৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭:৪৯ পিএম

নির্দিষ্ট একজন ব্যাটার বা বোলারের বিপক্ষে কোনো ক্রিকেটারের বিশেষভাবে ভালো পারফর্ম করার অসংখ্য নজির রয়েছে ইতিহাসে। আবার কিছু খেলোয়াড় রয়েছেন, যারা গোটা দলকেই বানিয়ে ফেলেন ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’। ফর্ম, ম্যাচের পরিস্থিতি যেমনই হোক, সেই দলটির বিপক্ষে তার ব্যাট বা বল হাতে জ্বলে ওঠাটা যেন অনিবার্য। গত দেড় বছর ধরে ভারতের বিপক্ষে ঠিক সেই কাজটাই সব ফরম্যাটে বারবার করে অজি ব্যাটার তাই হয়ে উঠেছেন দলটির মাথাব্যথার কারণ। প্রিয় প্রতিপক্ষক ভারতকে পেলেই যেন একটু বেশি হাসছে হেডের ব্যাট।
হেডের এই ‘ভারতপ্রেমের’ শুরুটা সেই গত বছর আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল দিয়ে। প্রথম ইনিংসে খেলেন ১৭৪ বলে ১৬৩ রানের এমন ইনিংসে, যা প্রতিপক্ষকে মানসিকভাবেও একদম গুঁড়িয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত অনায়াস জয় পায় অস্ট্রেলিয়ার। ম্যাচ সেরাও হন হেড। এরপরের মঞ্চ গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল। তবে এখানে বাড়তি কিছু তথ্য যোগ করে নেওয়া যেতেই পারে।
আর সেটা হল, চোটের কারণে বিশ্বকাপের অর্ধেক মিস করা হেড প্রথম ম্যাচ খেলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। আর মাঠে নেমেই হাঁকান শতক। মানে, বাঁহাতি এই ব্যাটার স্রেফ ভারতই নন, অন্য দলের বিপক্ষেও বড় রান করতে জানেন। তবে সেটা যে রোহিত-বুমরাহদের তুলনায় একেবারেই যৎসামান্য, সেটা স্পষ্ট এক পরিসংখ্যানেই। যেখানে দেখা যাচ্ছে ২০২৩ সাল থেকে সব ফরম্যাটে ভারতের বিপক্ষে ১৯ ইনিংসে ৪টি সেঞ্চুরি ও ৩ ফিফটিতে ১ হাজার ৫২ রান করেছেন হেড। গড় অবিশ্বাস্য ৬১.৯০!
আরও পড়ুন
| আইপিএলে তান্ডবে চালানো হেড চ্যালেঞ্জ দেখছেন বিশ্বকাপে |
|
একজন ব্যাটারের এমন গড় অবিশ্বাস্য এমনিতেই বলা যায়। তবে হেডের অন্য দলের বিপক্ষে একই সময়ের পরিসংখ্যান দেখলে আপনিও মানতে বাধ্য হবেন তার অসামান্য কীর্তি। ভারত বাদে বাকি দলের বিপক্ষে গত বছর থেকে ৫৪ ম্যাচে এখন পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার ৮৭৫ রান করেছেন হেড। গড়? মোটে ৩৬.৮০! ফিফটি ১০টি, আর সেঞ্চুরি ভারতের সমান ৩টিই। জার্সি সাদা হোক বা রঙ্গিন প্রতিপক্ষ হিসেবে ভারতকে পেলেই হেডের এই দানবীয় ব্যাটিংয়ের দেখা মিলছে বারবার।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালেই যেমন। ২৪১ রানের টার্গেটে জাসপ্রিত বুমরাহ তোপে মাত্র ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে রীতিমত ত্রাহিত্রাহি অবস্থা অস্ট্রেলিয়ার। ইনিংসের শুরুর দিকে ভারতের তারকা পেসাদের কয়েকটি ডেলিভারিতে পুরোপুরি পরাস্ত হন হেড, অল্পের জন্য হননি বোল্ড বা ক্যাচ আউট। তবে একটু সেট হওয়ার পর ক্রমেই ভারতের মুঠো থেকে ম্যাচ বের করে নেন নান্দনিক সব শটের পসরা সাজিয়ে। স্বাগতিক দর্শকদের স্তব্ধ করে খেলেন ১২০ বলে ১৩৭ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস। আসরে প্রথমবার ভারত পায় হারের দেখা। উল্লেখ্য, গ্রুপ পর্বে দুই দলের মুখোমুখি ম্যাচটি খেলেননি হেড।
তবে ফাইনালে নেমেই হয়ে যান আরও একবার ম্যাচ সেরা। ১২ বছর বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ, তাও ঘরের মাটিতে - এমন মেলবন্ধনের পথে কাঁটা হয়ে যাওয়ায় আজও ভারতের কাছে হেড এক দুঃখ, আক্ষেপ ও বিভীষিকার নামই বটে। বুমরাহর ওই স্পেলেই যদি তার বিদায় হত, কে জানে হয়ত কাপটা উঠত রোহিত শর্মার হাতেই!
