চলমান লিজেন্ডস বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বহুল প্রতীক্ষিত ম্যাচটি আর হচ্ছে না। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েন এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সীমান্তে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় দলের কয়েকজন খেলোয়াড় প্রথমে ম্যাচটি বয়কট করেন। তার রেশ ধরে শেষ পর্যন্ত দুই দেশের সাবেকদের মধ্যকার ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত বাতিলই করে দিয়েছে টুর্নামেন্ট কমিটি।
সূচী অনুযায়ী, আগামী রবিবার (১৪ জুলাই) ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ মূহুর্তে এসে ভারত দলে থাকা শিখর ধাওয়ান, ইরফান পাঠান, ইউসুফ পাঠান আরও কয়েকজন ক্রিকেটাররা এই ম্যাচে অংশ নেওয়া থেকে পিছু হটেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে ধাওয়ান উল্লেখ করেন, বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই তিনি এই ম্যাচটি না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগাওয়ে এক সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়ে ক্রিকেটেও। সাময়িকভাবে স্থগিত হয় ওই সময়ে চলনান আইপিএল ও পিএসএল। এছাড়া পাকিস্তানের সাথে আগামী এশিয়া কাপেও ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত।
এসবের মাঝেও লিজেন্ডস বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে কেন রাখা হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ? টুর্নামেন্ট আয়োজক সংস্থা একটি বিবৃতিতে দিয়েছে এর ব্যাখা।
“পাকিস্তান হকি দলের ভারত সফরের খবর এবং দুই দেশের অনূর্ধ্ব-১৬ দলের মধ্যকার ভলিবল ম্যাচে দেখে আমরা এই ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমরা ভারতীয় দলের কিংবদন্তিদের অস্বস্তিতে ফেলতে চাই না, এটাই আমাদের কাছে বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে। তাই ম্যাচটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
দ্বিতীয়বারের মত হওয়া এই টুর্নামেন্টে এবার অংশ নিচ্ছে ৬টি দল : ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রতিটি দল একে অন্যের বিপক্ষে একবার করে খেলবে। শীর্ষ চার দল উঠবে সেমিফাইনালে। গ্রুপ পর্বে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বাতিল হলেও, ভবিষ্যতে সেমিফাইনাল বা ফাইনালে ভারত ও পাকিস্তান মুখোমুখি হলে তখন কী হবে, তা নিয়ে রয়ে গেছে অনিশ্চিয়তা।
৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২১ জুলাই ২০২৫, ৩:১৩ পিএম
এক বছরেরও বেশি সময় পর মিরপুরে টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ বাংলাদেশ দল জয় দিয়ে রাঙালেও আলোচনায় এসেছে উইকেটের আচরণ। শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের চিরচেনা ধীরগতির উইকেট অবশ্য পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে দেখা যায়নি। এরপরও মাত্র ১১০ রানে গুটিয়ে বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়া পাকিস্তান কোচ মাইক হেসন সরাসরি কাঠগড়ায় তুলেছেন উইকেটকে, যা তার কাছে মনে হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য অগ্রহণযোগ্য। আসলেই কি তাই?
মিরপুরের উইকেট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে ২০ ওভারের ক্রিকেটে যেখানে আবেদন থাকে স্পোর্টিং উইকেটের, সেখানে অধিকাংশ সময়ই এখানে দেখা মেলে বেশ স্লো, টার্নিং ও নিচু বাউন্সের। ফলে ব্যাটাররা পারেন না সহজাত আগ্রাসী ব্যাটিং করতে, আর বোলাররা দেখান দাপট। ফলাফল যা হওয়ার তাই হয়, বোর্ডে রান হয় কম আর ম্যাচ হয় লো-স্কোরিং।
