১৩৪ রানের চ্যালেঞ্জ দিয়ে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে কী দুর্বিষহ পরিস্থিতিতেই না পাকিস্তানকে ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ বোলাররা। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে'র ৩৬ বলে স্কোরশিটে ১৭ উঠতে ৫ উইকেট ফেলে দেয়ায় মিরপুরে সর্বনিম্ন স্কোরের রেকর্ডস বুকও ঘাটতে হয়েছে। বড় জয়ের আবহ দেয়া সেই ম্যাচটিই বাজে ফিল্ডিং-ক্যাচ ড্রপে শেষ পাওয়ার প্লে-তে জমিয়ে তুলেছে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বাংলাদেশ বোলারদের জয় হয়েছে। ১০ বছর আগে ১ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে জয়টিই ছিল এতোদিন পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ফরম্যাটের দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে একমাত্র জয়। মঙ্গলবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শরিফুল (৩/১৭)-তানজিম হাসান সাকিব (২/২৩)-শেখ মেহেদীর (২/১৫) বোলিংয়ে ৮ রানে জিতে ১০ বছর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের উৎসব করেছে বাংলাদেশ।
মিরপুরে ১০ বছর আগে ৩ ম্যাচের ওডিআই সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করার ছবিটা এবার ভেসে উঠছে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় নিশ্চিত করে এখন প্রতিপক্ষকে হোয়াইট ওয়াশে চোখ এখন লিটনদের।
সিরিজের প্রথম ম্যাচ হেরে মিরপুরের উইকেট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন পাকিস্তান কোচ মাইক হেসন। এই ম্যাচে ও কী সে প্রশ্ন তুলবেন তিনি ? চার-ছক্কার ফরম্যাটের ক্রিকেটে বোলারদের দাপটে সে প্রশ্নও কেউ কেউ করবেন। উভয় দলের ইনিংসের শুরুর চিত্রটা ভয়াবহ।
আরও পড়ুন
রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজও জিতে নিল বাংলাদেশ |
![]() |
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের শুরুটা ছিল হতাশার। টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করে যে দুর্যোগে পড়েছে পাকিস্তান, ৪৮ ঘন্টা পর সেই একই চিত্র দেখা গেছে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে! ১২০ টি বৈধ ডেলিভারির মধ্যে ৬১টি ডট করেছে বাংলাদেশ ব্যাটাররা। যে ইনিংসে ৬টি চারের পাশে ছক্কার সংখ্যা ৯টি। প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ৪১ রানে পাকিস্তান হারিয়েছে ৪ উইকেট। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সেখানে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে'র ৩৬ বলে স্কোরশিটে ২৯ উঠতে হারিয়েছে বাংলাদেশ সমসংখ্যক উইকেট! শেষ পাওয়ার প্লে-তে ৪৭ রানে হারিয়েছে ৫ উইকেট। জাকের আলী অনিক (৪৮ বলে ৫৫) এবং শেখ মেহেদী (২৫ বলে ৩৩) ছাড়া অন্য কোনো ব্যাটার প্রত্যাশিত ব্যাটিং করতে পারেননি। সালমান মীর্জা (২/১৭), আব্বাস আফ্রিদি (২/২৩), আহমেদ দানিয়েলের (২/২৩) বোলিংয়ে বাংলাদেশ থেমেছে ১৩৩/১০-এ।
