছেন ৩ উইকেট (৩/২২)। পেসার আসিথা ফার্নান্দোরও শিকার ৩ উইকেট (৩/৫১)।
ওভারপ্রতি ৩.১০ গড়ে বাংলাদেশের স্কোরকে দ্রুত টপকে যেতে দরকার স্ট্রাইক রেট বাড়িয়ে নেয়া। ইনিংসের শুরু থেকে সেদিকে চোখ রেখেছে শ্রীলঙ্কা টপ অর্ডাররা। দ্বিতীয় দিনে ওভারপ্রতি ৩.৭১ হারে রান তুলে দ্রুত লিড নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এবাদতকে কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারি দিয়ে ইনিংস শুরু করে ইতিবাচক ব্যাটিং প্রদর্শনীর আভাস দিয়েছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা। গল টেস্টে সেঞ্চুরির পর কলোম্বোতেও তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছেন এই ওপেনার। গল-এ মাত্র ১৭ রানের জন্য মিস করেছেন ডাবল পাথুম। সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দ্বিতীয় দিন শেষে ১৪৬ রানে অবিচ্ছিন্ন এই ওপেনারের চোখ এখন ডাবলের দিকে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ ধারাবাহিক চান্দিমাল এদিন কাঁটা পড়েছেন নার্ভাস নাইনটিজে। ৯৩ রানের মাথায় অফ স্পিনার নাঈম হাসানকে রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে বল উঠে গেছে শুন্যে, সহজেই তা গ্লাভসবন্দি করেছেন উইকেট কিপার লিটন। ৯০'র ঘরে এটি তার দ্বিতীয় ইনিংস। এর আগে ২০২২ সালে গল-এ পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯৪ রানে থেমেছেন। সেই ইনিংসে অবশ্য অবিচ্ছিন্ন ছিলেন তিনি। পার্টনারের অভাবে পূর্ণ হয়নি তার সেঞ্চুরি। তবে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার পরও পাথুম নিশাঙ্কাকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রেখেছেন ১৯৪ রানে অবদান।
এমন নিরানন্দ দিনে ও ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশ। তাইজুলের বলে স্লিপে দিয়েছিলেন ক্যাচ চান্দিমাল। ১০ রানের মাথায় সে যাত্রায় বেঁচে ইনিংসটা টেনে নিয়েছেন তিনি ৯৩ পর্যন্ত। আম্পায়ার্স কল-এ অবধারিত এলবিডাব্লু থেকে বেঁচে গেছেন ওপেনার উদারা। তাইজুলের মিডল এন্ড লেগ স্ট্যাম্পে পিচিং ডেলিভারি ব্যাক প্যাডে আঘাত লেগেও আম্পায়ার্স কলে গেছেন বেঁচে তিনি। ২১ রানের মাথায় ভাগ্য সহায় হওয়া সেই উদারাকে ফিরিয়েছেন বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল। রিভিউ আপীল নিয়ে তাকে এলবিডাব্লুউতে ফিরিয়েছেন তাইজুল ৪০ রানের মাথায়।
সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠে বাংলাদেশের অতীত মোটেও সুখকর নয়। তিন টেস্টের দুটিতে ইনিংস আর অন্যটিতে বড় রানের ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এখানকার পীচ গল-এর মতো নয়, শুরু থেকেই টার্ন পেতে শুরু করে স্পিন। তাই এখানে অনায়াসে ছড়ি ঘোরাতে পারেন স্পিনাররা - এই মাঠের অতীত রেকর্ড বলছে তাই। ১৮ বছর পর এসএসসিতে ফিরেতা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটাররা। গল-এ বীরত্বপূর্ণ ড্র থেকে টনিক নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। প্রথম দিন ধুঁকেছে ব্যাটাররা। বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম দিনে ১৯ ওভার কম ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। তারপরও লেজের জোরে প্রথম দিন পাড়ি দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। এদিন স্কোর টেনে নিতে পেরেছে ২২০/৮ পর্যন্ত।
দিনের প্রথম ঘন্টায় উইকেট পড়েছে ১টি। তবে ওই ঘন্টায় রান পাওয়া যে কতোটা কষ্টের, টপঅর্ডাররা তা জানিয়ে দিয়েছেন। বিজয়কে হারিয়ে ওই ঘন্টায় ১২ ওভারে রান উঠেছে মাত্র ২৩! এক যুগেও টেস্টের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি বিজয়, নিজেই এই ফরম্যাট থেকে নিষ্কৃতি চান, এসএসসিতে টেস্টের প্রথম দিন নির্বাচকদের তা জানিয়ে দিয়েছেন এনামুল হক বিজয়। লঙ্কান পেসার আসিথা ফার্নান্দোর দ্বিতীয় ওভারে পর পর দুই বলে উইকেটের পেছনে দুবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়ার পরও রানের মুখ দেখেননি।
আসিথার পরের ওভারে প্লেড অনে থেমেছে তার টেস্টে ১৪তম ইনিংসে। গল টেস্টের প্রথম ইনিংসের ছবিটাই যেনো মনে করিয়ে দিয়েছেন বিজয়। সেই ইনিংসে ১০ বলে ০ তে শেষ তার ইনিংস, এসএসসির প্রথম ইনিংসেও তা-ই! শ্রীলঙ্কা সফরে টানা তিন ইনিংসের চিত্র ০,৪ ও ০! ৮ টেস্টে ১৪ ইনিংসের সমষ্টি ১৪৩। একজন ওপেনারের ১২ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে নেই কোনো ফিফটি, গড় মাত্র ১০.২১। এর পরও কী টেস্ট খেলার দাবি করবেন বিজয়?