মোটা দাগে রাখলে রোববার বাংলাদেশ-পাকিস্তানের প্রথম ম্যাচটিকে সেই কাতারে আপনি রাখতেই পারেন। কারণ, আগে ব্যাট করা দল মাত্র ১১০ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর সেটা তাড়া করতে প্রতিপক্ষকে খেলতে হয়েছে ১৬তম ওভার পর্যন্ত। ম্যাচটি যদি ২০২১-২২ সালের দিকেও হত, হেসনের দাবিকে আপনি যৌক্তিক মনে করতেই পারতেন। তবে এটা তো ২০২৫ সালের ম্যাচ এবং বাংলাদেশ দল তাদের ব্যাটিংয়ের সময় দেখিয়ে দিয়েছে, মিরপুরের উইকেট অন্তত এদিন লো-স্কোরিং ছিল না।
অবশ্য বাংলাদেশের আগে আনা যেতে পারে পাকিস্তানের ইনিংসের কথাও। বাংলাদেশকে চাপে ফেলে প্রথম তিন ওভারেই দলটি তুলে ফেলেছিল ৩২ রান। তবে অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে ভেঙে পড়ে তাদের ব্যাটিং অর্ডার। উইকেটের আচরণের সাথে তাল না মিলিয়ে বারবার বড় শট খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন পাকিস্তান ব্যাটাররা। ৪৬ রানেই তাতে হারাতে হয় ৫ উইকেট।
এর মাঝেও ফখর জামান খেলেন ৩৪ বলে ৬ চার ও এক ছক্কায় ৪৪ রানের ইনিংস, যেখানে আবার তিনি জীবন পান দুই বার। এরপর আউট হন বিব্রতকর এক রান আউটে। পাকিস্তানের ইনিংসে এটি ছাড়াও ছিল আরও দুটি রান আউটের ঘটনা। একটি দলের তিন ব্যাটার যখন রান আউটের শিকার হন, ব্যাটিং বিপর্যয় তখন প্রায় অবধারিতই।
এর সাথে যোগ হয় মুস্তাফিজুর রহমানকে একেবারেই না বুঝতে পারা। এটা বলার তো অপেক্ষা রাখে না যে, মিরপুরের উইকেটে মুস্তাফিজুর বিশ্বের অন্যতম ভয়ংকর পেসার। তার স্লোয়ার, কাঁটার এখানে ভীষণ কার্যকর হয়। প্রথম ম্যাচে তিনি আবার ছিলেন নিজের সেরা ছন্দে। চার ওভারে ১৮টি ডট দিয়ে মাত্র ৬ রানে নেন ২ উইকেট।
তার মানে, বাকি ১৫.৩ ওভারে পাকিস্তান করেছে মোটে ১০৪ রান! এই ফরম্যাটে প্রতিপক্ষের একজন বোলার যদি চার ওভারে দেন মাত্র ৬ রান, তাহলে নিশ্চিতভাবে ব্যাটিং করা দলকে অন্য বোলারদের ওপর ভীষণ চড়াও হতেই হবে। পাকিস্তান দল সেটাও পারেনি। অধিকাংশ ব্যাটাররা বাজে শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। ফলে ফখরের ইনিংস ও শেষের দিকে আব্বাস আফ্রিফির ক্যামিও বাদে রানের জন্য বেশ সংগ্রাম করতে হয়েছে সালমান আঘার দলকে।
ম্যাচ শেষে হেসন অবশ্য ব্যাটারদের ব্যর্থতা আড়াল করে অনেকটাই দায় চাপান উইকেটের ওপর। “এই উইকেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। এটা কোনো দলের জন্যই আদর্শ নয়। আমরা যে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটার দায় আমাদেরই। তবে এই ধরনের উইকেট আন্তর্জাতিক ম্যাচে ব্যবহার করা ঠিক নয়। হ্যাঁ, ফখর শুরুতে কিছু শট খেলেছিল। আর সেজন্যই আমাদের মনে হয়েছিল উইকেট হয়ত সহজ। কিন্তু আসলে তা ছিল না। বল মুভ করছিল বেশ, হঠাৎ হঠাৎ লাফ দিচ্ছিল। আর তখনই আমাদের ব্যাটাররা ভুল শট বেছে নিয়েছে। সাথে তিনটি রান আউটও আমাদের কাজটা আরও কঠিন করেছে।”
হেসনের মন্ত্যবের প্রেক্ষিতে আসা যাক বাংলাদেশের ইনিংস। তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস যখন আউট হন, তখন ২.২ ওভারে বোর্ডে রান মাত্র ৭। সেখান থেকে বাংলাদেশ ম্যাচ শেষ করেছে ২৭ বল হাতে রেখে। অর্থাৎ, পাকিস্তানের মত চাপের মুখে ছিল বাংলাদেশও, তবে এই উইকেটে সেটা কীভাবে কাউন্টার করতে হয়, সেই ব্যাপারে পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহীদ হৃদয় রেখেছিলেন স্বচ্ছ ধারণা। জুটিতে তাই একজন বলের মেধা বুঝে আক্রমণে গেছেন, অন্যজন আবার অনেকটা ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করেছেন।