নতুন বলে সালমান মীর্জার প্রথম স্পেলে (৩-১-৯-১) ধুঁকেছে বাংলাদেশ টপ অর্ডাররা। ফাহিম আশরাফকেও সমীহ করেছে বাংলাদেশের উপরের সারির ব্যাটাররা।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফাহিম আশরাফের শর্ট বল উইকেট কিপারের মাথার উপর দিয়ে খেলতে যেয়ে দিয়েছেন উইকেট কিপারের হাতে ক্যাচ (৭ বলে ৩)। দ্বিতীয় উইকেট জুটি ২০-এর বেশি টেনে নিতে পারেনি লিটনের ক্যাচ প্র্যাকটিস করে আসায়। সালমান মীর্জার বলে ডিপ মিড উইকেটের ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক (৯ বলে ৮)। ৪ বল পর হৃদয় রান আউটে কাটা পড়ে (৩ বলে ৯) দলকে ফেলে দিয়েছেন বিপদে। ফাহিম আশরাফকে ছক্কা মেরে বাহাদুরি দেখানো পারভেজ হোসেন ইমন মিড অফে সফট ডিসমিসাল হয়েছেন (১৪ বলে ১৩)।
ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-র দুঃসহ চিত্র কাটিয়ে উঠতে চেষ্ঠা করেছেন জাকের আলী অনিক-শেখ মেহেদী। ৫ম উইকেট জুটিতে ৪৯ বলে ৫৩ রান যোগ করেছেন তারা। খুশদিল শাহ এবং নেওয়াজকে ছক্কার শটে নিজেকে চেনানো শেখ মেহেদী নিজেকে নিবৃত্ত রাখতে পারেননি। নেওয়াজের বলে লং অফে দিয়েছেন ক্যাচ (২৫ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৩৩)।
শামীম পাটোয়ারীর ব্যাট এদিন গর্জে ওঠেনি। অভিষিক্ত পাকিস্তান পেসার আহমেদ দানিয়েলকে লেট কাট করতে যেয়ে বোল্ড হয়েছেন (৪ বলে ১)। টেল এন্ডার তানজিম হাসান সাকিব সালমান মীর্জাকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে এক্সট্রা কভারে দিয়েছেন ক্যাচ (৪ বলে ৭)। আব্বাস আফ্রিদিকে লং অফে ছক্কা মেরে রিশাদও নিজেকে নিবৃত্ত রাখতে পারেননি। পরের বলে ইয়র্কারে হয়েছেন বোল্ড (৪ বলে ৮)।
দলকে একাই টেনে নিয়ে গেছেন জাকের আলী অনিক। ৩২ রানের মাথায় সালমান মীর্জার বলে খুশদিল শাহ'র হাত থেকে বেঁচে যাওয়া জাকের আলী অনিক এদিন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ফিফটি উদযাপন করেছেন। গত বছরের ডিসেম্বরে কিংস্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করেছিলেন প্রথম ফিফটি (৪৩ বলে ৭২*)। মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে চারের চেয়ে ছক্কার আধিক্যের ইনিংসে (১ চার ৫ ছক্কা) ছক্কার চুমোয় ফিফটি পূর্ণ করেছেন জাকের আলী অনিক। ইনিংসের শেষ ওভারে আব্বাস আফ্রিদিকে মেরেছেন ২টি ছক্কা। সেই ওভারেই লং অনে থেমেছেন জাকের আলী (৪৮ বলে ১ চার ৫ ছক্কায় ৫৫)।
১৩৪ রানের চ্যালেঞ্জ দিয়ে পাকিস্তানকে শুরুতে ব্যাকফুটে নামিয়ে এনেছেন বাংলাদেশের দুই পেসার শরিফুল-তানজিম হাসান সাকিব। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে বাঁ হাতি পেসার শরিফুলের ৩ ওভারের স্পেলের (৩-০-৮-২) পাশে তানজিম হাসান সাকিবের ভয়ংকর ১ ওভার (১-০-১-২)! তাতেই স্কোরশিটে ১৭ উঠতে ৫ উইকেট হারিয়ে এলোমেলো হয়েছে পাকিস্তান।
আরও পড়ুন
মিরপুরের উইকেট ‘অগ্রহণযোগ্য’, যেখানে ‘ভুল’ পাকিস্তান কোচ হেসন |
![]() |
শুরুটা রান আউট দিয়ে। ইনিংসের ৬ ষ্ঠ বলে শেখ মেহেদীকে পয়েন্টে খেলে সাইম আইয়ুব হাফ পিচ থেকে স্ট্রাইক এন্ডে ফিরতে পারেননি। পারভেজ ইমনের থ্রো রিশাদ হয়ে লিটন রান আউটে ফিরিয়ে দিয়েছেন সাইম আইয়ুবকে (৪ বলে ১)। শরিফুল নিজের তৃতীয় বলে হারিস মোহাম্মদকে এলবিডাব্লুউতে ফিরিয়ে গোল্ডেন ডাক (১ বলে ০) এর লজ্জা দিয়েছেন।