আরও পড়ুন
| কীভাবে এমন তাণ্ডব চালাচ্ছেন ট্রাভিস হেড? |
|
হেড এরপর চলতি বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার এইটের ম্যাচে আরও একবার জ্বলে ওঠেন ভারতের বিপক্ষে। মাত্র ৪৩ বলে খেলেন ৭৬ রানের দারুণ এক ইনিংস। এবার অবশ্য দলকে জেতাতে পারেননি। তবে চলমান ভারত-অস্ট্রেলিয়ার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে যা করেছেন, সেটা হয়ত গড়ে দিতে পারে ম্যাচের ভাগ্য।
গোলাপি বলের এই ম্যাচে ভারতের বোলারদের আর একবার বেধড়ক পিটিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী মেলে ধরেন তিনি। ১৭ চার ও ৪ ছক্কায় ১৪১ বলে হেডের ব্যাট থেকে এসেছে ১৪০ রান। দ্বিতীয় দিন শেষে হাতে পাঁচ উইকেট নিয়ে ভারত পিছিয়ে আছে ২৯ রানে। দলটি যদি এখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে না পেরে হেরে যায়, তাহলে সম্ভবত আরও একবার ভারতের হারের মূল কারণ হওয়ার পাশাপাশি ম্যাচ সেরাও হয়ে যাবেন হেডই। এমন প্রিয় প্রতিপক্ষ কে না চায়!
No posts available.
২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১:১৭ পিএম
২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৩ পিএম

দুই ম্যাচ বাকি থাকতে অ্যাশেজ সিরিজ হাতছাড়া হয়েছে ইংল্যান্ডের। রোববার আরেকটি দাপুটে জয়ে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ১১ দিনের মধ্যে অ্যাশেজ সিরিজ হেরে ইন্টারনেটে সমালোচনার মুখে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও বেন স্টোকস জুটির ‘বাজবল’ ফর্মূলা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে একটি মিম। যেখানে দেখা যায় বাজবল সমাধির পাশে অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ জয়ের অন্যতম দুই নায়ক মিচেল স্টার্ক ও ট্রাফিস হেড হাসছেন। ইংলিশ অধিনাককে নিয়ে ২০২২ সালে এই অতি আক্রমণাত্মক বাজবল ফর্মূলা রচনা করেছিলেন দলটির কিউই কোচ ম্যাককালাম। তিন টেস্ট হেরে ইংলিশ অধিনায়ক বললেন, ‘আমাদের পরের দুই টেস্টের জন্য মনোযোগী হতে হবে।’
রোববার অ্যাডিলেড টেস্টের পঞ্চম দিনে ম্যাচ জিততে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ২২৮ রান। টেস্টে ৪৩৫ রানের রেকর্ড রান তাড়া করার জন্য যে মিরাকেল দরকাল ছিল সেটি দেখাতে পারেননি ইংলিশ ব্যাটাররা। স্টোকসের দল গুটিয়ে গেছে জয় থেকে ৮২ রান দূরে থাকতে।
আরও পড়ুন
| গোল করলেন, জেতালেন, কাঁধে ভর দিয়ে মাঠ ছাড়লেন |
|
এদিন সিরিজ জয়ের পর অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক যখন আনন্দে আত্মহারা- বলছিলেন, ‘সত্যি খুব ভালো লাগছে। কারণ এটা (সিরিজ জয়) আমরা করে দেখিয়েছি।‘ তখন ইংলিশ সমর্থকেরা সমালোচনা করতে ছাড়েননি স্টোকস, হ্যারি ব্রুকদের।
ইংলিশ ক্রিকেটের জন্য এদিনের সকালটা ছিল ভয়াবহ। এই হারের পর তাৎক্ষণিক তীব্র প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনায় পড়েন স্টোকস ও ম্যাককালাম। ২০২২ সালে বাজবল যাত্রা শুরুর পর এবারই সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে পড়তে হলো তাঁদের।