টার্গেট ছোট হওয়ায় এটাই ছিল ব্যাট করার সেরা উপায়। শেষ পর্যন্ত তাওহীদ ৩৭ বলে ৩৬ করে আউট হলেও ইমন ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। খেলেন মাত্র ৩৯ বলে ৫৬ রানের ইনিংস, যা তিনি সাজান ৫ ছক্কা ও ৩ বাউন্ডারিতে। সাথে শেষের দিকে ১৫ রানের ক্যামিও খেলেন জাকের আলি অনিক।
এই তিনজনের ব্যাটিংই বলে দেয়, দ্বিতীয় ইনিংসেও মিরপুরের উইকেট মোটেও ব্যাটিং বিরুদ্ধ ছিল না। টার্গেট নাগালের মধ্যে থাকায় রয়েসয়ে ব্যাট করেছে বাংলাদেশ। নাহলে অনায়াসেই তারা এই রান ১২-১৩ ওভারের মধ্যেও তাড়া করতে পারতেন। সব মিলিয়ে তাই বলা যায়, পাকিস্তান তাদের ব্যাটিং পরিকল্পনা যদি বাস্তবায়ন করতে পারত, তাহলে ১৫০-১৬০ রান খুব সম্ভব ছিল তাদের জন্য। বাংলাদেশের ইনিংস তারই প্রমাণ।
অথচ হেসন কিনা অতীতের মিরপুরের উইকেটের সাথে এই ম্যাচের উইকেটের মিল টেনে দিয়েছেন সতর্ক বার্তা। “ভালো ক্রিকেটার তৈরি করতে হলে ভালো মানের উইকেট দরকার। বিপিএলে কিছু ভালো উইকেট দেখা গেছে ঠিকই, কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে এই উইকেটের কোনো মিল নেই। বাংলাদেশ দল যখন বিদেশে খেলে, তখন এমন উইকেট কিন্তু তাদের কোনো সাহায্য করে না। আপনি জানেন না এখানে ১০০, ১৩০ বা ১৫০ – কোনটা ভালো স্কোর। এটা কোনো দলের জন্যই ইতিবাচক নয়।”
হেসন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা কোচদের একজন। ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবেও তার জুড়ি মেলা ভার। ক্রিকেটে ডাটার ব্যবহার তিনি বেশ করেন। অথচ পাকিস্তান কোচ কিনা তার দলের ব্যাটারদের ব্যর্থতা আড়াল করলেন উইকেটের ওপর দোষ চাপিয়ে, যা বেশ হতাশাজনকই। তিনি যদি ঠিক হতেন, তাহলে একই উইকেটে বাংলাদেশ দলকেও করতে হত অনেক সংগ্রাম। ১১১ রান করতেই দেখা যেত উইকেটে চলে গেছে ৭-৮টি, আর ম্যাচ গড়িয়েছে ১৯-২০ ওভারে। এর কোনোটিই যেহেতু হয়নি, তাই হেসনের অভিযোগ আর ধোপে টেকে না, অন্তত এই ম্যাচের প্রেক্ষাপটে।
২০ জুলাই ২০২৫, ৯:৪৭ পিএম
শ্রীলঙ্কার মাটি থেকে প্রথম কোনো সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মিরপুরে এসেই চাঙ্গা বাংলাদেশ দল। ২ মাস আগে পাকিস্তানের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইট ওয়াশের বদলা নিতে সংকল্পবদ্ধ লিটন দাসের দল সিরিজের শুরুটা করেছে রেকর্ড জয়ে। পেস ত্রয়ীর গর্জে ওঠার রাতে পাকিস্তানকে সর্বনিম্ন স্কোরের (১১০/১০) অপবাদদিয়ে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের পন ছিল বাংলাদেশ দলের। পারভেজ ইমন-তাওহিদের হৃদয় জয় করা ব্যাটিং! তাতেই টি-টোয়েন্টি সংস্করনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জিতে সিরিজ শুরু করতে পেরেছে বাংলাদেশ। মিরপুরে অবশ্য পাকিস্তানের বিপক্ষে এমন কৃতিত্ব এই নিয়ে দ্বিতীয়। এর আগে ২০১৫ সালে ৭ উইকেটে জয়ের রেকর্ডটা ছিল বাংলাদেশের পাকিস্তানের বিপক্ষে। যে ম্যাচে ১৪২ রানের টার্গেটে বাংলাদেশ জিতেছে ২২ বল হাতে রেখে। এবার ১১১ রানের টার্গেটে ৭ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ ২৭ বল হাতে রেখে।