শরিফুলের দ্বিতীয় ওভারে লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে পিচিং ডেলিভারি ফখর জামান পুল করতে যেয়ে ব্যাটে বলের আলতো স্পর্শ লেগেছে,তা আম্পায়ার তানভিরের চোখ এড়িয়ে গেলে লিটন যখন রিভিউ আপীল করেছেন, তখন রিভিউ চেক করার আগেই ফখর জামান ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা শুরু করেছেন (৮ বলে ৮)।
শরিফুল ইন অ্যাকশন। ছবি-বিসিবি
বোলিং চেঞ্জে তানজিম হাসান সাকিবের হাতে বল দিয়েই ম্যাচটি হাতের মুঠোয় এনেছেন লিটন। তার তৃতীয় ডেলিভারিতে হাসান নেওয়াজ (৬ বলে ০), চতুর্থ বলে মোহাম্মদ নেওয়াজ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ। প্রথম স্পেলে (১-০-৪-০) উইকেটহীন শেখ মেহেদী দ্বিতীয় স্পেলে দেখেছেন উইকেটের মুখ। সালমান আগা (২৩ বলে ৯) সহজ ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন।
লেগ স্পিনার রিশাদকে রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে খুশদিল শাহ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দিয়েছিলেন ক্যাচ। পারভেজ ইমন সহজ সেই ক্যাচটি ড্রপ করেছেন। ১২ রানের মাথায় বেঁচে যাওয়া সেই খুশদিল শাহকে থামিয়েছেন শেখ মেহেদী ক্রস খেলতে যেয়ে এলবিডাব্লু হয়েছেন খুশদিল (১৮ বলে ১ বাউন্ডারিতে ১৩)।
আরও পড়ুন
পেস ত্রয়ীর গর্জনের পর ইমন ঝড়, পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ে শুরু সিরিজ |
![]() |
৮ম উইকেট জুটিতে ফাহিম আশরাফ-আব্বাস আফ্রিদি ম্যাচে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন। ওই পার্টনারশিপকে ৪১ রানে থামিয়েছেন শরিফুল দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম বলে। তার লো বাউন্সি বলে আব্বাস আফ্রিদি হয়েছেন বোল্ড (১৩ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ১৯)।
১৫তম ওভারে রিশাদের অমিতব্যয়ী বোলিংয়ে ২০ রান এবং ১৯ তম ওভারে ১৫ খরচা শঙ্কার আলামত দিয়েছে। তবে ভয়ংকর হয়ে ওঠা ফাহিম আশরাফ ১৯তম ওভারের শেষ বলে লো বাউন্সি ডেলিভারিতে বোল্ড হলে (৩২ বলে ২ চার, ৪ ছক্কায় ৫১) ৮ রানে জিতে ১০ বছর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফি পুনরুদ্ধার করেছে বাংলাদেশ।
৯ দিন আগে
১৬ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
এ বছরের এপ্রিলে সিলেটে বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারানোর পরের টেস্ট অধ্যায়টা জিম্বাবুয়ের শুধুই হতাশার। সর্বশেষ ৪ টেস্টের তিনটিতে ইনিংস ব্যবধানে হার, অন্যটি রানের ব্যবধানে। বুলাওয়েতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস হারের শঙ্কা ছিল। তবে নবম জুটির ৬৪ রানে সেই লজ্জা এড়াতে পেরেছে জিম্বাবুয়ে। মাত্র ৮ রানের টার্গেট দিয়ে নিউ জিল্যান্ডকে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে নামিয়েছে। মাত্র ১৪ বলে এই টার্গেট পাড়ি দিয়ে ৯ উইকেটে জিতে সিরিজ শুরু করেছে সফরকারী দলটি।