পিঠের চোটের কারণে অস্ট্রেলিয়ার নিয়মিত অধিনায়ক অধিনায়ক প্যাট কামিন্স প্রথম দুই টেস্টে খেলতে পারেননি। তাঁর অনুপস্থিতিতে স্টিভ স্মিথের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া টানা দুই ম্যাচে ৮ উইকেটে জয় পায়। তৃতীয় টেস্টে টসের খানিক আগে মাথা ব্যাথার কারণে দল থেকে ছিটকে যেতে হয় স্মিথকে।
অ্যাডিলেড স্টে পঞ্চম দিনে গড়ানো প্রসঙ্গে কামিন্স বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় এসব বিষয়ে তাড়াহুড়া করলে চলে না। এখানে বেশিরভাগ সময়ই পুরোনো ধাঁচের খেলায় ফিরে যেতে হয় এবং কঠিন লড়াই করতে হয়। আজ সবাই যেভাবে পরিশ্রম করেছে, সেটা আমি খুব উপভোগ করেছি। ম্যাচটা একটু কাছাকাছি চলে গিয়েছিল, তবে শেষ পর্যন্ত জেতায় বেশ সন্তুষ্ট।’
পঞ্চম দিন সকালের সেশনে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একমাত্র উইকেটটি নেন স্টার্ক। ধৈর্য হারিয়ে জেমি স্মিথ কামিন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬০ রানে। ওই সময় ইংল্যান্ড যোগ করে ১০২ রান।
শেষ দিনের মধ্যাহ্নভোজের পর অ্যাশেজের সমীকরণ কিছুটা জটিল হয়ে ওঠে। অ্যাডিলেড টেস্ট জিততে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল তিন উইকেট, আর পাঁচ ম্যাচ সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল আরও ১২৬ রান।
চতুর্থ ইনিংসে টেস্ট জিততে এর আগে কোনো দলই ৪১৮ রানের বেশি করতে পারেনি। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ উইকেটে জিতে ওই রেকর্ড করেছিল। এদিন তেমন কিছুই হবে ধরে নিয়েছিলেন ইংলিশ অধিনায়ক স্টোকস, ‘সকালের সেশন শেষে আমার মনে হয়েছিল আরেকটা বড় কাণ্ড ঘটাতে যাচ্ছে।’ রেকর্ড রান তাড়া করে জয়ের ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।
আরও পড়ুন
| জন্মদিনে গোল-রেকর্ড উপহার পেলেন এমবাপ |
|
ইংল্যান্ডের লোয়ার অর্ডার চাপ বাড়াতে থাকে অজি শিবিরে। আর চোটের কারণে অভিজ্ঞ স্পিনার নাথান লায়ন মাঠ ছাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার আক্রমণ কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি স্টার্কই স্বাগতিকদের হয়ে পার্থক্য গড়ে দেন।
শেষ পর্যন্ত মাত্র ১১ দিনের মধ্যেই সিরিজ হাতছাড়া হলেও স্টোকস বলেন, ‘এই সপ্তাহে দল যে দৃঢ়তা দেখিয়েছে তাতে সন্তুষ্ট। এটা অনেকটা কষ্ট দেবে। আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে এখানে এসেছিলাম, সেটা এখন শেষ। যা নিঃসন্দেহে খুবই হতাশাজনক। তবে সামনে আরও দুটি টেস্ট আছে, এখন সেদিকেই মনোযোগী হতে হবে।’
২৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে মেলবোর্ন টেস্ট, যা বক্সিং ডে টেস্ট হিসেবে পরিচিত। এরপর নতুন বছরে সিডনিতে অনুষ্ঠিত হবে পঞ্চম ও শেষ টেস্ট।

সামির মিনহাসের সামনে লক্ষ্য ছিল দুটি—টুর্নামেন্টে নিজের আগের অপরাজিত ১৭৭ রান ছাড়িয়ে যাওয়া এবং অপূর্ণ স্বপ্ন ডাবল সেঞ্চুরি পূরণ করা। সে পথেই এগোচ্ছিলেন পাকিস্তানের আগামী দিনের কাণ্ডারি।
ফিফটি পেরিয়ে শতক, এরপর তা টেনে নেন দেড়শ রানে। সেখান থেকে চার-ছক্কায় তরতর আরও বড় হচ্ছিল ইনিংস। কিন্তু নিয়তি ছিল তাঁর বিপরীতে। আগেও যেই ১৭০–১৮০ রানের গেরোয় আটকা পড়েছিল ইনিংস, এবারও থামলেন সেখানেই (১৭২ রান)।