টসে জিতে বোলিং করতে এসে ১২০টি বৈধ ডেলিভারির মধ্যে ৭০টি ডট! অবশিষ্ট ৫০টি ডেলিভারির মধ্যে বাংলাদেশ বোলাররা খেয়েছে ৯টি চার, ৫টি ছক্কা! স্কোরশিটে রানের জন্য এতোটাই ধুঁকেছে পাকিস্তান। বদলা'র সিরিজে বাংলাদেশ বোলারদের শুরু এতোটাই ভয়ংকর। যে ভয়ংকর বোলিংয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বনিম্ন স্কোরের লজ্জা পেয়েছে এদিন পাকিস্তান। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ১২৯/৭। মিরপুরে সেই স্কোরটি তাদের ২০১৬ সালে। এবােরে তাদের ব্যাটিং দৈন্যতা ছিল আরও প্রকট। পাকিস্তানকে বাংলাদেশ থামিয়েছে ১১০/১০-এ।
পাকিস্তানের কাউকে এদিন ফিফটি করতে দেয়নি বাংলাদেশ বোলাররা। বিশেষ করে বাংলাদেশের তিন পেসার তাসকিন, মুস্তাফিজ, তানজিম হাসান সাকিবকে দিতে হবে কৃতিত্ব। মুস্তাফিজের বোলিং (৪-০-৬-২) এদিন একটু বেশিই ধাক্কা দিয়েছে পাকিস্তানকে। ২৪টি ডেলিভারির মধ্যে ১৮টি দিয়েছেন ডট। বাকি ৬টি সিঙ্গল। তিন স্পেলের শেষটি (২-০-৩-১) এক কথায় বিস্ময়কেও হার মানাবে। মুস্তাফিজ এর আগে দুবার টি-টোয়েন্টিতে সিঙ্গলের ঘরে রান দিয়েছেন। ওই দুবারই (৪-০-৯-০ ও ৪-১-৯-২) অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে , ২০২১ সালে। রোববার পাকিস্তানের বিপক্ষে বোলিং (৪-০-৬-২) সংক্ষিপ্ত সংস্করনের ক্রিকেটে সবচেয়ে মিতব্যয়ী।
ফিফটির পর পারভেজ হোসেন ইমন। ছবি-বিসিবি
তানজিম হাসান সাকিবও করেছেণ প্রশংসিত বোলিং (৪-০-২০-১)। ২৪টি ডেলিভারির মধ্যে ১৬টি দিয়েছেন তিনি ডট। সালমান আগা (৯ বলে ৩)-কে শিকার করা তার প্রথম স্পেলটি (২-০-৪-১) ছিল এক কথায় অসাধারণ।
ফখর জামানের কাছে ওয়েলকাম বাউন্ডারি খেয়ে প্রথম ওভারে সাইম আইয়ুবকে (৪ বলে ৬) শিকার করা ২ ওভারের প্রথম স্পেলে খরচ করেছেন তাসকিন ১৫ রান। ছন্দে ফিরেছেন তাসকিন ৩ বলের শেষ স্পেলে (০.৩-০-০-২)। তাতেই শেষ পাওয়ার প্লে-তে বড্ড বিবর্ণ পাকিস্তানকে দেখেছে দর্শক। শেষ পাওয়ার প্লে-তে ২২ রানে ৪ উইকেট, দুর্দশাগ্রস্ত ব্যাটিংয়ের পক্ষেই কথা বলবে।
১৪ মাস পর মিরপুরে টি-টোয়েন্টি প্রবর্তন ম্যাচে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়াকে উত্তম মনে করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমান করেছেন লিটন। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে অফ স্পিনার শেখ মেহেদী-তাসকিন-তানজিম হাসান সাকিবের বোলিংয়ে বড় ধাক্কা দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। স্কোরশিটে ৪৪ উঠতে পাকিস্তানের ৪ উইকেট ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ পেস ত্রয়ীর গর্জে ওঠার দিনে তিনটি রান আউট, ইনিংসের ৪র্থ বলে ফখর জামানের ক্যাচটি নিতে পারলে স্কোরের চেহারা হয়তবা তিন অঙ্কের নাগাল পেতো না। কারণ, এই ফখর জামান রান আউটে কাটা পড়ার আগে ইনিংস টেনে নিয়েছেন ৪৪ পর্যন্ত। ৩৪ বলের যে ইনিংসে ৬টি চার এর পাশে মেরেছেন ১টি ছক্কা। বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বনিম্ন স্কোরের ইনিংসে ১৫তম ওভারে লেগ স্পিনার রিশাদকে দুটি ছক্কা মেরেছেণ খুশদিল শাহ। ১৬তম ওভারে তানজিম হাসান সাকিবকে পর পর ২টি ছক্কা মেরেছেন আব্বাস আফ্রিদি। ৭ম উইকেট জুটিতে খুশদিল-আব্বাস আফ্রিদির ২৯ বলে ৩৩ এদিন পাকিস্তানের সর্বোচ্চ জুটি।