প্রথম ইনিংসে ১৫৮ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের টার্গেটে বোলিং করেছে নিউ জিল্যান্ড। টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৩১/২, ইনিংস হার এড়ানোর জন্য ১২৮ রানের টার্গেটটা বেশ বড়ই তখন মনে হয়েছে। তৃতীয় দিনের শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে এক পর্যায়ে জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ৫৩/৪। ৫ম উইকেট জুটিতে ৫৭ রা যোগ করেও ইনিংস হারের শঙ্কা ছিল জিম্বাবুয়ের। ১১০ থেকে ১২৬, এই ১৬ রানে জিম্বাবুয়ের ৪ উইকেট পড়ে গেলে ইনিংস হারের চোখ রাঙানি দেখেছে স্বাগতিক দল। তবে ৯ম উইকেট জুটির ৬৪ রানে ইনিংস হার এড়িয়েছে জিম্বাবুয়ে।
মাত্র ১ রানের জন্য শিন উইলিয়ামস ফিফটি হাতছাড়া করেছেন। বাঁ হাতি স্পিনার স্যান্টনারের বলে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে থেমেছেন শিন উইলিয়ামস (৬৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৪৯)। ঠিক তৃতীয় দিনের টি ব্রেকের আগে থেমেছে জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে (১৬৫/১০)।
জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস ছিন্ন ভিন্ন করেছে নিউ জিল্যান্ডের যে পেসার (৬/৩৯), সেই হেনরি দ্বিতীয় ইনিংসেও ছড়ি ঘুরিয়েছেন (৩/৫১)। টেস্ট ক্যারিয়ারে এর আগে দুইবার ম্যাচে ৯ উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন। এটা নিয়ে (৯/৯০) সংখ্যাটা তৃতীয়-তে উন্নীত হলো তার। জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে স্পিনার স্যান্টনার পেয়েছেন ৪ উইকেট (৪/২৭)।
চোট আর বিশ্রাম মিলিয়ে এমনিতেই ইংল্যান্ড-ভারত চলমান পঞ্চম টেস্টে স্বাগতিকরা খেলছে অনভিজ্ঞ বোলিং লাইনআপ নিয়ে। এবার দলটির জন্য আরেক ধাক্কা হয়ে এসেছে ক্রিস ওকসের চোট। সেটা এতোটাই গুরুতর যে, এই ম্যাচের বাকি অংশ থেকেই ছিটকে গেছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটে প্রথম দিনের শেষের দিকে। বাউন্ডারির লাইনে একটি বল ধরার চেষ্টায় ভেজা আউটফিল্ডে হাত পিছলে পড়ে যান ওকস। পড়ে যাওয়ার ফলে বাঁ কাঁধে বেশ চোট পান এবং সাথে সাথেই কাঁধ চেপে ধরে শুয়ে পড়েন মাঠে।
এরপর ইংল্যান্ড দলের ফিজিও বেন ডেভিস মাঠে এসে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে ওকস মাঠ ছেড়ে যান। রাতেই অভিজ্ঞ এই পেসারের স্ক্যান করানো হয়। সেই স্ক্যান ও চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণের পর ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) নিশ্চিত করে, ওকস আর এই ম্যাচে অংশ নিতে পারবেন না। এমনি ব্যাট হাতেও দেখা যাবে না তাকে।
তার এই ছিটকে যাওয়া ইংল্যান্ডকে ভালো বিপদেই ফেলে দিতে পারে। কারণ, অধিনায়ক বেন স্টোকস না খেলায় এই ম্যাচে এমনিতেই চারজন স্পেশালিষ্ট পেসার নিয়ে খেলতে নেমেছে দলটি। ওকস আর বোলিং না করতে পারায় ম্যাচের বাকিটা সামাল দিতে হবে তিন পেসার গাস অ্যাটকিনসন, জেমি ওভারটন এবং জশ টাংকে, যারা সম্মিলিতভাবে খেলেছেন মাত্র ১৮ টেস্ট। ফলে চাপ বাড়তে পারে দুই পার্টটাইম স্পিনার বেথেল-রুটের ওপর।
চলমান টেস্টের ভারতের প্রথম ইনিংসে ওকস ১৪ ওভার বল করে ১ উইকেট নেন। সিরিজে তিনি মোট ১৮১ ওভার বোলিং করেছেন। ৫২.১৮ গড়ে নিয়েছেন ১১ উইকেট। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জন্য এই সিরিজে ইংল্যান্ডের একমাত্র পেসার হিসেবে খেলেছেন পাঁচ টেস্টেই। তবে শেষটা হল হতাশার মধ্য দিয়েই।
১ আগস্ট ২০২৫, ৩:৫৯ পিএম
ইংল্যান্ড-ভারতের মধ্যকার চতুর্থ টেস্টে পাকিস্তানের জার্সি পরা এক দর্শককে মাঠ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনার জল এরই মধ্যে গড়িয়েছে অনেকদূর। এবার সেই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব।
ওল্ড ট্রাফোর্ডে টেস্টে চলাকালীন এই ঘটনাটি ফারুক নাজার নামের ভুক্তভোগী দর্শক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরেন। এরপর থেকেই এটি নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।
সেই ভিডিওতে দেখা যায়, পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের সবুজ রঙের জার্সি পরে ভারত ও ইংল্যান্ডের ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে হাজির হয়েছেন নাজার। এক পর্যায়ে একজন নিরাপত্তাকর্মী এসে তাকে পাকিস্তানের জার্সি ঢেকে ফেলতে বলেন। এই সময়ে সেই নিরাপত্তাকর্মী নিজেকে ল্যাঙ্কাশায়ারের একজন স্টাফ হিসেবে পরিচয় দেন। সাথে জানান, পাকিস্তানের জার্সি ঢাকার জন্য বলার জন্য কন্ট্রোল রুম থেকে নির্দেশ পেয়েই তিনি এটি বলতে এসেছেন। তবে তার সেই অনুরোধ নাজার মানতে অস্বীকৃতি জানান। এই ঘটনার জেরে শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে তাকে মাঠ থেকেই বের করে দেয়।
ঘটনার পর এক বিবৃতিতে ল্যাঙ্কাশায়ার জানায়, দর্শকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে তাদের নিরাপত্তা দল কাজ করে আর এটা তারই অংশ ছিল। তবে নাজারকে মাঠ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় যদি কোনো দর্শক কষ্ট পেয়ে থাকেন, সেজন্য তারা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
এরপর কাউন্টি ক্লাবটি বিবৃতিতে আরও দাবি করে, ওই ঘটনার একদিন আগে মাঠের ভেতর ভারতীয় ও পাকিস্তানি সমর্থকদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছিল। আর সেই প্রেক্ষিতেই তাদের নিরাপত্তা দল সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং তারই ধারাবাহিকতা তারা নাজারকে পাকিস্তানের জার্সি ঢেকে ফেলতে বলেছিলেন।
অন্যদিকে যাকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই নাজার এক্স প্ল্যাটফর্মে (সাবেক টুইটার) জানান,
“আমি তো সেখানে কোনো আপত্তিকর আচরণ করিনি। আমি শুধু পাকিস্তানের জার্সি পরেই খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। এটা তো দোষের কিছু না। আমাদের মনে রাখতে হবে এটা ক্রিকেট, এখানে জাতীয়তাবাদের ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের সবারই স্রেফ খেলাটিকেই উদযাপন করা উচিত।”
১ আগস্ট ২০২৫, ১:২৮ পিএম
আগামী সেপ্টেম্বরে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপকে সামনে রেখে বাড়তি প্রস্তুতির সুযোগ তৈরি হল অংশগ্রহণকারী তিন দেশের সামনে। চলতি মাসে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে অংশ নিতে যাচ্ছে পাকিস্তান আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে ইমিরেটস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। সবগুলো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে বিখ্যাত শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আসর চলবে আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের শুরুতে।
