বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) হ্যাটট্রিক আগেও হয়েছে। তবে কুমিল্লার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে এবারের আসরের প্রথম ম্যাচে অনন্য এক কীর্তি গড়েছেন শরিফুল ইসলাম। প্রতিযোগিতার ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে আসরের প্রথম ম্যাচেই হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছে দুর্দান্ত ঢাকার এই পেসার।
আরও পড়ুন: দুর্দান্ত ঢাকা নামের দল বিপিএলে
ইমরুল কায়েস ও তাওহীদ হ্রদয়ের ১০৭ রানের জুটির পর শেষের দিকে ঝড় তুলে রান বাড়ানোর দিকে চোখ ছিল কুমিল্লার। ৫ বলে ১৩ রান করে খুশদিল দিচ্ছিলেন ঝড়ের আভাস। তবে ২০তম ওভারের চতুর্থ বলে তাকে ফিরিয়ে দেন শরিফুল। পরের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে টপ-এজ হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন রোস্টন চেজ। শেষ বলে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও বল বাউন্ডারি ছাড়া করতে গিয়ে তুলে দেন আকাশে। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক ইরফান শুক্কুর।
তাতে বিপিএলে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়ে যান শরিফুল। সব মিলিয়ে বিপিএলে এটি সপ্তম হ্যাটট্রিক। বাঁহাতি এই পেসার ইনিংস শেষ করে ৩ উইকেটে ২৭ রান দিয়ে।
আরও পড়ুন: বিপিএল দিয়েই ফিরেছেন তাসকিন
আগে ব্যাটিং করে ইমরুলের ৬৬ ও হ্রদয়ের ৪৭ রানে ভর করে কুমিল্লা পায় ৬ উইকেটে ১৪৩ রানের সংগ্রহ।
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সর্বশেষ খেলার আপডেট জানতে চোখ রাখুন টি স্পোর্টসে এছাড়া ফেসবুকে আমাদের ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন ও ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং উপহার দিল বাংলাদেশ। অন্য ব্যাটারদের কেউই সেভাবে বড় ইনিংস না গড়তে পারলেও একপ্রান্ত আগলে ঝড় তুললেন পারভেজ হোসেন ইমন। তরুণ এই ওপেনার রেকর্ড গড়া দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে বোর্ডে বড় রানই জমল। তবে তাতে ভড়কে না গিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত রান তাড়ায় করল সাহসী ব্যাটিং, যাতে জাগল তাদের জয়ের সম্ভাবনা। এরপর শেষের দিকে ঝড় তুললেন আসিফ খান। তবে সেটা সামলে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশ।
শারজাহতে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জিতেছে ২৭ রানে। ৭ উইকেটে ১৯১ রান করার পর প্রতিপক্ষকে ১৬৪ রানে আটকে দিয়েছে তারা। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ আগামী সোমবার একই ভেন্যুতে।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশকে প্রথম ওভারে এক চার ও এক ছক্কায় ভালো শুরু এনে দেন তানজিদ হাসান তামিম। তবে অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে মাত্র ১০ রানেই থামতে হয় তাকে পরের ওভারে।
ধ্রুভ পারেশকারকে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে অন্যপ্রান্তে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের আভাস দেন ইমন। তবে তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি অধিনায়ক লিটন। এক ছক্কায় ৮ বলে ১১ রান করে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ম্যাচে চমৎকার বোলিং করা মুহাম্মাদ জায়াদুল্লাহর বলে।
প্রথম ছয় ওভারে ৫৫ রান করা বাংলাদেশের ইনিংসে গতি দেন ইমন, অষ্টম ওভারে। সাঞ্চিত শর্মার ওপর ঝড় বইয়ে দিয়ে তিনটি ছয় ও এক বাউন্ডারিতে আদায় করেন ২২ রান। এরপর চার মেরে মাত্র ২৮ বলে পূর্ণ করেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ফিফটি।
তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাটেও ছিল আক্রমণের সুর। ভালো কিছু শটে দ্রুতই চলে যান বিশের ঘরে। তবে পারেননি সেটা লম্বা করতে। এক চার ও এক ছক্কায় ১৫ বলে করতে পারেন ২০ রান।
ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া মাহেদি, জাকের আলি অনিক বা শামিম হোসেনরা পারেননি পরিস্থিতির চাহিদা মিটিয়ে ব্যাটিং করতে। ফলে নিজের সেঞ্চুরির পাশাপাশি ইমনের কাঁধেই চাপে দলকে ভালো একটা অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার।
প্রায় প্রতি ওভারেই চার-ছক্কা হাঁকিয়ে সেই কাজটা তিনি সামলান দক্ষতার সাথেই। ১৭ত্ম ওভারে মাতিউল্লাহ খানকে মারেন দুটি চার ও একটি ছক্কা। ১৯তম ওভারে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরির দেখা পান তরুণ এই ব্যাটার। ৫৩ বলে তিন অঙ্কের ঘরে পা রাখেন ইমন।
এর মধ্য দিয়ে মাত্র দ্বিতীয় বাংলাদেশী ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করেছেন ইমন। এরপরই আউট হলেও তার আগে হাঁকান ৯টি ছক্কা, যা এক ইনিংসে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড।
চার ওভারে মাত্র ২১ রানে ৪ উইকেট নেন জায়াদুল্লাহ।
১৯১ রান ডিফেন্ড করতে নামা বাংলাদেশকে দ্বিতীয় ওভারে চমকে দেন আরব আমিরাত ওপেনাররা। শেখ মাহেদি হাসানকে তিন চার ও এক ছক্কা হাঁকিয়ে আদায় করেন ১৯ রান। তানজিম হাসান সাকিবের করা পরের ওভারটিও হয় ব্যয়বহুল, আসে ১৪ রান।
শেষ পর্যন্ত আক্রমণে এসে জুটিতে ভাঙন ধরান হাসান মাহমুদ। ডানহাতি এই পেসারের শর্ট ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মুহাম্মাদ জোহাইব। অন্যপ্রান্তে মুস্তাফিজুর রহমানও তার করা প্রথম ওভারে দেখা পান উইকেটের।
প্রথম ওভারটা ভীষণ হিসেবী করা হাসান ফিরতি স্পেলে এসে হজম করেন বেদম মার। তার ওপর চড়াও হয়ে রাহুল চোপড়া তিন বাউন্ডারির সাথে মারেন একটি ছক্কায়, ওভারে আসে ১৯ রান।
বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামও পারছিলেন না সুবিধা করতে। ওই সময়ে তাই চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। মাত্র ৩২ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন ওপেনার মুহাম্মদ ওয়াসিম। ১০ ওভার শেষে আরব আমিরাতের স্কোর দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৯৮।
চাপ সামলে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেকথ্রুটা এনে দেন তানজিম। শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ৩৯ বলে ৫৪ রান করা ওয়াসিম। তবে ক্রিজে গিয়েই পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে চিন্তার ভাজ বাড়ান আসিফ খান। মাহেদির ওভারে হ্যাটট্রিক ছক্কার মারে ২৭ রান।
অন্যপ্রান্তে বিপজ্জনক রাহুলকে (৩৫) ফিরিয়ে ফের বাংলাদেশকে ম্যাচে ধরে রাখেন তানজিম। অন্যপ্রান্তে এরপর আসা-যাওয়ার মিছিল অব্যাহত থাকলেও একাই লড়ে যান আসিফ। ১৯তম ওভারে তার বিদায়েই মূলত শেষ হয় আরব আমিরাতের জয়ের আশা।
তবে তার আগে বাংলাদেশকে ভয় পাইয়েই দিয়েছিলেন ৪টি ছক্কা ও তিন বাউন্ডারিতে মাত্র ২১ বলে ৪২ রানের ইনিংসে, যার ইতি ঘটে হাসানের বলে। ৩৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েই তিনিই বাংলাদেশের সেরা বোলার।
গুঞ্জন বাতাসে ভাসছিল আগে থেকেই। শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে চলমান আইপিএলে খেলার জন্য মুস্তাফিজুর রহমানকে অনাপত্তিপত্র প্রদান করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। তবে সেটা খুবই অল্প সময়ের জন্য। স্রেফ ছয় দিনের জন্য তাকে আইপিএলে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এক বিবৃতিতে শুক্রবার বিসিবি জানিয়েছে, ক্রিকেট অপারেশনস বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুস্তাফিজুর রহমানকে ১৮ থেকে ২৪ মে পর্যন্ত আইপিএলের জন্য অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়েছে।
সেখানে আরও বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে জাতীয় দলের সাথে থাকা বাঁহাতি এই পেসার সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে প্রথম টি-টোয়েন্টির দলে থাকবেন, যা শারজাহতে মাঠে গড়াবে আগামী ১৭ মে।
আরও পড়ুন
মুস্তাফিজদের দলে যোগ দিচ্ছেন না স্টার্ক সহ ৩ বিদেশী |