টার্গেট ১১১, তারপরও সালমান মীর্জার প্রথম স্পেলে (২-০-১৬-২) তানজিদ হাসান তামিম (৪ বলে ১) হুক করতে যেয়ে মিড অনে এবং খুশদিল শাহ'র বলে লিটন অসাধারণ ক্যাচে ( ৪ বলে ১) থেমে গেলে ম্যাচে ভর করে অশনি সংকেত। তবে সেখান থেকে তৃতীয় উইকেট জুটিতে পারভেজ ইমন-তাওহিদ হৃদয় ৬২ বলে ৭৩ রান যোগ করলে বড় জয়ের আবহ পায় বাংলাদেশ। সাবধানী ব্যাটিংয়ে তাওহিদ হৃদয়ের ইনিংস থেমেছে ৩৬ রানে। আব্বাস আফ্রিদির সুইং ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন তিনি ( ৩৭ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৩৬)। তবে ফিফটি পেয়ে, দলকে জিতিয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন পারভেজ হোসেন ইমন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৮ করে শেষ দুই ইনিংসে ডাক পেয়ে নিজের উপর বিরক্তি ছিল এই ওপেনারের। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২ মাস আগে লাহোরে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে ৩৪ বলে ৬৬ রানের হার না মানা ইনিংস থেকে টনিক নিয়ে এদিন একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যাটে ঝড় তুলেছেন ইমন। ফাহিম আশরাফকে মিড উইকেটে ছক্কার শটে মাত্র ৩৪ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি পূর্ণ করেছেন। চারের চেয়ে ছক্কার আধিক্য ইনিংসে ৫৬ রানের হার না মানা ইনিংসে ৩টি চারের পাশে ছিল ৫টি ছক্কা। যে ৫টি ছক্কার মধ্যে সাইম আইয়ুবকে মেরেছেন এক ওভারে লং অনের উপর দিয়ে ২টি ছক্কা! চতুর্থ উইকেট জুটিতে তার পার্টনার জাকের আলী অনিক ছিলেন ১৫ রানে অপরাজিত। যে ইনিংসে মেরেছেন তিনি ৩টি চার।
পাকিস্তানের শুরুটা হল ভীষণ আক্রমণাত্মকভাবে, তবে মাঝপথে গিয়েই তা রূপ নিল ব্যাটিং বিপর্যয়ে। প্রথম কয়েক ওভারের ব্যাকফুটে থাকা বাংলাদেশের বোলাররা পাওয়ার প্লেতেই নিজেদের ফিরে পেলেন। যাওয়া-আসার মিছিলে একাই লড়াই কড়া ফখর জামান আশা জাগিয়েও পারলেন না ইনিংস বড় করতে। একশর আগেই ছয় উইকেটে হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া পাকিস্তান শেষের ব্যাটারদের কল্যাণে পেল একটা লড়াই করার মত পুঁজি।
মিরপুরে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে আগে ব্যাটিং করা পাকিস্তান ১৯.৩ ওভারে গুটিয়ে গেছে ১১০ রানেই।
এক বছরেরও বেশি সময় পর মিরপুরে ২০ ওভারের ক্রিকেটে ফেরার ম্যাচে লিটন দাস ইনিংস শুরু করেন স্পিনার শেখ মাহেদি হাসানকে দিয়ে। দ্বিতীয় বলেই বাউন্ডারি মেরে আক্রমণের আভাস দেন ফখর। তবে পরের বলেই সুইপ করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দিয়েছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার, শর্ট ফাইন লেগে থাকা তাসকিন আহমেদের ব্যর্থ হন ক্যাচ তালুবন্দি করতে। মাত্র ৪ রানে দ্বিতীয় জীবন পান বাঁহাতি ওপেনার।
নিজের দ্বিতীয় ওভারের শুরুতে চাপে পড়ে গিয়েছিলেন মাহেদি। পাঁচ বলের মধ্যে তিনটি বাউন্ডারি মারেন ব্যাটাররা। তবে শেষ হাসি হাসেন অভিজ্ঞ এই অফ স্পিনারই। স্লগ করতে গিয়ে ৪ রানে ডিপ মিড উইকেটে ধরা পড়েন মোহাম্মদ হারিস।
অন্যপ্রান্তে তানজিম হাসান সাকিব আক্রমণে এসেই আঘান হানেন নেন। শুরু থেকে ব্যাটে-বলে না করতে পারা সালমান আঘা ডটের পর ডট দিয়ে চাপ বাড়ান নিজের ওপর। ওভারের শেষ বলে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পাকিস্তান অধিনায়ক, তার আগে ৯ বলে করেন মাত্র ৩ রান।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আক্রমণে এসে উইকেটের দেখা পান মুস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি এই পেসারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হাসান নাওয়াজ ধরা পড়েন ডিপ থার্ড ম্যানে থাকা রিশাদ হোসেনের হাতে। দ্রুত কয়েকটি উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষকে ভালোই চেপে ধরে বাংলাদেশ।