পাকিস্তানের ডানহাতি ওপেনার মিনহাস আগে থেকেই টুর্নামেন্টের শীর্ষ রানসংগ্রাহক ছিলেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্যাটারদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিল তার রান। তবে ভারতের বিপক্ষে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে আজ নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, যা কেবল বাইনোকুলার দিয়েই দেখা সম্ভব।
আরও পড়ুন
| গোল করলেন, জেতালেন, কাঁধে ভর দিয়ে মাঠ ছাড়লেন |
|
বয়সভিত্তিক এই টুর্নামেন্টে মিনহাসের রান ৪৭১। পাঁচটি ইনিংস খেলেছেন তিনি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্বদেশি আহমেদ হুসাইনের চেয়ে প্রায় অর্ধেক রানে এগিয়ে মিনহাস। সমান সংখ্যক ম্যাচে হুসাইনের রান ২৬৮। তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতের কুন্ডুর সংগ্রহ ২৬৩ রান।
অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক মিনহাস পাকিস্তানের জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার আরাফাত মিনহাসের ছোট ভাই। আরাফাত পাকিস্তানের সিনিয়র দলের হয়ে চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন।
২০২৩ সালে আরাফাতের অভিষেক হয়। তবে ২০২৪ সালের পর থেকে তিনি আর কোনো ম্যাচ খেলেননি। বর্তমানে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত খেলছেন। পাওয়ার হিটার হিসেবে তাঁর বেশ সুখ্যাতি রয়েছে, পাশাপাশি স্পিন বোলিংয়েও তিনি দক্ষ।
পাকিস্তান দলে ইমাদ ওয়াসিম ও মোহাম্মদ নওয়াজের মতো ক্রিকেটার থাকায় পর্যাপ্ত সুযোগ পাননি আরাফাত। অন্যদিকে তাঁর ভাই সামির বয়সভিত্তিক দলে নিয়মিত পারফর্ম করছেন এবং জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। এমনও হতে পারে, একদিন দুই ভাইকে একই ড্রেসিংরুমে দেখা যাবে।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সামনের মৌসুমে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স দলে শুধু বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসেবে জায়গা করে নেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী উইকেটকিপার-ব্যাটার আকবর আলী। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে রোববার রাজশাহীর অনুশীলন শেষে নিজের ভাবনার কথা জানান তিনি।
আকবর বলেন, “প্রত্যেক ক্রিকেটারই খেলার প্রত্যাশা নিয়ে আসে, আমিও এর বাইরে নই। ইনশাআল্লাহ আমি খেলব- এই প্রত্যাশা অবশ্যই আছে। তবে কে খেলবে আর কে খেলবে না, সেটা পুরোপুরি টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। আমি প্রস্তুত আছি, দল যে ভূমিকায় আমাকে চাইবে, সেখানেই খেলার জন্য প্রস্তুত।”
শনিবার দলের প্রথম অনুশীলনের পর রাজশাহীর কোচ হান্নান সরকার নিশ্চিত করেন, আসন্ন বিপিএলে দলের নিয়মিত উইকেটকিপারের দায়িত্ব পালন করবেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। ফলে আকবরকে দেখা যেতে পারে কেবল ব্যাটার হিসেবেই।