ত্রিদেশীয় এই টুর্নামেন্টে প্রত্যেক দল একে অপরের বিপক্ষে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে সব মিলিয়ে মোট ৬টি ম্যাচ হবে। এরপর পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুই দল ফাইনালে মুখোমুখি হবে।
এবারের এশিয়া কাপ হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, যা শুরু হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর, আর চলবে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই টুর্নামেন্টও হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতেই।
ত্রিদেশীয় সিরিজের তিন দলের মধ্যে আইসিসির সবশেষ টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে পাকিস্তান সবার চেয়ে এগিয়ে আছে, তাদের অবস্থান ৮ নম্বরে। আফগানিস্তান আছে ৯ নম্বরে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত রয়েছে ১৪ নম্বরে।
বুলাওয়ে টেস্টে প্রথম দিনের হতাশা কাটিয়ে দ্বিতীয় দিন ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্ঠা করেছে জিম্বাবুয়ে। নিউ জিল্যান্ডকে প্রথম ইনিংসে ১৫৮'র বেশি লিড নিতে দেয়নি স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় দিন শেষে জিম্বাবুয়ে ইনিংস হার এড়ানো থেকে ১২৬ রানে পিছিয়ে।
প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে মাত্র ১৪৯ রানে অল আউট করে দিন শেষে উইকেটহীন ৯২ স্কোরে স্বাগতিক দলকে রান পাহাড়ে চাপা দেয়ার আভাস দিয়েছিল নিউ জিল্যান্ড। তবে দিনের প্রথম বলে ওপেনিং জুটি বিচ্ছিন্ন করেছেন জিম্বাবুয়ে পেসার মুজারাবানি। তার শর্ট বলে শর্ট লেগে উইল ইয়ং দিয়ে এসেছেন ক্যাচ (৪১)।
দ্বিতীয় উইকেট জুটির ৬৬ রানে স্বাগতিক দলকে হতাশায় ফেলে দিয়েছিলেন ডেভন কনওয়ে-হেনরি নিকোলাস। তবে মুজারাবানির বলে গালিতে নিকোলাম (৩৪) ক্যাচ দেয়ার মধ্য দিয়ে বড় একটা দমকা হাওয়া বয়ে যায় নিউ জিল্যান্ডের ইনিংসের উপর দিয়ে। মাত্র ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদের মুখে পড়ে নিউ জিল্যান্ড।
সেখান থেকে দলের স্কোর তিনশ' ছাড়িয়ে নিয়েছেন ড্যারেল মিচেল। নিয়াম্বুরির ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে থেমেছেন মিচেল ৮০ রানে। ২২৪ মিনিটের যে ইনিংসে ১৫টি চার এর পাশে ছিল একটি ছক্কা। তবে অবধারিত সেঞ্চুরি মিস করেছেন ডেভন কনওয়ে। চিভাঙ্গার আউট সাইড অফ ডেলিভারিতে ডেভন কনওয়ে গালিতে ক্যাচ দিয়ে হাতছাড়া করেছেন ৫ম টেস্ট সেঞ্চুরি।
জিম্বাবুয়ে পেসার মুজারাবানি পেয়েছেন ৩ উইকেট (৩/৭৩)। চিভাঙ্গা পেয়েছেন ২ উইকেট (২/৫১)। প্রথম ইনিংসে ১৫৮ রানে পিছিয়ে পড়া জিম্বাবুয়ে লড়ছে ইনিংস হার এড়াতে। তবে হেনরি (১/১১) এবং ও রোর্কের (১/১৬) বোলিংয়ে স্কোরশিটে ৩১ উঠতে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে ২ উইকেট।