প্রথম তিন ওভারে ৩২ রান করে ফেলা সফরকারীরা পরের তিন ওভারে করতে পারে মাত্র ৯ রান! সাথে হারায় ৪ উইকেট। তাতে পাওয়ার প্লে শেষে পাকিস্তানের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৪১।
খানিক বাদে রান আউটে কাঁটা পড়েন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নাওয়াজ। সাত থেকে দশ ওভারের মধ্যেও বাংলাদেশের বোলাররা অব্যাহত রাখেন তাদের আঁটসাঁট বোলিং। ১০ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬৬/৫।
মাঝে মাহেদির বলে তাকেই রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া ফখর অন্য ব্যাটারদের সংগ্রামের মধ্যেও ব্যাট চালান আপন ছন্দে। টানা উইকেটে পতনেও ভালোভাবেই ছিলেন ফিফটির পথে। তবে তার আগেই বিধিবাম। মুস্তাফিজের বলে পয়েন্টে খেলে দুই রান নেওয়ার চেষ্টায় এক রান সম্পন্ন করে মাঝপথে ঘুরে ক্রিজে ফেরার চেষ্টা করতে গিয়ে পড়ে যান ফখর। তাসকিনের থ্রো স্টাম্পে না লাগলেও শেষ সময়ে বল কুড়িয়ে কোনোমতে স্টাম্প ভেঙে দেন লিটন, শেষ হয় ফখরের ৩৪ বলে ৪৪ রানের ইনিংস।
একশর আগে ৬ উইকেটে হারিয়ে চাপে পড়া পাকিস্তানের চাপ সরাতে পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটেন খুশদিল শাহ ও আব্বাস আফ্রিদি। ১৫তম ওভারে রিশাদ হোসেনেকে দুজন হাঁকান একটি করে ছক্কা । এরপর ১৬তম ওভারে তানজিমের বলে পরপর দুই ছক্কা মারেন আব্বাস।
ফিরতি স্পেলে এসে তাদের প্রতিরোধ ভেঙে দেন মুস্তাফিজুর। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে মিড-অফে ধরা পড়েন খুশদিল শাহ। ২৩ বলে ১৭ রান করেন তিনি। ২০তম ওভারে আব্বাস ২৪ বলে ২২ রানে আউট হন, যা শেষ করে দেয় তার দলের ১২০ রান পার করার আশা। ২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার তাসকিন।
১৯ জুলাই ২০২৫, ৭:৫৬ পিএম
আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবধান সবে ২ ধাপ। পাকিস্তান নিচে নামতে নামতে এখন ৮ নম্বরে, বাংলাদেশের অবস্থান সেখানে ১০। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের (২-১) উৎসব করে বাংলাদেশ দল এখন অনেকটাই চাঙ্গা। আইসিসির এফটিপির বাইরে পাকিস্তানের সঙ্গে বোনাস একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজন করতে পেরে বিসিবিও মহাখুশি। গত মে মাসে লাহোরে পাকিস্তানের কাছে ০-৩ এ টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের বদলার মঞ্চ এখন প্রস্তুত মিরপুরে।
হেড টু হেড রেকর্ড অবশ্য অনেকখানি এগিয়ে রাখবে পাকিস্তানকে। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে ২২টি মুখোমুখি লড়াইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩টি জয়ের বিপরীতে হারের সংখ্যা ১৯টি! ৬টি টি-টোয়েন্টি সিরিজের মধ্যে একটি শুধু জিততে পেরেছে বাংলাদেশ-তাও আবার ১০ বছর আগে। ভেন্যুটি যখন শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম, তখনও কিন্তু অতীতে হোম অ্যাডভানটেজ নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। এই ভেন্যুতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ৫টিতে হেরেছে বাংলাদেশ।
তবে শ্রীলঙ্কা সফরে ইতিহাস রচনায় এখন সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে অফুরন্ত প্রাণশক্তি পেয়েছে বাংলাদেশ দল। শ্রীলঙ্কায় ইতিহাস রচনা করা দলটিকে অপরিবর্তিত রেখে পাকিস্তানের বিপক্ষে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি। সিরিজ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সাহসী উচ্চারণই করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস-‘যে কোনো দলকে হারানোর মতো মানসিকতা আমাদের আছে। আমরা সেই চেষ্টাই করব। তবে আপনাকে নির্দিষ্ট দিনে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। তার মানে এই না যে, হোম কন্ডিশন বলে আমরাই ভালো ক্রিকেট খেলব। আগেও বলেছি, পাকিস্তান ভালো দল। তাদের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই বিপিএল খেলে থাকে। তারাও এই কন্ডিশনটা সম্পর্কে ভাল জানে। আমরা চেষ্টা করব, ভালো ক্রিকেটটা খেলার। পাকিস্তান সফরে দুর্ভাগ্যবশত জিততে পারিনি। কিছু ভুল করেছি, তবে শ্রীলঙ্কা সিরিজে প্রথম ম্যাচ হারার পর ভালোভাবে কামব্যাক করেছি। অবশ্যই আমাদের প্রতিটি খেলোয়াড়ের ভেতরে আত্মবিশ্বাস জন্মেছে। যেহেতু শ্রীলঙ্কায় একটা ভালো সিরিজ গেছে পুরো দলের, চেষ্টা করব সেই আত্মবিশ্বাস যেন ধরে রাখতে পারি মিরপুরেও। ’
পাকিস্তানের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে বড় দুই তারকা বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ান। ১২৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৩৯.৮৩ গড়ে বাবর আজমের রান ৪২২৩, সেখানে ১০৬ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মোহাম্মদ রিজওয়ানের রান ৪৭.৪১ গড়ে ৩৪১৪। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এই জুটির ৭৩ ম্যাচে ৩৩০০ রান সর্বোচ্চ! অথচ, পাকিস্তানের এই দুই সেনসেশন গত বছর ডিসেম্বরের পর থেকে টি-টোয়েন্টিতে ব্রাত্য!
বাবর আজমের হাত থেকে ক্যাপ্টেনসির ব্যাটনটা চলে গেছে আগা সালমানের কাছে। তার নেতৃত্বে গত মে মাসে হোম সিরিজে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টিতে ৩-০তে হোয়াইট ওয়াশ করেছে পাকিস্তান।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফি উন্মোচন।
বাবর-রিজওয়ানদের বাদ দিয়ে, ইনজুরিতে পড়া অলরাউন্ডার সাদাব খানকে বিশ্রামে রেখে- এবার বাংলাদেশ সফরে এসেছে পাকিস্তান দল, এক অর্থে ব্যাক আপ বয়েজ টিম। যে দলে দুই পেসার আহমেদ দানিয়েল এবং সালমান মীর্জার নেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা।
তারপরও তারুণ্য নির্ভর এই দলটিকে নিয়েই বাংলাদেশ সফরে আত্মবিশ্বাসী পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগা-‘ আমরা এখন যেভাবে খেলতে চাই, আমাদের ওই ধরনের খেলোয়াড় আছে। তাঁরা খুবই ভালো আর রোমাঞ্চকর। দুই নতুন খেলোয়াড় দুজনেই ফাস্ট বোলার, এবং আমি তাদের দেখে খুবই রোমাঞ্চিত।’
পাকিস্তান স্কোয়াডে ১৬ ক্রিকেটারের মধ্যে ৯ জনের আছে বিপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা। ফখর জামান, মোহাম্মদ হারিস, সাইম আইয়ুব, ফাহিম আশরাফ, হোসেন তালাত, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ নাওয়াজ, আব্বাস আফ্রিদি ও আবরার আহমেদের সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান পাকিস্তান অধিনায়ক। পাকিস্তানের ফিল্ডিং কোচ শন ম্যাকডরমট এর আগে ছিলেন বাংলাদেশ দলে, একই দায়িত্বে। ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিং কোচের দায়িত্বে থাকা ম্যাকডরমটকে পেয়েও বাংলাদেশ দলের বর্তমান ক্রিকেটারদের সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন বলে মনে করছেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে অলরাউন্ডারদের ছড়াছড়ি। এখানেও মনস্তাত্বিকভাবে এগিয়ে থাকতে চায় পাকিস্তান। জুলাই মাসে বাংলাদেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ এর আগে হয়েছে দুবার-২০১৫ এবং ২০২১ সালে। আকাশে কালো মেঘ, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে এসেছেন – তাই সতর্ক পাকিস্তান অধিনায়ক-‘আমরা আমাদের খেলার ধরন বদলেছি। কন্ডিশন পর্যবেক্ষণ করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দেখব কন্ডিশন কেমন আর আমরা কীভাবে খেলতে চাই। যদি কন্ডিশন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার মতো হয়, তাহলে আমরা খেলব। যদি কন্ডিশন তেমন না হয়, তাহলে আমরা ওই অনুযায়ীই খেলব।