আরও পড়ুন
আশরাফুলের স্মৃতিময় ভেন্যুতে দুঃসহ অতীত ভুলতে চায় বাংলাদেশ |
![]() |
প্রথম ঘন্টায় রানের জন্য যতোটা ধুঁকেছে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ঘন্টায় ততোটা ধুঁকতে হয়নি। এই ঘন্টায় মুমিনুলকে হারিয়ে বাংলাদেশ যোগ করেছে ৪৮ রান। সেট হয়ে মুমিনুল আত্মাহুতি দিয়েছেন। ধনঞ্জয়ার বলে কাভারে ক্যাচ প্র্যাকটিস করিয়ে ফিরে এসেছেন তিনি ২১ রানের মাথায়।
দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশকে ভালই ধাক্কা দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এই সেশনে স্কোরশিটে ৭৩ উঠতে হারিয়েছে বাংলাদেশ ৩ উইকেট। বিশ্ব ফার্নান্ডোর আউটসাইড অফ ডেলিভারিতে পুশ করতে যেয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন শান্ত (৮)।
থারিন্দুর আউটসাইড অফ ডেলিভারিতে স্ল্যাশ করতে যেয়ে সাদমান মিস করেছেন ফিফটি (৯৩ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৪৬)। অভিষিক্ত বাঁ হাতি স্পিনার সোনাল দিনুশার আউটসাউড অফ ডেলিভারিতে খেলতে যেয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন (৫৬ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ৩৪)।
দিনের শেষ সেশন পাড়ি দিতে সংযমী হতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। দিনুশাকে সুইপ করতে চেয়ে ডিপ স্কোয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে এসেছেন তিনি (৭৫ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৩৫)।
৭ম উইকেট জুটিতে নাঈম হাসানকে নিয়ে ভালই প্রতিরোধ করছিলেন মিরাজ। ইনজুরি থেকে ফিরে বড় ইনিংস খেলার সম্ভাবনা দেখিয়েছিলেন তিনি। তবে বিশ্ব ফার্নান্ডো দ্বিতীয় স্পেলের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন তিনি ৩১ রানে।
আরও পড়ুন
টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে বড় উন্নতি শান্তর, এগিয়েছেন মুশফিক-নাঈম |
![]() |
মিরাজকে দারুণ সঙ্গ দেয়া টেল এন্ডার নাঈম হাসান দুর্ভাগের শিকার। আসিথা ফার্নান্ডোর আউটসাইড অফ ডেলিভারি খেলতে যেয়ে ইনসাইড এজ হয়ে স্ট্যাম্পের উপরের বেলস নিয়েছে উড়িয়ে। তার ২১ রানের ইনিংসে দুইশ-তে পৌছে গেছে বাংলাদেশ।
সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে প্রথম দিনে শ্রীলঙ্কার দুই পেস বোলার আসিথা ( ২/৪৩) এবং বিশ্ব ফার্নান্ডোর (২/৩৫) পাশে অভিষিক্ত বাঁ হাতি স্পিনার সোনাল দিনুশা করেছেন দারুণ বোলিং (২/২২)। প্রথম দিনের স্কোরের সঙ্গে শেষ দুই জুটি কতোটা যোগ করতে পারে এবং মিরাজের প্রত্যাবর্তন টেস্টে ৫ বোলারকে নিয়ে শ্রীলঙ্কার উপর প্রতি আক্রমন কতোটা জোরালো হয়, সেদিকে তাকিয়ে এখন বাংলাদেশ সমর্থকরা।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অন্যতম শীর্ষ ফ্র্যাঞ্চাইজি রংপুর রাইডার্স এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় মার্কেটিং সংস্থা ক্রিয়েটিভ স্ট্র্যাটেজিসের মধ্যে সম্প্রতি কৌশলগত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এই অংশীদারিত্ব চুক্তির আওতায় ক্রিয়েটিভ স্ট্র্যাটেজিস রংপুর রাইডার্সের ব্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি, কনটেন্ট নির্মাণ, ক্যাম্পেইন পরিকল্পনা ও ফ্যান এনগেজমেন্ট কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে। তাদের লক্ষ্য থাকবে রংপুর ফ্র্যাঞ্চাইজির ব্র্যান্ডের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করা এবং দর্শকদের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তোলা।
আরও পড়ুন
চূড়ান্ত হল বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজের সূচি |
![]() |
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন রংপুর রাইডার্সের হেড অব ডিজিটাল ও চিফ প্যাট্রনের উপদেষ্টা মেহরাব আলম চৌধুরী ও ক্রিয়েটিভ স্ট্র্যাটেজিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদেল ওয়াহিদ।
রংপুর রাইডার্স ও ক্রিয়েটিভ স্ট্র্যাটেজিসের এই অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ব্র্যান্ড মার্কেটিং ও দর্শক সম্পৃক্ততার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
একবারের বিপিএল চ্যাম্পিয়ন রংপুর গত বছর প্রথমবারের মত হওয়া গ্লোবাল সুপার লিগের শিরোপা ঘরে তোলে। এবারের আসরে নুরুল হাসান সোহানের দল অংশ নিবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র দল হিসেবে রংপুরই খেলছে এই টুর্নামেন্টে।
৩ দিন আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৬ দিন আগে
৬ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৬ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে