ডিসেম্বরে মাঠে গড়াচ্ছে এনসিএলের টি-টোয়েন্টি আসর। বিপিএলের আগে স্থানীয় ক্রিকেটারদের প্রস্তুত করতেই এমন টুর্নামেন্টের আয়োজন করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। যার গ্রুপ পর্বের ম্যাচ গুলো সিলেটে হলেও প্লে অফ ও ফাইনাল ম্যাচ হবার কথা ছিল ঢাকায়। তবে জানা গেছে, টুর্নামেন্টের সব ম্যাচই চলে যাচ্ছে সিলেটে।
১১ ডিসেম্বর চায়ের শহরে শুরু হচ্ছে এই টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ২৩ ডিসেম্বর। আর এই সবগুলো ম্যাচই হবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। গ্রুপ পর্বে প্রতি দিন দুই মাঠে ম্যাচ হবে ৪ টি করে।
আরও পড়ুন
ক্রিকেটের জন্য হঠাৎ একসঙ্গে দুই খান, নেপথ্যে কী? |
![]() |
মূলত বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বিসিবি। আর্মি স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা থাকলেও এই অনুষ্ঠানটি ২৩ ডিসেম্বর করতে হচ্ছে হোম অব ক্রিকেটে। সে কারণেই সেই সময় মিরপুরে ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব না।
জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা এই সময় ব্যস্ত থাকবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে। তবে ওয়ানডে সিরিজ শেষ করে এই টুর্নামেন্টে যোগ দিতে পারেন মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। তামিম ইকবালও খেলার কথা এই আসরে। এছাড়া দেশের ক্রিকেটের প্রায় সব তারকা ক্রিকেটারকেই দেখা যাবে এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে।
No posts available.
১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫০ পিএম
সফলভাবে জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টি শেষ হওয়ার পর এবার চার দিনের টুর্নামেন্টে খেলবেন স্থানীয় ক্রিকেটাররা। গত কয়েক বছর ধরে প্রথম শ্রেণির এই প্রতিযোগিতায় ব্যবহার করা হচ্ছে ডিউক বল।
তবে এবার সামনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থাকায় এনসিএলের প্রথম দুই রাউন্ডে ডিউকের বদলে ব্যবহার করা হবে কুকাবুরা বল। কারণ ওই সিরিজের দুই ম্যাচেও কুকাবুরা বলে খেলা হবে।
আগামী ২৫ অক্টোবর শুরু হওয়ার কথা এনসিএলের নতুন মৌসুম। ওই টুর্নামেন্টের প্রথম দুই রাউন্ড দিয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের প্রস্তুতিও সেরে নিতে চায় বিসিবি। তাই কুকাবুরা বল ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে বোর্ডের একটি সূত্র।
আরও পড়ুন
উইন্ডিজদের ধবলধোলাই করে গিলের প্রথম সিরিজ জয় |
![]() |
“সামনে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ থাকলে আমরা আগেও এটি (কুকাবুরা বলের ব্যবহার) করেছি। আয়ারল্যান্ড সিরিজ যেহেতু কুকাবুরা বলে খেলা হবে তাই আমরা চাই ক্রিকেটাররা বিশেষ করে বোলাররা যেন কুকাবুরা দিয়েই প্রস্তুতিটা নিতে পারে।”
কুকাবুরা বলের তুলনায় ডিউক বলের সিম তুলনামূলক খাড়া ও এর উজ্জ্বলতাও টিকে থাকে লম্বা সময়। বোলাররা কিছুটা বাড়তি সুবিধা পান এই বলে। তাই দেশের তুলনার ধীর পিচে গতির ঝড় তোলার জন্য ২০২২ সালের এনসিএল থেকে ডিউক বলের ব্যবহার শুরু হয়।
আগামী মাসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সিলেটে প্রথম ম্যাচ হবে ১১ তারিখ থেকে। এরপর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পরের ম্যাচ শুরু ১৯ তারিখ।
চতুর্থ দিনেই দিল্লি টেস্টের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায়। ইনিংস ব্যবধানে হারতে বসা ম্যাচটি শেষ দিন নিয়ে যাওয়াটাই ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাপ্তি। শেষ পর্যন্ত হেসেখেলেই জিতেছে ভারত।
দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য ১২১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় পেয়েছে ভারত। এক উইকেটে ৬৩ রানে দিন শুরু করা স্বাগতিকরা আজ পঞ্চম দিনে বাকি ৫৮ রান তুলে ক্যারিবিয়দের ধবলধোলাই নিশ্চিত করল। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানের জয়ে সাদা জার্সিতে ভারতের অধিনায়ক শুবমান গিলও পেলেন প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ।
দিল্লি টেস্ট পঞ্চম দিনে গড়ালেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের হারটা প্রায় নিশ্চিতই ছিল। ১২১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে যস্বশী জয়সাওয়ালের উইকেট হারালেও ৬৩ রান তোলে ভারত। শেষ দিনে সাই সুদর্শন ও শুভমান গিল ফিরলেও লোকেশ রাহুলের হাফ সেঞ্চুরিতে অনায়েসেই জয় তুলে নেয় তারা।
আরও পড়ুন
ম্যাচের শেষ বল করার পরই ভারতীয় ক্রিকেটারের মৃত্যু |
![]() |
ভারতের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে সবশেষ ৬ টেস্টের সবকটিতেই হারল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতের বিপক্ষে সবশেষ ১০ টেস্ট সিরিজের একটিতেও জিততে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একটি প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টানা সর্বোচ্চ সিরিজ জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার পাশে বসল গিলের দল। ১৯৯৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা ১০টি টেস্ট সিরিজ জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবশেষ ২৭ টেস্টের একটিতেও হারেনি ভারত।
ঘরের মাঠে ২৯৬ টেস্টে ভারতের এটি ১২২তম জয়। শুবমান গিলের দল পেছনে ফেলেছে ১২১ টেস্ট জেতা সাউথ আফ্রিকাকে। ঘরের মাঠে ভারতের চেয়ে বেশি টেস্ট জয় আছে কেবল অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের।
ভারত ২০০২ থেকে এ পর্যন্ত টানা ১০টি টেস্ট সিরিজ জিতল সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই। ক্রেগ ব্রাফেটের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম পাঁচ টেস্টেই হারলেন চেজ।
ক্রিকেটে অন্ধকার সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরও একটি হারের সঙ্গে অধিনায়ক রস্টন চেজও অপ্রীতিকর এক রেকর্ড গড়লেন। ক্রেইগ ব্রার্থওয়েটের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম পাঁচ টেস্টের সবকটিতে হেরেছেন তিনি।
পঞ্চম দিনে ৫৮ রানেল লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত পঞ্চম ১১তম ওভারে সুদর্শনকে হারায়। রোস্টন চেজের বলে স্লিপে এই ব্যাটারে দারুণ ক্যাচ নেন শাই হোপ। ৩৯ রানে ফেরেন সুদর্শন। দলীয় ১০৮ রানে আউট হন গিল। দ্রুত তোলার চেষ্টায় বল আকশে তুলে ক্যাচ তুলে দেন ভারতের অধিনায়ক। ১৩ রান করে ফেরা গিলের আউটের পর আর উইকেট হারায়নি ভারত। ওপেনার লোকেশ রাহুল এক প্রান্তে ৫৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এত কাছে, তবু কত দূরে। ধরা দিয়েও জয়টা আর দিল না ধরা। আরেকবার জয় হাতছাড়া হওয়ার বিষাদের গল্প লিখল বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষকে ভড়কে দেওয়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকল বাংলাদেশের পারফরম্যান্স।
নারী বিশ্বকাপে গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের ৩ উইকেটে হার চাইলেও ভুলে থাকা কঠিন। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় জয়টা প্রায় মুঠোবন্দি করে ফেলেছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। তবে একের পর এক সুযোগ হারিয়ে হাত থেকে ফসকে যায় ম্যাচ। ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস নামক প্রচলিত কথাকে বাস্তবে রূপ দিয়ে হারতে হয় বাংলাদেশেকে।
এর আগে ইংল্যান্ডকেও বাগে পেয়ে হারাতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে পাওয়া জয়ই এখন পর্যন্ত একমাত্র হয়ে রইল।
অবশ্য এই হারের পরও দলের লড়াকু মানসিকতায় তৃপ্তি খুঁজে পাচ্ছেন ফারজানা পিংকী। এখন আর কোনো দলের বিপক্ষে একপেশে লড়াই দেখতে হচ্ছে না। সীমিত সুবিধা নিয়েও যে বাংলাদেশ সেরাটা দিচ্ছে সেটা নিয়েই গর্বিত বাংলাদেশের ওপেনার।
ম্যাচ শেষে টি-স্পোর্টসের মুখোমুখি হয়ে পিংকী বলেন, ‘এখন আমাদের টিমের বন্ডিংটা এমন যে আমরা শেষ বল পর্যন্ত লড়ে যাব। কোচিং স্টাফ থেকে শুরু সব খেলোয়াড়রাই এমন। এই যে পরিবর্তন সেটা বড় দলগুলোর জন্য একটা বার্তাও। আমরা যে একপেশে ম্যাচ হচ্ছে না।’
ভারতে এবারের বিশ্বকাপের আগে প্রায় ছয়মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। এ ছাড়া বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাও খুব একটা পায় না নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। এরপরও দলের সেরাটা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকে দুর্দান্ত বলছেন পিংকী, ‘আমরা যে অল্প ফেসিলিটি নিয়েই যে এভাবে ফাইট করছি সেটা আসলে মাইন্ডব্লোয়িং। আসলে তাদের কিছু বললে অনেক কমই হবে। আসলে ইচ্ছা শক্তি থাকলে সবই সম্ভব।’
পারফরম্যান্সের সুবাদ এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটভক্তদের আগ্রহ জন্মেছে নারী দলের খেলাতেও। সমর্থকরা পুরুষদের ক্রিকেট আর নারীদের ক্রিকেটকে সমানভাবে দেখারই চেষ্টা করে বলে মনে করেন পিংকী। সমর্থকদের আশা না হারানোর কথা বলে এই ওপেনার বলেন, ‘আমরা হচ্ছে ক্রিকেট পাগল জাতি, বাংলাদেশে শহর কিংবা গ্রামে ক্রিকেটটাকে তারা এমনভাবে অনূভব করে যে কখনো আমার কাছে মনে হয় তারা ছেলেদের ক্রিকেট আর মেয়েদের ক্রিকেটকে সমানভাবেই দেখে। আবেগীয় দিক থেকে তাদের খারাপ লাগতেই পারে, তবে আমার মনে হয় তারা আত্মবিশ্বাসী। তারা অনেক কষ্ট পেয়েছে, আমরাও পেয়েছি। তবে আমি বলব আশাহত না হতে। ছোটো ছোটো বিষয়গুলো যদি আমরা উন্নতি করতে পারি তবে এই দলটাই সামনে অনেক কিছু করতে পারবে।’
দুয়ারে এসে চৌকাঠ পেরোতে না পারার দুঃখ আরও একবার অনুধাবন করলো বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হাতছোঁয়া দূরত্বের ম্যাচ ফসকে যাওয়ার পর আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রবল সম্ভাবনা জাগিয়ে হেরেছেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। বিশ্বকাপে চার ম্যাচে লাল সবুজ দলের নামের পাশে এখন শুধু একটিই জয়।
নিউজিল্যান্ড ছাড়া আসরে বাদবাকি সবগুলো ম্যাচে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল বাংলাদেশ। কিউই মেয়েদের বিপক্ষে ১০০ রানে হারলেও ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লড়াই ছিল দেখার মতো। তিন ম্যাচের মধ্যে বিশাখাপত্তনে সোমবারের ম্যাচটি বেশি কষ্ট দিয়েছে জ্যোতিদের।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার সম্প্রচার চ্যানেলকে বাংলাদেশের অধিনায়ক জানিয়েছেন, ম্যাচ হারের দুঃখে ড্রেসিংরুমে গিয়ে ক্রিকেটাররা কান্না করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি সত্যিই গর্বিত মেয়েদের জন্য, যারা শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করেছে। খারাপ লাগছে তাদের জন্য। কারণ তারা ড্রেসিংরুমে কাঁদছে। তারা খুবই কম বয়সি এবং আবেগপ্রবণ। তবে তারা শতভাগ নিজেদের উজাড় করে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস রেখেছে আমরা জিতব। এটা আমাদের জন্য একটা দারুণ শিক্ষা ছিল।’
আরও পড়ুন
ম্যাচের শেষ বল করার পরই ভারতীয় ক্রিকেটারের মৃত্যু |
![]() |
জ্যোতি আরও বলেছেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা ছিল পাওয়ারপ্লেতে উইকেট না হারানো। আমরা জুটি তৈরি করার দিকে মনোযোগী ছিলাম। এজন্য টপ অর্ডারে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছিল। আজ আমরা পিংকিকে (ফারজানা) খেলিয়েছি। সে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় এবং খুব ভালো খেলেছে।’
বাংলাদেশ অধিনায়ক মনে করেন ১০-১৫ রান কম হয়েছে। যদি তা হতো ফল ভিন্ন হতো। তিনি বলেছেন, ‘হয়তো আমরা এখনও ১০ থেকে ১৫ রান কম পেয়েছি।’
সবশেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন, ‘নিউজিল্যান্ডের ম্যাচের পর যেভাবে আমরা ফিরে এসেছি সেটা খুবই প্রশংসনীয়। আমাদের যা কিছু হয়েছে তার জন্য গর্ব করা উচিত। আমাদের আরও তিনটি ম্যাচ বাকি। মাথা উঁচু করে সঠিক পথেই এগিয়ে যেতে চাই।’
আবারও যেন সত্য প্রমাণিত হলো ক্রিকেটের সেই অমোঘ সত্য। ক্যাচই আপনাকে ম্যাচ জেতায়। আর সেই ক্যাচ নিতেই যেন অনীহা দেখালেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। এর মাশুল দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সুযোগ তৈরি করেও শেষ পর্যন্ত হেরে গেল তারা।
বিশাখাপত্তমে সোমবার বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৩২ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৩ বল বাকি থাকতে ম্যাচ শেষ করে প্রোটিয়ারা।
ভারতের বিপক্ষে আগের ম্যাচের মতো আরও এবার দক্ষিণ আফ্রিকার নায়ক নাদিন ডি ক্লার্ক। জীবন পেয়ে ২৮ বলে ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জেতান তিনি।
অথচ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু লরা উলভার্ট, ক্লো ট্রায়ন ও নাদিন ডি ক্লার্কের ক্যাচ ফেলে ম্যাচও ছেড়ে দেন ফিল্ডাররা।
এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত পারেনি বাংলাদেশ। ফলে চার ম্যাচে তাদের নামের পাশে এখন শুধু একটিই জয়।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল মন্থর। তবে উইকেট পড়তে দেননি দুই ওপেনার রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক ও একাদশে ফেরা অভিজ্ঞ ব্যাটার ফারজানা হক পিঙ্কি। প্রথম পাওয়ার প্লেতে আসে ২৮ রান।
উদ্বোধনী জুটির পঞ্চাশ ছুঁয়ে ১৭তম ওভারে আউট হন ৫২ বলে ২৫ রান করা ঝিলিক। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ফারজানাও। তিনি ৩০ রান করতে খেলে ফেলেন ৭৬ বল। তখন স্কোর দাঁড়ায় ২৫ ওভারে ২ উইকেটে মাত্র ৭৩ রান।
সেখান থেকে পরের ২৫ ওভারে আরও ১৫৯ রান করে বাংলাদেশ। যার শুরুটা করে দেন নিগার সুলতানা জ্যোতি ও শারমিন আক্তার সুপ্তা। তৃতীয় উইকেটে দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৯১ বলে ৭৭ রানের চমৎকার জুটি।
জ্যোতির ব্যাট থেকে আসে ৪২ বলে ৩২ রান। ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি করে ৭৭ বলে ৫০ রান করে আউট হন সুপ্তা।
পঞ্চম উইকেটে সোবহানা মোস্তারিকে নিয়ে ২৫ বলে ৩১ রানের জুটি গড়েন স্বর্ণা। ৪৭তম ওভারে তিন বলের মধ্যে আউট হন সোবহানা ও রাবেয়া খান।
শেষের ঝড় তোলেন রিতু মনি ও স্বর্ণা। লং অনের ওপর দিয়ে দুর্দান্ত ৩টি ছক্কা মারেন স্বর্ণা। ক্রিজে গিয়ে টানা তিন বলে চার মারেন রিতু। দুজনের ১৮ বলের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৩৭ রান পায় বাংলাদেশ। যা তাদের এনে দেয় ২৩২ রানের সংগ্রহ।
মাত্র ৮ বলে ১৯ রানের ক্যামিও খেলেন রিতু। আর স্বর্ণার ব্যাট থেকে আসে ৩৫ বলে ৫১ রান।
মাত্র ৩৪ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েন স্বর্ণা। ৩টি চারের সঙ্গে ৩টি চগক্কা মারেন তরুণ অলরাউন্ডার। এটিও ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বল হাতে ৪২ রানে ২ উইকেট নেন ননকুলুলেকো এমলাবা।
পরে রান তাড়ায় শুরুতেই প্রোটিয়াদের ধাক্কা দেন নাহিদা আক্তার। দ্বিতীয় ওভারেই ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান দারুণ ছন্দে থাকা তাজমিন ব্রিটস।
পঞ্চম ওভারে লরা উলভার্টকেও ফেরাতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু ফিরতি ক্যাচ ছেড়ে দেন রাবেয়া। ১১ রানে জীবন পান প্রোটিয়া অধিনায়ক।
বেঁচে গিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে আনেক বশের সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়েন উলভার্ট। ১৫তম ওভারের শেষ বলে দুজনের ভুল বোঝাবুঝিতে ৩১ রান করা উলভার্ট রান আউট হলে ভাঙে এই জুটি।
পরের ওভারে রিতু মনির বলে ক্যাচ আউট হন ২৮ রান করা বশ। চমৎকার লেগ স্পিন ডেলিভারিতে আনেরিক ডেরেকসনকে বোল্ড করেন রাবেয়া। আর ফাহিমা খাতুনের বলে বোল্ড হন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার সিনালো জাফটা।
মাত্র ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকার হাল ধরেন ক্লো ট্রায়ন ও মারিয়ান ক্যাপ। ওই ধাক্কা সামলে দুজন মিলে গড়েন ১০৯ বলে ৮৫ রানের জুটি।
৪১তম ওভারে জুটি ভাঙেন নাহিদা। ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানার কাছে ধরা পড়েন ৭১ বলে ৫৬ রান করা ক্যাপ।
এরপর ট্রায়নকে ফেরানোর সুযোগ তৈরি করেন রাবেয়া। কিন্তু সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন বদলি ফিল্ডার সুমাইয়া আক্তার৷ উল্টো বাউন্ডারি পেয়ে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন ট্রায়ন।
একই ওভারে ছক্কা ও চার মেরে বাংলাদেশের হতাশা বাড়ান প্রোটিয়া ব্যাটার। ৪২ বলে ৫৩ রান থেকে ৩৬ বলে ৩৭ রানে নেমে আসে সমীকরণ।
তবে পরের ওভারে জাদু দেখান রিতু। শর্ট থার্ড ম্যান থেকে থ্রো করে স্টাম্প ভেঙে ট্রায়নকে রান আউট করেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৬৯ বলে ৬২ রান করে ফেরেন ট্রায়ন।
ফলে শেষ দিকে সমীকরণ দাঁড়ায় ২৪ বলে ৩২ রান। যেখানে বাংলাদেশের জয়ের পথে একমাত্র বাধা হয়ে ছিলেন নাদিন ডি ক্লার্ক। ফাহিমার ওভারে ২ চারে ১১ রান নেন তিনি। ১৮ বলে বাকি থাকে ২১ রান।
৪৯তম ওভারে আবারও হতাশায় পোড়েন রাবেয়া। লং অফে ডি ক্লার্কের ক্যাচ ছেড়ে দেন স্বর্ণা। ২৬ রানে বেঁচে যান প্রোটিয়া ব্যাটার। শেষ ওভারে সমীকরণ দাঁড়ায় ৮ রানের।
অভিজ্ঞ নাহিদার হাতে বল তুলে দেন জ্যোতি। প্রথম বলে ৪ ও তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন ডি ক্লার্ক। ২৯ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।