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের আর একটি টি-টোয়েন্টি ট্রফি, না ১০ বছর পর বাংলাদেশের ট্রফি পুনরুদ্ধার। তার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে ২৪ জুলাই পর্যন্ত। তবে মিরপুরে ২০, ২২ ও ২৪ জুলাই ফ্লাড লাইটের আলোয় নির্ধারিত ম্যাচ তিনটির সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বৃষ্টি। আবহাওয়ার পূর্বাভাস কিন্তু বলছে তা।
১৯ জুলাই ২০২৫, ৫:০৮ পিএম
সদ্য শ্রীলঙ্কার মাটিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জেতা বাংলাদেশ দলকে মোটেও হালকাভাবে নিতে চান না পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা। কারণ হিসেবে তিনি এই ফরম্যাটটিকে দ্রুত পরিবর্তনশীল বলে উল্লেখ করেছেন। যদিও লক্ষ্য তিনটি ম্যাচই জেতা, কিন্তু সিরিজ জিততে পারলেও খুশি মনে বাংলাদেশ ছাড়তে চান নতুন পাকিস্তান অধিনায়ক!
আরও পড়ুন
বদলা’র হুংকার লিটনের, আগ্রাসী ক্রিকেটে মনোযোগ পাকিস্তানের |
![]() |
দু’দেশের ২২ মোকাবেলায় পাকিস্তানের জয় ১৯টি, বাংলাদেশের মাত্র তিনটি। এরমাঝে দু’টিই আবার এই শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে, একটি এশিয়ান গেমসে চীনের হাংজুতে। গত ৯/১০ বছরে যে ১৩টি ম্যাচ খেলেছে দু’দেশ সেখানে ১২টিই জিতেছে পাকিস্তান, আর তাইতো সফররতরা নিরঙ্কুশ ফেবারিট কিনা সেই প্রশ্নে একটু হতচকিতই ছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক-
“আমরা এখন বিদেশ সফরে রয়েছি, বাংলাদেশের জন্য হোম কন্ডিশন। আমরাজানি যেকোন কন্ডিশনেই বাংলাদেশ ভাল দল, বিশেষ করে ঘরের মাঠে তো আরও ভাল দল। সুতরাং বড়সড় চ্যালেঞ্জ আছে আমাদের সামনে! আমরা আসলেই খুব উদগ্রীব ম্যাচ খেলার জন্য, চ্যালেঞ্জটা জেতার চেষ্টা করবো। গত ৯/১০ বছরের পরিসংখ্যান যতই পাকিস্তানের পক্ষে থাক, এটা ভিন্ন একটা সিরিজ। প্রতিটি ম্যাচ, প্রতিটি বল ধরে খেলবো”
পাকিস্তান অধিনায়ক একইসাথে চিন্তিত ও রোমাঞ্চিত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিপ্লব নিয়ে। তাঁর ভাষায় খুব বেশি পরিবর্তন-পরিবর্ধন ও প্রযুক্তির ছোঁয়া আবিষ্ট করে ফেলছে এই ফরম্যাটকে। পরিস্থিতির সাথে মানিয়েও নিচ্ছেন তিনি ও তাঁর দল-
“আমার মনে হচ্ছে প্রতি ৬ মাসে বদলে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। এর সাথে মানিয়ে ভাল খেলতে হবে। আমার দলে নতুন দু’জন ফাস্ট বোলার আছে, আমি ওদের নিয়ে খুব আত্মবিশ্বাসী”
পাকিস্তানের এই দলটিতে বেশ কজন ক্রিকেটার আছেন যাদের সবশেষ বিপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে, মিরপুরের কন্ডিশন সম্পর্কে ভাল ধারনাও আছে। সালমান মনে করছেন এটা তাঁর দলকে বিশাল এক সুবিধা দেবে-
“আমাদের বেশ কজন খেলোয়াড় এখানে বিপিএল খেলে গেছে। তাঁর তাদের অভিজ্ঞতা ইতিমধ্যে শেয়ার করেছে বাকিদের সাথে, সেই অনুযায়ী আমরা পরিকল্পনাও সাজিয়েছি”
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৭ বার মুখোমুখি হয়েছে দু’দেশ, যেখানে পাকিস্তানের জয় ৫টি ম্যাচে, বাংলাদেশের ২টি।