![]() |
এই ম্যাচতি খেলেই সরাসরি ভারতে গিয়ে দিল্লি ক্যাপিটালস শিবিরে যোগ দেবেন মুস্তাফিজুর। এক সপ্তাহ বিরতির পর শুরু হয়ে যাওয়া আইপিএলে বিদেশী খেলোয়াড়দের অনেকেই আসছেন না। দিল্লির ব্যাটার জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক আর ভারতে না ফিরতে চাওয়ায় তার বদলি হিসেবে মুস্তাফিজুরকে নেয় তারা।
গত বছর মেগা নিলামে অবিক্রীত থেকে যাওয়া মুস্তাফিজুরের ভিত্তি মূল্য ছিল ২ কোটি রুপি। তবে দিল্লি তাকে দলে টানতে গুনেছে ৬ কোটি রুপি।
দিল্লি পরবর্তী ম্যাচআগামী ১৮ মে, দিল্লিতে গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে। সব ঠিক থাকলে এই ম্যাচেই দেখা যেতে পারে মুস্তাফিজুরকে।
বিরতির পর আইপিএল শুরুর সময়ে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজির মত বিদেশী খেলোয়াড় সঙ্কটে পড়েছে দিল্লি ক্যাপিটালসও। ভিন্ন ভিন্ন কারণে দলটির আরও তিন বিদেশী বাকি অংশে খেলবেন না, যাদের মধ্যে আছেন মিচেল স্টার্ক, ফাফ দু প্লেসির মত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা। অন্যজন হলেন ডোনোভান ফেরেইরা।
স্টার্কের অবশ্য আইপিএলে আর না ফেরার কথা আগে থেকেই খবরে আসছিল। বিশেষ করে জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্কও নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর তার জায়গায় যখন বদলি হিসেবে বাংলাদেশ পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে ভিত্তি মূল্যের তিন গুন বেশি দামে দলে নেওয়ায়। দুজনই বাঁহাতি হওয়ায় মূলত স্টার্কের বিকল্প হিসেবেই দেখা হচ্ছে মুস্তাফিজুরকে।
স্টার্ক এবারের আইপিএলে শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে ছিলেন দিল্লির জার্সিতে। ১১ ম্যাচে ২৬.১৪ গড়ে নিয়েছেন ১৪ উইকেট। তবে গত ৯ মে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনার ফলে আইপিএল বন্ধ হলে চলে যান অস্ট্রেলিয়ায়। ১১ জুন আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল থাকায় ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আইপিএলে ফিরছেন না অজি পেসার।
আরও পড়ুন
যেভাবে ২ কোটির মুস্তাফিজুরের নামের পাশে ৬ কোটি রুপি |
![]() |
দু প্লেসির কারণ অবশ্য ভিন্ন। শুরু দিকে কয়েকটি ম্যাচ খেললেও এরপর চোটের কারণে কিছু ম্যাচ মিস করেন। যদিও বিষয়টি ক্লাবের পক্ষ থেকে তখন আড়াল করা হিয়েছিল। সব মিলিয়ে ছয় ইনিংসে ২৮ গড় ও ১২৮.২৪ স্ট্রাইক রেটে করেন ১৬৮ রান। আর ফেরেইরা একটি ম্যাচ খেলেছেন ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে, করতে পারেন মাত্র ১ রান।
দিল্লির আরেক বিদেশী ব্যাটার ট্রিস্টান স্টাবস অবশ্য নিশ্চিত করেছেন, লিগ পর্বের বাকি অংশে খেলতে তিনি ভারতে ফিরবেন। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জন্য চলে যাবেন প্লে-অফ শুরুর আগেই।
এর ফলে দিল্লি স্কোয়াডে বিদেশি খেলোয়াড় এখন আছেন কেবল স্টাবস (লিগ পর্বের জন্য), হ্যারি ব্রুকের পরিবর্তে বদলি হিসেবে আসা সেদিকুল্লাহ আতাল এবং দুশমন্ত চামিরা।
আরও পড়ুন
পিএসএলে খেলবেন সাকিব |
![]() |
মুস্তাফিজুরও এই তালিকায় যোগ হতে পারেন শীঘ্রই। তবে এটা নিয়ে রয়ে গেছে কিছুটা ধোঁয়াশা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে তিনি এখন আছেন বাংলাদেশ দলের সাথে। এই সিরিজ শেষ ১৯ মে, অন্যদিকে দিল্লির পরবর্তী ম্যাচ ১৮ মে। আপাতত মুস্তাফিজুরকে বিসিবি দুই ম্যাচের জন্য এনওসি দিয়েছে, ফলে এই সিরিজ শেষ করেই কেবল তিনি যোগ দিতে পারবেন দিল্লি স্কোয়াডে।
জেক-ফ্রেজার ম্যাকগার্ক এবারের আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে আর খেলবেন না, এই খবরটি আসার সাথে সাথে তার বদলি হিসেবে চমক হিসেবেই আসে মুস্তাফিজুর রহমানের নাম। তবে সেখানে বড় এক বিস্ময় তার নামের পাশের ‘প্রাইস ট্যাগ’। কারণ, নিলামে ভিত্তি মূল্য ২ কোটি রুপি থাকলেও যে বাংলাদেশ পেসারকে দলে পেতে দিল্লিকে গুনতে হচ্ছে ৬ কোটি রুপি!
কয়েকটি কারণেই বিষয়টি ধাঁধার জন্ম দিয়েছে। প্রথমত জেক-ফ্রেজারকে মেগা নিলাম থেকে ৬ কোটি রুপিতেই নিয়েছিল দিল্লি। একই নিলামে ২ কোটি ভিত্তি মূল্যে অবিক্রীত থেকে যান মুস্তাফিজুর। ফলে প্রাথমিক ধারণা হতেই পারে যে অজি ব্যাটারের বিক্রিত মূল্যই হয়ত পেতে যাচ্ছেন অভিজ্ঞ এই বাঁহাতি পেসার।
আরও পড়ুন
দিল্লীতে ডাক মুস্তাফিজের, এন ও সি কি মিলবে? |
![]() |
তবে ঠিক এভাবে একজন খেলোয়াড়ের মূল্য বাড়ার যৌক্তিক সুযোগ নেই, তাও কয়েকটি ম্যাচ যখন বাকি। তাছাড়া জেক-ফ্রেজারের বদলি হলেও তার সমান মূল্যে মুস্তাফিজুর বেতন পাবেন, ব্যাপারটা তাও নয়। অন্তত অন্যান্য এমন বদলির চুক্তিগুলো তাই বলে।
ফলে যা হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, তা হল মুস্তাফিজুরকে পেতে দিল্লিকে লড়াই করতে হয়েছে অন্য দলগুলোর সাথেও। মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউডের মত তারকা পেসাররা এই আইপিএলে আর না ফেরার কয়েকটি দলই খুঁজছে অভিজ্ঞ একজন আন্তর্জাতিক মাপের বোলার, যিনি আইপিএলে পরীক্ষিত।
আর এই ক্যাটাগরিতে মুস্তাফিজুর তো সবদিক থেকেই দারুণ এক পছন্দ। তাছাড়া পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে ধোয়াশা থাকায় তাকে এই মাসের ১৯ তারিখের পর থেকে পাওয়ার রয়েছে ভালো সম্ভাবনা।
সেই কারণেই ভিত্তি মূল্য ২ কোটি রুপিতে মুস্তাফিজুরকে আর কিনতে পারেনি দিল্লি। ইনসাইড বিডিংয়ে বেড়ে যায় দাম, যা গিয়ে ঠেকে ৬ কোটি রুপিতে। যা কিনা আবার যার বদলি হলেন, সেই জেক-ফ্রেজারের মূল্যের ঠিক সমান। এক্ষেত্রে ব্যাপারটা এটাও হতে পারে, চলে যাওয়া খেলোয়াড়ের জন্য বরাদ্দ মূল্যটাই দিল্লি গুনে গুনে খরচ করেছে আরেকজনের জন্য।
তবে মেগা নিলামে যেখানে কয়েক দফায়ও মুস্তাফিজুরের জন্য যেখানে একটা দলও আগ্রহ দেখায়নি, সেখানে এখন তাকে নিয়ে কয়েকটি দলের কাড়াকাড়ি চমক জাগানিয়াই বটে। তবে আইপিএল ও স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির বিশাল অভিজ্ঞতার কারণে তাকে নিয়ে বাড়তি চাহিদাই হয়ত তৈরি হয়েছে। সাথে রয়েছে বাঁহাতি পেসারদের কদর, যা বিশ্ব ক্রিকেটে এখনও রয়েছে বেশ।
আরও পড়ুন
পিএসএলে খেলবেন সাকিব |
![]() |
দিল্লির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে মুস্তাফিজুরকে দলে টানার খবর জানাতেই তাদের সেই পোস্ট ভেসে গেছে বাংলাদেশী সমর্থকদের ভালোবাসায়। তবে খুব শীঘ্রই ‘দা ফিজ’-কে আইপিএলে দেখার সম্ভাবনা কমই। কারণ, বুধবার রাতেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুই ম্যাচের সিরিজ খেলতে রওনা দিয়েছেন তিনি।
সিরিজ শেষ হবে আগামী ১৯ মে, যার দুই দিন আগে শুরু হবে আইপিএলের বাকি অংশ। অন্যদিকে বিসিবি জানিয়েছে, মুস্তাফিজুর বা দিল্লি কেউই তাদের সাথে তার আইপিএলে দল পাওয়া বা খেলা নিয়ে যোগাযোগ করেনি। তাতে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তার অনাপত্তিপত্র পাওয়া নিয়ে।