এছাড়া অনুশীলনে ৩৮ বছর বয়সী মুশফিকুর রহিমকেও উইকেটকিপিং অনুশীলন করতে দেখা গেছে, যা রাজশাহীর সম্ভাব্য কম্বিনেশনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাট হাতেও সম্প্রতি বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছেন আকবর। রংপুর বিভাগকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতেছেন জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টি ও চার দিনের শিরোপা। এ ছাড়া চলতি বছর এসিসি ইমার্জিং এশিয়া কাপেও বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে ফাইনালে তুলেছেন অধিনায়ক হিসেবে।
নেতৃত্ব ও পারফরম্যান্স- দুটো ক্ষেত্রেই নিজের সক্ষমতার প্রমাণ রেখেছেন তিনি। এনসিএল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে আকবর ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ১৪৭.০২ স্ট্রাইক রেটে ২২২ রান করে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে তার আত্মবিশ্বাস ও মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতারও ঝলক দেখান।
আরও পড়ুন
| ওয়েস্ট ইন্ডিজকে রেকর্ড ভাঙার চ্যালেঞ্জ নিউ জিল্যান্ডের |
|
তবে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্য কিংবা দলে ভূমিকা নিয়ে সরাসরি প্রশ্নে সতর্ক ছিলেন আকবর।
“এটা আমার জন্য একটু কঠিন প্রশ্ন। এ বিষয়ে মন্তব্য করাটা ঠিক হবে না, কারণ আমার কোনো কথায় যেন দলের পরিবেশ অস্বস্তিকর না হয়। এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গাটা পুরোপুরি টিম ম্যানেজমেন্টের।”
উইকেটকিপিং দায়িত্ব মুশফিকুর রহিমের হাতে যাওয়ার প্রসঙ্গে আকবর জানান পূর্ণ সমর্থন।
“কে কোন দায়িত্ব নেবে, সেটা ম্যানেজমেন্ট ঠিক করবে। তবে মুশফিক ভাইয়ের মতো একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার দলে থাকা বড় আশীর্বাদ। তার কাছ থেকে শেখার অনেক কিছু আছে, আমরা সবাই সেই চেষ্টা করব।”

মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট কী তবে নিউ জিল্যান্ডই জিততে চলেছে? আপাতত ম্যাচ কন্ডিশন সেটাই বলছে। পঞ্চম ও শেষ দিনে জয় পেতে ৪১৯ রান করতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। বিষয়টি মিরাকলের মনে হলেও এর আগে শেষ ইনিংসে ৪১৮ রান তাড়া করে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় পেয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা।
শনিবার (চতুর্থ দিন) ৬ উইকেটে ৩৮১ রান নিয়ে দিন শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ পরবর্তীতে প্রথম ইনিংসে থামে ৪২০ রানে। ১৫৫ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ৪৬২ রান লক্ষ্য দাঁড় করায় নিউজিল্যান্ড।
৪৬২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ১৬ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৩ রান তুলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার ব্রেন্ডন কিং অপরাজিত ৩৭, জন ক্যাম্পবেল ২ রানে। আগামীকাল নতুন দিন শুরু করবেন তারা।
আরও পড়ুন
| অ্যাশেজ অস্ট্রেলিয়ার, অপেক্ষা বাড়ল ইংল্যান্ডের |
|
প্রথম ইনিংসের ন্যায় দ্বিতীয় ইনিংসেও শতোর্ধ্ব রান করেছেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার টম লাথাম ও ডেভন কনওয়ে। প্রথম ইনিংসে ক্যাপ্টেন লাথাম ২৪৬ বলে ১৩৭ রান করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে ১০১ রান, ১৩০ বল মোকাবিলা করে।
ডেভন কনওয়ে প্রথম ইনিংসে ২২৭ রান করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে হজের বলে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগার স্পর্শ করেন।
টেস্ট ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি—প্রথমবার দুই ওপেনার এক টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি করেছেন।
১৫৫ রান এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নামা নিউজিল্যান্ডের ওপেনিং জুটি থেকে আসে ১৯১ রান। কনওয়ে ১০০ রানের ঘরে ফেরার পর জুটি ভেঙে যায়। এরপর লাথামও সেঞ্চুরি করেন। উইলিয়ামসন ৩৭ বলে ৪০, রবীন্দ্র ২৩ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ৫৭৫/৮ ও ৩০৬/২ (কনওয়ে ১০১, লাথাম ১০০; হজ ২/১০০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪২০ ও ৪৩/০ (কিং ৩৭*, ক্যাম্পবেল ২*; ডাফি ০/১৮)

অ্যাডিলেডে পঞ্চম দিনে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ২২৮ রান। হাতে অবশিষ্ট ছিল ৪ উইকেট। এই সমীকরণ দেখে যে কারোরই বাজি থাকতো অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে। শেষ পর্যন্ত তাই-ই হলো। সফরকারীদের ৮২ রানে হারিয়েছেন প্যাট কামিন্সরা। এ জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
২০১০–১১ মৌসুমের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইংল্যান্ড অ্যাশেজ সিরিজ জেততে পারেনি। ১৪ বছর পার হয়ে গেলেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মাটিতে গেরো খুলতে পারেননি ইংলিশরা। এছাড়াও পার্থ, ব্রিসবেন ও অ্যাডিলেড মিলিয়ে সিরিজের খেলা হয়েছে মাত্র ১১ দিনে। অ্যাশেজ ইতিহাসে এত কম সময়ে সিরিজ শেষ হওয়া এটি মাত্র দ্বিতীয় ঘটনা।
অ্যাশেজ টেস্টের শুরু হয়েছিল পার্থে। মাত্র দুই দিনেই শেষ হয় প্রথম টেস্ট। ট্রাভিস হেডের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ২০৫ রানে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
১-০ এগিয়ে যাওয়ার পর ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত হয় দিবা-রাত্রির টেস্ট। ইংল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে।
দুই টেস্টের তুলনায় তৃতীয় টেস্টে কিছুটা উন্নতি হলেও, অ্যাডিলেডে প্রথমবারের মতো সিরিজের কোনো টেস্ট পাঁচ দিনে টেনে নিয়েছে সফরকারীরা।
আরও পড়ুন
| রেকর্ডের আনন্দের পরদিনই চোট |
|
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইংল্যান্ডের টেস্টভাগ্য ঠিক যেমন লেখা ছিল, সেটাই হলো। ৯২ রানে হেরে সিরিজ খুইয়েছেন বেন স্টোকসরা। পঞ্চম দিনে স্টোকস ও হ্যারি ব্রুক ফিরলেও ভাগ্য স্পষ্ট হয়ে যায় ইংল্যান্ডের জন্য।
সপ্তম উইকেটে উইল জ্যাকস ও জেমি স্মিথ ৯১ রানের জুটি গড়েন। স্মিথ ৮৩ বলে ৬০ রান করে আউট হলে ইংল্যান্ডের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। এরপর জ্যাকস কিছুটা লড়াই করেন, আর শেষ দিকে উইকেটে ছিলেন ব্রাইডন কার্স, যা দলের কাজে আসে না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৩৭১ ও ৩৪৯
ইংল্যান্ড: ২৮৬ ও ৩৫২
ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৮২ রানে জয়ী