সীমান্তে ভারতের সাথে অস্থিরতার কারণে সাময়িক বিরতির পর শুরু হতে যাওয়া পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএলে) দল পেলেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের এই তারকা অলরাউন্ডারকে দলে টেনেছে লাহোর কালান্দার্স।
ক্লাবটির পক্ষ থেকে বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। আর টি স্পোর্টসকে সাকিব জানিয়েছেন, টুর্নামেন্টের বাকি অংশ খেলতে পাকিস্তানে যেতেও আপত্তি নেই তার।
আরও পড়ুন
দিল্লীতে ডাক মুস্তাফিজের, এন ও সি কি মিলবে? |
![]() |
সাকিবের এই পাকিস্তানে যেতে আপত্তি না থাকার কারণেই হয়ত এই সময়ে এসে দল পেয়েছেন তিনি। গত এপ্রিল থেকে চলতি মাসের শুরু পর্যন্ত ভারতের সাথে সীমান্তে উত্তেজনার কারণে স্থগিত হয়ে যায় পিএসএল। শুরুতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসরের বাকি অংশ হওয়ার কথা থাকলেও পরে সেটা বাতিল হয়। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয় পাকিস্তানেই তা আয়োজনের।
আর সেখানেই বেঁধেছে বিপত্তি। কারণ, বিদেশী ক্রিকেটারদের মধ্যে অনেকেই এই মুহূর্তে পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে রাজি নন। বিশেষ করে সেই খেলোয়াড়রা, যারা ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধময় পরিবেশে অনেকটাই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন।
লাহোরের বিদেশী খেলোয়াড়দের প্রায় অধিকাংশই তাই আর পিএসএল খেলতে আসতে চাচ্ছেন না। সেই শূন্যতা পূরণ করতেই তাই দলটি অভিজ্ঞ সাকিবকে দলে নিয়েছে, যিনি এখন পুরোপুরিভাবেই ফ্রি আছেন।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়া সাকিব জাতীয় দলের হয়ে শেষবার খেলেছেন গেল বছর টেস্টে। এই ফরম্যাট ও ওয়ানডে থেকে অবসর না নিলেও নানা বাস্তবতায় ভবিষ্যৎ নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। এর মাঝে যোগ হয়েছিল গত বছর বোলিং অ্যাকশনের ত্রুটি, যা তিনি মাসখানেক আগে শুধরে নিয়েছেন।
সাকিব ফিরছেন এবার পিএসএল দিয়ে, যেখানে তিনি আগেও খেলেছেন। সব মিলিয়ে এই টুর্নামেন্টে সাবেক বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার ১৪ ম্যাচ খেলেছেন।
আরও পড়ুন
দুই পেসারকে পেছনে ফেলে আইসিসির সেরা মিরাজ |
![]() |
পিএসএলে মোট ১৪টি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। ব্যাট হাতে ১৬.৩৬ গড়ে ও ১০৭.১৪ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১৮১ রান। আর বল হাতে ৮ উইকেট নিয়েছেন ওভার প্রতি ৭.৩৯ রান দিয়ে।
লাহোরের হয়ে সাকিবের সম্ভাব্য প্রথম ম্যাচ হতে পারে আগামী ১৮ মে, যেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকবে তারই সাবেক দল পেশোয়ার জালমি।